প্রথমবার কক্সবাজারে গেলো ট্রেন(The First Train to Cox's Bazar)

অবশেষে কক্সবাজারবাসীর অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো। ট্রেনের হুইসেল শুনলো তারা। রবিবার (০৫ নভেম্বর) চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মিত নতুন রেলপথে প্রথমবারের মতো ট্রেন গেছে পর্যটন নগরীতে। সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে জেলা সদরের ঝিংলজায় অবস্থিত আইকনিক স্টেশনে প্রবেশ করে ট্রেনটি। নতুন রেললাইনে প্রথম ট্রেনকে স্বাগত জানাতে বিকাল থেকে স্টেশনে জড়ো হন হাজারো মানুষ।

এর আগে সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে আটটি বগি সংযুক্ত ট্রেনটি ছাড়া হয়। তবে এটি যাত্রীবাহী কোনও ট্রেন ছিল না। এটা ছিল পরিদর্শন ট্রেন। চট্টগ্রাম থেকে পৌঁছাতে ৯ ঘণ্টা ২৫ মিনিট লাগে। মূলত পরিদর্শন দল বিভিন্ন স্টেশন, সেতু, রেলপথের শেষ হওয়া নির্মাণকাজ ঘুরে দেখেছে। এ জন্য বিভিন্ন স্থানে বিরতি দেওয়া হয়। ট্রেনটিতে সরকারি রেল পরিদর্শক রহুল কাদের আজাদ, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজমুল ইসলামসহ রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা ছিলেন। 

কক্সবাজারে দেশের প্রথম দৃষ্টিনন্দন আইকনিক রেলস্টেশন

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দের পাড়াতে ২৯ একর জমিতে নির্মিত হয়েছে ১ লাখ ৮৭ হাজার বর্গফুটের দৃষ্টিনন্দন ছয়তলা ভবনের এই রেল স্টেশন। যেখানে রয়েছে পাঁচ তারকা মানের হোটেল, শপিংমল, রেস্টুরেন্ট, শিশুযত্ন কেন্দ্র, পোস্ট অফিস, কনভেনশন সেন্টার, ইনফরমেশন বুথ, এটিএম বুথ, মসজিদ, লাগেজ রাখার লকারসহ অত্যাধুনিক সব সুবিধা। যা ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। উদ্বোধনের অনেক আগেই পর্যটকরা ঘুরে গেছেন আইকনিক এই রেল স্টেশন। 

আক্ষরিক অর্থে ঝিনুক না হলেও সমুদ্র দেখতে এসে প্রথম দর্শনেই সামুদ্রিক আবহ পাওয়া যাবে গোটা স্টেশনে। কেবল আসা-যাওয়ার জন্যই হয়নি এই স্টেশন, দৃষ্টিনন্দন করতে দেওয়া হয়েছে এর বহুমাত্রিক রূপও। নান্দনিক ডিজাইন আর নির্মাণ শৈলীর পাশাপাশি বহুমাত্রিক পরিধি নিয়ে গড়ে ওঠা এই স্টেশন তাই পরিণত হয়েছে দর্শনার্থীদের বিনোদনের নতুন গন্তব্য।

ইউরোপের মতো রেলস্টেশন কক্সবাজারে, ৯০ শতাংশ কাজ শেষ

রেলওয়ের প্রকল্প সুত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার ও রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্ত ঘুমধুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়। পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ করার পাশাপাশি মিয়ানমারসহ ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করা এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। তবে কক্সবাজার থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটারের কাজ আপাতত হচ্ছে না।  

চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১শ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা করা হয়।দোহাজারি কক্সবাজার রেলওয়ে প্রজেক্টের সিনিয়র ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ারিং রাসেল মিয়া জানান, প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার সময়সীমা ২০২৪ সাল হলেও আমাদের ধারণা ২০২৩ সালের জুনের আগেই কাজ শেষ হবে।

