বাংলাদেমের জাতীয় র্পাক ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক (গাজীপুর) Bhawal National Park (Gazipur)
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি গাজীপুর জেলার গাজীপুর সদর ও শ্রীপুর উপজেলা নিয়ে বিস্তৃত। এর মোট আয়তন ৫০২২ হেঃ। এটি ঢাকা বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগের অধীনে পরিচালিত হয়। রাজধানী শহরের অতি নিকটবর্তী হওয়ায় উদ্যানটিতে প্রচুর দর্শনাধীর চাপ লক্ষ করা যায়। বিশেষত শুস্ক মৌসুমে (নভেম্বর-ফেব্রুয়ারী) প্রচুর লোক এখানে পিকনিক করতে আসে। সরকারী তথ্য মতে প্রতি বছর প্রায় ৩,৭৫,০০০ দর্শনার্থী এখানে আসেন।
এ বনের উপর প্রায় ৫,০০০ এর ও বেশী লোক তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য নির্ভরশীল। এটি একটি ক্রান্তিয়, আদ্র পর্ণমোচী বৃক্ষের বন। এখানকার মুল প্রজাতি হলো শাল। মুল কর্তিত গাছ থেকে পুনরায় গজানোর গুন থাকায় এগুলোকে গজারী বন ও বলা হয়। এখানকার বর্তমান শাল বন মূলত দ্বিতীয় পর্যায়ভূক্ত শালবন। যা কপিছ থেকে উৎপন্ন। এ বনে প্রায়ই ১০ প্রজাতরি স্তন্যপায়ী প্রাণী ৬ প্রজাতির উভচর, ৯ প্রজাতির সরিস্প এবং ৩৯ প্রজাতির পাখি দেখা যায়। বন্যপ্রাণীর মধ্যে গন্ধগোকুল, গেকশিয়াল, বাঘদাস, খরগোস, সজারু, বেজী ইত্যাদি উল্লেখ যোগ্য। গুইসাপ, অজগর, কচ্ছপ ইত্যাদি প্রধান সরিসৃপ। এখানে প্রায় ২২০ প্রজাতির গাছ দেখা যায়।
শান্তির রাজ্য ভাওয়ালের বনভূমি
ঢাকা শহর থেকে যে কয়েকটি জেলা অতি নিকটে তার মধ্যে গাজীপুর জেলা অন্যতম। এই গাজীপুর জেলাতেই ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক অবস্থিত। গাছে গাছে ঢাকা এ উদ্যানের প্রতিটি জায়গাই নজরকাড়া। সারি সারি বৃক্ষের মাঝে পায়ে চলা পথ। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে বিশ্রামের জন্য আছে বেঞ্চ কিংবা ছাউনি। বনের মাঝে কোথাও কোথাও চোখে পড়বে ধানক্ষেত। কোথাও আবার পুকুর কিংবা ছোট আকারের লেক।একসময় ভাওয়াল উদ্যানে পাওয়া যেত ব্লাক প্যান্থার, চিতা বাঘ, ময়ূর, হাতি। এসব এখন ইতিহাস। ক্রমাগত বন উজাড়ের ফলে দিনে দিনে এর পরিধি কমে আসায় এ বন থেকে বিলুপ্ত হয়েছে নানান বন্যপ্রাণী।
বাংলাদেশ সরকার এ বনকে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয় স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে। পৃথিবীর অন্যান্য জাতীয় উদ্যানের আদলে ৫০২২ হেক্টর জমিতে ১৯৭৩ সালে এ উদ্যান সরকারিভাবে গড়ে তোলা হয়। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের মূল উদ্ভিদ হলো শাল। প্রায় ২২০ প্রজাতির গাছপালা আছে এ বনে। এর মধ্যে ৪৩ প্রজাতির বিভিন্ন রকম গাছ, ১৯ প্রজাতির গুল্ম, ৩ প্রজাতির পাম, ২৭ প্রজাতির ঘাস, ২৪ প্রজাতির লতা, ১০৪ প্রজাতির ঔষধি গাছ। জীব বৈচিত্র্যেরও কমতি নেই এ বনে। প্রায় ১৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৯ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫ প্রজাতির পাখি ও ৫ প্রজাতির উভচর প্রাণীও রয়েছে এ বনে।
শান্তির রাজ্য ভাওয়ালের বনভূমি। রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার উত্তরে গাজীপুর জেলার গাজীপুর সদর ও শ্রীপুর উপজেলায় এই অপরূপ বৃক্ষরাজ্যের অবস্থান। লাল মাটির উর্বর ভূমিতে সেই সহস্র বছর আগেই এখানে জমে উঠেছিল বৃক্ষের আখড়া, হয়তো তখনো উদিত হয়নি ধূলিমাখা শহরের সভ্যতার সূর্য।ভাওয়ালের বনভূমির প্রধান বৃক্ষ গজারি, এ কারণে একে ভাওয়ালের গজারির গড়ও বলা হয়। দেশে যে কয়টি বৃহৎ প্রাকৃতিক বনভূমি রয়েছে তার মধ্যে মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় অন্যতম। ঐতিহ্য, সৌন্দর্যে ভাওয়াল গড়ের তুলনা হয় না। আকর্ষণীয় সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্রের কারণে ক্রমেই ভাওয়ালের গড় পরিণত হতে থাকে পর্যটকদের পছন্দের কেন্দ্রবিন্দুতে।
