বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাষা ইংরেজি (English.. the Most Popular Language in the World)
Geoffrey Chaucer কে ইংরেজি ভাষার জনক বলা হয়। তিনি লন্ডনে জন্ম গ্রহণ করেন। সত্যি বলতে স্বাভাবিক কোন কথ্য ভাষার জনক বলে কিছু হয় না। সাহিত্যের হয়, পদ্যের হয়, গদ্যের হয়, সাহিত্যের সকল শাখারই হয়।ইংরেজি ব্যাকরণ এর জনক Lindley murray.
বিদেশে কর্মসংস্থান (ইংরেজি জ্ঞান ভালো হলে এটি দক্ষতা হিসেবে ভাবা হয়), গবেষণা, ব্যবসা-বাণিজ্য, উচ্চশিক্ষা প্রতিটি সেক্টরে রয়েছে ইংরেজির গুরুত্ব। ইংরেজি ভাষাজ্ঞান আমাদের এতই দুর্বল যে, আজকাল ফেসবুকেও দেখি একের সঙ্গে অন্যের মনের ভাব প্রকাশ করার ক্ষেত্রে বাংলা ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিয়ে লেখা হচ্ছে।
ইংরেজি বাংলায় ইংরেজি ভাষা আয়ত্ত করার ব্যাপারটি শুরু হয় সতেরো শতকের ত্রিশের দশকে, প্রথমে বালাসোরে এবং পরে হুগলিতে ইংরেজ ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠার পরে। ১৬৫১ খ্রিস্টাব্দে সুলতান শুজা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির উদ্দেশ্যে যে ফরমান জারি করেন, তার মাধ্যমেই বাংলা তথা ভারতে ব্রিটিশদের রাজনৈতিক আধিপত্যের সূচনা হয়; ইংরেজি ভাষা ব্যবহারেরও সূত্রপাত ঘটে তখনই। ব্রিটিশ রাজত্বের মতো ইংরেজি এখন আর সরকারি ভাষা নয়, তবে বর্তমান বাংলাদেশ সরকার দেশে ও বিদেশে এর গুরুত্ব অনুধাবন করে একে শিক্ষার দ্বিতীয় মাধ্যম হিসেবে ঘোষণা করেছে। পাঠ্যবিষয় হিসেবে ইংরেজি এখন অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেখানো হয় এবং প্রায় সকল পাবলিক পরীক্ষায় এটি একটি আবশ্যিক বিষয়। বহু ইংরেজি শব্দও বাংলা শব্দভান্ডারে যুক্ত হয়েছে।
১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে লর্ড মেকলের বিখ্যাত Minute-এ প্রথম ভারতে পাশ্চাত্য বিষয়সমূহ শিক্ষাদানের সুপারিশসহ ইংরেজি ব্যবহারের প্রতি সরকারি অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে লর্ড বেন্টিঙ্কের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভারতীয়দের ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে শিক্ষাদানের বিষয়টিকে বাধ্যতামূলক করা হয়। অবশ্য, এর আগেই ভারতীয় ও ব্রিটিশদের মধ্যে প্রথম যোগাযোগের সময় থেকে বাংলায় ইংরেজি শিক্ষা শুরু হয় ইংরেজ প্রতিনিধি ও দেশিয় সহযোগী বানিয়াদের মধ্যে বাণিজ্যিক ভাষা হিসেবে।
বাংলায় ইংরেজি ভাষার প্রথম যে রূপটি প্রচলিত ছিল তা ছিল মিশ্র-অশুদ্ধ। বানিয়াদের অনেকেই ছিল বহুভাষী এবং আঠারো শতকের শুরুতে তারা মোটামুটি শুদ্ধভাবে ইংরেজি বলতে ও লিখতে পারত। বানিয়ারা ছাড়াও স্থানীয় যে-সকল ব্যক্তি ব্যাকরণ রচনা, অনুবাদ ইত্যাদি কাজে ইংরেজদের সহায়তা করত, তাদেরও ভালো ইংরেজি-জ্ঞান ছিল। যেমন ব্রিটিশদের সঙ্গে পূর্ব-যোগাযোগের ফলে রামরাম বসু যে ইংরেজি-জ্ঞান অর্জন করেছিলেন, তার সাহায্যেই তিনি উইলিয়ম কেরীকে অনুবাদকর্মে সাহায্য করতে পেরেছিলেন।
