বাংলাদেশের জাতীয় পাখি দোয়েল (Doyle)

বাংলাদেশের জাতীয় পাখি দোয়েল (Doyle)



বাংলাদেশের জাতীয় পাখি দোয়েল এর ইংরেজি নাম Oriental Magpie Robin. দোয়েল পাখি প্রানি জগতে কর্ডাটা পর্বের Passeriformes বর্গের অর্ন্তগত একটি পাখি। দোয়েল পাখির বৈজ্ঞানিক নাম Copsychus saularis. ফরাসী ভাষার Shama dayal এবং ওলন্দাজ ভাষায় Dayallijster এর সংমিশ্রিত রূপ দোয়েল।

“ … কোকিল ডাকে কুহু কুহু
দোয়েল ডাকে মুহু মুহু
নদী যেথায় ছুটে চলে
আপন ঠিকানায়
একবার যেতে দেনা আমার ছােট্ট সােনার গাঁয়। ”

বাংলাদেশ অসংখ্য রূপ-রং-কণ্ঠের পাখির সমারােহে সমৃদ্ধ। যে-পাখির গান আর ডালে ডালে নেচে বেড়ানাে দেখে মনে চঞ্চলতা জাগে তার নাম দোয়েল। বাংলার অতি পরিচিত এক পাখি। দোয়েল বাংলাদেশে গানের পাখি হিসেবেও স্বীকৃত।
দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি। দোয়েল পাখি দেখেনি এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল।তবে বাংলাদেশের সুন্দর পাখিদের মধ্যে দোয়েলের অবস্থান শীর্ষে। এ পাখির ছবি দুই টাকার নোটের উপর রয়েছে। একটি সমীক্ষা অনুসারে দেখা গেছে যে, দুই টাকার নোট বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর নোট গুলোর মধ্যে একটি। দোয়েলকে ইংরেজীতে “ম্যাগপাই রবিন” বলা হয়। এ পাখি বংলাদেশ এবং তার প্রতীকের সাথে নিবিড় ভাবে সংযুক্ত।জাতীয় প্রতীক, মুদ্রা, ঢাকা শহরের ল্যান্ড-মার্ক হিসাবে “দোয়েল চত্বর”  ইত্যাদিতে ব্যাবহার করা হয়। সংক্ষেপে দোয়েল বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর, বুদ্ধিমান, রহস্যময়ী হওয়ায় এটি বাংলাদেশের জাতীয় পাখি। ম্যাগপাই এর বিভিন্ন জাতের মধ্যে ম্যাগপাই রবিন একটি বিশেষ প্রকৃতির।
তার মধ্যে দোয়েলকেই মনোনীত করা হয়েছে এ জন্য যে, এই পাখিটি আমাদের দেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। শহর থেকে শুরু করে পাহাড়-বন কিংবা গ্রামের নির্জন পুকুরের পাড়েও তার দেখা মেলে। আমাদের দেশের খুব কম পাখির অবস্থান এমন। যে পাখি শহরে থাকে সে আর বনে থাকতে পারে না।

যে কারণে দোয়েল জাতীয় পাখি

দোয়েলকে কেন বাংলাদেশের জাতীয় পাখির মর্যাদা দেওয়া হলো? অন্যপাখিও তো জাতীয় পাখি হতে পারতো! যেমন ধরা যাক শালিক, ঘুঘু, ময়না, বক প্রভৃতি।আমরা সবাই শুধু এতটুকুই জানি যে, দোয়েল আমাদের দেশের জাতীয় পাখি। বেশি কিছু জানি না! কিন্তু কী কারণে এবং কোন বিবেচনায় দোয়েল জাতীয় পাখির মুকুট পড়ল তা আম‍াদের অনেকেরই অজ্ঞাত। বস্তুতপক্ষে বিষয়টি আমাদের জানা প্রয়োজন।জাতীয় পাখি হওয়ার জন্য দোয়েলের দাবি কতখানি শক্তিশালী? এই ভাবনা থেকেই একদিন মুখোমুখি হই বরেণ্য পাখি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হকের সঙ্গে।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি বেশ কিছুদিন আগে এমন একটি লেখা লিখেছিলাম। তার অংশবিশেষ বলছি আপনাকে। প্রথম কথা, জাতীয় কিছু করা মানে অর্থাৎ পশু, পাখি, বৃক্ষ, ফল ইত্যাদি সিম্বলিক (প্রতীক) ব্যাপার মাত্র। এটাকে সৌখিনও বলা হয়। সৌখিনতার চাইতে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ দিক নেই।এখানে শুধু দুটো জিনিস সাধারণত ভালো করে দেখা হয়। প্রথমটি হলো- ওই দেশে ওই জিনিসটা বেশি সংখ্যক রয়েছে কি-না? প্রচুর সংখ্যক থাকার অর্থই হলো ওই দেশকে সে  রিপ্রেজেন্ট (উপস্থাপন) করছে। যেমন ধরা যাক ইলিশ মাছের কথা। যে কোনো মাছের নাম জানে না সেও ইলিশ মাছের নাম জানে। এই মাছটি এতো ব্যাপকভাবে পরিচিত যে আমরা সবাই এর নাম জানি। ওই পাখিটিরও এমনই ব্যাপক পরিচিত এবং জনপ্রিয় থাকতে হবে। লোকের মুখে মুখে হতে হবে। তবেই সেটি জাতীয় বলে অখ্যায়িত হওয়ার চূড়ান্ত যোগ্যতা রাখে।      