তাই পর্যটকদের আগ্রহ আরো বাড়াতে এবং এর জীববৈচিত্র্য রক্ষার্থে ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু প্রথম ভাওয়ালের গড়কে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা দেন। উদ্যান ঘোষণার পর থেকে এর প্রতি সরকারের নজর অনেক বেড়ে যায়। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন-(১৯৭৪) অনুযায়ী পাঁচ হাজার ২২ হেক্টর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এই উদ্যান ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক (Bhawal National Park) গড়ে তোলা হয়।
বাংলাদেশের আকর্ষণীয় একটি পর্যটন কেন্দ্র
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান মূলত ক্রান্তীয় পতনশীল পত্রযুক্ত বৃক্ষের বনভূমি। এ বনে শালগাছের আধিক্য রয়েছে। গজারি বনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে শীতকালে এই বৃক্ষের পাতা ঝরে যায়, গ্রীষ্মকালে আবার নতুন পাতা গজায়। সেই হিসেবে বর্ষার এই সময়ে পুরো বন এখন ঘন সবুজ। প্রাণীবৈচিত্র্যের দিক দিয়ে এই উদ্যান অনন্য। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে একসময় বাঘ, কালো চিতা, চিতাবাঘ, মেঘাবাঘ, হাতি, ময়ূর, মায়া হরিণ ও সম্বর হরিণ দেখা যেত।
সময়ের পরিক্রমায় সেসব এখন আর তেমনটা নেই। তবে খেকশিয়াল, বাগদাস, বেজি, কাঠবিড়ালী, গুঁইসাপ আর কয়েক প্রজাতির সাপের দেখা মেলে এখনো। এ উদ্যানে গড়ে প্রায় ৬৪ প্রজাতির প্রাণী রয়েছে, যার মধ্যে ছয় প্রজাতির স্তন্যপায়ী, নয় প্রজাতির সরীসৃপ, ১০ প্রজাতির উভচর ও ৩৯ প্রজাতির পাখি রয়েছে।
বন বিভাগ এই বনে অজগর, ময়ূর, হরিণ ও মেছোবাঘ ছেড়েছে। বনে হাঁটার সময় দেখা মেলবে স্ট্রুর্ক বিলড কিংফিশার বা মেঘ হু, মাছরাঙ্গা, খয়রা গেছো পেঁচা, কাঠ ময়ূর, বন মোরগ, মুরগি। দেখা মিলবে বানর ও মুখপোড়া হনুমানেরও। এত সব প্রাণী একসাথে দেখে আপনি মুগ্ধ না হয়ে পারবেন না। এক মুহূর্তের জন্য হলেও ইচ্ছে জাগবে ‘ইশ! যদি ঘর বাঁধতে পারতাম এই পাখিদের সাথে, এই ঘন সবুজের মাঝে, তাহলে হয়তোবা জীবনটা সত্যিকারের স্বার্থক হতো।’
বৃক্ষের পত্র পল্লব শোভীত সবুজের রাজ্য
উদ্ভিদ বৈচিত্র্যের দিক দিয়েও এ বন বিশেষভাবে আলোচিত। । এ বনে ২২১ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে যার মধ্যে ২৪ প্রজাতির লতা, ২৭ প্রজাতির তৃণ, তিন প্রজাতির পাম জাতীয় বৃক্ষ, ১০৫ প্রজাতির ঔষধি, ১৯ প্রজাতির গুল্ম, ৪৩ প্রজাতির বৃক্ষ। শাল এ উদ্যানের প্রধান বৃক্ষ। নানা গাছপালায় সমৃদ্ধ জাতীয় এ উদ্যান। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো শাল, বহেড়া, আমলকি, হলুদ, আমড়া, জিগা, ভাদি, অশ্বত্থ, বট, সর্পগন্ধা, শতমূলী, জায়না, বিধা, হারগোজা, বেহুলা ইত্যাদি। এ ছাড়া নানান প্রজাতির লতাগুল্ম আছে এ বনে। অন্যান্য বৃক্ষের মধ্যে কাঁঠাল, আজুলি, কুম্ভী, গান্ধী গজারি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। কৃত্রিমভাবে ইউক্যালিপটাস আর রাবারের বনায়ন করা হয়েছে এখানে।
ঢাকা থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের আকর্ষণীয় একটি পর্যটন কেন্দ্র। এখানে পর্যটকদের জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি পিকনিক স্পট । স্পটগুলো হলো আনন্দ, কাঞ্চন, সোনালু, অবকাশ, অবসর, বিনোদন। দর্শনার্থীদের আরামের জন্য রয়েছে বকুল, মালঞ্চ, মাধবী, চামেলী, বেলী, জুঁই নামের চমৎকার ও মনোরম কটেজ। এখানে ১৩টি কটেজ ও ছয়টি রেস্টহাউস রয়েছে।
পিকনিক স্পট কিংবা রেস্ট হাউস ব্যবহার করতে হলে বন বিভাগের মহাখালী কার্যালয় থেকে আগাম বুকিং দিয়ে আসতে হয়। ঢাকার একেবারে কাছে হওয়ায় এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় প্রতিবছর প্রায় ১৫ লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটক এখানে বেড়াতে আসেন।