ইংরেজি বা ইংরাজি (English) ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাপরিবারের জার্মানীয় শাখার পশ্চিম দলের একটি ভাষা। উৎসবিচারে ইংরেজি ভাষাটির সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ভাষাটি হল ফ্রিজীয় ভাষা। এছাড়া এটির সাথে ওলন্দাজ ভাষা, ফ্লেমিশ ভাষা (বেলজিয়ামে প্রচলিত ওলন্দাজ ভাষার উপভাষা) ও নিম্ন জার্মান উপভাষাগুলির সম্পর্ক আছে। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের গ্রেট ব্রিটেন দ্বীপের দক্ষিণাংশে অবস্থিত ইংল্যান্ড নামক দেশটিতে খ্রিস্টীয় আনুমানিক ৬ষ্ঠ শতকে ইংরেজি ভাষার জন্ম হয়। বর্তমানে এটি যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে ছড়িয়ে থাকা অনেক দ্বীপরাষ্ট্রের প্রধান ভাষা। ইংরেজি প্রায় ৩৮ কোটি মানুষের মুখের মাতৃভাষা। মাতৃভাষাভাষীর সংখ্যার বিচারে এর অবস্থান বিশ্বে তৃতীয়।
ইংরেজি ভাষার শব্দভাণ্ডারের ৭০ শতাংশ বিদেশি উৎসজাত। বাকি ৩০ শতাংশ ইংরেজি শব্দ প্রাচীন ইংরেজি, অ্যাংলো-স্যাক্সোন ও জার্মানীয় উৎসজাত। অ্যাংলো-সাক্সোন ও জার্মানীয় উৎসজাত শব্দগুলো খাঁটি ইংরেজি শব্দরূপে গণ্য হয়ে থাকে। ৮ম থেকে ১১শ শতাব্দীর কোন সময়ে রচিত বেওউল্ফ ইংরেজি ভাষার আদি নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত হয়। উইলিয়াম শেকসপিয়র ইংরেজি ভাষার শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক।
১৮শ শতক থেকে ২০শ শতক পর্যন্ত বিশ্বের নানা প্রান্তে ইংরেজরা উপনিবেশ গড়ে তুললে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরাশক্তি হয়ে উঠলে, ইংরেজি বিশ্বের লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কায় পরিণত হয় ২০শ শতকের মধ্যভাগে এসে। বর্তমানে ইংরেজি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অধীত দ্বিতীয় ভাষা। দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুরের মতো প্রাক্তন বহুভাষী ইংরেজ উপনিবেশগুলো স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ইংরেজিকে লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা তথা সহ-সরকারি ভাষা হিসেবে গ্রহণ করে। সব মিলিয়ে মাতৃভাষাভাষী নন এরকম ৭৫ কোটি মানুষ বিদেশী ভাষা হিসেবে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করেন। আধুনিক ইলেকট্রনিক, টেলিযোগাযোগ ও কম্পিউটার প্রযুক্তি, বিশ্ববাণিজ্য ও কূটনীতির প্রধান ভাষা হিসেবে ইংরেজি গোটা বিশ্বের মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে আছে।সংখ্যা
ইংরেজি ভাষাটি কয়টি দেশের মাতৃ ভাষা ?