দ্বিতীয়ত, অন্য কোনো দেশ এটিকে তাদের জাতীয় করে ফেলেছে কি-না, সেটি দেখা। যদি দোয়েল ভারতের জাতীয় পাখি হতো, তবে বাংলাদেশ কখনোই তাকে জাতীয় পাখি হিসেবে তালিকাভুক্ত করত না। অধিক পরিচিতি এবং অন্য কোনো দেশ এটিকে জাতীয় হিসেবে আগেই তালিকাভুক্ত করেছে কি-না এই দুটো জিনিস মূলত কোনো কিছুকে জাতীয় হিসেবে আখ্যায়িত করার প্রধান মানদণ্ড।ইনাম আল হক আরো বলেন, এটা যখন করা হয়েছিল তখন পাখির লোকেদেরই জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তখন যারা প্রাণিবিজ্ঞানী বা গবেষক ছিলেন তাদের মতামত ছিল দোয়েল। একটি খুবই যুক্তিযুক্ত হয়েছে বলে আমি মনে করি। দোয়েলও ইলিশ মাছের মতই আমাদের দেশে ব্যাপক পরিচিত। তবে আমাদের দেশের সর্বত্র কাকের ব্যাপক উপস্থিতি থাকলেও কাক–কে কেউ জাতীয় পাখি করবে না। কারণ স্বভাবগত বিষয়ের জন্যই সে আমাদের প্রিয় পাখিদের তালিকায় পড়ে না।  

তিনি আরও বলেন, শালিক, দোয়েল, বক এই ৩/৪টি পাখি এরাই সম্ভবত জাতীয় পাখির মর্যাদার লড়াইয়ে তখন প্রতিদ্বন্দ্বিতার টেবিলে ছিল। তার মধ্যে দোয়েলকেই মনোনীত করা হয়েছে এ জন্য যে, এই পাখিটি আমাদের দেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। শহর থেকে শুরু করে পাহাড়-বন কিংবা গ্রামের নির্জন পুকুরের পাড়েও তার দেখা মেলে। আমাদের দেশের খুব কম পাখির অবস্থান এমন। যে পাখি শহরে থাকে সে আর বনে থাকতে পারে না। বাসস্থান, বিচরণভূমি ও আহারগত কারণে। কিন্তু সর্বত্রই রয়েছে দোয়েল।এ পাখি গবেষক আরও বলেন, গহিন বনেও আপনি দোয়েল পাবেন। দোয়েল ছাড়া আর কোনো পাখিকে সারাদেশের আনাচে কানাচে এভাবে দেখা যায় না। সুন্দরবন থেকে শুরু করে প্রতিটি ছোট-বড় বনে তারা বিচরণ করছে। আবার ঢাকার মতো প্রচণ্ড কোলাহলপূর্ণ ব্যস্ত শহরেও দোয়েল দিব্বি টিকে আছে। চারিদিকে দোলানকোঠো, কোনো গাছপালা নেই। যেহেতু যে সব স্থানে টিকে থাকতে পারে এবং বাংলাদেশের সর্বত্র আছে তাই তাকেই নির্বাচন করা হয়েছে।