পিকনিক বা পারিবারিকভাবে দলবদ্ধ ভ্রমণের জন্য ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানটি একটি সুন্দরতম স্থান। সবুজেঘেরা কোলাহলমুক্ত বনানী পরিবেশের জন্য এ উদ্যান বিখ্যাত। এই জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে অসংখ্য জলাশয়। এসব জলাশয়ে শৌখিন পর্যটকরাও নৌকায় করে বেড়াতে পারেন। এ ছাড়া বনভোজনের সেরা আকর্ষণ হচ্ছে এই ভাওয়ালের ন্যাশনাল পার্কটি।তা ছাড়া পুরো বনের সৌন্দর্য এক সাথে দেখার জন্য রয়েছে একাধিক সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার, যেখানে দাঁড়িয়ে আপনি চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন হাজার হাজার বৃক্ষের পত্র পল্লব শোভীত সবুজের রাজ্যে।
এখানে বন বিভাগের বেশ কয়েকটি পিকনিক স্পট ও রেষ্ট হাউস রয়েছে। বন বিভাগের পূর্ব অনুমতি সাপেক্ষে এসব রেষ্ট হাউস দিনের বেলায় ব্যবহার করা যায়। শুস্ক মৌসুমে পিকনিক করতে চাইলে বেশ আগে থেকেই বুকিং দিতে হয়। ঢাকা থেকে এ জাতীয় উদ্যানে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ রয়েছে। উদ্যানটি ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের সাথেই অবস্থিত। ঢাকার মহাখালী হতে ময়মনসিংহ অভিমুখে যেকোন বাসে এ উদ্যানে যাওয়া যায়। এছাড়া ভাড়া করা গাড়ী নিয়ে সরাসরি যাওয়া যায়।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা জুড়ে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের অবস্থান। ঢাকা থেকে মাত্র চল্লিশ কিলোমিটারের পথ। সঠিক ভাবে হিসাব করলে মূল উদ্যানটি মূলত ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের পাশে ৯৪০ হেক্টর জমির উপর অবস্থিত।গাজীপুর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে এই উদ্যানটিতে ঢাকা থেকে যেতে সময় লাগে মাত্র দুই ঘন্টা। ময়মনসিংহগামী যেকোনো বাসেই এখানে আসা যায়। উদ্যানে প্রবেশের জন্য আপনাকে গুনতে হবে মাত্র ১০ টাকা। তবে গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করলে তার জন্য আলাদাভাবে নির্দিষ্ট অংক পরিশোধ করতে হয়।
ঢাকার গাড়ি ঘোড়া দেখে দেখে যদি একটু ক্লান্ত হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে জাতীয় উদ্যানে আছে ঘন বন আর ঝোপ জঙ্গল। শাল বা গজারি, এই উদ্যানের প্রধান বৃক্ষ। এসব ছাড়াও ২২০ প্রজাতির গাছপালা আছে এখানে। বনের ভেতর দিয়ে ঘুরে বেড়ানোর জন্য আছে রাস্তা ও হাইকিং ট্রেইল যেখানে নিরিবিলি নিজের মত করে হেঁটে দেখতে পাবেন একেকটি গাছ। ১৯৭৪ সাল থেকে কার্যক্রম শুরু হলেও, আনুষ্ঠানিক ভাবে ১৯৮২ সালে জাতীয় উদ্যান হিসেবে এটি স্বীকৃতি পায়। জলে ভাসা পদ্ম দেখতে ছুটে যেতে পারেন এইখানে। উদ্যানের বিশালাকার কয়েকটি লেক, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পদ্মপুকুর। এই লেকটিতে পদ্মফুলের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য হৃদয়কাড়া। সেই সাথে অরণ্যের গাঢ় সবুজে জলের সমাহার এই উদ্যানের সৌন্দর্যকে করেছে অনন্য।
নয়নাভিরাম সৌন্দর্য হৃদয়কাড়া
লেকগুলোতে নৌকায় ঘুরতে পারবেন, আবার ইচ্ছে করলে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতেও পারবেন। সেই ব্যবস্থাও আছে, যদিও সেজন্য একটি নির্দিষ্ট অংকের অর্থ গুনতে হবে আপনাকে। ভাওয়াল বনে একসময় ছিল বাঘ, চিতা, কালোচিতা, হাতি, মেছোবাঘ, ময়ূরসহ নানা বন্যপ্রাণীদের মেলা। কালের বিবর্তনে এখন এ প্রাণীগুলোর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। বিলীন হয়ে গেছে গহীন বনের অস্তিত্বও। তবে এখনো এই বনে দেখা মেলে অল্প কিছু হরিণ, বানর, বন্যশুকর, শজারু, বনবিড়াল, কাঠবিড়ালী সহ প্রায় ১৩২ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর। যার মধ্যে ১৮ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৯ প্রজাতির সরীসৃপ, ৮৪ প্রজাতির পাখি ও ১১ প্রজাতির উভচর প্রাণী রয়েছে। এই উদ্যানের মূল বৃক্ষ শাল হলেও এখানে শনাক্ত করা হয়েছে ৫২টি পরিবার ও ১৪৭টি গোত্রের ৩৫৬ প্রজাতির উদ্ভিদ। এর মধ্যে জিগা, অর্জুন, আলই, মেহগনি, আকাশমনি, কড়ই, কাঠাল, আমলকি, হরিতকি, বহেরা ইত্যাদি বেশি পরিমাণে লক্ষ্য করা যায়। বর্তমানের শালগাছগুলো রোপন করা হয়নি।
