কক্সবাজারে শিল্প ও বাণিজ্য মেলা (Cox's Bazar Trade Fair)


পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত, প্রাণ প্রকৃতি, সুউচ্চ পাহাড়, পাহাড়ীঝর্ণা, সমুদ্রের নীলাজল, ইট পাথরের অট্রালিকা, পিচঢালা নান্দনিক মেরিন ড্রাইভ সড়ক, অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অসংখ্য প্রাচীন বৌদ্ধমূর্তি, হাজার বছরের পুরনো দেবাদিদেব মহাদেবের পুর্ন্যভূমি মৈনাক পর্বত চূড়ায় অবস্থিত আদিনাথ মন্দির, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, পাথুরে বীচ ইনানী,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারীপার্কসহ অসংখ্য পর্যটন বিনোদন কেন্দ্র দেশী বিদেশি পর্যটকের বিমোহিত করছে। কি নেই এখানে? এসব কিছু দেখতে ও প্রকৃতিকে কাছে থেকে উপভোগ করতে অবিরাম ছুটে আসছে কক্সবাজারে দৈনন্দিন লাখো পর্যটক।

কেউ দলবেঁধে, কেউ একা আবার কেউ আসছে পরিবার পরিজন নিয়ে। তারপর ও রাতের কক্সবাজার থাকে নীরব নিস্তব্ধ। হোটেলের চার দেয়ালে আবদ্ধ থাকতে হয় পর্যটকদের। সেই নিস্তব্ধতার গ্যাড়াকল থেকে পর্যটকদের আনাগোনায় মূখরিত করতে প্রতিবছর প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় চেম্বার অফ কমার্সসহ একাধিক সংগঠন মিলে আয়োজনের মাধ্যমে পুরো মৌসুম জুড়ে চলে শিল্প ও বানিজ্যমেলা। রাতের কক্সবাজারকে আলোকিত করে পর্যটকসহ স্থানীয়দের বাড়তি বিনোদনের একমাত্র ঠিকানা হয়ে উঠেছে এই মেলা। তাই রাতের বিনোদনে কোনো স্থায়ী আয়োজন এখনো হয়ে ওঠেনি। নেই বিদেশিদের জন্য এক্সক্লূসিভ জোন।

পর্যটন শহর কক্সবাজারকে আরো পর্যটকবান্ধব ও অর্থনৈতিকভাব এগিয়ে নিতে বর্ণিল আয়োজনে পর্দা উঠলো কক্সবাজার শিল্প ও বাণিজ্য মেলার। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বেলুন উড়িয়ে ও ফিতা কেটে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অতিথিরা। কক্সবাজার চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি ও কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তরের লক্ষে ইতোমধ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জনে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারসহ বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। সরকারের বহুমুখী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ও অর্থনীতির দ্রæত বিকাশে কক্সবাজার শিল্পও বাণিজ্য মেলা গুরুত্বপ‚র্ণ ভ‚মিকা রাখবে।অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের নতুন নতুন ধারণা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। নতুন নতুন পণ্যের বাজার সৃষ্টি করতে হবে।তবেই বাংলাদেশকে সমৃদ্ধশালী দেশে পরিণত করা সম্ভব হবে। এই বাণিজ্য মেলা কক্সবাজারের অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

১২৭ স্টল নিয়ে কক্সবাজার শিল্প ও বানিজ্য মেলার শুরু

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম বলেন, মাসব্যাপী মেলায় হাজার হাজার পর্যটক এবং স্থানীয় দর্শনার্থীদের সমাগম হবে। বিষয়টি মাথয় রেখেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।কক্সবাজার শিল্প ও বাণিজ্য মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব সাহেদ আলী সাহেদ জানান, এবার অনেক ক্ষেত্রে মেলায় বেশ ভিন্নতা এসেছে, সেই সাথে মেলা ঘিরে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা। সিসি ক্যামেরা দ্বারা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হবে সবকিছু।

এসময় কক্সবাজার বানিজ্য মেলার জন্যে স্থায়ী একটি মাঠের দাবী জানান কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়ন ও প্রেসক্লাব সভাপতি আবু তাহের চৌধুরী।মেলার প্রবেশপথে দর্শনার্থীদের স্বাগত জানাতে নির্মাণ করা হয়েছে নান্দনিক গেইট ও মেলায় থাকছে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের ১০৫টি স্টল। থাকবে দেশীয় প্রসিদ্ধ বিভিন্ন কোম্পানীর ২২টি প্যাভিলিয়ন।