ইনাম আল হক বলেন, অরেকটা বিষয় দেখুন, দোয়েল খুব নিরুপোদ্রপ একটা পাখি। কখনোই এরা মানুষের কোনো ক্ষতি করে না। সে শুধু পোকা খায়। তার চেয়ে বড় বিষয় হলো তার চমৎকার গানের গলা। ভোরবেলা তার মিষ্টি-মধুর গান চারপাশ মধুর করে তোলে।  বার্ড ক্লার্ব সূত্র জানায়, দোয়েল বাংলাদেশের সুলভ আবাসিক পাখি। এর ইংরেজি নাম Oriental Magpie-Robin। এরা দৈর্ঘ্যে ২০ সেমি ও ওজনে ৪০ গ্রাম। পুরুষ দোয়েলের শরীরের উপরিভাগ ও গলার নিচে কালো রঙের, পেট সাদা। ডানার দুই পাশে সাদা রঙের প্যাচ আছে। স্ত্রী দোয়েলের উপরিভাগ ও গলার নিচে ছাই-রঙা হয়। পেটের অংশ পুরুষ দোয়েলের মত উজ্জ্বল নয়, কিছুটা ফিকে সাদা। মার্চ-জুলাই প্রজনন কাল। এ সময় গাছের গর্ত, দেয়াল, পাইপের ফাঁকে ঘাস-পাতা দিয়ে বাসা তৈরি করে। সবুজ রঙের ৪-৫টি ডিম দেয়। ১২-১৩ দিন ছানা বের হয়

দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি হওয়ায় এটি দুই টাকার নোটের উপর মুদ্রিত করা হয়ে থাকে। উল্লেখ্য যে দুই টাকার নোটকে/ ২ টাকার নোটকে  বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর নোট বা কাগজের মুদ্রা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এরা রাতের বেলায় গান গেয়ে থাকে বেশি ভাগ।

২ টাকার নোট
Taken from Poshupakhi


ম্যাগপাই এর আরও কয়েক রকম জাত রয়েছে।নিচে এসব জাত সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরন দেওয়া হলঃ

ম্যাগপাই রবিন:

এরা এশীয় অঞ্চলের ছোট আকারের ভ্রমনকারী পাখি। কিন্তু বর্তমানে এদের প্রাচীন দুনিয়ার ফ্লাই ক্যাচার হিসাবে ধরা হয়। তাদের শরীরের পালক সাদা-কালো এর সংমিশ্রণে সম্পূর্ন শরীর যেন ফুটে উঠেছে। মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত কালো পালক দ্বারা আবৃত এবং এর ডানায় কিছুটা সাদা পালক রয়েছে। নিশাচর পাখি কি ভ্রমন করে থাকে দূরদুরান্তে?

ম্যাগপাই (Magpie)
Taken from Poshupakhi

ব্লু ম্যাগপাই:

এরা সেলন ম্যাগপাই নামেও পরিচিত। শ্রীলংকায় এদের দেখতে পাওয়া যায়। শ্রীলংকার সব পাখিদের মধ্যে এরা সবচেয়ে বেশি সুন্দর। বেশি ঘন বন-জঙ্গলে এরা অনেক দক্ষ শিকারী। তারা ক্ষিপ্র গতিতে শিকার করে  থাকে। শিকারী পাখিদের তুলনায় এদের ডানা অনেক দূর্বল প্রকৃতির। এ কারনে এরা কম সময়ে খুব বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে না।

ব্লু ম্যগপাই ( Blue Magpie )
Taken from Poshupakhi

গ্রীন ম্যাগপাই:

এরা ক্রো ফ্যামিলির অন্তর্ভুক্ত এবং দেখতে অনেকটা আমাদের দেশের দোয়েল হতে আকারে কিছুটা ছোট। এদের শরীর উজ্জল সবুজ বর্ণের এবং চোখে কিছুটা কালো বর্নের দাগ আছে। এদের ঠোঁট  লাল বর্নের। সব কিছুর সমন্বয়ে পাখিটি দেখতে অনেক সুন্দর । এদের দেখতে অনেকটাই টিয়া পাখির মত দেখায়।

Taken from Poshupakhi


ইউরেশিয়ান ম্যাগপাই:

ইউরেশিয়ান  উপ-মহাদেশে উত্তরাংশে এদের দেখতে পাওয়া যায়। এরা বাসত-বাড়িতে ঘর বানায় এবং বংশ বিস্তার করে থাকে। এরা ক্রো ফ্যামিলির মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য এবং “মনোক্রম” ম্যাগপাই এর অন্তর্ভুক্ত। এরাই আমদের দেশে বাস করে ।

Eurasian Magpie
Taken from Poshupakhi

ইন্দো-চিন ম্যাগপাই:

এরা সবুজ বর্নের ম্যাগপাই; এদের শরীরে বুকের দিকে হালকা হলুদাভ বর্ন রয়েছে। এরা ক্রো ফ্যামিলির ভ্রমনকারি পাখি। এরা দক্ষিন এশিয়া এবং চীন এর অন্তর্গত অঞ্চলে এদের দেখতে পাওয়া যায়। এদের গলার নিচে যে হলুদের মত রং অন্য সব পাখিই  হতে আলাদা করেছে।