এখনকার যুগে বিশ্বের নামকরা অনেক দেশের প্রথম অফিসিয়াল ভাষাই ইংরেজি। প্রায় সকল দেশের দ্বিতীয় অফিসিয়াল ভাষাও ইংরেজি। বিশ্বে ইংরেজি ভাষা এতোটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, যেটা ছাড়া বৈশ্বিকভাবে যোগাযোগ স্থাপন করা বা উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলা একপ্রকার অসম্ভব। তবে কথা হলো প্রথম অঅফিসিয়াল ভাষা ইংরেজী হলেও মাতৃভাষা ইংরেজি অথবা জন্ম থেকেই সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকজন ইংরেজিতে কথা বলে এমন দেশ খুবই কম।
তার আগে একটা উদাহরণ দিই। আমার মাতৃভাষা কিন্তু একদম পুরোপুরি বাংলা নয় কারণ আমরা যতোই স্ট্যান্ডার্ড বাংলায় কথা বলতে যাই না কেনো কথায় কথায় আঞ্চলিক ভাষার টান কিংবা দু'একটা আঞ্চলিক কথা মনের অজান্তে বের হয়ে যায়। এসব ছোটখাটো আঞ্চলিক ভাষার যেহেতু কোনো পরিচিতি বা গুরুত্ব সেভাবে দেয়া হয়না তাই আর অতোদূর যাবোনা শুধু বুঝানোর ক্ষেত্রে বললাম। আমি জন্মের পরেই মায়ের ভাষা রাজবংশী/রংপুরী ভাষায় কথা বলা শিখেছি। ধীরেধীরে পড়াশোনা বা পারিপার্শ্বিক পরিবেশের ভিত্তিতে শুদ্ধ বাংলাটা আয়ত্ত করেছি। তেমনি কিছু দেশের জনগণ আছে যারা ইংরেজিটা আঞ্চলিক আকারে মায়ের মুখে শিখেছে সে দেশগুলোর কথাই এখানে উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। আজ এখানে উল্লেখ করবো যারা/যে দেশের মানুষজন জন্মগত ভাবেই ইংরেজী ভাষাটাকে আয়ত্ত করেছে সেই দেশগুলোর নাম।
ইংরেজি ভাষার ইতিহাস
১৯৬৬সালে উত্তর ফ্রান্সের নরমঁদি অঞ্চলে বসবাসকারী নর্মান জাতি ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ইংল্যান্ড আক্রমণ করে। নর্মানদের ইংল্যান্ড বিজয়ের পর প্রায় ৩০০ বছর ধরে নর্মান বংশোদ্ভূতরাই ইংল্যান্ড শাসন করেছে। এসময় রাজকীয় ও প্রশাসনিক কাজকর্ম কেবল নর্মানদের কথ্য এক ধরনের প্রাচীন ফরাসি ভাষায় সম্পন্ন হত। এই যুগে বিপুল পরিমাণ ফরাসি শব্দ প্রাচীন ইংরেজি ভাষায় আত্তীকৃত হয়ে যায়, ইংরেজি ভাষার বেশিরভাগ বিভক্তি লুপ্ত হয় এবং এর ফলস্বরূপ মধ্য ইংরেজি ভাষার আবির্ভাব ঘটে। প্রাচীন ও মধ্য ইংরেজির সবচেয়ে বিখ্যাত সাহিত্যকর্মের মধ্যে আছে বেওউল্ফ এবং চসারের দ্য ক্যান্টারবেরি টেলস।
১৫০০ সালের দিকে বিরাট স্বরধ্বনি সরণ সংঘটিত হয় এবং আধুনিক ইংরেজির উদ্ভব ঘটে। শেক্সপিয়ারের রচনাসহ আধুনিক ইংরেজি সাহিত্যের পুরোটাই এই আধুনিক ইংরেজিতে লেখা। এথ্নোলগ অনুসারে ইংরেজি ভাষার মাতৃভাষীর সংখ্যা প্রায় ৩৪ কোটি। মাতৃভাষীর সংখ্যা অনুযায়ী ইংরেজির স্থান ম্যান্ডারিন, হিন্দি ও স্পেনীয় ভাষার পরেই।
প্রথমে ইংল্যান্ড ও পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাবের কারণে বিশ্বের অন্য যেকোনো ভাষার চেয়ে ইংরেজিই বেশি বিস্তার লাভ করেছে। ইংরেজি প্রায় ৫২টি দেশের জাতীয় বা সরকারি ভাষা। বিশ্বের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশই ইংরেজিভাষী। আধুনিক যোগাযোগে ও বিভিন্ন পেশায় ইংরেজির ব্যাপক ব্যবহারের কারণে এটি বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অধীত দ্বিতীয় ভাষা। সংস্কৃতি ও প্রযুক্তির নতুন নতুন আন্তর্জাতিক পরিভাষার অধিকাংশই ইংরেজি থেকে এসেছে।
