আন্তর্জাতিক যুব দিবস (International Youth Day)

১২ আগস্ট। আন্তর্জাতিক যুব দিবস। একটি দেশের বিদ্যমান যুবশক্তিকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে, অর্থনৈতিক গতিশীলতা, শৃঙ্খলা ও শান্তি, সামাজিক সংহতি, সুবিচার ও সহনশীলতা বৃদ্ধিসহ সামগ্রিক উন্নয়নের কাজে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে দিবসটি সারা বিশ্বে পালন করা হয়ে থাকে। ১৯৯৮ সালে জাতিসংঘের 'ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অব মিনিস্টার রেসপনসিবল ফর ইয়ুথ' পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে অনুষ্ঠিত হয় এবং এখানেই ১২ আগস্টকে 'আন্তর্জাতিক যুব দিবস' হিসেবে উদ্যাপনের প্রস্তাব করা হয়। এ প্রেক্ষিতে ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক যুব দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং তখন থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ দিবসটি পালন করা হচ্ছে।

আগামী ৩০ বছরে এ পৃথিবীর জনসংখ্যা দুই বিলিয়ন বাড়বে

জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আজকের যুবকদের সংঘবদ্ধভাবে এ পৃথিবীর ভারসাম্য ও জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় এবং সকলের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদনে নিরলস কাজ করে যেতে হবে । ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ৩০ বছরে এ পৃথিবীর জনসংখ্যা দুই বিলিয়ন বাড়বে এবং এ বিপুলসংখ্যক মানুষের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি নিশ্চিত করা না গেলে তা খুবই বিপদজনক হবে। এজন্য জাতিসংঘের পরিকল্পনায় শিক্ষা, কর্মসংস্থান, ক্ষুধা ও দারিদ্র্য, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, যুব সমাজে মাদকের অপব্যবহার, কিশোর-কিশোরী অপরাধ, অবসরের কর্মকাণ্ড, বালিকা, যুব, মহিলা এবং সমাজ জীবনে ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে যুবকদের পূর্ণ এবং কার্যকর অংশগ্রহণ বিষয়কে অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ এ দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়

বিশ্বব্যাপী তরুণ ও যুবদের সমৃদ্ধ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা আন্তর্জাতিক যুব দিবসের উদ্দেশ্য।১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ এ দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০০০ সালের ১২ আগস্ট থেকে এটি পালন করা হচ্ছে। এ দিবসের মধ্য দিয়ে বিভিন্নভাবে তরুণ ও যুবসমাজকে সচেতন করা হয়।বিশ্বের সব দেশের সরকারের মধ্যে তাদের দেশের যুবকদের প্রতি মনোযোগ দেয়া এবং তাদের প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য সচেতনতা সৃষ্টি এই দিবসের লক্ষ্য। বিশ্বের সব দেশকে সচেতন করা যে, যুবকদের প্রতি মনোযোগ দেয়ার প্রয়োজন আছে। তাদের স্বনির্ভর হওয়ার পথে সাহায্য করা সরকারের কর্তব্য। এই বার্তা ছড়াতেই প্রতি বছর যুব দিবস উদযাপন হয়ে আসছে।

বাংলাদেশের জন্য দিবসটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ

বিশ্বের সব দেশের সরকারের মধ্যে তাদের দেশের যুবকদের প্রতি মনোযোগ দেওয়া এবং তাদের প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য সচেতনতা তৈরি করা এই দিবসের লক্ষ্য।বাংলাদেশের জন্য দিবসটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠিই তরুণ ও যুবক। তারাই উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রকৃত কারিগর।

যুবকদের সার্বজনীনতা সবার কাছে তুলে ধরা এবং স্বীকৃতি দেয়া এ দিবসের মূল লক্ষ্য

যুবকদের কথা, কাজ, উদ্যোগগুলোর পাশাপাশি তাদের জীবনের অর্থবহ দিক ও সার্বজনীনতা সবার কাছে তুলে ধরা এবং স্বীকৃতি দেয়া এ দিবসের মূল লক্ষ্য। আর এ যুব দিবসের সঙ্গে বেশ কিছু সংগঠনের নাম চলে আসে, যারা দীর্ঘদিন থেকে কাজ করছে যুবকদের ব্যক্তি ও পেশাগত উন্নয়ন নিয়ে।সামাজিক উন্নয়নের পেছনে মূল শক্তিই হচ্ছে যুব সমাজ। আধুনিক চিন্তা ধারা, নিরলস পরিশ্রম আর মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন কার্যক্রমে উৎসাহ নিয়ে যুব সমাজ সবসময় কাজ করে আসছে।