ইন্দো-চিন ম্যাগপাই
Taken from Poshupakhi

তাইওয়ান ব্লু ম্যাগপাই:

এদের বাস্তবে ব্লু ম্যগপাই বলা হয়। এদের তাইওয়ান দেশে দেখতে পাওয়া যায়। এদের লেজ অনেক লম্বা হওয়ায় “লং টেইল মাউন্টইন লেডি” বলা হয়ে থাকে। অসম্ভব রকমের সুন্দর হওয়ায় এদের যে কেউ পছন্দ করে থাকে।

তাইওইয়ান দোয়েল ( Taiwan Magpie )
Taken from Poshupakhi

............

এরা ক্রো ফ্যামিলর ভ্রমনকারি দোয়েল এর মধ্যে পড়ে। এদের দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ার বনেরিন নামক দ্বীপে এদের দেখতে পাওয়া যায়। এদের জাভান নামক দোয়েলের উপ-প্রজাতি হিসাবে ধরা হয়। এদের লেজ ছোট হওয়ায় ছোট লেজ বিশিষ্ট পাখি হিসাবে ধরা হয়।

Bornean Magpie ( বর্নেরিন দোয়েল )
Taken from Poshupakhi

হোয়াইট-উইং ম্যাগপাই:

এরা ভ্রমনকারি পাখির তালিকায় পড়ে। এদের হ্যানিয়ান ম্যাগপাইও বলা হয়। এদের লেজ সাধারনত বিস্তৃত প্রকৃতির হয়ে থাকে। এদের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা অন্য পাখিদের সাথে অনেকটা বিরল প্রজাতির।

White winged magpie
Taken from Poshupakhi

হলুদ ঠোঁট যুক্ত ম্যাগপাই:

এদের দেখতে অনেকটা আমাদের দেশের ম্যাগপাই এর মতই। তবে কিছু পার্থক্য রয়েছে। এদের ঠোঁট আমাদের দেশের পাখি হতে আলাদা এবং তা হলুদ বর্নের। এদের লেজ আমাদের দেশের পাখির লেজ হতে একটু লম্বা প্রকৃতির এবং নিচের দিকে হেলানো। আমাদের দেশের পাখির লেজ তীর্জক ভাবে খাড়া।

দোয়েল
Taken from Poshupakhi

অ্যাজিওর উইং ম্যাগপাই:

এরা ক্রো ফ্যামিলির অন্তর্ভুক্ত। এরা লম্বায় ৩১-৩৫ সে.মি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এদের দেখতে অনেকটা ইউরেশিয়ান ম্যাগপাই এর মত দেখতে। কিন্তু আনুপাতিক হারে এরা ইউরেশিয়ান ম্যাগপাই এর চেয়ে ছোট আকৃতির। ডানা হতে লেজ পর্যন্ত নীলাভ বর্নের এবং ছায়ে কালারের হয়ে থাকে। এদেরে চোখ মাথা এবং ঠোঁট সম্পূর্ণ গাঢ় বর্নের হয়ে থাকে। এদের এই হালকা রঙের কারনেই সুন্দর দেখায়।

দোয়েল জাতীয় পাখি
Taken from Poshupakhi


দোয়েল পাখির ভৌগলিক এলাকা:

দোয়েল পাখির বিস্তার এশিয়া মহাদেশের নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে। ভারত উপমহাদেশের বেশিরভাগ অংশে, পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা থেকে পূর্ব দিকে দক্ষিণ চীন এবং দক্ষিণে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন, বোর্নিও এবং জাভা পর্যন্ত পাওয়া যায়। সম্প্রতি দোয়েল পাখির একটি জাত অস্ট্রেলিয়াতেও দেখা যায়।দোয়েল পাখি জনবসতি কিংবা লোকালয়ের আশে পাশে থাকতে পছন্দ করে। এইকারনে এদেরকে কাঠসমৃদ্ধ বন, চাষাবাদকৃত জমির আশেপাশে এবং গ্রামীন জনবসতি অঞ্চলে বেশী দেখা যায়। তবে গভীর বনে এদের খুব বেশী পাওয়া যায় না।

দোয়েল পাখির শাররীক গঠন:

