বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্হা (Bangladesh Educational System)

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্হা (Bangladesh Educational System)

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা

"Education is the backbone of a nation" মানুষের মেরুদন্ডের মতো শিক্ষাও একটি জাতির অন্যতম প্রধান অঙ্গ হিসেবে পরিগণিত হয়। শিক্ষার মাধ্যমে জাতি এগিয়ে যায়, উন্নতির শীর্ষে আরোহণ করে। কিন্তু বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার সন্তোষজনক চিত্র আমাদের চোখে পড়ে না। তবে আশার বিষয় হচ্ছেÑ শিক্ষা পদ্ধতি, শিক্ষার মান, শিক্ষানীতি, শিক্ষার জন্য বরাদ্দ, শিক্ষার পরিবেশ প্রভৃতির উন্নয়নে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

শিক্ষা কি

শিক্ষার ইংরেজি প্রতিশব্দ Education-যা ল্যাটিন শব্দ Educere বা Educatum থেকে এসেছে। মানুষের সত্যিকারের পরিচয় তার মনুষ্যত্ব ও যোগ্যতার মধ্যে। মানব সন্তান হিসেবে জন্মগ্রহণ করলেই একজন পরিপূর্ণ মানুষের সব গুণ তার মধ্যে বিকশিত হয়ে ওঠে না। এসব গুণাবলী তাকে নিজের সাধনায় অর্জন করতে হয়। এই যোগ্যতা বা গুণবালী অর্জনের জন্য মানুষকে বিভিন্ন উৎস থেকে যে জ্ঞান অর্জন কতে হয় তাই শিক্ষা। শিক্ষা হলো-'The harmonious development of body, mind and soul.' অর্থাৎ মানুষের মানবিক, দৈহিক ও নৈতিক প্রশিক্ষণের ধারাবাহিক পদ্ধতি হলো শিক্ষা।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডিজিটাল ক্লাসরুম স্থাপন ও মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে পাঠদান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন-২০২১, ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা হচ্ছে শিক্ষার প্রথম ধাপ।

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা তিন স্তরবিশিষ্ট- প্রাথমিক স্তর, মাধ্যমিক স্তর এবং উচ্চশিক্ষা বা বিশ্ববিদ্যালয় স্তর। সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো পরিচালিত হয় ৫ বছর মেয়াদী প্রাথমিক, ৭ বছর মেয়াদী মাধ্যমিক - এর মধ্যে ৩বছর মেয়াদী জুনিয়র, ২ বছর মেয়াদী মাধ্যমিক এবং ২ বছর মেয়াদী উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়।

বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হয়। বাংলাদেশে তৃতীয় পর্যায়ে অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা ৩-৫ বছর মেয়াদি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত ৩৬টি পাবলিক ও ৭৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন -এর তত্ত্বাবধানে অধিভুক্ত কলেজের মাধ্যমে এ শিক্ষা দেয়া হয়। শিক্ষার্থীরা শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলা বা ইংরেজির মধ্যে যেকোনোটিকে বেছে নিতে পারে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় হলো শিক্ষার জন্য রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ দফতর। এর অধীন কয়েকটি অধিদপ্তরে রয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প (শিক্ষা প্রকল্প ও কারিগরি প্রকল্প )’র মাধ্যমে এ অধিদপ্তরসমূহের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সংবিধানের ১৭ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষা সুবিধা পাওয়ার অধিকার রাখে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দশটি (১০) শিক্ষা বোর্ডে অধিভুক্ত। বোর্ডগুলো তিনটি পাবলিক পরীক্ষা পরিচালনা করে: জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা,মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি)পরীক্ষা এবং উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি)পরীক্ষা। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কলেজ হিসেবে পরিচিত। এছাড়া রয়েছে মাদ্রাসা ও ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল। এগুলো যথাক্রমে মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড এবং বিদেশি শিক্ষা বোর্ডের তালিকাভুক্ত। মাধ্যমিক পরবর্তী পর্যায়ে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ স্কুল পরিচালনার জন্য কারিগরি শিক্ষা বোর্ড গঠন করা হয়েছে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যবই উন্নয়ন, অনুমোদন এবং ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্ত্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশ ব্যুরো অব এডুকেশনাল ইনফরমেশন অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিক্স (ব্যানবেইনস) গঠন করেছে, যা সব পর্যায়ের শিক্ষাসংশ্লিষ্ট তথ্য সংরক্ষণ করে।   বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন সময়ে গঠিত বিভিন্ন শিক্ষা কমিশন থেকে পাওয়া তথ্য ও অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে একটি শিক্ষানীতি প্রকাশ করেছে। এছাড়াও 'অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো ' এর তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে অনেক অলাভজনক সংগঠন রয়েছে, যারা  সামাজিক সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য অনানুষ্ঠানিক ও আধা-আনুষ্ঠানিক শিক্ষাদান কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