যুবসমাজের নিজেদের অধিকার বুঝে নেয়ার প্রতি সচেনতা বাড়ানোর এক প্রয়াস

আন্তর্জাতিক যুব দিবসের মূল উদ্দেশ্য সামাজিক,অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ঘটনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে যুবদের অংশগ্রহণ এবং মতামত আলোচনা করা। বিশ্বব্যাপী যুব সমাজের শিক্ষা,স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের অধিকার নিয়ে সোচ্চার হওয়ার দিন হিসেবে দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। যুবসমাজের নিজেদের অধিকার বুঝে নেয়ার প্রতি সচেনতা বাড়ানোর এক প্রয়াস।প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও বিশ্বের অন্যান্য দেশের সংগে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠিই তরুণ ও যুবক

বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠিই তরুণ ও যুবক। তারাই উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রকৃত কারিগর। এই যুব সমাজ বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং এমনকী বর্তমান মহামারীর মতো বিভিন্ন ঘটনায় পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসাবে কাজ করেছে। এদেশের মুক্তি সংগ্রাম থেকে শুরু করে সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে এ দেশের যুবসমাজ। শুধু তাই নয় দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজকে আলোকিত করতে এই যুব সমাজের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। যুবসমাজ এদেশের ক্রান্তিকালে সব সময় নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে নিজেরা যেমন হয়েছেন ইতিহাসের উজ্জ্বল স্বাক্ষী, তেমনিভাবে তাদের এই আত্মত্যাগ পরবর্তী প্রজন্মের জন্য হয়ে আছে চির অনুসরণীয়। 

যুবসমাজ প্রগতিশীল ভাবনা আর চেতনাকে ধারণ করে স্বর্ণালী ইতিহাস তৈরি করেছে

গণতান্ত্রিক সকল আন্দোলন অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে এ দেশের যুবসমাজ সবসময় ছিলো সক্রিয় এবং অনাচারের বিরুদ্ধে তাদের কণ্ঠকে সব সময় উচ্চকিত করেছে, তারই মধ্য দিয়েই এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন। তবে আজ সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে যুব সমাজ কখনো কখনো আমাদেরকে উদ্বিগ্ন করে। কারণ সমাজের কল্যাণকর কাজের পাশাপাশি আমরা দেখতে পাই যুবসমাজ নানা ধরণের ঘৃণ্য অপকর্মের সাথে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, যুবসমাজ নেশায় আসক্ত হয়ে পরিবার সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য বোঝা হয়ে তৈরি হচ্ছে। এটি আমাদের জন্য কখনোই কাম্য নয়। এ দেশের যুবসমাজ প্রগতিশীল ভাবনা আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে যে অতীত স্বর্ণালী ইতিহাস তৈরি করেছে তা আজও অব্যাহত থাকবে। পরিবার ও দেশের মুখ উজ্জল করবে-এটাই প্রত্যাশা।

দেশের যুবকদের প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য সচেতনতা তৈরি করা এই দিবসের লক্ষ

বিশ্বের সব দেশের সরকারের মধ্যে তাদের দেশের যুবকদের প্রতি মনোযোগ দেওয়া এবং তাদের প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য সচেতনতা তৈরি করা এই দিবসের লক্ষ। বিশ্বের সব দেশকে যুবকদের প্রতি মনোযোগ দেয়া এবং শিক্ষা ও স্বনির্ভর হওয়ার পথে তাদের সাহায্য করা সরকারের কর্তব্য। এই উপলব্ধিটুকু স্মরণ করিয়ে দিতেই প্রতিবছর যুব দিবস পালিত হয়।