দোয়েল আকারে ১৮-২১ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের এবং ৩১ থেকে ৮২ গ্রাম ওজনের হয়ে থাকে। ডানা স্পষ্ট সাদা লম্বা দাগসহ কালচে বাদামি রঙের। ডানার দুই পাশে সাদা রঙের প্যাঁচ আছ যা উড়ার সময় দেখা যায়। ডানা বুজানো অবস্থায় কালচে দেখায়। লেজ কালো তবে প্রান্তঅংশ সাদা এবং লেজের তলায় বাদামি লালচে। এদের লম্বা লেজ বেশীরভাগ সময় পিঠের উপর খাড়া হয়ে থাকে। গলা-মাথা-বুক ও কপাল চকচকে কালো।  পায়ের উপরিভাগসহ পেট সাদা। চোখের পাশটা ঘন কালো। চোখের মণির রং পিঙ্গল। ঠোঁট কালো।শাররীক গঠনে পুরষ, স্ত্রী ও বাচ্ছা দোয়েল পাখির মাঝে কিছু পার্থক্য আছে। পুরুষ দোয়েলের শরীরের উপরিভাগ ও গলার নিচে কালো রঙের, পেট সাদা। স্ত্রী-দোয়েলের উপরিভাগ ও গলার নিচ ছাই-রঙা হয়। পেটের অংশ পুরুষ-দোয়েলের মত উজ্জ্বল নয়, বরং কিছুটা ফিকে সাদা।কিন্তু দেখতে অপরূপ সুন্দর।

দোয়েল পাখির বৈশিষ্ট ও স্বভাব:

দোয়েল পাখি গায়ক পাখি। বিভিন্ন রকম সুরে এরা গান গাইতে পারে। খাবারের চাহিদা না থাকলে এরা গাছের ডালে বসে মিষ্টি মোলায়েম শিস দেয়। লেজের ডগা নাচায়। স্থিরভাবে বসা অবস্থায় দোয়েলের লেজ মোরগের লেজের মতো দেখায়। দোয়েল পাখি অন্য পাখির ডাকও নকল করতে পারে।এরা সাহসী, স্বাধীন এবং অস্থির ধরনের পাখি, সর্বদাই গাছের ডালে বা মাটিতে লাফিয়ে বেড়ায় খাবারের খোঁজে। এদের চাল-চলনে একধরনের আভিজাত্যের ছাপ দেখা যায় যার ফলে এরা খাবার সংগ্রহের সময় একেবারে লোকালয়ে চলে আসে যার ফলে বিড়াল কিংবা অন্য শিকারী দ্বারা সহজেই আক্রান্ত হয়।

প্রজনন ঋতুতে পুরুষ দোয়েল খুব ভোরে এবং পড়ন্ত দুপুরে সুরেলা গলায় স্ত্রী দোয়েলকে আকৃষ্ট করার জন্য অত্যন্ত জোরে এবং সুরেলা গলায় গান গায়। তবে স্ত্রী দোয়েলও পুরুষ দোয়েলের উপস্থিতিতে ডাকতে পারে। সকালবেলা সূর্য উঠার আগেই দোয়েল গান গাওয়া শুরু করে দেয়। আর গানের মাঝে লেজ উঠেতে তাল মিলায়। দোয়েল এক নাগাড়ে সাত থেকে ত্রিশ মিনিট পর্যন্ত গান গাইতে পারে।প্রয়োজন না হলে দোয়েল এক নাগাড়ে বেশি দূর উড়ে না। মাটিতে লাফিয়ে লাফিয়ে খাদ্য খোঁজে। ধান কিংবা ভাত খাবার জন্য এ পাখি গৃহস্থের গোলাঘর, কিংবা রান্না ঘরেও ঢুকে পড়ে। উঠান, বাড়িজুড়ে ওদের অবাধ চলাচল।

শীতের সময় দোয়েল পাখি দেখা যায় না বললেই চলে এর কারন হচ্ছে এরা শীতের সময় গান গায় না যার কারনে এই সময় এদের আমাদের নজরে পড়ে না।দোয়েল পাখির মোলায়েম সুরের গানের জন্য অনেকেই এদেরকে খাচায় রাখতে পছন্দ করেন যদিও এরা খাচার জীবন পছন্দ করে না।

খাদ্যভাস:

দোয়েলের খাবার তালিকায় আছে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ, কেঁচো, খেজুরের রস এবং ফুলের মধু পান করবে। পঁচা ডাল পালা, গাছের পাতা সরিয়ে বিভিন্ন ধরনের ছোট পোকা মাকড়, মাকড়সা, ছোট ছোট শামুক ধরে খায় এরা। এমনকি টিকটিকিও খায়। সাধারনত সকালবেলা খাবারের খোজে বের হয় তবে মাঝে মাঝে  সন্ধ্যার আগেও  এরা খাবারের খোঁজে বের হয়।