সেই সাথে বাণিজ্য মেলা ঘুরে দেখা যায় ডিজিটাল নাগরদোলা, ইলেকিট্রক নৌকা, কার বাম্পার, ওয়াটার বোট, ওয়াটার বল, ডিজিটাল ট্রেন, জাম্পিং স্লিপার, কার রেসিংসহ শিশুদের জন্য মেলায় বাড়তি বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।এবারও মেলার আয়োজক কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কক্সবাজার জেলা ইউনিট ও কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রী। ঘূর্নিঝড় হামুনে মেলার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় তাই নির্ধারিত সময়ের দুই সপ্তাহ পরে মেলার উদ্বোধন হলো।

দর্শণার্থীদের কাছে বিনোদন স্পটে পরিণত কক্সবাজার শিল্প ও বানিজ্য মেলা

বিশ্বের দীঘতর্ম সমূদ্র সৈকতসহ বিভিন পর্যটন স্পটগুলোর পাশাপাশি বাড়তি স্থান করে নিয়েছে শিল্প ও বানিজ্য মেলার বিভিন্ন প্রর্দশনী। প্রতিদিন বিকাল থেকে দর্শণার্থীদের ঢল নামে এমেলায়। দিনের বেলায় সৈকতের বালিয়াডিসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ঘুরাঘুরির পরে সন্ধ্যায় বানিজ্য মেলায় বিনোদনে মগ্ন রয়েছে স্থানীয় ও পর্যটকেরা।কক্সবাজার বানিজ্য মেলার ও সমুদ্র সৈকত, বিপণী কেন্দ্রসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকদের কোলাহলে হয়ে ওঠেছে। রাস্তা-ঘাটে সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মক যানজট। ইতোমধ্যে সৈকতসহ বানিজ্য মেলায় বিভিন্ন প্রর্দশনী দেখার জন্য স্থানীয়দের সাথে সাথে পর্যটকের সমাগম ঘটেছে।

বানিজ্য মেলায় রয়েছে শিশুদেরও বিনোদনের জন্য মেট্রো ট্রেন, রাউন দোলনা, নৌকা দোলনাসহ বিভিন্ন ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা। দেশি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের স্টল ও প্যাভিলিয়ন মিলে প্রায় ১০০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে মেলায়। এছাড়াও নাগরদোলা, স্পীড বোট, রেল, পানিতে বল ভাসানো, দোলনা, নৌকা বাইচ ও যাদু প্রর্দশনী।

এবারের মেলায় স্টল রয়েছে ১০০টি সাধারণ স্টল ও ২টি ফুড স্টল। মেলায় অংশ নেয়া প্যাভিলিয়ন ও সাধারণ স্টলে রেডিমেড গার্মেন্টস, হোমটেক্স, ফেব্রিকস পণ্য, হস্তশিল্পজাত, আচারের স্টল, পাটজাত, গৃহস্থালি ও উপহারসামগ্রী, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, তৈজসপত্র, সিরামিক, প্লাস্টক, পলিমার পণ্য, কসমেটিকস হারবাল ও প্রসাধনী সামগ্রী, খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, ইমিটেশন ও জুয়েলারি ও ফার্নিচারসহ এসব স্টলও রয়েছে।

কক্সবাজার শিল্প ও বাণিজ্য মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব সাহেদ আলী সাহেদ জানান, এবার অনেক ক্ষেত্রে মেলায় বেশ ভিন্নতা এসেছে। টুইস্ট, লেম্ববাম্বু, ডিজিটাল নাগরদোলা, ইলেকিট্রক নৌকা, কার বাম্পার, ওয়াটার বোট, ওয়াটার বল, ডিজিটাল ট্রেন, জাম্পিং স্লিপার, কার রেসিংসহ শিশুদের জন্য মেলায় বাড়তি বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আনা হয়েছে উন্নতমানের ব্যতিক্রমী হরেক রকমের রাইডস।

কক্সবাজার শিল্প ও বাণিজ্য মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব সাহেদ আলী সাহেদ জানান, এবার অনেক ক্ষেত্রে মেলায় বেশ ভিন্নতা এসেছে। টুইস্ট, লেম্ববাম্বু, ডিজিটাল নাগরদোলা, ইলেকিট্রক নৌকা, কার বাম্পার, ওয়াটার বোট, ওয়াটার বল, ডিজিটাল ট্রেন, জাম্পিং স্লিপার, কার রেসিংসহ শিশুদের জন্য মেলায় বাড়তি বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আনা হয়েছে উন্নতমানের ব্যতিক্রমী হরেক রকমের রাইডস।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এই মেলা পর্যটন শিল্প বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি অর্থনীতির চাকা সচল করবে। এখানে আগত পর্যটক ও স্থানীয় দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মেলা ঘিরে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে।

