ইন্টারনেট (Internet)

ইন্টারনেট কি?

আধুনিক টেলিযোগাযোগের (Telecommunication) একটি নেটওয়ার্ক বা মাধ্যম যেটা telephone line, তার (cables), satellites, বেতার সংযোগ (wireless connections) ব্যবহার কোরে কম্পিউটার বা অন্য ডিভাইস গুলিকে World Wide Web (www) এর সাথে আমাদের সংযুক্ত (connect) করে।

সোজা ভাবে ইন্টারনেট কাকে বলে ?

ইন্টারনেট এমন একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক যেই নেটওয়ার্ক পৃথিবীর সব থেকে বড়ো এবং ব্যস্ত। সোজা ভাবে বললে, বিশ্বের সব কম্পিউটার গুলি যেই নেটওয়ার্ক দ্বারা একে আরেকটির সাথে সংযুক্ত হয়ে আছে, সেই নেটওয়ার্কটি হলো ইন্টারনেট।

যখনি আমরা, আমাদের মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে, এই নেটওয়ার্কের (ইন্টারনেট) সাথে সংযুক্ত হয়ে যাই, তখন আমরা নেটওয়ার্কের একটি বিশাল জালের ভাগ হয়ে দাড়াই। এবং একে “Global network” বলা হয়।

ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে ?

ইন্টারনেটের সঠিক ভাবে কাজ করার জন্য তাকে তার Global network এর সাথে তার (wire) বা বেতার (wireless) যেকোনো একটির  মাধ্যমে সংযুক্ত হয়েই থাকতে হবে।

এবং তারপর, গ্লোবাল নেটওয়ার্কে জড়িত থাকা বিভিন্ন কম্পিউটারের সাথে আমাদের কম্পিউটার “Router” এবং “Server” এর মাধ্যমে সংযোগ (connect) হয়ে, বিভিন্ন data এবং information সংগ্রহ করে নেয়। এভাবেই কাজ করে ইন্টারনেট।

এখন, ইন্টারনেট (internet) কাজ করার জন্য ৩ টি জিনিসের প্রয়োজন।

একটি ডিভাইস (device) যেখান থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার বা চালু করা যাবে।

Internet service provider (ISP) থেকে ইন্টারনেট সেবা গ্রহণ করা।

একটি ওয়েব ব্রাউসার (Web browser) বা এপ্লিকেশন।

ইন্টারনেট কি কি কাজে লাগে?

১.ই -লার্নিং বর্তমান সময়ে পড়াশোনার ক্ষেত্রে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আর ই-লার্নিং থেকে শুরু করে ইন্টারনেট আমাদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে ব্যাপক কাজে লাগে।

২.আমাদের বর্তমান সময়ে নানা ধরণের অফিশিয়াল কাজে ,ঘরে বসে অফিস করার কাজে প্রয়োজন পরে ইন্টারনেট এর।

৩.একসময় গবেষকদের গবেষণার কাজে তথ্য পেতে বেশ সমস্যা হতো। কিন্তু ইন্টারনেট আবিষ্কারের ফলে ঘরে বসেই আপনি আপনার গবেষণার কার্যাবলী সম্পাদন করতে পারবেন। সেই সাথে অন্যের গবেষণার কাজ ও দেখতে পারবেন।

৪.আজকাল ব্যবসার অন্যতম ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে ইন্টারনেট । ইন্টারনেটকে কেন্দ্র করে আজকাল হাজার হাজার ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে।

৫.বহির্বিশ্বের সাথে অটুট যোগাযোগের ক্ষেত্র থেকে শুরু করে বিশ্বকে একটি গ্রামে রুপান্তর করার ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের অবদান অসম্ভাবী।

৬.ইন্টারনেটের মাধ্যমে মানুষ এখন পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করে টাকা আয় করতে পারছে।

৭.ইন্টারনেট এর মাধ্যমে মানুষ কেনাকাটা থেকে শুরু করে ,ডাক্তার থেকে চিকিৎসা নেওয়া,ঘরে বসে টিকিট কাটাসহ নানান সুবিধা গ্রহণ করা  সম্ভব হচ্ছে।

৮.নতুন করে কোনো কিছু শিখতে চাইলে খুব সহজে ইন্টারনেট এর মাধ্যমে শিখতে পারবেন।

৯.ঘরে বসে বিশ্বের যেকোনো দেশের মানুষের সাথে যোগাযোগ করা থেকে শুরু করে।

১০ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা যেকোনো অচেনা স্থানে হারিয়ে না গিয়ে সঠিম গন্তব্যে ফিরে আসতে পারছি।

১১.আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভাষা সম্পর্কে জানতে পারছি সেই সাথে সেই ভাষা শিখে অন্যদেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারছি।

ইন্টারনেট কত প্রকার ও কি কি?