ঘুরতে আসা সকলের জন্য আরও আছে, প্রজাপতি বাগান, যেখানে দেখতে পারবেন নানা প্রজাতির রঙ বেরঙের প্রজাপতি! দু-একটা প্রজাপতি যদি আপনার কাঁধে নাই বসে, তাহলে এই ট্যুর যেন বৃথা! শুধু প্রজাপতি দেখেই কিন্তু শেষ নয়। আছে কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্র যেখানে দেখা মিলবে সব বয়সী কচ্ছপদের। সাথে আছে মিনি এক চিড়িয়াখানা। সমস্ত উদ্যানটা এক সাথে এক সময়ে দেখতে চাইলে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান সাধারণত খোলা থাকে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। উদ্যানে প্রবেশ করতে আপনাকে দিতে হবে মাত্র ১০ টাকা। সাথে পাচ্ছেন নিরাপদে গাড়ি রাখার সুবিধা।
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান ( Bhawal National Park ) বাংলাদেশের গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায় অবস্থিত একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এটি ভাওয়াল গড় নামেও পরিচিত। এটি ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এটি প্রায় ৫,০২২ হেক্টর (১২,৪০৯ একর) এলাকা জুড়ে রয়েছে। উদ্যানটি তার সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্যের জন্য পরিচিত এবং এটি বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতির আবাসস্থল।যদিও ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কিন্তু তারপরেও ১৯৮২ সালের আগে এটি জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষিত হয়নি।
নগর জীবনের সকল ক্লান্তি ভুলে পরিবার-পরিজন নিয়ে বনভোজন বা শুধুই ঘোরাঘুরির জন্য গাজীপুরের ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক হতে পারে আপনার জন্য আদর্শ স্থান। সবুজ সৌন্দর্যে দারুণ একটা দিন কাটাতে চলে আসুন এই উদ্যানে।গাজীপুর জেলা সদর ও শ্রীপুর থানা জুড়ে এ পার্কের বিস্তৃতি। বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন (১৯৭৪) অনুযায়ী ৫,০২২ হেক্টর জায়গাজুড়ে পৃথিবীর অন্যান্য উন্নত দেশের আদলে নিরিবিলি পরিবেশে ভাওয়াল শালবনে এই উদ্যান গড়ে তোলে এবং ১৯৮২ সালে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষিত হয়।
প্রাণিবৈচিত্র্য
একসময়ে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে বাঘ, কালো চিতা, চিতাবাঘ, মেঘলা চিতাবাঘ, হাতি, ময়ূর, মায়া হরিণ এবং সাম্বার হরিণ ছিল। খেকশিয়াল, গন্ধগোকুল, বেজি, কাঠবিড়ালি, গুই সাপ এবং আরও অনেক প্রজাতির সাপ এই উদ্যানে ১৯৮৫ সালে পরিলক্ষিত হয়েছিল। একটি পর্যবেক্ষন অনুসারে, ভাওয়াল ন্যাশনাল উদ্যানে গড়ে ৬৪ প্রজাতির প্রানির বাসস্থান রয়েছে, যার মধ্যে ৩৯ টি প্রজাতির পাখি , ৯ টি সরীসৃপ প্রজাতি, ৬ টি স্তন্যপায়ী প্রজাতি রয়েছে। এবং ৯ টি উভচর প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। এক তথ্য অনুসারে বনবিভাগ এই বনভূমিতে অজগর, ময়ূর, হরিণ এবং মেছোবাঘ ছেড়েছে। তাছাড়া ২০১২ সালে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে ১৬ টি অতিরিক্ত তক্ষক ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।প্রায় ১৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৯ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫ প্রজাতির পাখি ও ৫ প্রজাতির উভচর প্রাণী দেখতে পাবেন এ বনে।
উদ্ভিদবৈচিত্র্য
