শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড (Education, the Backbone of Nations)

শিক্ষাই কি জাতির মেরুদন্ড?
নৈতিকতা, মূল্যবোধ, সচেতনতা, সামাজিক দায়বদ্ধতা এগুলো আসে পরিবার তথা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে। কিন্তু আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় এগুলো কতটুকু সংযুক্ত আছে তা দেখলে অবাক হতে হয়। বর্তমানে যতটুকু যুক্ত তা যথেষ্ট নয়। আরও বহুগুণে এ ধরনের শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। প্রয়োজনে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে নৈতিক শিক্ষা নামে আলাদা বিষয় যুক্ত করতে হবে। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি কোরআন শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। উচ্চশিক্ষিত হয়েও কোরআনের একটা আয়াত পড়তে পারে না তাহলে এই শিক্ষা দিয়ে কি লাভ হবে? সুশিক্ষা না পেয়ে নিজের পিতা-মাতাকে পর্যন্ত বৃদ্ধাশ্রমে ফেলে আসে। যে পিতা-মাতার জন্য এই পৃথিবীর আলো দেখছে সেই পিতা-মাতাকেও তখন মূল্য দেয় না। অন্যায় দেখলেও প্রতিহত করে না।
আচার-ব্যবহার হয় অশিক্ষিত লোকের মতো। আজকাল বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মাদকাসক্ত হয়ে যাচ্ছে। দেশের উন্নতি তো এদের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু এরা কীভাবে দেশকে উন্নতির দিকে নিয়ে যাবে? পত্রিকা খুললেই প্রতিদিন দেখা যাচ্ছে ধর্ষণের খবর। স্কুল প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের হাতে ছাত্রী ধর্ষণ হয়। যে শিক্ষক পিতা-মাতার সমতুল্য সেই শিক্ষকের কাছে এখন ছাত্রীরা নিরাপদ নয়। কারণ ওইসব শিক্ষক শিক্ষিত কিন্তু সুশিক্ষিত নয়।
শুধু শিক্ষিত হলেই চলবে না, সুশিক্ষিত হতে হবে। শিক্ষার কোনো শেষ নেই। এজন্য স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, যে শিক্ষায় চরিত্র গঠন হয়, মনের শান্তি বৃদ্ধি পায়, বুদ্ধির বিকাশ হয়, নিজের পায়ে নিজে দাঁড়াতে পারে, সেই শিক্ষাই প্রকৃত শিক্ষা।সুতরাং শিক্ষা নয়, সুশিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। দেশকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে সে জাতিকে অবশ্যই সুশিক্ষিত হতে হবে।
শিক্ষক জাতির মেরুদণ্ডের কারিগর
আলোয় আলোয় ভরা জীবনের প্রতিটি স্পন্দনে রয়েছে শিক্ষার অনুরণন। আমৃত্যু শেখার বাসনা নিয়ে যাদের জন্ম তাদের কাছে জীবনের প্রতিটি পাঠই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু প্রাতিষ্ঠানিক নয়, জীবন যাপনের প্রতিটি পর্যায়ে আমরা সমাজের বিভিন্ন উপাদান থেকে যে পাঠ গ্রহণ করি, যেসকল অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করি, তারও নাম শিক্ষা। বহুলভাবে বলা হয়ে থাকে, শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। প্রাসঙ্গিকভাবে আরও বলা হয়, জাতির এই মেরুদণ্ড গড়ার কারিগর হলেন শিক্ষকবৃন্দ।
মানবদেহে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে মেরুদণ্ডের সঙ্গেই কেন শিক্ষাকে তুলনা করা হয়েছে?