কক্সবাজার বাণিজ্য মেলায় চলছে সিন্ডিকেট বাণিজ্য

সম্প্রতি শুরু হওয়া কক্সবাজার বাণিজ্য মেলায় চলছে সিন্ডিকেট বাণিজ্য। শুরু হওয়া এ মেলাতে বাহারি কোন জিনিসপত্র এখন পাওয়া না গেলেও নেওয়া হচ্ছে জনপ্রতি ২০ টাকা করে প্রবেশ মূল্য। মেলার ভিতরে চলছে গলাকাটা বাণিজ্য।

সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে,মেলার প্রবেশ মুখেই রয়েছে টমটম ও ব্যাটারিচালিত রিকশা সিন্ডিকেট, এসব রিকশা ও টমটমগুলো নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি নেয় বলে যাত্রীদের অভিযোগ। মেলার সামনে দাঁড়ানো টমটম বা রিক্সা থেকে নির্দিষ্ট হারে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে মেলা কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে।টমটম বা রিক্সা থেকে নেমে প্রবেশমুখে রয়েছে আর একটি সিন্ডিকেট। টিকেট বিক্রি ও টিকেট চেক করা নিয়ে গঠিত এ সিন্ডিকেটের নাম ভলান্টিয়ার সিন্ডিকেট। স্থানীয় ছেলেপেলে ও বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মীরা সিন্ডিকেটের সদস্য। এ সিন্ডিকেটের আরেকটি কাজ হচ্ছে মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

দেখা যায়,মেলার প্রবেশ মুখে স্থাপন করা দুটি বুথ থেকে নিতে হয় টিকেট। প্রতিটি টিকেটের মুল্য ২০ টাকা। সবেমাত্র শুরু হওয়া এই মেলা এখনো জমে না উঠলেও টিকেটের দাম কমেনি। প্রতিদিনের টিকেটের টাকার ভাগ কোথায় যায় ভলান্টিয়ার সদস্যরা জানেন না। তারা শুধু এতটুকু জানালেন বাণিজ্য মেলা কমিটির নেতা নাসির ভাইয়ের নির্দেশে এ টাকা তোলা হচ্ছে। মেলার ভেতরে বাণিজ্য পণ্যের তেমন জৌলুস না থাকলেও রয়েছে শিশু কিশোরদের বাহারি রাইডস। রাইটসে অতিরিক্ত মূল্য নেওয়ার অভিযোগ করেছেন মেলায় আসা দর্শনার্থীরা।

কক্সবাজার লিংকরোড থেকে স্বপরিবারে বাণিজ্য মেলা দেখতে আসা রাইসুল ইসলাম জানালেন,এখানে তেমন চাহিদামত জিনিসপত্র পাওয়া যাচ্ছে না, তবুও এটার নাম কেন বানিজ্য মেলা হলো বুঝলাম না। এটার নাম শিশুপার্ক দেওয়া হলে ভালো মানাতো।

পর্যটকদের বিনোদনের খোরাক 

পর্যটকদের বিনোদনের খোরাক হিসেবে সমুদ্র সৈকতসহ বিভিন পর্যটন স্পটগুলোর পাশাপাশি বাড়তি পেয়েছে শিল্প ও বানিজ্য মেলার বিভিন্ন প্রর্দশনী। দেশের পর্যটন রাজধানী নামে পরিচিত কক্সবাজার পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠেছে। একদিকে ভ্রমণ পিপাসুর অন্যতম স্থান সমুদ্র সৈকতসহ বিভিন্ন পর্যটক স্পট অন্যদিকে বাড়তি পেয়েছে শিল্প ও বানিজ্য মেলায় নানা ধরণের বিনোদন।

দিনের বেলায় সৈকতের বালিয়াডিসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ঘুরাঘুরির পরে রাতের বেলায় বানিজ্য মেলায় বিনোদনে মগ্ন রয়েছে স্থানীয় ও পর্যটকেরা।কক্সবাজার বানিজ্য মেলার ও সমুদ্র সৈকত, বিপণী কেন্দ্রসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকদের কোলাহলে হয়ে ওঠেছে। রাস্তা-ঘাটে সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মক যানজট। ইতোমধ্যে সৈকতসহ বানিজ্য মেলায় বিভিন্ন প্রর্দশনী দেখার জন্য স্থানীয়দের সাথে সাথে পর্যটকের সমাগম ঘটেছে।