গাছে গাছে ঢাকা এই উদ্যানের প্রতিটি জায়গাই নজর কাড়া। সাড়ি সাড়ি বৃক্ষের মাঝে পায়ে চলা পথ। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে বিশ্রামের জন্য আছে আসন কিংবা ছাউনি। বনের মাঝে কোথাও কোথাও চোখে পড়বে ধানের ক্ষেত। কোথাও আবার দেখতে পাবেন পুকুর কিংবা লেক।প্রায় ২২০ প্রজাতির গাছপালা আছে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে। এর মধ্যে ৪৩ প্রজাতির বিভিন্ন রকম গাছ, ১৯ প্রজাতির গুল্ম, ৩ প্রজাতির পাম, ২৭ প্রজাতির ঘাস, ২৪ প্রজাতির লতা, ১০৪ প্রজাতির ঔষধি গাছ। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের গাছপালা প্রধানত গ্রীষ্মমন্ডলীয় আধা-চিরসবুজ বন, মিশ্র পর্ণমোচী বন এবং তৃণভূমি নিয়ে গঠিত। এটি টিরও বেশি প্রজাতির উদ্ভিদের আবাসস্থল, যার মধ্যে অনেক বিরল এবং বিপন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। শাল গাছ এই বনের প্রধান বৃক্ষ। শাল গাছ ছাড়াও অন্যান্য গাছ ও রয়েছে এই বনে। এ ছাড়া ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্কে ইউক্যালিপটাস এবং রাবারের কৃত্রিম ভাবে আলাদা বনায়ন ও করা হয়েছে।
যা দেখতে পাবেন
গাছে গাছে ঢাকা এ উদ্যানের প্রতিটি জায়গাই নজরকাড়া। সারি সারি বৃক্ষের মাঝে পায়ে চলা পথ। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে বিশ্রামের জন্য আছে বেঞ্চ কিংবা ছাউনি। বনের মাঝে কোথাও কোথাও চোখে পড়বে ধানক্ষেত। কোথাও আবার পুকুর কিংবা ছোট আকারের লেক।এ ছাড়া ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ভেতরে আছে বেশ কয়েকটি বনভোজন কেন্দ্র। এগুলোর নামও বেশ মজার। আনন্দ, কাঞ্চন, সোনালু, অবকাশ, অবসর, বিনোদন আরো কত বাহারি নামের বনভোজন কেন্দ্র । এখানকার কটেজগুলোও বাহারি নামের। বকুল, মালঞ্চ, মাধবি, চামেলী, বেলী, জুঁই ইত্যাদি। নামের মতো এগুলোর পরিবেশও ভিন্ন আমেজের। পিকনিক স্পট কিংবা রেস্ট হাউস ব্যবহার করতে হলে বন বিভাগের মহাখালী কার্যালয় থেকে আগাম বুকিং দিয়ে আসতে হয়।
প্রধান আকর্ষণ
একসময় ভাওয়াল উদ্যানে পাওয়া যেত ব্লাক প্যান্থার, চিতা বাঘ, ময়ূর, হাতি। এসব এখন ইতিহাস। ক্রমাগত বন উজাড়ের ফলে দিনে দিনে এর পরিধি কমে আসায় এ বন থেকে বিলুপ্ত হয়েছে নানান বন্যপ্রাণী। তবে বাংলাদেশ সরকার এ বনকে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয় স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে। পৃথিবীর অন্যান্য জাতীয় উদ্যানের আদলে ৫০২২ হেক্টর জমিতে ১৯৭৩ সালে এ উদ্যান সরকারিভাবে গড়ে তোলা হয়। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের মূল উদ্ভিদ হলো শাল। প্রায় ২২০ প্রজাতির গাছপালা আছে এ বনে। এর মধ্যে ৪৩ প্রজাতির বিভিন্ন রকম গাছ, ১৯ প্রজাতির গুল্ম, ৩ প্রজাতির পাম, ২৭ প্রজাতির ঘাস, ২৪ প্রজাতির লতা, ১০৪ প্রজাতির ঔষধি গাছ।
আরও দেখতে পারেন
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান বেড়িয়ে হাতে সময় থাকলে দেখে আসতে পারেন ভাওয়াল রাজবাড়ি। গাজীপুর সদরে অবস্থিত প্রাচীন এ রাজবাড়িটি। জমিদার লোক নারায়ণ রায় বাড়িটির নির্মাণ শুরু করলেও শেষ করেন রাজা কালী নারায়ণ রায়। প্রায় পনের একর জায়গাজুড়ে মূল ভবনটি বিস্তৃত। ভবনটির দক্ষিণ পাশে মূল প্রবেশপথ। মূল প্রবেশপথের পরেই রয়েছে প্রশস্ত একটি বারান্দা এবং এর পরে একটি হল ঘর। ভবনের ওপরের তলায় ওঠার জন্য ছিল শাল কাঠের তৈরি প্রশস্ত সিঁড়ি। ভবনের উত্তর প্রান্তে খোলা জায়গায় রয়েছে নাটমণ্ডপ। রাজবাড়ির সব অনুষ্ঠান হতো এ মঞ্চে। রাজবাড়ির মধ্যে পশ্চিমাংশের দ্বিতল ভবনের নাম রাজবিলাস। এ ভবনের নিচে রাজার বিশ্রামাগারের নাম ছিল হাওয়ামহল। দক্ষিণ দিকে খোলা খিলান যুক্ত উন্মুক্ত কক্ষের নাম পদ্মনাভি। ভবনের দোতলার মধ্যবর্তী একটি কক্ষ ছিল রাণীমহল নামে পরিচিতি। সুরম্য এ ভবনটিতে ছোট-বড় মিলে প্রায় ৩৬০টি কক্ষ আছে। বর্তমানে এটি জেলাপরিষদ কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ভাওয়াল রাজবাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার উত্তরে মৃতপ্রায় চিলাই নদীর দক্ষিণ তীরে অবস্থিত ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী। এটি ছিল ভাওয়াল রাজ পরিবারের সদস্যদের শবদাহের স্থান। প্রাচীন একটি মন্দির ছাড়াও এখানে একটি সমাধিসৌধ রয়েছে।