গঠন বিশ্লেষণে দেখা যায়, মানবদেহের ভারবাহী গুরুত্বপূর্ণ হাড়ের সমষ্টিই হলো মেরুদণ্ড। গোল চাকতির মতো প্রায় একইরকম গড়নের ৩৩টি হাড় বা ডিস্কের নিবিড় ও শৃঙ্খলাবদ্ধ সন্নিবেশের মাধ্যমে এটি গঠিত হয়। মেরুদণ্ড বা কশেরুকার মধ্যে হাড়ের শৃঙ্খলাবদ্ধ আয়োজনের ফলে আমরা আমাদের দেহকে সোজা করে দাঁড় করিয়ে রাখতে পারি। অর্থাৎ মাথা উঁচু করে সকল কাজ করতে পারি। ঠিক একইভাবে একটি জাতিকে সভ্য করে গড়ে তোলার জন্য, সমাজের নানান উপাদানে মনন সঞ্চারণে, মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্বের বোধ সৃষ্টিতে এবং সর্বোপরি জাতি হিসেবে বিশ্ব সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জন্য এবং সমুন্নত একটি স্থান অর্জনের জন্য দরকার সুশিক্ষায় শিক্ষিত একটি জনগোষ্ঠী। সেজন্যই শিক্ষাকে বলা হয়ে থাকে জাতির মেরুদণ্ড।
শিক্ষাকে যদি জাতির মেরুদণ্ড ধরা হয়, তাহলে শিক্ষক হলেন শিক্ষার মেরুদণ্ড
শিক্ষাকে যদি জাতির মেরুদণ্ড ধরা হয়, তাহলে শিক্ষক হলেন শিক্ষার মেরুদণ্ড। গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে আধুনিক ও যুগোপযোগী শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা দরকার।পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ একটি আধুনিক, সমৃদ্ধশালী ও উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে এই মহান পেশায় নিয়োজিত শিক্ষকবৃন্দের মাধ্যমে।’উন্নত জাতিসমূহের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সকল জাতিই শিক্ষকতা পেশাকে সর্বোচ্চ সম্মানে সম্মানিত এবং সমাজের সবচেয়ে মেধাবী ও বিবেকবোধ সম্পন্ন মানুষগুলোকে শিক্ষকতা পেশাতে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিয়েছে। উন্নত কোনো জাতির শিক্ষকদের এলাকার রাজনৈতিক নেতা কিংবা সরকারি পৃষ্ঠপোষকদের মতামত বা ভালো বাংলাতে বললে মেজাজ-মর্জি অনুযায়ী জ্ঞান বিতরণ ও সংশ্লেষণ করতে হয় না।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, জাপানে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সেই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সমান মর্যাদা ধারণ করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এমন কোনো উদাহরণ নেই যে, কোনো অধ্যাপক তাঁর এই ক্ষমতা শিক্ষার উন্নয়ন ব্যতীত অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করেছেন। অপব্যবহার তো কল্পনাই করা যাবে না। অর্থাৎ একটি জাতির উন্নত হওয়ার পেছনে নৈতিকতা ও বিবেকসম্পন্ন মেধাবী মানুষগুলোকে শিক্ষকতা পেশাতে নিয়ে আসা অন্যতম অপরিহার্য একটি উপাদান। একই সঙ্গে ওই দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সকল পর্যায়ের ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের শিক্ষকতার মতো পেশাকে প্রভাবিত কিংবা পরিচালিত করার মতো দুরভিসন্ধি নির্মূল করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। দ্বিতীয় উপাদানটি অবশ্য প্রত্যক্ষভাবে প্রথমটির ওপর নির্ভরশীল। কারণ নৈতিকতা ও বিবেকসম্পন্ন মেধাবী শিক্ষকেরাই কেবল পারেন এমন উদার ও নৈতিকতাসম্পন্ন রাজনীতিবিদ ও আমলা উপহার দিতে। অতএব জাতিকে উন্নতির শিখরে আরোহিত দেখতে চাইলে মেরুদণ্ড গড়ার কারিগরদের দেশের সবচেয়ে জ্ঞানী ও নৈতিক মানুষ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড! কিন্তু কোন শিক্ষা?