মেলায় এসেছে আরএফএল, ভিশন, ওয়াকার, ইটালিয়ানো, হোম টেক্সটাইল, ইরানি গোল্ডসহ উন্নতমানের সব ব্র্যান্ড। পছন্দের কাপড় যেমন কিনতে পারবেন, তেমনি পায়ের জন্য আরামদায়ক ওয়াকার ব্র্যান্ডের সব ধরনের জুতোও রয়েছে। মেরিন সিটি মেগামার্টের বিশাল স্টলে মিলবে প্রয়োজনীয় সবকিছু।

মহিলাদের কসমেটিকস ও কাপড়ের বাহারিসামগ্রী নিয়ে স্টল খুলেছে অনলাইন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফ্যাশন জোন। নারীদের উন্নতমানের সাশ্রয়ীমূল্যে সবকিছু থাকছে এই স্টলে। মেলায় এবার খাবারেও এসেছে ভিন্নতা। দই ফুসকা এবারের বিশেষ আকর্ষণ। মেলার মাঠে গেলে সিলেটের বিখ্যাত রূহানী আচার সবাইকে কাছে টানবেই। এই আচার স্বাদে আর রুচিতে বেশ ব্যতিক্রম।

পর্যটকদের বাড়তি বিনোদন যোগাচ্ছে কক্সবাজারের শিল্পও বাণিজ্য মেলা 

কক্সবাজার শিল্প ও বাণিজ্যমেলা স্থানীয় ভ্রমণপিয়াসী ও আগত পর্যটকদের রাতের বিনোদনের খোরাক জোগাচ্ছে। সৈকতের লাবণী পয়েন্টে ঝাউবাগান ঘেরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম সংলগ্ন পর্যটন গলফ মাঠে চলমান শিল্প ও বাণিজ্যমেলায় গভীর রাত পর্যন্ত কেনাকাটাসহ নানা বিনোদনে নারী, পুরুষ ও শিশুদের উচ্ছ্বাসে মুখরিত থাকে মেলাঙ্গন।ঢাকা থেকে শিমুল মুখার্জি এসেছেন পরিবার পরিজন নিয়ে কক্সবাজার। সারাদিন বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে ও তাদের মন ভরেনি।সন্ধ্যারপর সবাই কে নিয়ে ছুটে আসেন মেলায়। শিমুল বলেন, এটা-সেটা কেনাকাটা, বিভিন্ন রাইডে চড়া, খাওয়ার মধ্যে কখন যে তিন ঘণ্টা কেটে গেলো বুঝতেই পারিনি।দুপুরের পর স্থানীয়দের আনাগোনায় মূখর থাকে মেলা প্রাঙ্গন।

রাতেই জমে উঠে কক্সবাজার শিল্প ও বাণিজ্য মেলা

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সার্বিক সহযোগীতায় এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়ন মাসব্যাপী শিল্প ও বাণিজ্য মেলার আয়োজন করে।

মেলার ভেতরে যেমন ক্রেতা-বিক্রেতার দর-কষাকষি চলেছে, ঠিক বাইরেও সমানে চলেছে ক্রেতা-বিক্রেতার দরদাম। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে নানা ধরনের ছাড় এবং উপহার দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবারের মতো মেলার ১১৬টি স্টল এবং ১৮টি প্যাভিলিয়ন সেজেছে নতুন সাজে। এর মধ্যে আএফএল এর প্যাভিলিয়ন এবং বাংলাদেশ সেনা বাহিনী রামু ক্যান্টমেন্টের এর বেকারী সপ একেবারে নতুনত্ব নিয়ে হাজির হয়েছেন কক্সবাজারবাসীর কাছে। মেলার মুল ফটক অনেকটা রাজকীয় আদলে তৈরি করা হয়েছে। ফটক পেরোলেই চোখে পড়বে বাহারী স্টল ও প্যাভেলিয়নগুলো। এছাড়া প্রাণ নুডুলস, ইফাদ আটা ময়দা সুজি বিভিন্ন পণ্যেও প্রর্দশনী, কিয়াম ক্রোকারিজ, মিয়াকো ক্রোকারিজ, রাজশাহী সিল্ক, সালমান জামদানি, জুস ব্লেজার প্যাভেলিয়ন।