কী আছে কক্সবাজারের আইকনিক রেলস্টেশনে

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের কর্মকর্তারা বলেন, শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ছয়তলা ভবনের রেলস্টেশনের সামনে খোলা মাঠে তৈরি হয়েছে ঝিনুক আকৃতির দৃষ্টিনন্দন একটি ফোয়ারা। যাত্রীরা ঝিনুক ফোয়ারা দিয়ে স্টেশনে প্রবেশ করবেন। তারপর চলন্ত সিঁড়ির মাধ্যমে পদচারী–সেতু হয়ে উঠবেন ট্রেনে। আবার ট্রেন থেকে নেমে ভিন্ন পথে বেরিয়ে যাত্রীরা পা বাড়াবেন সমুদ্রসৈকতের দিকে। গমন ও বহির্গমনের জন্য তৈরি হয়েছে পৃথক দুটি সড়ক। আছে গাড়ি পার্কিংয়ের পৃথক তিনটি বড় জায়গা।

ভবনের পূর্ব পাশে নির্মিত হয়েছে ৮০ ফুট লম্বা পদচারী–সেতু। এর সঙ্গে যুক্ত করা হয় পৃথক তিনটি চলন্ত সিঁড়ি। বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য রাখা হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। ভবনের উত্তরে ৬৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১২ মিটার প্রস্থের ৩টি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছে।মূল ভবনের নিচতলার রাখা হয়েছে টিকিট কাউন্টার, অভ্যর্থনা কক্ষ, লকার, তথ্যকেন্দ্র, মসজিদ, শিশুদের বিনোদনের জায়গা, প্যাসেঞ্জার লাউঞ্জ ও পদচারী–সেতুতে যাতায়াতের পথ। দ্বিতীয় তলায় শপিংমল, শিশুযত্ন কেন্দ্র, রেস্তোরাঁ ইত্যাদি। তৃতীয় তলায় ৩৯ কক্ষবিশিষ্ট তারকা মানের হোটেল, চতুর্থ তলায় রেস্তোরাঁ, শিশুযত্ন কেন্দ্র, কনফারেন্স হল ও কর্মকর্তাদের কার্যালয়।

Taken From Prothom Alo.

ঘুরবে অর্থনীতির চাকা

আইকনিক রেলস্টেশন দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসছেন। কিন্তু উদ্বোধনের আগে নিরাপত্তার কারণে তিন দিন ধরে কেউ স্টেশনের কাছে যেতে পারছেন না। আগামীকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনের পর সেখানে হাজারো মানুষের ঢল নামবে জানিয়ে কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আয়াছুর রহমান বলেন, কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন ছিল কক্সবাজারবাসীর শত বছরের স্বপ্ন। সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য শেখ হাসিনার প্রতি কক্সবাজারবাসীর কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।

কক্সবাজার-ঢাকা যাত্রীবাহী ট্রেনের যাত্রা শুরু

কক্সবাজার রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. ফরহাদ বিন জাফর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উদ্বোধনী ট্রেনে ঢাকাগামী ১ হাজার ৩৮০ জন যাত্রী থাকবে। ট্রেনটিতে ২৩টি বাস বা বগি থাকবে।'গত ২৩ নভেম্বর উদ্বোধনী ট্রেনের টিকিট অনলাইনে বিক্রি শুরুর দিন প্রথম আড়াই ঘণ্টায় বিক্রি হয়ে যায়।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে জানানো হয়েছে, কক্সবাজার-ঢাকা ৪৮০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নবনির্মিত রেলপথে যাত্রী নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু উপলক্ষে আজ সকাল সাড়ে ১১টায় কক্সবাজার রেলস্টেশনে একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। এতে রেলসচিব মো. হুমায়ুন কবির উপস্থিত থাকবেন।রেলওয়ে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন এ রেলপথে চলাচলকারী ট্রেনটির নামকরণের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে ছয়টি নাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়। সেই ছয়টি নাম থেকে প্রধানমন্ত্রী ট্রেনটির নাম 'কক্সবাজার এক্সপ্রেস' চূড়ান্ত করেন।

চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের জুন মাসে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয় প্রায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেলপথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