প্রজননকালীন আচরন:

দক্ষিণ এশিয়ার দোয়েলের প্রজননকাল মার্চ থেকে জুলাই; আর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দোয়েলের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস। প্রজনন সময় পুরুষ দোয়েলের শরীরের রঙ উজ্জ্বল ও চকচকে হয়।প্রজনন শুরতে এরা জোড়া বেঁধে বাসা তৈরী করে। বাসা তৈরী করতে সাধারনত এক সপ্তাহ সময় লাগে। এরা মানুষের কাছাকাছি ছোট ছোট গাছ, ছাদের কার্ণিশে বাসা তৈরী করে। বাংলাদেশের যেসব পাখি বাসা বাঁধার গান গায় দোয়েল পাখি তাদের মধ্যে অন্যতম। গান গেয়ে আশপাশের সব পাখিকে বাসা বাঁধার খবর জানান দেয়।

এ পাখির বাসা তৈরির উপকরণ যে কোনো গাছের অত্যন্ত সরু ডাল। মানুষের চুল। গবাদি পশুর পশম ও লোম। শুকনো দূর্বাঘাস। আরও আছে খড়, উলুঘাস, সাপের খোলস, ধানের শুকনো কুটো, গাছের সরু-সরু শিকড়-বাকড়। পাট ও কলাগাছের শুকনো আঁশ।গাছের ডালে বসে স্ত্রী দোয়েলকে আকৃষ্ট করার জন্য হরেকরকম সুরে ডাকাডাকি করে, স্ত্রী সঙ্গীর আশে পাশে এসে ডানা ঝাপটায়, পালক ফুলিয়ে লেজ তুলে স্ত্রী দোয়েলর আসে পাশে চলাচল করে। দোয়েল পাখি একসঙ্গে বা এক দিন বিরতি দিয়ে চার থেকে পাঁচটি ডিম পাড়ে। ডিমের রং ফিকে নীলচে-সবুজ, তার উপর বাদামী ছোপ থাকে।

স্ত্রী দোয়েল ডিমে তা দেয় এবং১০থেকে ১৪ দিন পরে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। আর এইসময় পুরুষ দোয়েল পাহারাদারের কাজ করে। এসময় পুরুষ পাখিগুলো অনকে আক্রামণাত্বক হয়ে উঠে, বাসার আশেপাশে অন্য পাখিদের আসতে দেয়না একই সাথে আশে পাশের এলাকাটা নিজের নিয়ন্ত্রনে রাখার চেষ্টা করে। ডিম ফুটে বাচ্ছা বের হলে সাধারতন তিনদিন পর্যন্ত বাচ্ছাদের চোখ ফুটে না। এই সময় এরা একেবারেই নিরব থাকে। তিন থেকে চারদিন পর এর অল্প অল্প করে ডাকতে পারে এবং বাবা মাকে তাদের খিদের কথা জানান দেয়। বাচ্ছাকে খাওয়ানো দায়িত্ব বাবা মা দুইজনেই করে তবে মা দোয়েল বেশী সক্রিয় থাকে। ডিম ফুটে বাচ্ছা বের হওয়ার পর মোটামুটি ১৫দিন পরেই বাচ্ছা দোয়েল উড়তে পারে এবং পরিপূর্ন স্বনির্ভর হতে সময় লাগে ১৫-২০ দিন। এর পর বাবা দোয়েল তাদের  ঠুকরিয়ে বাসা থেকে বের করে দেয় স্বাধীন জীবন যাপন করার জন্য।

Taken from the Bangla Journal.


দোয়েল পাখির অর্থনৈতিক গুরুত্ব:

দোয়েল উপকারী পাখি। এরা আমাদের ফসলের এবং সবজি ক্ষেতের ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে আামাদের ফসলকে রক্ষা করে। পাট বিনষ্টকারী বিচ্ছুকে খেয়ে পাটের গুনগত মান ঠিক রাখে। এছাড়া দোয়েল বাস্তুতন্ত্রের স্তিতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে।

সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ:

বাংলাদেশের সাংস্কৃকিতে দোয়েল উজ্জ্বল হয়ে আছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন কবি, সাহিত্যিকদের লেখায় দোয়েল পাখির উপস্থিতি দেখা যায়। দোয়েল পাখির একটি ভার্ষ্কয ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আছে যার নামে উক্ত যায়গার নামকরন করা হয়েছে দোয়েল চত্বর। এছাড়াও বাংলার অনেক গানে দোয়েল পাখির শিষের কথাও উল্লেখ আছে।

দোয়েল পাখি কি কি খায়?