ইন্টারনেটকে মূলত ৬ টি ভাগে ভাগ করা হয়। ৬ টি ভাগ হলো:

১.ডায়াল -আপ

২.ডিএসএল

৩.স্যাটেলাইট

৪.ক্যাবল

৫.ওয়ারলেস

৬.সেলুলার।

ইন্টারনেটের ইতিহাস

আমেরিকার একটি এজেন্সী (american agency) ARPANET স্থাপনা হয়েছিল ১৯৬৯ শনে। এবং, এই এজেন্সির কাজ ছিল, একটি কম্পিউটার কে আরো একটি কম্পিউটারের সাথে সংযোগ বা কানেক্ট করার।

পরে, ১৯৮০ সনের পরে পরে গিয়ে এই টেকনোলজির নাম “ইন্টারনেট” হয়ে দাঁড়ালো।

১৯৮৩ সনের ১ তারিখে ইন্টারনেটের আরম্ভ হয়েছিল। ইন্টারনেট শুরু হওয়ার সময় একে বলা হতো  “Network of network” যদিও আজকের modern society তে এর নাম “Internet” হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কিন্তু, আগেই অনলাইনের দুনিয়া এতো ভাবে স্বীকার করার যোগ্য (recognizable) ছিলোনা। কিন্তু, ১৯৯০ র পর যখন “computer scientist Tim Berners-Lee” উদ্ভাবিত (invented) করলো world wide web (www) এর, তখন লোকেদের জন্য এই ইন্টারনেট অনেক কাজের, মজার এবং স্বীকার করার যোগ্য হয়ে দাঁড়ালো।

ইন্টারনেটের মালিক কে ? ইন্টারনেট কে উদ্ভাবন করেছে

যা আমরা ওপরে বললাম, ARPANET নামের এজেন্সিতে অনেক scientist, programmer এবং engineer কাজ করেছে। এবং, তারাই ইন্টারনেটের বিষয়ে গবেষণা (research) করা শুরু করলেন। এবং, সত্যি বললে এরা সবাই ইন্টারনেটের উদ্ভাবনের জন্য দায়ী।

কিন্তু, internet বললে আমরা এর সবথেকে জরুরি ভাগ “TCP/IP PROTOCOL” টাকেই ভাবি। এবং, এই “TCP/IP PROTOCOL” টি উদ্ভাবন (invent) করেছিলেন Vincent Cerf [sic] and Robert Kahn.

ইন্টারনেটের ব্যবহার

ইন্টারনেটের ৭ টি সেরা ব্যবহার

Electronic mail (Email)

File download করা

Educational benefits

Online shopping:

যোগাযোগ করার মাধ্যম (Fast communication)

Entertainment বা বিনোদনের জন্য

তথ্য খোঁজার জন্য (search information)

ঘরে বসেই ইনকামের মাধ্যম (online income)

ইন্টারনেটের ব্যাপারে জানাটা কেন জরুরি ?

এখনকার দিনে, সবথেকে বেশি পরিমানে knowledge এবং information ইন্টারনেটের মাধ্যমেই পাওয়া যেতে পারে। এবং, সব ধরণের মানুষেরা নতুন নতুন জিনিসের ব্যাপারে জানার অনেক ইচ্ছুক থাকেন।

তাছাড়া, online video বা article এর মাধ্যমে আমরা যেকোনো বিষয়ে শিখে নিয়ে নিজের দক্ষতা (skill) এবং ক্ষমতা মাড়িয়ে নিতে পারি।

ইন্টারনেটের সুবিধা

ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনেক সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। এর মাঝে কয়েকটি হলো –

১.তথ্যের বিশাল ভান্ডার হলো ইন্টারনেট। এমন কিছু নেই যা ইন্টারনেটে পাওয়া যায় না। ইন্টারনেটে কানেক্ট হয়ে যে কোন তথ্যের নাম লিখে সার্চ করলেই পৃথিবীর অসংখ্য সার্ভারে থাকা তথ্যগুলো প্রদর্শিত হয়।

২.এর মাধ্যমে মুহূর্তে বিশ্বের যেকোন প্রান্তে যেকোনো তথ্য ই-মেইল করা যায়।

৩.ফ্যাক্স সুবিধা পাওয়া যায়।

৪.VOIP এর মাধ্যমে খুব কম খরচে বিশ্বের যেকোন প্রান্তে কথা বলা যায়।

৫.ঘরে বসেই বিভিন্ন ধরনের টেলিভিশন, রেডিও চ্যানেলের অনুষ্ঠান উপভোগ করা যায়।

৬.এর মাধ্যমে নানা ধরনের সফটওয়্যার, ফ্রিওয়্যার, নানা ধরনের বিনোদন উপকরণ ইত্যাদি ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করা যায়।

৭.এর মাধ্যমে ঘরে বসেই পণ্য কেনা যায়।

৮.ঘরে বসে থেকে বিভিন্ন নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা যায়।

৯.অনলাইনে চিকিৎসাসেবা নেওয়া যায়।

১০.এটি ব্যবহার করে পৃথিবীর যেকোন দেশে হোটেল, বিমান, ট্রেন-বাস ইত্যাদিতে সিট রিজার্ভেশন করা যায়।