একটা দেশের যুব সমাজ সেই দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি

বলার অপেক্ষা রাখে না যে, একটা দেশের যুব সমাজ সেই দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি। দেশের সার্বিক অগ্রগতি কিংবা যে কোন দুর্যোগ দুর্বিপাকে যুবসমাজই জাতির কল্যাণে এগিয়ে আসে। বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার লঙ্ঘন এমন কি বর্তমান মহামারির মতো বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসাবে কাজ করছে প্রতিটি দেশের যুবসমাজই। বিশ্বব্যাপি সামগ্রিক পরিবর্তন আনতে যুব সমাজের এই অবদানের জন্য প্রতি বছর ১২ আগস্ট আন্তর্জাতিক যুব দিবস পালিত হয়। আর বাংলাদেশের জন্য দিবসটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠিই তরুণ ও যুবক। তারাই উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রকৃত কারিগর।

যুবসমাজ এই আত্মত্যাগ পরবর্তী প্রজন্মের জন্য হয়ে আছে অনুসরণীয়

এদেশের মুক্তি সংগ্রাম থেকে শুরু করে সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে এ দেশের যুবসমাজ। শুধু তাই নয় দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজকে আলোকিত করতে এই যুব সমাজের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। যুবসমাজ এদেশের ক্রান্তিকালে সব সময় নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে নিজেরা যেমন হয়েছেন ইতিহাসের উজ্জ্বল সাক্ষি, তেমনিভাবে তাদের এই আত্মত্যাগ পরবর্তী প্রজন্মের জন্য হয়ে আছে অনুসরণীয়। গণতান্ত্রিক সকল আন্দোলন অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে এ দেশের যুবসমাজ সবসময় ছিলো সক্রিয়। তবে মুদ্রার উল্টো পিঠও আছে।

যুবসমাজের কর্মযজ্ঞের মাধ্যমেই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে উঠবে

সবকিছুর পরে, আমাদের সমাজ-দেশের বর্তমান আর ভবিষ্যতের কর্ণধার এই যুবসমাজকে অতীতের কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের ধারাবাহিকতায় পরিচালিত করতে হবে। সৃজনশীল প্রতিভাবান যুবক ও যুবতি রয়েছে, যাদের কর্মতৎপরতায় শুধু তারা নিজেরাই বিকশিত হচ্ছে না, বরং তাদের ব্যক্তিক সাফল্যের দ্বারা পুরো দেশকে প্রতিনিধিত্ব করছে। আর এই যুবসমাজের কর্মযজ্ঞের মাধ্যমেই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কর্তৃক যুবদেরকে আগামীর বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপযোগী করে গড়ে তুলতে নানামুখী পদক্ষেপের পাশাপাশি বেশ কিছু সংখ্যক প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।

দেশের এক-তৃতীয়াংশ যুবক-যুবতী

দেশের এক-তৃতীয়াংশ যুবক-যুবতী। বিশ্বে এই মুহূর্তে যুবক–যুবতির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এদের অর্ধেকেরও বেশি এশিয়া–প্যাসিফিক অঞ্চলে রয়েছে। বাংলাদেশে এখন পাঁচ কোটির বেশি তরুণ-তরুণী। বিশ্বের তরুণসমাজের অর্ধেকেরও বেশি দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। এদের অনেকে স্বাক্ষর পর্যন্ত করতে পারে না। এদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য-চিকিৎসার তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। তরুণসমাজের বড় একটা অংশ কর্মহীন। বাংলাদেশে এখন নির্ভরশীল জনসংখ্যার চেয়ে কর্মক্ষম জনসংখ্যা বেশি। কোনো দেশের জন্য এটা একটা বড় সুযোগ। এ সুযোগ এমনিতে আসেনি। এটা একটা অবস্থার মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে দেশ সামগ্রিক উন্নয়নে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করবে।