শিক্ষা বলতে আমরা আদতে কী বুঝি? কোন ধরনের শিক্ষাকে আমরা শিক্ষা বলব? শুধুই বিদ্যালয়কেন্দ্রিক রুটিনমাফিক পাঠদানকেই কি আমরা শিক্ষা বলব? নাকি, সত্যিকার জীবনমুখী শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের মতো মানুষ হওয়াকে শিক্ষা বলব? আবার কোনটা সঠিক শিক্ষা বা কোনটা সঠিক শিক্ষা নয়, সেটার মানদন্ড কে নির্ধারণ করবে? এসব প্রশ্নও শিক্ষা আর জাতির মেরুদন্ড সম্পর্কিত কেন্দ্রীয় আলাপমালায় উঁকিঝুঁকি মারে। তাই, এসব প্রশ্নের সঙ্গে আরামদায়ক বোঝাপড়া না-সেরে মেরুদন্ড বানানোর চিন্তা এবং চেষ্টা মেরুদন্ড এবং শিক্ষা দুটোর জন্যই কষ্টদায়ক হতে পারে। তাই, শিক্ষার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও বিধেয় ঠিক করা জরুরি। পাশাপাশি, শিক্ষাপদ্ধতি এবং মূল্যায়ন পদ্ধতিরও একটা সঠিক মূল্যায়ন জরুরি।
সত্যিকার শিক্ষা নিঃসন্দেহে একজন মানুষকে সত্যিকার মানুষ হিসেবে তৈরি করে। দেশ-বিদেশের নানান জ্ঞানভান্ডার থেকে প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত জ্ঞান আহরণের পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থীকে সত্যিকার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে শিক্ষা। শুধু পুথিগত শিক্ষার মাধ্যমে স্বার্থপর, ভোগবাদী, লুটেরা এবং সার্টিফিকেট-সর্বস্ব গ্র্যাজুয়েট উৎপাদন করাই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হতে পারে না।
যদি কোনো জাতির সত্যিকার শক্ত, মজবুত ও টেকসই মেরুদন্ড তৈরি করতে হয়, তাহলে প্রয়োজন গণমুখী শিক্ষা, জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা, এবং সত্যিকার মানুষ গড়ার শিক্ষা। রাষ্ট্র, সমাজ ও সমাজের মানুষের প্রতি যদি একজন শিক্ষার্থীর দৃঢ় কমিটমেন্ট না-থাকে বা যে শিক্ষা সে কমিটমেন্ট তৈরি করতে ব্যর্থ হয়, সে শিক্ষা কোনো দিন কোনো জাতির মেরুদন্ড হতে পারে না।
শিক্ষা নয়, সুশিক্ষাই হবে জাতির মেরুদন্ড
বইয়ের পাতা গিলে ভালো ফলাফলের পিছনে ছুটতে গিয়ে সবাই বেজায় অসুস্থ আর অমানুষে পরিণত হচ্ছে। যার লাগাম টানা সময়ের দাবি। প্রয়োজন এখন সুশিক্ষার। যা দিয়ে দেশ ও জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বিশ্ব দরবারে। আর এই সুশিক্ষার জন্য সুচিকিৎসার প্রয়োজন। তবে সেই সুচিকিৎসা মেরুদন্ডের নয়, সুচিকিৎসার প্রয়োজন আমাদের জাতির শিক্ষার আর শিক্ষাব্যবস্থার।
এই দুর্বল মেরুদন্ডকে বলিষ্ঠ করা এখন সময়ের দাবী। এই জাতির উন্নয়নকল্পে সনদমুখী শিক্ষা থেকে সরে এসে জ্ঞানমুখী সুশিক্ষা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। সকলের জন্য সুশিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারের সদিচ্ছার পাশাপাশি দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণকে এগিয়ে আসতে হবে। সুশিক্ষা ব্যতীত কোনো জাতির প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই জাতিকে জানিয়ে দেওয়া হোক তথাকথিত শিক্ষা নয়, কেবল সুশিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। যা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দাবি রাখে।শিক্ষার মানের এমন নাজুক অবস্থা নিয়ে দেশের হর্তাকর্তারা যখন কেবল শিক্ষার হার বৃদ্ধি নিয়ে বড়াই করে তখন