১১.এ মাধ্যমে ইলেকট্রিক উপায় দ্রুত অর্থ স্থানান্তর করা যায়।

১২.ঘরে বসেই যে কোন সংবাদপত্র, পত্রপত্রিকা পড়া যায় ইত্যাদি।

ইন্টারনেটের অপকারিতাঃ-

১.ইন্টারনেট এর কারণে শিশুদের পড়াশুনার ক্ষতি হচ্ছে।২. ইন্টারনেট এর কারণে কিশুর ছেলে মেয়ে অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে।৩.ইন্টারনেট এর কারনে সমাজে, দেশে বেহায়াপনা, অশ্লীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।৪. ইন্টারনেট এর কারণে মানুষের অলসতা বৃদ্ধি সহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যেমন: চুখের সমস্যা, পিঠে বা কোমরে ব্যাথা, মাথা ব্যাথা ইত্যাদি।৫.ইন্টারনেট এর কারণে সাইবার অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে।৬.ইন্টারনেট এর কারনে অজান্তে কারোর গোপন তথ্য, প্রাজনীয় তথ্য চুরি হয়ে যাচ্ছে।৭.ইন্টারনেট এর কারনে হ্যাকাররা সফল হচ্ছে।৮. ইন্টারনেট এর কারনে আজকের ছেলে-মেয়েরা সময় নষ্ট করছে।৯. ইন্টারনেটের মাধ্যমে।মানুষ নানা রকম মিথ্যা কথা এবং গুজব ছড়ানো হচ্ছে।১০.মানুষকে ধোঁকা দেওয়া ও মানুষের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে এই ইন্টারনেটের মাধ্যমেই।১১. ইন্টারনেটের মাধ্যমে যুবক যুবতীরা বিভিন্নভাবে পর্নোগ্রাফির চিত্র আদান-প্রদানের মাধ্যমে নিজেকে অশ্লীল এবং খারাপ কাজে জড়িয়ে নিচ্ছে।১২.ছোট্ট ছেলেমেয়েরা ইন্টারনেটে বসে লেখাপড়া বাদ দিয়ে বিভিন্ন গেইমস ডাউনলোড করে সময় অপচয় করতেছে। ১৩.সন্ত্রাসী সকল কর্মকাণ্ডে জঙ্গিরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে অপহরণ,গুম,খুন,হুমকি ইত্যাদি ঘটনা সংঘটিত করছে।১৪.কমপিউটারের ভিবিন্ন ডাটা তথ্য পাসওয়ার্ড সব চুরি করা হয় এই ইন্টারনেটের ফলেই।১৫. ইন্টারনেটের ফলে মানুষ খুনের মত জঘন্য খারাপ কাজ করতে মানুষ আগ্নেয়াস্ত্র,শক্তিশালী বোমা ইত্যাদি তৈরী করছে।১৬.কোনো ব্যক্তির নামে কল্পকাহিনী, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো কথা ব্লগ কিংবা ফেসবুক ও টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত হচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে।১৭. ইন্টারনেট এর ফলে নানারকমভাবে মানুষ আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মেগাবাইট ক্রয়ের জন্য।১৮.অধিক পরিমাণে সামাজিক নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভরশীলতা সত্যিকারের যোগাযোগের অনুভূতিকে কমিয়ে দিচ্ছে। এর ব্যবহারকারীরা একেই সত্যিকারের সম্পর্ক ভাবতে শুরু করেছে।১৯.বাইরে ঘুরে বেড়ানো, খেলাধুলা, মানুষের সঙ্গে মেলামেশার দক্ষতা ও ইচ্ছা কমে যাচ্ছে। এর ফলে মানসিকভাবে হতাশায় ভোগার সম্ভাবনাও দেখা দিতে পারে।২০.‘চেরোনিবাল ভাইরাস’ নামক একটি ভাইরাস বছরের একটি নির্দিষ্ট দিতে আক্রমণ চালিয়ে সারাবিশ্বে লাখলাখ কম্পিউটার অকেজো করে দিচ্ছে।

কম্পিউটার থেকে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার

মোবাইল থেকে কম্পিউটারে ইন্টারনেট

একসময় ইন্টারনেট শুধুমাত্র কম্পিউটারে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু সময়ের পরিক্রমার সাথে সাথে এখন ইন্টারনেট এর সর্বত্র ছাড়িয়ে গিয়েছে। আগে শুধুমাত্র কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করা গেলেও সময়ের সাথে সাথে ইন্টারনেট এখন ল্যাপটপে ব্যবহৃত হচ্ছে। ল্যাপটপ যেখানে সেখানে সহজে বহনযোগ্য বিধায় মানুষ আজকাল কম্পিটারের তুলনায় ল্যাপটপ ব্যবহারে বেশি সাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। কিন্তু মোবাইল ফোনের নিরবিচ্ছিন্ন বহনযোগ্যতা ফলে মানুষ আজকাল মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দেখা যায়।


তথ্যসুত্র:

ইন্টারনেট কি

ইন্টারনেটের সুবিধা

ইন্টারনেট ব্যবহারের সুফল

ইন্টারনেট কি কি কাজে লাগে