১৯৯০ সালে প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ঘোষণা করা হয়। ১৯৯২ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক একটি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগ সৃষ্টি করা হয়। ১৯৯৩ সালে সারাদেশে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হয়। এছাড়াও স্বাধীন বাংলাদেশে বেশ কিছু শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয় যার সর্বশেষ অধ্যাপক কবীর চৌধুরি শিক্ষা কমিশন

সর্বোপরি, জীবনকে সাফল্যমন্ডিত, সৌন্দর্যমন্ডিত, অর্থবহ ও কৃতকার্য করার জন্য শিক্ষাই একান্ত ও মুখ্য ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশে শিক্ষার চিত্রঃ বাংলাদেশে সাক্ষরতার শতকরা হার ৫১.৮% (আদমশুমারি ২০১১)। ২০১৫ সালের মধ্যে দেশকে নিরক্ষরতা মুক্ত করা সরকারের অঙ্গীকার। ইতোমধ্যে ৯৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ শিশুর বিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিত হয়েছে।

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় সমস্যা সমূহ

ইংরেজরা আমাদের দেশে যে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে গেছে সেটাকেই আমরা বস্তুবাদী শিক্ষা ব্যবস্থা বলছি। এই শিক্ষা ব্যবস্থা নিরেট কতিপয় উদ্দেশ্যেকে সামনে রেখেই তৈরি করা হয়েছিল। তাই এটাকেতাদের নিজেদের দেশে যে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু ছিলো, তা ছিলো রাজ্য শাসন, রাজ্য বিস্তার ও নিজেদের চিন্তা দর্শন বিস্তারের উপযোগী লোক তৈরি করার উদ্দেশ্যে প্রণীত।

সুতরাং নিজেদের দেশে তারা যে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে, তা তৈরি হচ্ছিলো সকল ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দানের উপযুক্ত লোক আর জবর দখল করা দেশগুলোতে যে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে তা থেকে লাভ করছিল প্রভু ভক্ত ও আনুগত্য পরায়ণ লোক। এভাবেই তারা শাসক ও সেবক শ্রেণীর লোক তৈরি করছিল। তাদের চালু করে যাওয়া সেই শিক্ষা ব্যবস্থাই আমাদের দেশে এখনো চালু আছে। এই বস্তুবাদী শিক্ষা ব্যবস্থাটিই আমাদের দেশে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে চালু রয়েছে। এই শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদেরকে একটি স্বতন্ত্র ও আদর্শ সভ্যতা সংস্কৃতির অধিকারী জাতি হিসাবেতিষ্ঠিত হতে দেয়নি। এ শিক্ষা আমাদের জাতিকে মানসিকভাবে করেছে বহুগামী। আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু আমাদের চিন্তাধারা বিচিত্রগামী। এই শিক্ষার অসংখ্য ত্রুটি আছে।