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় বলতে ইচ্ছা করে "সাত কোটি বাঙালিরে হে মুগ্ধ জননী রেখেছ বাঙালি করে মানুষ করনি ”।
সাত কোটি বাঙ্গালী এখন প্রায় ১৭ কোটিতে উন্নীত হয়েছে, কিন্তু সত্যিকারের মানুষ এখনো খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কাগজে-কলমে শিক্ষার হার বাড়লেও বাস্তবিক জীবনে তার বহিঃপ্রকাশ দুঃখজনক।
বর্তমানে আমরা শিক্ষায় সন্তুষ্ট নই- চাই সুশিক্ষা
শিক্ষা হলো কোন কাক্সিক্ষত বিষয়ে জ্ঞান, দক্ষতা ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে তা কাজে লাগানোর ক্ষমতা অর্জন। বর্তমানে আমরা শিক্ষায় সন্তুষ্ট নই- চাই সুশিক্ষা। এ কথা সর্বজন স্বীকৃত যে, সুশিক্ষা একটি জাতির উন্নতি ও অগ্রগতির চাবিকাঠি। সুশিক্ষা মানুষকে আলোকিত করে এবং বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করে। সুশিক্ষা ব্যক্তি, সমাজ, সর্বোপরি জাতি গঠনে আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে। সুশিক্ষা হলো সেই জনকল্যাণমূলক শিক্ষা- যে শিক্ষায় মানুষের সুপ্ত সম্ভাবনার বিকাশ ঘটিয়ে মানবিক উন্নয়ন সাধন, কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি ও প্রয়োগযোগ্য অভিজ্ঞতা অর্জন করে শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষিত হয় এবং দেশ পরিচালনায় কিংবা দেশের স্বার্থে তথা দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।
সুশিক্ষা তথা প্রকৃত শিক্ষা
যে শিক্ষার মাধমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিকতাবোধ, মানবতাবোধ ও সামাজিক মূল্যবোধ জাগ্রত হবে তথা শিক্ষার্থীরা সত্যিকারের মানুষের মতো মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে তাই সুশিক্ষা তথা প্রকৃত শিক্ষা। এর মাধ্যমেই মানব-জীবনের সামগ্রিক উৎকর্ষ অর্জন এবং প্রকৃত জীবনকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব। এ শিক্ষা মানুষকে আশাবাদী, আত্মপ্রত্যয়ী, উন্নত, আলোকিত ও বিকশিত করে। এর মাধ্যমেই শিশুদের মধ্যে অফুরন্ত সম্ভাবনার আশানুরূপ ও যথার্থ বিকাশ ঘটানো সম্ভব।
তাছাড়া সুশিক্ষার লক্ষ্য হলো সৃষ্টিশীলতা ও মানবিক মূল্যবোধের উৎকর্ষ সাধন। আধুনিক ধারণা মতে, সময় ও অবস্থার পরিবর্তনের সাথে সংগতিপূর্ণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষাই হল সুশিক্ষা। তবে এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে দেশের কতভাগ জনগণ। যেখানে সবাই শুধু নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত এবং সুবিধাবঞ্চিত অর্ধেক জনগণ অক্ষরজ্ঞান ছাড়াই নিজেকে স্বশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে চায়, সেখানে সুশিক্ষার সমাদর কতটুকু তা বুঝতে আর গবেষণার প্রয়োজন পড়ে না।
নৈতিক শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড”
শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড” – এ কথাটি ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে বাক্যটির সাথে আরও একটি শব্দ যোগ করা প্রয়োজন, তা হলো “নৈতিক”।হুম, “নৈতিক শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড”। বর্তমানে শিক্ষিত মানুষদের অনৈতিক কার্যকলাপের যে ছড়াছড়ি দেখতে পাচ্ছি আর অতি উচ্চশিক্ষিত মানুষেরাই তা সমর্থন করে চলেছেন, এভাবে চলতে থাকলে এ জাতির মেরুদন্ড আর থাকবেনা, অচিরেই বিকৃত রুচির মানুষে ভরপুর হয়ে জংলী জাতির দেশ হয়ে যাবে। তাই বাবা-মায়েরা তাঁদের সন্তানদের শিক্ষালয়ে ভর্তি করার আগে একটু যাচাই করে নিবেন যে সেখানে “নৈতিক” নাকি “অনৈতিক” শিক্ষা দেয়া হয়, যারা শিক্ষা দেন তাঁদের মস্তিস্ক আসলেই সুস্থ আছে কিনা।।
বিজ্ঞানমনস্ক সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে শিশুদের প্রকৃত মানবসম্পদে পরিণত করার ব্রত নিতে হবে
জীবনকে দক্ষ গতিশীল, আকর্ষণীয়, গ্রহণযোগ্য ও কল্যাণকামী করতে সুশিক্ষার কোন বিকল্প নেই। একটি জাতির অতীত ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, গৌরব, আশা-আকাক্সক্ষা, রাজনৈতিক দর্শন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারাকে অক্ষুণœ রাখতে এবং জাতি গঠনে সামগ্রিক স্বার্থে নিয়োজিত হতে সুশিক্ষা তথা প্রকৃত শিক্ষাই মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে। সার্বিক অর্থে একটি সুন্দর জীবন প্রতিষ্ঠার একমাত্র মাধ্যম হতে পারে সুশিক্ষা। যেহেতু শিশুর শিক্ষা শুরু হয় পরিবার ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা থেকে, তাই শিশুর সুশিক্ষা নিশ্চিতে পরিবার, সমাজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সবাইকে সমভাবে ভূমিকা রাখতে হবে। শিশুর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করে তার মধ্যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে হবে। সেই সঙ্গে আধুনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে আজকের শিশুদের প্রকৃত মানবসম্পদে পরিণত করার ব্রত নিতে হবে আমাদের সবাইকে।
শিক্ষকগণ জ্ঞানের আলো দিয়ে যুগের সব অন্ধকার দূর করে মানুষের জন্য সভ্য পৃথিবী সৃজন করেন। বস্তুত একজন শিক্ষক নিজে কখনো রাষ্ট্রপতি হন না, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী বা সংসদ সদস্য হন না। কিন্তু তাদের হাতেই তৈরি হয় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিচারপতি, সচিবসহ পুরো সমাজ। এ জন্য তাঁরা জাতি গড়ার কারিগর। এ জন্যই সৃষ্টির শুরু থেকেই তাঁরা শ্রদ্ধার পাত্র। অ্যারিস্টটল, সক্রেটিস থেকে শুরু করে আজকের প্রাথমিক স্কুলের একজন শিক্ষকও এ জন্যই সমান কাতারে—মেরুদণ্ডের কারিগর।
তথ্যসুত্র
সুশিক্ষার বিকল্প নেই, Print.Sangbad.Net.BD.
শিক্ষক ও একটি জাতির গল্প, Nagarik.Prothomalo.
শিক্ষক হলেন শিক্ষার মেরুদণ্ড , North Capital News.
নৈতিক শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড”, Some Where In Blog.
শিক্ষাই কি জাতির মেরুদন্ড?, Jai Jai Din BD.
সুশিক্ষাই হবে জাতির মেরুদন্ড, Delta Times24.
শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড! , Desh Rupantor.
শিক্ষক জাতির মেরুদণ্ডের কারিগর, Ittefaq.