ইংরেজি শেখার গুরুত্ব
শিক্ষার্থীর ইংরেজি ভাষাজ্ঞান অত্যন্ত দুর্বল। তারা ভালো করে ইংরেজি পড়তে ও লিখতে পারে না। আর মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে এটা তো ঠিক যে, বিশেষজ্ঞ ইংরেজি শিক্ষকের অনেক চাহিদা। তারা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ইংরেজি বিষয়ে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষা দেয়ার চেয়ে কোচিং সেন্টারে দিতেই বেশি আগ্রহী। তাই অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা এসব কোচিং সেন্টারে রীতিমতো লাইন দিয়ে তাদের (শিক্ষার্থীদের) নাম রেজিস্ট্রেশন করিয়ে থাকেন। একটি ব্যাচে অনেক শিক্ষার্থী নিয়ে একজন শিক্ষকের পক্ষে পাঠদান যতটুকু না সম্ভব হয়, তার থেকে সেখানে শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য হয় বেশি।
বিশেষজ্ঞ শিক্ষকের কাছে ইংরেজি শিখতে পাঠিয়ে অভিভাবকরা একটু তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেন। কিন্তু শিক্ষাথীরা কতটুকু ইংরেজি শিখছে তা একটি পরিসংখ্যান থেকে সহজে অনুধাবন করা যায়। ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় ৪০ হাজার ৫৬৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র দু’জন ইংরেজি বিভাগে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছিল। ২০১৬ সালে ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৯০ ভাগ পরীক্ষার্থী ফেল করে ইংরেজিতে। দেশের ইংরেজি বিষয়ের এই তথৈবচ অবস্থা দেখে শিক্ষাবিদরাও হতাশা ব্যক্ত করেছেন।
প্রকৃতপক্ষে একটি শিক্ষাজীবন শেষে (একাডেমিক ইয়ার) শিক্ষার্থীরা যখন ইংরেজিতে দুর্বল থেকে যায়, তখন তা হয় দেশের জন্য বোঝাস্বরূপ। বর্তমান যুগ জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। এখানে ইংরেজি ভাষাজ্ঞান প্রয়োগ করেই আমাদের বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে হয়। বিদেশে কর্মসংস্থান (ইংরেজি জ্ঞান ভালো হলে এটি দক্ষতা হিসেবে ভাবা হয়), গবেষণা, ব্যবসা-বাণিজ্য, উচ্চশিক্ষা প্রতিটি সেক্টরে রয়েছে ইংরেজির গুরুত্ব।
ইংরেজি শিক্ষার বিপর্যয় রোধে প্রয়োজন জাতীয় ভাষাগত ও জ্ঞানগত দক্ষতা
ভাষাগত দক্ষতা নিশ্চিত করতে হলে, ভাষাগত দক্ষতা মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। বর্তমানে প্রচলিত কৃতি পরীক্ষার সাথে দক্ষতা ভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতির প্রবর্তন করতে হবে। এ প্রকার মূল্যায়ন পদ্ধতির প্রবর্তন করতে হলে যা জানা প্রয়োজন তা হলো ভাষাগত দক্ষতা, বুদ্ধিমত্তা, জ্ঞানীয় প্রবণতা ও জ্ঞানের সাথে সম্পৃক্ত। অথচ শুধুমাত্র