প্রবেশ মূল্য
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে প্রবেশের টিকিট মূল্য নিম্মরূপ : ১ প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য = ১০ টাকা ,২ ছাত্র / ছাত্রীদের জন্য = ৫ টাকা ,৩ অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য = ৪ টাকা এ উদ্যানের প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ১০ টাকা। প্রাইভেট কার কিংবা মাইক্রোবাস নিয়ে প্রবেশ করতে লাগবে ৬০ টাকা আর বাসের জন্য প্রবেশমূল্য ২০০ টাকা।
যোগাযোগ
বিভাগীয় বন কর্মকতার কার্যালয় । বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, বনভবন (৫তলা),মহাখালী । ঢাকা-১২১২, ফোন : ০২-৯৮৯৯৪৯৭ । ই-মেইল- wildlifedhaka@yahoo.com । Web : National Park ।Web : B Forest । Facebook:- Wildlife Management and Nature Conservation Division, Dhaka রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়, ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, রাজেন্দ্রপুর, গাজীপুর
ভাওয়াল গড়ে কিভাবে যাবেন
গাজীপুর সদর থেকে ভাওয়াল গজারী বন বা ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের মধ্যে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরত্ব। জয়দেবপুর চৌরাস্তা পেরিয়ে কিছু দূর এগোলে ডান পাশে ভাওয়াল গড়ের প্রধান প্রবেশদ্বার দেখা যাবে। আপনি ঢাকা থেকে নিজের গাড়িতে বা বাসে মহাখালী, বিমানবন্দর, অথবা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক হয়ে রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা হয়ে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে যেতে পারবেন।
গাড়ি বা ট্যাক্সি দ্বারা: ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে যাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হল ঢাকা থেকে গাড়ি বা ট্যাক্সি। ট্রাফিক অবস্থার উপর নির্ভর করে যাত্রায় প্রায় 1-2 ঘন্টা সময় লাগে। আপনি ঢাকা থেকে ট্যাক্সি ভাড়া করতে পারেন বা গাড়ি ভাড়া করতে পারেন, অথবা উবার বা পাঠাও-এর মতো রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন।
বাসে: ঢাকা ও গাজীপুরের মধ্যে বেশ কয়েকটি বাস চলাচল করে। আপনি ঢাকার যেকোন প্রধান বাস টার্মিনাল যেমন গাবতলী বা মহাখালী থেকে বাসে উঠতে পারেন এবং গাজীপুর বাসস্ট্যান্ডে নামতে পারেন। সেখান থেকে রিকশা বা অটোরিকশায় করে পার্কে যাওয়া যায়। ট্রেনে: আপনি ঢাকা থেকে জয়দেবপুর স্টেশনে ট্রেনে যেতে পারেন, যা ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের নিকটতম স্টেশন। জয়দেবপুর থেকে বাস বা ট্যাক্সি নিয়ে পার্কে যাওয়া যায়।
দেশের যেকোনো অঞ্চল থেকে আপনি ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান আসতে পারেন সহজেই। রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে ও গাজীপুর সদর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে জয়দেবপুরে ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্কটি অবস্থিত।ঢাকা ময়মনসিংহ সড়কের পাশে এ পার্ক অবস্থিত হওয়ায় অতি সহজে এবং ঢাকা থেকে অল্প সময়ে ঘুরে আসতে পারেন।
ঢাকা থেকে ময়মনসিংহগামী যেকোনো বাসে চড়ে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ফটকের সামনেই নামা যায়। এ ছাড়া ঢাকার গুলিস্তান থেকে প্রভাতী বনশ্রী পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি বাস এ পথে। ভাড়া ৫০-৬০ টাকা।তা ছাড়া আসতে পারেন নিজস্ব গাড়িতেও। এ ক্ষেত্রে জয়দেবপুর চৌরাস্তা ছাড়িয়ে অল্প কিছু দূর গেলে হাতের ডানে পেয়ে যাবেন প্রধান প্রবেশপথ, তারপর সরাসরি গহিন অরণ্যে!
ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ গামী যেকোনো বাসে চড়ে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ফটকের সামনেই নামা যায়। এ ছাড়া ঢাকার গুলিস্তান থেকে প্রভাতী বনশ্রী পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি বাস চলে এ পথে। ভাড়া ৫০-৬০ টাকা। নিজস্ব গাড়িতে গেলে জয়দেবপুর চৌরাস্তা ছাড়িয়ে অল্প কিছু দূর গেলে হাতের ডানে পড়বে এর প্রধান প্রবেশপথ।
ঢাকা থেকে চল্লিশ কিলোমিটার দূরে ও গাজীপুর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে ন্যাশনাল পার্কটি অবস্থিত।ঢাকার গুলিস্তান থেকে প্রভাতী বনশ্রী পরিবহনসহময়মনসিংহগামী যেকোনো বাসে চড়ে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ফটকের সামনেই নামা যায়। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ৬ টাকা। প্রাইভেট কার কিংবা মাইক্রোবাস নিয়ে প্রবেশ করতে লাগবে ৩০ টাকা আর মিনি বাসের জন্য প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা।
ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক এর কোথায় থাকবেন
এছাড়া ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ভেতরে আছে ১৯টি বিশ্রামাগার ও কটেজ। এগুলোর নামও বেশ চমৎকার। পিকনিক স্পট কিংবা রেস্ট হাউস ব্যবহার করতে হলে বন বিভাগের মহাখালী কার্যালয় থেকে আগাম বুকিং দিয়ে আসতে হবে আপনাকে।এখানে পর্যটকদের জন্য বৃদ্ধি করা হয় যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা এবং নিরাপত্তা। এক কথায় বনকে ঘিরে গড়ে তোলা হয় মনোরম পিকনিক স্পট, তথা একটি অত্যাধুনিক রিসোর্ট। এর ফলে সুযোগ হয়েছে বনের ভেতর ঘুরে বন্যপ্রাণী দেখার এবং বনের ভেতর রাত কাটানোর অভিজ্ঞতা অর্জনের।
যেহেতু ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক ঢাকার খুবই কাছে অবস্থিত তাই আপনি চাইলে একদিনের মধ্যেই ঘুড়ে নিজের বাসায় চলে যেতে পারবেন। এছাড়া আপনি যদি চান আপনি পার্কের ভেতর রাত্র যাপন করবেন তাহলে আপনার জন্য দুঃসংবাদ। কারন রাতে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে রাতে থাকার অনুমতি নেই। তারপরেও আপনি যদি আশে পাশে কোথাও রাত্রিযাপন করতে চান তাহলে পার্কের আশে পাশে জল ও জঙ্গলের কাব্য , নক্ষত্রবাড়ি , স্প্রিং ভ্যালি , সোহাগ পল্লির মত বেশ ভালো ভালো কিছু রিসোর্ট রয়েছে। তবে আপনি যদি রিসোর্টে থাকতে চান তাহলে অবশ্যই আগে থেকে বুকিং দিয়ে আসবেন। এছাড়াও গাজীপুরে আরো অসংখ্য হোটেল রয়েছে যেখানে চাইলে আপনি রাত্রিযাপন করতে পারেন।গাজীপুর জেলার যে কোন আবাসিক হোটেলে রাত্র যাপন করা যাবে। একটু খোঁজ-খবর নিলেই পাওয়া যাবে আবাসিক হোটেলের ঠিকানা।
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে কোথায় খাবেন
ভাওয়াল গড়ের ভেতরে বেশ কয়েকটি খাবারের স্টল এবং বিক্রেতা রয়েছে, যেখানে স্থানীয় খাবার যেমন সমুচা, ঝালমুড়ি এবং ফুচকা পরিবেশন করা হয়। এ ছাড়া আপনি যদি অনুমতি নিয়ে যান তাহলে সেখানে রান্নাবান্না করেও খাওয়া দাওয়া করতে পারেন। এবং ভাওয়াল গড়ের বাইরে বেশ ভালো মানের হোতেল রয়েছে আপনারা চাইলে সেখানেও খাওয়া দাওয়া করতে পারেন।
ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্কে কি কি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত
গ্রুপ করে ভাওয়াল গড়ে ঘুড়তে যাবেন ।পশুর খাঁচার নিরাপত্তা বেষ্টনীতে প্রবেশ করবেন না। ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত পোশাক পরুন এবং হাঁটার জুতা পরিধান করুন। সিকিউরিটি এলাকার বাইরে যাবেন না। বিপদে পরতে পারেন। কোনো প্রকার বন্যপ্রাণীকে হয়রানি, হত্যা বা ধরা যাবে না। বন্যপ্রাণীকে কখনই কোনো ধরনের খাবার দেবেন না। কখনও পশুদের দিকে খোঁচা বা পাথর নিক্ষেপ করবেন না।