পোশাকের প্রাধান্যই চোখে পড়বে বেশি

দেশের দামী দামী কোম্পানী গুলোর প্যাভিলিয়নে বিছমিল্লাহ লেদার হাউসে ব্যাগ, জুতা, গৃহস্থালি সামগ্রী, পোশাকের প্রাধান্যই চোখে পড়বে বেশি।এছাড়া খাবারের দোকান দুলালের জনপ্রিয় ঢাকা চটপটি, শিশুদের জন্য রয়েছে মজাদার রাইডস, জাদু প্রর্দশনি, বিনোদন বিচিত্রানুষ্টান ও নাগরদোলা।এই প্যাভিলিয়নে কেনাকাটা করতে আসা পূজা বড়–য়া পুজি বলেন, ‘শুধু এই মেলা থেকেই বিভিন্ন দেশের নানা পণ্যসামগ্রী একসঙ্গে পাওয়া যায়। তাই দেখেশুনে কেনাকাটা করা যায়।’ তবে এবারের মেলায় সবকিছুর দাম একটু বেশি বলে মনে করেন তিনি।

দোকানে নির্দিষ্ট টাকার পণ্য কিনলেই ক্রেতারা পাচ্ছেন আকর্ষণীয় মুল্য ছাড়

মেলার ভেতরে গিয়ে দেখা গেছে, প্লাস্টিক সামগ্রীর প্যাভিলিয়নে ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি। কেনাবেচাও অন্যান্য সামগ্রীর চেয়ে বেশি হচ্ছে। আরএফএল সহ প্লাস্টিক সামগ্রীর দোকানে নির্দিষ্ট টাকার পণ্য কিনলেই ক্রেতারা পাচ্ছেন আকর্ষণীয় মুল্য ছাড়।আরএফএল প্লাস্টিক প্যাভিলিয়নের পণ্যবিক্রেতা বলেন, ‘মেলার শুরুর দিকে ক্রেতাসমাগম কম হলেও এখন বেশ বেড়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনেগুলোতে ক্রেতা সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।’পোষাকের পাশাপাশি আসবাবপত্র প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ছাড়ের ছড়াছড়ি।

শিল্প ও বাণিজ্য মেলা পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক সাহেদ আলী সাহেদ জানান, গণপূর্ত বিভাগের নিজস্ব সম্পত্তির উপর সুবিশাল জায়গায় মেলা আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় দেশীয় প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে ১৩৪টি।


কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম বলেন, মেলার সিসি ক্যামেরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে দায়িত্বরত পুলিশ। ইভটিজিংসহ যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে সচেষ্ট রয়েছে পুলিশের বিশেষ টিম। মেলায় স্থানীয় ছাড়াও বিদেশি ক্রেতা ও পর্যটক অংশ নিচ্ছেন, এটা যেমন আনন্দের, আর এই মেলা চলে বলেই পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয়রা ও আনন্দে উদ্বেলিত থাকে।কক্সবাজারের প্রবীন আইনজীবী হাবিবুর রহমান বলেন এক সময় কক্সবাজারে জমজমাট নাচ গান ও জোয়ার আসর বসতো। চলতো কয়েকমাস। অশ্লিল নিত্যসহ নানা অসমাজিক কর্মকান্ড। এখন দিন বদলেছে, মানুষ অশ্লীলতা থেকে সরে এসেছে। সুস্থ ধারার সংস্কৃতি চর্চায় চলছে শিল্প ও বাণিজ্য মেলা। তাই এই মেলা যতই দীর্ঘায়িত হোক মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্যতা পেয়েছে


তথ্যসুত্র

 লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়েছে ফোয়ারার পাশে বিশাল জায়গাটি, Ukhiyanews.

পর্যটকদের বাড়তি বিনোদন, Chattagramnews.

কক্সবাজারে শিল্প ও বাণিজ্য মেলা শুরু, Swadeshpratidin.

পর্যটকদের বিনোদনের খোরাক শিল্প, Coxbazarjournal.

বাণিজ্য মেলায় চলছে সিন্ডিকেট, Ukiyanews.

ঐতিহ্যবাহী শিল্প ও বাণিজ্য মেলা, Risingbd.

 বিনোদন স্পটে পরিণত শিল্প ও বাণিজ্য মেলা।, Shomoyerkanthoshor.

পর্দা উঠলো কক্সবাজার শিল্প ও বাণিজ্য মেলার।, Dailyinqilab.

 শিল্প ও বাণিজ্য মেলার শুরু হলো, Theterritorialnews.