বস্তুবাদী শিক্ষা ব্যবস্থা বলাটাই যুক্তিযুক্ত। ইংরেজ শাসকরা এদেশে এমন এক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে, যার উদ্দেশ্য ছিলো ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে থেকে একদল শিক্ষিত মানসিক গোলাম ও প্রভু ভক্ত লোক তৈরি করা, যারা জাতিগতভাবে ভারতীয় থাকবে, কিন্তু মানসিকভাবে হানাদার শাসক ইংরেজদের ধ্যান ধারণায় পরিগঠিত হবে।

বৃটিশরা এসেছিল এদেশে শাসন শোষণ করতে। তাই এদেশীয়দের মধ্যে থেকে তাদের এমন একদল লোক প্রয়োজন ছিলো, যারা তাদেরেক প্রভু মনে করবে, তাদের সভ্যতা সস্কৃতিকে শ্রেষ্ঠ মনে করবে, তাদের আচার আচরণ ও চিন্তা দর্শনকে চমৎকার মনে করবে এবং একান্ত অনুগত বাধ্যগত দাসের ন্যায় দেশ পরিচালনার কাজে তাদের সেবা সহযোগিতা করবে। যে ব্যক্তি তাদের রাজত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যে যতো বেশি নিষ্ঠার সাথে সেবা করবে সে নিজেকে ততোবেশি গৌরবান্বিত মনে করবে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যবই উন্নয়ন, অনুমোদন এবং ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্ত্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশ ব্যুরো অব এডুকেশনাল ইনফরমেশন অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিক্স (ব্যানবেইনস) গঠন করেছে, যা সব পর্যায়ের শিক্ষাসংশ্লিষ্ট তথ্য সংরক্ষণ করে। বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন সময়ে গঠিত বিভিন্ন শিক্ষা কমিশন থেকে পাওয়া তথ্য ও অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে একটি শিক্ষানীতি প্রকাশ করে। এছাড়া `অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো`র তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে অনেক অলাভজনক সংগঠন রয়েছে, যারা  সামাজিক সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য অনানুষ্ঠানিক ও আধা-আনুষ্ঠানিক শিক্ষাদান কার্যক্রম পরিচালনা করে।

আমরা জানি যে, শিক্ষা মানবিক গুণসম্পন্ন নাগরিক সৃষ্টির কারখানা। শিক্ষা মানুষের নৈতিক ভিত্তি শক্তিশালী এবং ভালো অভ্যাস রপ্ত করার সুযোগ তৈরি করে। কৃষি, শিল্প, প্রশাসনসহ প্রতিটি সেক্টরেই দক্ষ সংগঠক সৃষ্টিতে শিক্ষার বিকল্প নেই। কিন্তু পরিহাস এটাই, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা স্থায়ী ভিত্তির ওপর এখনও দাঁড়ায়নি। আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি-বেসরকারি এ দুপর্যায়ে বিভক্ত। শিক্ষা প্রশাসন হলো সরকারি। ফলে শিক্ষায় দুর্নীতির পথটা বিস্তৃত। যদিও কেউ কেউ বলছে, শিক্ষায় দুর্নীতি কমেছে, আসলে কমেনি। শিক্ষক এবং ছাত্র উভয়কেই টু-পাইস দিয়ে শিক্ষা প্রশাসনে কাজ করাতে হচ্ছে। যারা শিক্ষা প্রশাসনে কাজ করছেন তারা প্রায় সবাই শিক্ষকতা থেকে এসেছেন; তাদের মানসিকতা নিম্নমানের হবে এটা ভাবতেও লজ্জা লাগে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন বাণিজ্যভিত্তিক ছেড়ে দেয়ায় হতদরিদ্রের সন্তানেরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খরচ কোনোভাবেই জোগান দিতে পারছে না। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কাদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে, এটাও বিবেচ্য বিষয় হওয়া জরুরি। একজন উগ্রবাদী যদি কোনো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পায় সেখানে উগ্রবাদীমনা শিক্ষকরা শিক্ষকতা করার সুযোগ পেয়ে ছাত্রদের জঙ্গিবাদী দীক্ষা দেবে, এরকম ঘটনা তো এখন অহরহই ঘটছে। শিক্ষার ব্যবস্থা এক চক্ষুপনা হয়ে উঠেছে। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে অঙ্গীকারবদ্ধ; কিন্তু দৃশ্যমান বিষয় হলো সরকার বেছে বেছে মনগড়াভাবে কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ল্যাপটপ বিতরণ করছে এবং গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানে ডিজিটালাইজ কক্ষ তৈরির সুযোগ দিচ্ছে। অনুরূপ বৈষম্য রেখে শিক্ষায় অগ্রগতি হয়েছে কথাটা নিতান্তই বেমানান।