বাংলাদেশে এখনো বাল্যবিবাহের হার বেশি

আমাদের জন্ম ও মৃত্যুর হার দুটোই কম। সে জন্য আমরা এখন জনসংখ্যা মুনাফার সুযোগ পাচ্ছি। বাংলাদেশে এখনো বাল্যবিবাহের হার বেশি। জন্মহার কমলেও এশিয়ার মধ্যে বেশি। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার ৬৪ শতাংশ। এ বছর এইচএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১০ লাখ। এর মধ্যে পাস করেছে সাত লাখ।প্রতিবছর ২০ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে ঢুকছে। বিভিন্ন কারণে যুবসমাজের ৩০ শতাংশের বেশি দেশের অর্থনীতিতে কোনো অবদান রাখতে পারছে না। আমাদের সমস্যা কোথায়? আমাদের ভালো নীতি আছে। আমাদের নীতির প্রয়োগ ও সম্পদের বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে

টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে যুবসমাজের বৈষম্য দূর করা একান্ত জরুরি

উচ্চশিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষায় বিনিয়োগ কম। যুবসমাজের কর্মসংস্থানের জন্য এখানে বিনিয়োগ অবশ্যই জরুরি। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে যুবসমাজের দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা, ছেলে–মেয়ের বৈষম্য দূর করা একান্ত জরুরি। এসব কাজ করতে পারলে তারা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে

জ্ঞানমুখী, প্রশিক্ষিত ও আদর্শ যুব সমাজ জাতির মেরুদণ্ড

বাংলাদেশের জনসংখ্যার বৃহৎ অংশই যুবসমাজ। ২০৪৩ সাল পর্যন্ত যুবসমাজের সংখ্যাগত আধিক্যের এ ধারা অব্যাহত থাকবে। জ্ঞানমুখী, প্রশিক্ষিত ও আদর্শ যুব সমাজ জাতির মেরুদণ্ড। তাদের অবস্থান হবে, মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়তে হলে যুবকদের দেশপ্রেম, দেশের মানুষের প্রতি কর্তব্য ও মমত্ববোধ সবসময় জাগ্রত রাখবে 

বাংলাদেশে জন্মলগ্ন থেকে বর্তমান পর্যন্ত তরুণদের অবদান অনস্বীকার্য

বাংলাদেশে জন্মলগ্ন থেকে বর্তমান পর্যন্ত তরুণদের অবদান অনস্বীকার্য। ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের নির্বাচন ও তৎপরবর্তী অসহযোগ আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী গণজাগরণসহ দেশের যেকোনো ক্লান্তিলগ্নে আমাদের যুবসমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এবং বর্তমানেও এ ধারা অব্যাহত রেখেছে। রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ সালে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং জাতিসংঘ ঘোষিত ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনে স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের বৃহত্তর এ তরুণ জনগোষ্ঠীকে তাদের সততা, দক্ষতা, দায়িত্বশীলতার মাধ্যমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় জাতীয় যুব নীতি ২০১৭ প্রণয়ন করেছে যা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।

দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে যুব সমাজ রুখে দাঁড়ায়

বর্তমানে বাংলাদেশের ১৫-৪৯ বছর বয়সী জনসংখ্যার পরিমাণ মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। এ বিপুল পরিমাণ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সক্রিয় অংশগ্রহণের কারণেই এ করোনা মহামারিতেও বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য দেশের তুলনায় সচল রয়েছে। কিন্তু যে সকল শ্রমিকের কারণে এ দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে তারা বিভিন্নভাবে বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। অনেক সময় তারা তাদের পাওনা বেতন ঠিকমত না পাওয়া, কর্মক্ষেত্রে তাদের সামাজিক ও জীবনের নিরাপত্তা অনিশ্চয়তা, পুষ্টিকর খাবারের অভাব, স্বাস্থ্যবিমার আওতায় না থাকাসহ বিভিন্নভাবে তারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। যে কারণে আর্থ সামাজিক উন্নয়নে তাদের সুষ্ঠু ও সঠিক দক্ষতার বিকাশ অনেকাংশে হয়ে ওঠে না। বর্তমানে যুবক সমাজ যদি বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত শ্রমিকদের নিরাপদ পরিবেশে কাজের সুযোগ সৃষ্টি, তাদের উপযুক্ত পারিশ্রমিক নিশ্চিতকরণ, পুষ্টিকর খাবার সরবরাহে সহায়তা করে এবং অন্যান্য দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে যুব সমাজ রুখে দাঁড়ায়, সেটা হবে দেশের জন্য আরেক নতুন অধ্যায়। বর্তমানে বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে বিভিন্ন গেমস সহ অন্যান্য ক্ষতিকর ওয়েবসাইটে এ যুব সমাজের একাংশ আজ যেভাবে আসক্ত হয়ে পড়ছে, তা অব্যাহত থাকলে আমাদের ভবিষ্যৎ যে কী হবে সে কথা বলা সত্যিই কঠিন। আমাদের যুবকরাই আমাদের দেশের প্রধান সম্পদ এবং আমাদের ভবিষ্যৎ। এদের উন্নয়নে ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে সরকারকে আরও পরিকল্পিত দৃষ্টি দিতে হবে।

