সাগর কন্যা কুয়াকাটা (Kuakata, the Daughter of the Sea)

সাগর কন্যা কুয়াকাটা (Kuakata, the Daughter of the Sea)

অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সাগর কন্যা কুয়াকাটা। কুয়াকাটা দক্ষিণ এশিয়ায় একটি মাত্র সমুদ্র সৈকত যেখানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত অবলোকন করা যায়।

"বহু দিন ধরে, বহু ক্রোশ দূরে
বহু ব্যয় করি, বহু দেশ ঘুরে
দেখিতে গিয়াছি পর্বতমালা, দেখিতে গিয়াছি সিন্ধু।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া,
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শিসের উপরে, একটি শিশির বিন্দু।

শান্তিনিকেতনে মায়ের সাথে পৌষমেলা দেখতে গিয়েছিলেন দশ বছরের শিশু সত্যজিৎ রায়। ছোট্ট সত্যজিতের ভারি ইচ্ছে, প্রথম পাতায় রবি ঠাকুরের অটোগ্রাফ নেবেন। সেই অটোগ্রাফের খাতাতেই চমৎকার এই কাব্যাংশটি লিখে দিয়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ভ্রমন পিপাসুদের জন্য এটি একটি খুব সুন্দর বার্তা।প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি আমাদের বাংলাদেশ। পাখি ডাকা, গাছ গাছালির ছায়া ঢাকা, নদ-নদী,পাহাড় জঙ্গলে ভরপুর আমাদেরই সোনারবাংলাদেশ। এ দেশের প্রকৃতি যেমন নিত্য প্রফুল্ল, তেমনি চিরসৌন্দর্যময়ী। সোনার খনি না থাকলেও এদেশের দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ মাঠের পরতে পরতে সোনা ছড়িয়ে আছে। নদী-নালা, সমুদ্র সৈকত ইত্যাদির মোহে মুগ্ধ হয়ে জনৈক বিদেশি পর্যটক মন্তব্য করেছিলেন এইরূপ-

“There are many doors to entrance it but none to exit.”

মানুষ মাত্রই প্রকৃতির পূজারী। প্রাকৃতিক আকর্ষণগুলো মানুষকে বরাবরই টানে। প্রকৃতিকে ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুস্কর। জীবন যেখানে বৈচিত্রময়, প্রকৃতি যেখানে মানুষকে হাতছানি দিয়ে ডাকে, সমুদ্রের গর্জন যেখানে মানুষকে আবেগপ্লুত করে, সূর্যোদয় ও সূযাস্তের লুকোচুরি যেখানে মানুষকে ভীষণভাবে আকর্ষণ করে। এমনি একটি পর্যটন সম্ভবনাময়কুয়াকাটা দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীতে অবস্থিত। ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সমুদ্র সৈকত “সাগর কন্যা” হিসেবে ব্যাপক পরিচিত। কক্সবাজারের চাকচিক্য এখনো গ্রাস করেনি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কুয়াকাটাকে। বিশাল বিশাল অট্টালিকা গড়ে উঠেনি। সমুদ্র পাড়ে হকার, ফটোগ্রাফারদের আধিক্য এখনো গ্রাস করতে পারেনি কুয়াকাটাকে।