শিক্ষাব্যবস্থায় সংকট সমাধানের উপায়

যে জাতি যতো বেশি শিক্ষিত, সে জাতি ততবেশি উন্নত। সুতরাং আমাদের সর্বাঙ্গীণ উনয়নের জন্য শিক্ষাব্যবস্থার সংকট উত্তরণ অপরিহার্য। তাই সরকারের পাশাপাশি আমাদের সকলেরই নৈতিক দায়িত্ব শিক্ষা ব্যবস্থাকে সমস্যামুক্ত করা। শিক্ষাব্যবস্থার সংকট সমাধান কল্পে আমাদের নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে হবে-

- শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী, বিজ্ঞানসম্মত, কর্মমুখী, প্রযুক্তিনির্ভর ও বাস্তবসম্মত করতে হবে।

- শিক্ষাক্ষেত্রে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং যাবতীয় শিক্ষাবৈষম্য দূর করতে হবে।

- প্রযুক্তিনির্ভর বাস্তবসম্মত ও বাস্তবায়নযোগ্য শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে হবে।

- শিক্ষাক্ষেত্রে যাতে পূর্ণমেধার বিকাশ ঘটানো সম্ভব হয়, এজন্য মুখস্তনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন সাধন করতে হবে।

- ইংরেজিকে শুধু বিদেশি ভাষা হিসেবে না দেখে বিশ্বায়নের জন্য অপরিহার্য ভাষা হিসেবে পরিগণিত করতে হবে।

- বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে ওঠা কোচিং সেন্টার, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ বন্ধ করে শিক্ষার যথাযথ মান বজায় রাখতে হবে।

- শিক্ষকদেরকে যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং শিক্ষকদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।

- শিক্ষা প্রশাসনকে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে।

- প্রশ্নপত্র ফাঁস কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।

বদলে যাচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থা। আসছে নানা পরিবর্তন। দীর্ঘ বছর থেকে চলে আসা এই শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর নানা নিয়মকানুনে আসছে পরিবর্তন। পরিমার্জিত এই শিক্ষাক্রমের পাইলটিং চলবে ২০২২ সাল থেকে আর তার পরের বছর থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর থেকে বাস্তবায়ন করা শুরু হবে। আর সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন হবে ২০২৭ সাল থেকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে গতকাল সোমবার জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা উপস্থাপন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সাল থেকে পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) এবং অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা থাকবে না। ২০২৩ সাল থেকে শুধু দশম শ্রেণির কারিকুলামেই এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী দেখা যায়, ২০২১ সাল থেকে হবে শিক্ষা উন্নয়ন, শিখন-শেখানো সামগ্রী প্রণয়ন ও এবং পাইলটিংয়ের প্রস্তুতি। ২০২২ সালে হবে নির্বাচিত বিদ্যালয়ে শিক্ষাক্রম ও শিখন-শেখানো সামগ্রী পাইলটিং। ২০২৩ সালে প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন কার্যক্রম প্রবর্তন। পরের বছর তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে প্রবর্তন। ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম। ২০২৬ সালে একাদশ ও এরপরের বছর হবে দ্বাদশের প্রবর্তন।


তথ্যসুত্র

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, Bangladesh Gov.

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রধান প্রধান সমস্যা ও সমাধানের উপায় -২, Blog.

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, Chhar Patra.

বদলে যাচ্ছে শিক্ষা কাঠামো, Mzamin.

Subscribe for Daily Newsletter