ইংরেজি শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে বুদ্ধিমত্তা, জ্ঞানীয় প্রবণতা ও জ্ঞান ইত্যাদির সবগুলো অর্জন ঘটে না। একইভাবে ইংরেজি ভাষাগত দক্ষতা পরিমাপক IELTS ও TOEFL কেবল ভাষাগত দক্ষতা পরিমাপক নয়, এটি বুদ্ধিমত্তা, জ্ঞানীয় প্রবণতা ও জ্ঞান পরিমাপকও বটে। আবার SAT (scholastic aptitude test) ও GRE (graduate record examination) যথাক্রমে জ্ঞানীয় প্রবণতা ও জ্ঞান পরিমাপক হলেও, এগুলো ভাষাগত দক্ষতা পরিমাপকও বটে। আমরা জানি যে, ভাষাগত দক্ষতা পরিমাপক দ্বারা প্রারম্ভিক, প্রাথমিক, প্রাগমাধ্যমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চতর ইত্যাদি পরস্পর ক্রমোচ্চ ৬ ধাপে ৪ প্রকার দক্ষতা পরিমাপ করা হয়। এই ৪ প্রকার ভাষাগত দক্ষতা হলো বাচন, শ্রবণ, লিখন ও পঠন। IELTS ও TOEFL-এর সাহায্যে নিম্নতর ধাপে শুধুমাত্র ইংরেজি দক্ষতা পরিমাপ করা হয়। কিন্তু পরস্পর উচ্চতর ধাপে কিছুটা জ্ঞানীয় প্রবণতা ও জ্ঞানও পরিমাপ করা যায়। কাজেই একজন শিক্ষার্থী যে ইংরেজিসহ অন্যান্য যে সব বিষয় পড়ে থাকে, তার সবগুলোই ভাষাগত দক্ষতা পরিমাপকে প্রতিফলিত হয়।
সেজন্য বিভিন্ন দেশে SAT ও GRE-এর আদলে নিজস্ব জ্ঞানীয় প্রবণতা ও জ্ঞান পরিমাপক তৈরি করা হয় এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্বে ভর্তির ক্ষেত্রে এই পরিমাপকের সাফাল্যাঙ্ক (score) শর্তযুক্ত করা হয়। কাজেই ভাষাগত বা জ্ঞানগত দক্ষতা ব্যতীত ভর্তি হওয়ার সুযোগ থাকে না বলে, উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম সূচারুরূপে পরিচালিত হয়। এসব বিষয় বিবেচনায় নেয়া হলে, বাংলাদেশেরও নিদেনপক্ষে নিজস্ব ভাষাগত দক্ষতা পরিমাপক তৈরি করা প্রয়োজন ও তা ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থায় ইংরেজি ভাষাগত দক্ষতা মূল্যায়নে প্রবর্তন করা প্রয়োজন। প্রস্তাবিত এই মূল্যায়ন পরিমাপকের নাম হতে পারে জাতীয় ভাষাগত দক্ষতা পরিমাপক। এটি পরিচালনার জন্য শিক্ষা বিভাগের অধীনে জাতীয় ভাষাগত ও জ্ঞানগত দক্ষতা পরিমাপক সংস্থা নামক একটি প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা যেতে পারে। উল্লেখ্য ২০০০ খ্রিস্টাব্দে যখন ইংরেজি মাধ্যমে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত তখনই ইংরেজি দক্ষতা উপযোগিতার বিষয়টি আলোচনায় এসেছিলো। মূলত: সে সময়ই এই মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করা প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু তখন এটি চালু না করে শিক্ষাবিদদের পরামর্শে বিশ্বিদ্যালয় ভর্তির বছর ১০০ নম্বরের ইংরেজি ভাষা কোর্স প্রবর্তন করে। এই কোর্স প্রবর্তনের উদ্দেশ্য ছিলো শিক্ষার্থীদের ইংরেজি দক্ষ করে গড়ে তোলা। এ ধরণের কোর্স প্রবর্তনের বিষয়টি নীতি-নির্ধারকদের ইংরেজি শিক্ষা সম্পর্কে অজ্ঞতা ও অবজ্ঞার কথাই জানান দেয়।
বর্তমান সময়ে ইংরেজি আপনার জন্য কেন খুব প্রয়োজন?