কক্সবাজার রেলপথ সমুদ্র ছোঁবে 

পাহাড়ের নিস্তব্ধতা, ঝাউবাগান পেরোনো বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ, স্থবির নীল আকাশ আর সমুদ্রের টানা গর্জনের সঙ্গে মিশতে যাচ্ছে ট্রেনের হুইসল। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হচ্ছে ট্রেন। তবে যাত্রী নিয়ে বাণিজ্যিক ট্রেন কক্সবাজার থেকে চলবে ১ ডিসেম্বর। ঢাকা থেকে যাবে ২ ডিসেম্বর।

কক্সবাজারকে ট্রেন নেটওয়ার্কে যুক্ত করার ভাবনা ছিল ব্রিটিশদের, ১৮৯০ সালে। ১৩৩ বছর পর সেই ভাবনার বাস্তবায়ন হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরে। বিনিয়োগ সংকট, ভূমি অধিগ্রহণ, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মতো বড় বড় বাধা পেরিয়ে বাস্তবায়িত হয়েছে কক্সবাজার রেলপথ। আজ চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মীয়মাণ রেলপথের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উন্মুক্ত দরপত্রে ১,৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয়

এই প্রকল্প উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করায় সরকারের এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলে জানিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন (আইএমইডি) বিভাগ।

আইএমইডির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘উন্মুক্ত দরপত্র না হলে কেনাকাটায় বেশি অনিয়ম হয়। দোহাজারী-কক্সবাজার প্রকল্পের একটি অংশের কেনাকাটায় যে পরিমাণ বরাদ্দ হয়েছিল উন্মুক্ত দরপত্রে ঠিকাদারদের প্রতিযোগিতায় সেই খরচ ৪১ শতাংশ কমে গেছে। এটা আমাদের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পের নির্মাণকাজের প্যাকেজ ১-এর লট ১-এ ক্রয় বাবদ প্রস্তাবিত বরাদ্দ ছিল চার হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। কিন্তু উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি হয় দুই হাজার ৬৮৭ কোটি টাকার।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দুই দেশের সরকারি পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে জি-টু-জি পদ্ধতিতে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় সেসব প্রকল্পে খরচ বেশি হয়। কারণ অর্থায়নকারী দেশের ঠিকাদাররা সরাসরি কাজ পায়। উন্মুক্ত প্রতিযোগিতায় যেতে হয় না।

নতুন রেলপথের অর্থায়ন

• ২০১০ সালে ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকার প্রকল্পটি প্রথম অনুমোদন। • ট্রান্স এশীয় রেলপথের সঙ্গে সংযুক্ত হতে ব্রডগেজ রেলপথ করতে প্রকল্প সংশোধন করা হয় ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল। • জমি অধিগ্রহণসহ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১৬ হাজার ১৮২ কোটি টাকা।• চট্টগ্রামে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০.৮৩১ কিলোমিটার এবং রামু হতে মিয়ানমারের কাছে গুমধুম সীমান্ত পর্যন্ত আরও ২৮.৭৫২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হয়। • এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ব্যয় দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।• চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (সিআরইসি) ও দেশীয় তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন (সিসিইসিসি) ও দেশীয় ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড পৃথক দুই লটের কার্যাদেশ পায়।• ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল শেখ হাসিনা তার সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

পর্যটন নগরে চালু হলো বহুল প্রত্যাশিত রেলপথ

দোহাজারি-কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার দুপুর একটায় এ স্টেশন উদ্বোধন করেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে নেটওয়ার্কের ৪৮তম জেলা হিসেবে যুক্ত হয়েছে কক্সবাজার।পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের নগরী কক্সবাজারে এতদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সড়ক ও বিমান পথে পর্যটকদের আসার সুযোগ থাকলেও আজ থেকে যুক্ত হলো নতুন এক যোগাযোগ ব্যবস্থা।

দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের জন্য ২০১০ সালের ৬ জুলাই দোহাজারী-রামু-ঘুমধুম রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন পায়।মেগা প্রকল্প হিসেবে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তীতে টেন্ডার হলে দোহাজারি-চকরিয়া এবং চকরিয়া-কক্সবাজার (লট-১ ও লট-২) এই দুই লটে চীনা প্রতিষ্ঠান সিআরসি (চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন) ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান তমা কনসট্রাকশন প্রকল্পের নির্মাণ কাজ পায়।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শনিবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা থেকে আকাশপথে রওনা হয়ে ১০টা ৪৫ মিনিটে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে বেলা ১১টায় কক্সবাজারের ঝিলংজায় আইকনিক রেল স্টেশনে আসেন।নবনির্মিত দৃষ্টিনন্দন এই স্টেশনে পৌঁছালে শিল্পীদের একটি দল প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানায়। উদ্বোধনের আগে বর্তমান সরকারের সময়ে রেল যোগাযোগগের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

কক্সবাজার রেল যোগাযোগের উদ্বোধনের পর আইকনিক রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কাটেন প্রধানমন্ত্রী। পরে পতাকা উড়িয়ে হুইসেল বাজানোর মাধ্যমে যাত্রা শুরু হয় এ রুটে ট্রেনের। লাল-সবুজ সেই ট্রেনে চড়েই রামু যান সরকাররামু থেকে প্রধানমন্ত্রী মহেশখালী যাবেন। সেখানে তিনি জনসভায় ভাষণ দেবেন। এ জনসভায় রামু, কক্সবাজার সদর, কুতুবদিয়া, চকরিয়াসহ জেলার প্রতিটি উপজেলা থেকে অন্তত ৩ লাখ মানুষ সমাগমের প্রস্তুতি নিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।

ঝিনুকের আদলে ছয়তলা আইকনিক দৃষ্টিনন্দন রেলস্টেশন।

• কক্সবাজারে তৈরি হয়েছে ঝিনুকের আদলে ছয়তলা আইকনিক দৃষ্টিনন্দন রেলস্টেশন। এটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২১৫ কোটি টাকা।• দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজরা, ইসলামাবাদ এবং রামু রেলস্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে।• এসব স্টেশনে রয়েছে কম্পিউটার বেইজড ইন্টারলক সিগন্যাল সিস্টেম এবং ডিজিটাল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম।

রেল চলাচল

• প্রথমে চট্টগ্রাম থেকে দুই জোড়া এবং ঢাকা থেকে এক জোড়া ট্রেন আসা-যাওয়া করবে। তিনটি ট্রেনই আন্তঃনগর। • ঢাকা থেকে যে ট্রেনটি কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছাড়বে সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে। আর কক্সবাজারে পৌঁছাবে ৬টা ৩০ মিনিটে। পর্যায়ক্রমে এই রুটে আরও ট্রেন বাড়বে।

রেলপথ নির্মাণ এবং উন্নয়ন

• এ রেলপথ সিঙ্গেল লাইন ডুয়ালগেজ। মিটারগেজ ও ব্রডগেজ দুই ধরনের ট্রেন চলতে পারবে।• দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের আওতায় ৩৯টি বড় আকারের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। • দোহাজারী থেকে চকরিয়া এবং চকরিয়া থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথে ৩৯টি ব্রিজ ও আন্ডারপাসসহ ২৫১টি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে।• বিভিন্ন শ্রেণির ১৪৪টি লেভেলক্রসিং নির্মাণ করা হয়েছে।• হাতিসহ বন্যপ্রাণী চলাচলের জন্য আলাদা আন্ডারপাস করা হয়েছে।


তথ্যসুত্র

প্রথমবার কক্সবাজারে গেলো ট্রেন, Bangla Tribune.

পর্যটন নগরে চালু হলো বহুল প্রত্যাশিত রেলপথ, Ekattor.

সমুদ্র ছোঁবে ট্রেন , Kalerkantha.

কক্সবাজার-ঢাকা যাত্রীবাহী ট্রেনের যাত্রা শুরু , The Dailystar.

কক্সবাজারের আইকনিক রেলস্টেশনে, Prothom Alo.

ইউরোপের মতো রেলস্টেশন কক্সবাজারে,  Bangla News24.

কক্সবাজারে দেশের প্রথম দৃষ্টিনন্দন আইকনিক রেলস্টেশন, Jugantor.