নানা রকম সুরে ডাকাডাকির জন্য দোয়েল সুপরিচিত। অস্থির এই পাখীরা সর্বদা গাছের ডালে বা মাটিতে লাফিয়ে বেড়ায় খাবারের খোঁজে। কীট পতঙ্গ, ছোট ছোট শুঁও পোকা এদের প্রধান খাদ্য। কখনো কখনো সন্ধ্যার আগে আগে এরা খাবারের খোঁজে বের হয়।

বাসস্থান:

নগরীর ব্যস্ত জীবনে বিভিন্ন পার্ক ও বাগানের আশেপাশে এদের দেখা মিলে। বনের আশেপাশে অথবা লোকালয়ের মাঝেই এরা থাকতে পছন্দ করে দোয়েল পাখির সঙ্গী হিসেবে শ্যামা পাখিকে দেখতে পাওয়া যায়। শ্যামা পাখিকে নিচু এলাকার উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে দেখতে পাওয়া যায়। যদিও এরা একাকী থাকতে পছন্দ করে। এরা প্রজননের সময় একটি নির্দিষ্ট জায়গায় স্থায়ীভাবে অবস্থান করে। মার্চ থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত এই পাখিটা খুবই চুপচাপ থাকে এবং লাজুক প্রকৃতির।

জীবনকাল:

জাতীয় পাখি  ওরিয়েন্টাল ম্যাগপাই রবিন এর গড় আয়ু ১০ -১৫ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রজননের সময় পুরুষ দোয়েল পাখির অনেক সুন্দর করে গান গেয়ে থাকে। এতে করে স্ত্রী প্রজাতির দোয়েল পাখি আকৃষ্ট হয়। মজার ব্যাপার হল দোয়েল পাখি যে প্রজাতির জন্য সর্বত্র পরিচিত সেই পাখিই তার অন্য সব প্রজাতির থেকে সবচেয়ে ইউনিক প্রকৃতির এবং আলাদা।

কমিউনিকেশন:

দোয়েল পাখির অন্যান্য জ্ঞাতি গোষ্টির এরাই আমাদের জাতীয় পাখিই এই প্রজাতিই সবচেয়ে বেশী সুন্দর। তবে দোয়েল পাখির বাচ্চা যখন ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয় তখন তা দেখতে সুন্দর দেখায়। দোয়েল এবং শ্যামা পাখি আওয়াজ করে ডাকার মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে থাকে। তবে এদের আরও এক ধরনের মাধ্যম আছে যা তারা প্রায়ই পছন্দ করে। কারন এরা এদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি এবং বাচন ভঙ্গির মাধ্যমে একে অপরের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে।

দোয়েল পাখির  ডিমে:

সাধারণত ৪/৫টি ডিম দেয়। ডিমের রং ফিকে নীলচে-সবুজ, তার উপর বাদামী ছোপ থাকে। স্ত্রী দোয়েল ডিমে তা দেয়; ৮ থেকে ১৪ দিন পরে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। প্রজননকালে পুরুষ দোয়েল আগ্রাসী হয়ে ওঠে।

Taken from Oddbangla

জাতীয় পাখি দোয়েল  বিলুপ্তির পথে

হারাতে বসেছি দোয়েলঃ গ্রামে সকালে যে পাখির একটানা সুরে ঘুম ভাঙ্গে পাখিটি হচ্ছে দোয়েল। যে পাখির সাথে আমাদের দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য স্মৃতি জড়িত রয়েছে।কিন্তু, দুর্ভাগ্যের বিষয এই হাজার বছরের পরিচিত পাখি দোয়েল আজ বিলুপ্তির পথে। ইকোসিষ্টেমের পরিবর্তন, ক্রমান্নয়ে মানুষের আবাসস্থল সৃষ্টি, চোরাচালান অবৈধ শিকার, কীটনাশক ঔষধ প্রয়োগ, ফলসে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের ফলে মৃত কীটপতঙ্গ খেয়ে মারা যায় অসংখ্য পাখি র মত দোয়েলও এবং প্রজনন ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলছে দিন দিন। ফলে দ্রুত এদের সংখ্যা কমছে। সরকারি-বেসরকারিভাবে সংরক্ষণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ না করা হলে এক সময় ধ্বংস হয়ে যাবে দোয়েল পাখি।