ইংরেজি শিক্ষা খুব আনন্দদায়ক। ইংরেজি শিক্ষা আপনার কর্মজীবনে সফলতা বয়ে আনে। ইংরেজি শিক্ষার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পায়। ইংরেজি শিক্ষা আপনাকে সাহায্য করে। ইংরেজি শিক্ষা আপনাকে স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া থেকে রক্ষা করবে। ইংরেজি আপনাকে যেকোন গুরুতর কঠিন ভাষাও বুঝতে সহায়তা করে। ইংরেজি শিক্ষা আপনাকে আরও বেশি শিখতে সাহায্য করে। ইংরেজি শিক্ষা আপনার মনের ভয় দূর করে।
ইংরেজি শেখার উপকারিতা
১. স্মার্ট ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ২. উচ্চশিক্ষা গ্রহণে সুবিধা ৩. অর্থনৈতিক উপকারিতা ৪. বিভিন্ন দেশে খুব সহজে ভ্রমণ ৫. অনলাইন ক্যারিয়ার
ইংরেজি শেখার আরো বেশকিছু সুবিধা
নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলতে পারবেন। নিজেকে সবার সামনে আরো বেশি স্মার্ট হিসেবে উপস্থাপন করতে পারবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় সদ্ব্যবহার করতে পারবেন। ক্যারিয়ারে খুব দ্রুত প্রমোশন পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করতে পারবেন। বন্ধুমহলে নিজের আলাদা এবং গ্রহণযোগ্য একটি অবস্থান গড়ে তুলতে পারবেন।
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাষা হিসেবে ইংরেজি কতদিন তার অবস্থান ধরে রাখতে পারবে?
এই সেদিনও কিন্তু ইংরেজিতে 'টেক্সট' এবং 'ফ্রেন্ড' ছিল সিম্পল নাউন, বা বিশেষ্য। এখন কিন্তু আমরা দুটি শব্দকেই 'ভার্ব' বা ক্রিয়াপদ হিসেবে ব্যবহার করছি। যেমন, 'আই উইল টেক্সট ইউ' বা 'হোয়াই ডোন্ট য়্যু ফ্রেন্ড মি'?কম্পিউটারে ট্রান্সলেশন প্রযুক্তি, হাইব্রীড বা শংকর ভাষার বিস্তার এবং চীনের উত্থান- এসব ইংরেজির জন্য সত্যিকারের হুমকি, কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু আমি নিজেকে খুবই সৌভাগ্যবান মনে করি এ কারণে যে, এমন এক দেশে আমার জন্ম, আমি শেক্সপীয়ার, চসার, মিল্টন বা ডিকেন্সের ভাষাকে নিজের ভাষা বলে গণ্য করতে পারি। যদিও এখন যাকে আমি ইংরেজি ভাষা বলছি, সেটি তাদের আমলের ইংরেজি থেকে অনেক আলাদা।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার একজন কম্পিউটার বিজ্ঞানী ওনকিউম লী একটি গবেষণা করছেন। তার লক্ষ্য এমন এক ভয়েস রিকগনিশন এবং ট্রান্সলেশন প্রযুক্তি তৈরি করা, লোকে যখন কোন কাস্টমার সার্ভিস হেল্পলাইনে এই প্রযুক্তির সঙ্গে কথা বলবে, তারা বুঝতেই পারবে না এটি মানুষ নাকি কম্পিউটার!
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐ একই বিভাগের 'মেশিন লার্নিং, লিঙ্গুইস্টিকস এন্ড কম্পিউটার সায়েন্সে'র অধ্যাপক ক্রিস্টোফার ম্যানিং। তিনি দাবি করছেন, খুব নিকট ভবিষ্যতেই এই প্রযুক্তি আমরা ব্যবহার করবো। তাঁর মতে, কম্পিউটার ট্রান্সলেশন টেকনোলজি এতটাই ভালো হবে যে, এটি আসলে মানুষের চেয়েও ভালো অনুবাদকের কাজ করবে।
ইংরেজি ভাষার জন্য চ্যালেঞ্জটা কেবল এদিক থেকে নয়। বিপদ ঘটছে অন্যদিক থেকেও। এতবেশি সংখ্যক মানুষ দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ইংরেজিতে কথা বলেন যে নানা রকম 'হাইব্রীড' বা জগাখিচুড়ি ইংরেজি ভাষার বিস্তার ঘটছে বিশ্বে। 'স্ট্যান্ডার্ড' বা সত্যিকারের ইংরেজি ভাষার কিছু কিছু অংশের সঙ্গে স্থানীয় ভাষা মিলিয়ে তৈরি হচ্ছে এসব ভাষা। যেমন ভারতেই আপনি শুনতে পাবেন হিংলিশ (হিন্দি-ইংলিশ), বেংলিশ (বেঙ্গলি-ইংলিশ) এবং তাংলিশ (তামিল-ইংলিশ)।
যুক্তরাষ্ট্রে অনেক হিস্পানিক আমেরিকান তাদের মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার ঐতিহ্য ধরে রাখতে চায়। তারা ইংরেজি এবং তাদের বাবা-মা বা তারও আগের প্রজন্মের অভিবাসী পিতামহদের ভাষা মিলিয়ে তৈরি করেছে এক নতুন ভাষা, স্প্যাংলিশ।
কেন ইংরেজি ভাষা ছাড়া জ্ঞান অর্জন অনেকটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়?
একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে পৃথিবীতে ভাষার মাধ্যমে হিসেবে ইংরেজি ভাষা কে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়। সারা পৃথিবীতে যে কোন পাঁচ ব্যক্তির মধ্যে যদি পরিসংখ্যান করা হয়, তাহলে দেখা যাবে অন্তত একজন ইংরেজি ভাষাটা জানে বা ইংরেজি ভাষা বুঝতে পারে।আজ আপনি বা আপনার সন্তানকে যদি আরো বেশি উচ্চ শিক্ষিত করতে চান তা সে বিজ্ঞান হোক বা মহাকাশ বিদ্যা হোক বা কম্পিউটারে যে কোন বিষয় হোক না কেন ইংরেজি দরকার হবেই। নিজের দেশেই যদি কোন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি পেতে চান কিংবা বিদেশে গিয়েও যদি কাজ করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ইংরেজিতে দক্ষ হতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই।বর্তমানে সারাবিশ্বে ৫৩ টি দেশে অফিসিয়াল ভাষা হিসেবে ইংরেজি কে ব্যবহার করা হয়। সেই সমস্ত দেশে প্রচুর কর্মরত মানুষ একমাত্র ভাষার মাধ্যম হিসেবে ইংরেজি ব্যবহার করে।
ইংরেজি ভাষাজ্ঞান আমাদের এতই দুর্বল যে, আজকাল ফেসবুকেও দেখি একের সঙ্গে অন্যের মনের ভাব প্রকাশ করার ক্ষেত্রে বাংলা ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিয়ে লেখা হচ্ছে। মনের ভাব প্রকাশে প্রকৃত ইংরেজি ভাষার ব্যবহার খুব কম দেখা যায়। এটাও সত্য, অনেকে বিএ, এমএ পাস করেও ইংরেজিতে কথা বলতে পারে না। এটি কি শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি নাকি ইংরেজি ভাষা শিক্ষায় অনীহা তা ভেবে দেখা প্রয়োজন।
আজকাল আধুনিক যেসব মাধ্যম আমাদের হাতের নাগালে আছে, যেমন- ফেসবুক, ইউটিউব, বিভিন্ন অ্যাপ ইত্যাদি ব্যবহার করে; ইংলিশ মুভি, বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা ইত্যাদি চ্যানেল নিয়মিত দেখেশুনে একজন ইংরেজিতে দক্ষ হয়ে উঠতে পারে। ইংরেজি ভাষায় সাবলীলতা অর্জনের জন্য পরিবেশও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নিজ পরিবার, বিদ্যালয় বা চারপাশের মানুষজনের সঙ্গে ইংরেজিতে বেশি করে কথা বলার আগ্রহ থেকে ইংরেজি ভাষা প্রয়োগের একটি পরিবেশ তৈরি হতে পারে। শ্রেণীকক্ষেও শিক্ষককে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে। এছাড়া ইংরেজি ভাষার প্রসারে সরকারের উদ্যোগে বয়স উপযোগী বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়া যেতে পারে।
তথ্যসুত্র
ইংরেজি আপনার জন্য কেন খুব প্রয়োজন?
বিশ্বজুড়ে ইংরেজি ভাষার যে আধিপত্য।
ভাষাগত দক্ষতা মূল্যায়ন পদ্ধতিতে