আশে পাশের দর্শনীয় স্থান
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান ঘুড়ে আসার পর আপনার কাছে যদি পর্যাপ্ত সময় থাকে তাহলে আপনি বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক , রাজেন্দ্র ইকোপার্ক এবং জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের নুহাশ পল্লীও ভ্রমন করে আসতে পারেন।
ভ্রমন টিপস ও সতর্কতা
সময়ের সাথে সাথে হোটেল, রিসোর্ট, গাড়ি ভাড়া এবং অন্যান্য পরিষেবার মূল্য পরিবর্তনের কারণে ভ্রমণ একাডেমীতে দেওয়া তথ্য সঠিক নাও হতে পারে। অতএব, ভ্রমণের পরিকল্পনা করার আগে অনুগ্রহ করে সাম্প্রতিক ভাড়া এবং খরচের তথ্য সম্পর্কে সচেতন হোন। এছাড়াও বিভিন্ন ট্রাস্টেড মিডিয়া থেকে আপনার সুবিধার জন্য, হোটেল, রিসর্ট, গাড়ি এবং যোগাযোগের অন্যান্য উপায়গুলির জন্য মোবাইল নাম্বার গুলি ও প্রদান করা হয়েছে৷ এই মোবাইল নাম্বার গুলো ব্যবহার করার আগে সমস্ত আর্থিক লেনদেন অবশ্যই যাচাই করা উচিত। ভ্রমণ একাডেমী কোনো সমস্যা বা আর্থিক ক্ষতির জন্য দায়ী নয়।
দুই একজন এখানে বেড়াতে গেলে উদ্যানের বেশি গহিনে না যাওয়াই ভালো। একাকী গেলে ছিনতাইকারীর কবলে পড়তে পারেন। জঙ্গলে ভ্রমণের সময় অবশ্যই আরামদায়ক কাপড় ও জুতো পরবেন, সাথে রাখবেন রোদ চশমা, টুপি ও পানির বোতল। বর্ষায় ভ্রমণে এলে সাথে রাখবেন রেইনকোট। দূরের পাখি দেখতে আনতে পারেন দূরবীন। জোঁক কিংবা কিটপতঙ্গ আপনার আনন্দের মধ্যে নুন ছিটাতে পারে। তাই প্যান্ট অবশ্যই গুজে নিন মুজোর ভেতর আর সাথে রাখুন পতঙ্গনাশক ক্রিম। বনের ভেতর একা না যাওয়াই শ্রেয়। পশু পাখি বিরক্ত হয় এমন শব্দ ও কোলাহল করা থেকে আপনাকে বিরত থাকতে হবে এবং পলিথিন, ক্যান, প্লাস্টিকের বোতল ফেলে কোনোভাবেই বনকে ময়লা করবেন না এবং ধূমপানও করবেন না। অতঃপর, আপনার ভ্রমণ হোক আনন্দময় সেই কামনাই রইল।
গাজীপুর সদরে অবস্থিত প্রাচীন এ রাজবাড়ি। গড় দেখে হাতে সময় থাকলে ঘুরে আসতে পারেন সেখানেও। জমিদার লোক নারায়ণ রায় বাড়িটির নির্মাণ শুরু করলেও শেষ করেন রাজা কালী নারায়ণ রায়। প্রায় পনের একর জায়গাজুড়ে মূল ভবনটি বিস্তৃত। ভবনটির দক্ষিণ পাশে মূল প্রবেশপথ। মূল প্রবেশপথের পরই রয়েছে প্রশস্ত একটি বারান্দা এবং এর পরে একটি হল ঘর।
ভবনের ওপরের তলায় ওঠার জন্য ছিল শাল কাঠের তৈরি প্রশস্ত সিঁড়ি। ভবনের উত্তর প্রান্তে খোলা জায়গায় রয়েছে নাটমণ্ডপ। রাজবাড়ির সব অনুষ্ঠান হতো এ মঞ্চে। রাজবাড়ির মধ্যে পশ্চিমাংশের দ্বিতল ভবনের নাম রাজবিলাস। এ ভবনের নিচে রাজার বিশ্রামাগারের নাম ছিল হাওয়ামহল। দক্ষিণ দিকে খোলা খিলান যুক্ত উন্মুক্ত কক্ষের নাম পদ্মনাভি। ভবনের দোতলার মধ্যবর্তী একটি কক্ষ ছিল রাণীমহল নামে পরিচিত। সুরম্য এ ভবনে ছোট-বড় মিলে প্রায় ৩৬০টি কক্ষ আছে।
তথ্যসুত্র
গাজীপুর জেলাতেই ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক, Cholojaai.Net
গাজীপুরের ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক, Gazipurkotha
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, Sadar.Gazipur.Gov.Bd
শান্তির রাজ্য ভাওয়ালের বনভূমি, Bangla.Tourtoday
ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক, Vromona Academey
কোথায় এই ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, Bproperty
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, Bforest.Gov.Bd