আজকের যুবসমাজই জাতির আগামী দিনের ভবিষ্যৎ

আজকের যুবসমাজই জাতির আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। যুগে যুগে যুবকরাই ইতিহাস সৃষ্টিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তারাই পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছে স্রোতের গতিধারা। তিনি দেশে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে বলেন, দেশ ও জাতি এক গভীর ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। জাতির ঘাড়ে এক অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিশক্তি জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছে। এ ছাড়াও নানামুখী ষড়যন্ত্রে জাতি আজ জর্জরিত। এমতাবস্থায় দেশ ও জাতির মুক্তির জন্য যুবকদেরকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে; অন্যথায় আমাদের মুক্তি মিলবে না।

পৃথিবীর ইতিহাস যুবসমাজের হাতেই নির্মিত হয়েছে

পৃথিবীর ইতিহাস যুবসমাজের হাতেই নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশের যত বড় বড় অর্জন সবই হয়েছে যুবসমাজের হাত ধরেই। হাজী শরীয়তুল্লাহ, শহীদ তিতুমীরের মতো প্রাণচঞ্চল যুবকদের হাতেই এসেছে আমাদের বড় বড় অর্জন। তাই জাতির এই ক্রান্তিকালে যুবসমাজকে ঘরে বসে থাকার কোনো সুযোগ নেই; বরং সত্যের পতাকা উড্ডীন ও আমাদের কাক্সিক্ষত স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য নতুন করে শপথ গ্রহণ করতে হবে।আজকের যুবসমাজই দেশ ও জাতির আগামী দিনের কাণ্ডারি। মূলত যৌবনকাল হচ্ছে জীবনের উল্লেখযোগ্য সময়। ব্যক্তির সব বড় বড় অর্জনই হয় যৌবনকালে। আল্লাহ প্রত্যেক বান্দাকে আখেরাতে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর চাইবেন। আর এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রশ্ন হচ্ছে, তার যৌবনকাল কিভাবে অতিবাহিত হয়েছে? তাই যৌবনকালকেই দুনিয়াতে ও আখেরাতের পাথেয় সংগ্রহে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে।

স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যুবকদের অধিকার। এ অধিকার পুনরুদ্ধার করার জন্য যুবকদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমাজের সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। কোন আইন, কোন নিয়ম, কোন শাস্তি দিয়েও মাদকের বিস্তার রোধ সম্ভব নয় যতক্ষণ না ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগ্রত করা যাবে। ইসলাম মাদক ও জুয়া উভয়কে হারাম করেছে কিন্তু আমাদের দেশের আইনপ্রণেতারা মাদকের ব্যবসা করেন। জুয়া ও ক্যাসিনো সম্রাট হচ্ছে সরকারের নেতাকর্মী। সুতরাং এই সর্বগ্রাসী ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে মাদক, জুয়ার কারবারি, তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতা জালেম সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। 


তথ্যসুত্র

যুবসমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টা, Daily Naya Diganta.

যুব দিবস আজ, Jugantor.

যুবশক্তি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, Dhakatimes.

দিবসটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, Bhorerkogoj.

এক-তৃতীয়াংশ যুবক, Prothomalo.

বিশ্বব্যাপী যুব সমাজ, Jaijaidin.

আন্তর্জাতিক যুব দিবস , Syleterdak.

অর্ধেক জনগোষ্ঠিই তরুণ ও যুবক, Risingbd.

তরুণ ও যুব সমাজকে তামাকমুক্ত, Protidinersongbad.