উপকারী পাখি দোয়েল

সমাজের উপকারী পাখি হিসেবে স্থান করে নিয়েছে দোয়েল। কত রকমের ক্ষতিকর পোকামাকড় সে খায়। এ পাখি ধানের পোকা খায়। শাক-সবজির পোকাকে খেয়ে ধ্বংস করে। পাট বিনষ্টকারী বিচ্ছুকে  খেয়ে সাবাড় করে। এই সাদা-কালো পাখিটি বাংলাদেশের জাতীয় পাখি। পাশাপাশি বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গায়ক পাখি। এ পাখির আছে বুক ভরা সাহস। আছে চোখ ভরা স্বাধীনতা। চাল-চলনে আরও আছে আভিজাত্যের ছাপ। বাংলাদেশের এমন কোনো শহর বা গ্রাম নেই, যেখানে দোয়েল পাখি দেখা যাবে না। সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়-টিলায় দেখা যায় এ পাখি। আরও আছে সুন্দরবনে। আছে রাজধানীজুড়ে। দোয়েল পাখির বাসা বাঁধতে সময় লাগে দুই থেকে পাঁচ দিন। একসঙ্গে বা এক দিন বিরতি দিয়ে চারটি ডিম পাড়ে। ১৪ দিন তা দেওয়ার পর ডিম থেকে বাচ্চা ফোটে। দোয়েল বুদ্ধিমান ও সাহসী পাখি। তবুও বাসা বাঁধার ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময় বোকামির পরিচয় দেয়। সব সময় মানুষ চলাচল করছে, এমন জায়গায় ও বাসা তৈরি করে। বাংলাদেশের যেসব পাখি বাসা বাঁধার গান গায়। গান গেয়ে আশপাশের সব পাখিকে বাসা বাঁধার খবর জানায়।

এই পাখির জন্য শীত-গ্রীষ্ম নেই। বর্ষা ও শরৎ নেই। গান সে গাইবেই। বাসা বাঁধার গান শুরু হয় শীত মৌসুমে। এ পাখির বাসা তৈরির উপকরণ যে কোনো গাছের অত্যন্ত সরু ডাল। মানুষের চুল। গবাদি পশুর পশম ও লোম। শুকনো দূর্বাঘাস। আরও আছে খড়, উলুঘাস, সাপের খোলস, ধানের শুকনো কুটো, গাছের সরু-সরু শিকড়-বাকড়। পাট ও কলাগাছের শুকনো আঁশ। প্রয়োজন না হলে দোয়েল এক নাগাড়ে বেশি দূর ওড়ে না। মাটিতে লাফিয়ে লাফিয়ে খাদ্য খোঁজে। ধান কিংবা ভাত খাবার জন্য এ পাখি গৃহস্থের গোলাঘর, কিংবা রান্না ঘরেও ঢুকে পড়ে। উঠান, বাড়িজুড়ে ওদের অবাধ চলাচল। বন-বাগানের মাটিতে খাবার খোঁজার সময় অতি সহজে বেজি ও বন বিড়ালের খপ্পরে পড়ে চরম বিপদ ডেকে আনে। আবার অনেক সময় পোষা বিড়ালও খপ করে ধরে ফেলে। দোয়েলের খাবার তালিকায় আছে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ, কেঁচো, খেজুরের রস। দোয়েল পাখি ১৮ থেকে ২২ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। বেশির ভাগ সময় তার লেজ পিঠের ওপর খাড়া হয়ে থাকে। পালকের প্রান্তে, পিঠের কাছটাতে যেন শরতের লম্বাটে মেঘ। চোখের মণির রং পিঙ্গল। লেজের কাছের পালকে সাদা দুটি টান। ঠোঁট কালো। খাজকাটা ডানা। গলা-মাথা-বুক ও কপাল চকচকে কালো। চোখের পাশটা ঘন কালো। পায়ের উপরিভাগসহ পেট সাদা। বুজানো অবস্থায় ডানা কালচে। পায়ের রং কালছে ধাতব। নখ কালো। লেজের তলায় বাদামি লালচে।


তথ্যসুত্র

দোয়েল ছােট পাখি।, Banglagoln.

সুন্দর এই পাখিটি, Sonelablog.

দোয়েল জাতীয় পাখি, Bangla News24.

দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি।, Poshupakhi.

দোয়েল পাখিকে দেখতে  সুন্দর, Poshupakhi.

উপকারী পাখি দোয়েল, Pratidin.

দোয়েল পাখির অর্থনৈতিক গুরুত্বঃ, Pattract.

Subscribe for Daily Newsletter