কুয়াকাটায় পর্যটকরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুঁজে ফিরে তিনচাকার বাহন রিকশা কিংবা অটো রিকশা বা মটর সাইকেলে চড়ে। মায়াবী সূর্যোদয় আর রক্তিম সূর্যের আভা মিশিয়ে সূর্যাস্ত একই স্থান থেকে দেখার সৌভাগ্য সাধারণত হয়ে উঠে না। কুয়াকাটা সেই সৌভাগ্য বহন করছে আপনার জন্য।প্রকৃতির নির্মল পরিবেশ উপভোগের জন্য কুয়াকাটা ভ্রমণ উপভোগ্য হয়ে উঠে তখন, যখন সমুদ্র সৈকতের চেয়ারে অলস সময়ে রাতের তারা আর জোৎস্নার আলো শরীরে মেখে সামুদ্রিক মাছের ফ্রাই আর বারবিকিউ সহ রাতের খাবার খাওয়ার সুযোগ। যা ভালোলাগার কল্পনাকেও হার মানাতে পারে কুয়াকাটার নিস্তব্ধ নির্ঝঞ্জাট পরিবেশ। মধ্যরাত অবধি নিরাপত্তার চাদরে মোড়ানো পরিবেশ সমুদ্রের জোয়ার ভাটায় ঢ়েউয়ের গর্জন উপভোগ করার তাড়না বারবার কুয়াকাটায় আসার ইচ্ছে জাগিয়ে তোলে।

কুয়াকাটার বেলাভূমি বেশ পরিচ্ছন্ন। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে এ সৈকত থেকেই কেবল সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করা যায়। সৈকতের পূর্ব প্রান্তে গঙ্গামতির বাঁক থেকে সূর্যোদয় সবচেয়ে ভালোভাবে দেখা যায়। আর সূর্যাস্ত দেখার উত্তম জায়গা হল কুয়াকাটার পশ্চিম সৈকত।কুয়াকাটার সৈকত প্রায় ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ। সৈকত লাগোয়া পুরো জায়গাতেই আছে দীর্ঘ নারিকেল গাছের সারি। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে এ বনেও। বিভিন্ন সময়ে সমুদ্রের জোয়ারের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় ভাঙনের কবলে পড়েছে সুন্দর এই নারিকেল বাগান। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে সারা বছরই দেখা মিলবে জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য।

Taken From Wilep.

সাগর কন্যা কুয়াকাটার অবস্থান

সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপালী ইউনিয়নে অবস্থিত। এটি পটুয়াখালীর শেষপ্রান্তে অবস্থিত।কুয়াকাটা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি সমুদ্র সৈকত ও পর্যটনকেন্দ্র। পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নে কুয়াকাটা অবস্থিত। ঢাকা থেকে সড়কপথে এর দূরত্ব ৩৮০ কিলোমিটার, বরিশাল থেকে ১০৮ কিলোমিটার। পর্যটকদের কাছে কুয়াকাটা “সাগর কন্যা” হিসেবে পরিচিত। ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সৈকত বিশিষ্ট কুয়াকাটা বাংলাদেশের অন্যতম নৈসর্গিক সমুদ্র সৈকত। এটি বাংলাদেশের একমাত্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়।

বরিশাল শহর থেকে ১০৮ কিঃমিঃ দূরে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলি ইউনিয়নে অবস্থিত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একসঙ্গে সমুদ্রে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের বিরল দৃশ্য প্রত্যক্ষ করা যায় কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে। প্রায় ৩৬ কিঃমিঃ ধরে বিস্তৃত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। তবে পুরোটা একসাথে নয়। গঙ্গামতির ছোট একটি খাল সৈকতটিকে ২টি ভাগে বিভক্ত করেছে। সাগরের পশ্চিম পাশের্¡ খাজুরিয়া রিজার্ভ ফরেষ্ট থেকে পূর্ব গঙ্গামতির খাল পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিঃমিঃ সৈকত। খাল পার হয়ে বাকি ২০ কিঃমিঃ সৈকত।

এলাকার নাম কুয়াকাটা হওয়ার কারন

কুয়াকাটায় বাঙালি ও রাখাইন সম্প্রদায়ের বসবাস। আরকান বা বার্মা রাজ্য থেকে রাখাইন সম্প্রদায়ের আগমন সেই আঠারশ শতকে। পটুয়াখালির রাখাইন উপজাতি শীর্ষক গ্রন্থ থেকে জানা যায়, রক্ষা শব্দ থেকে রাখাইন শব্দের উৎপত্তি। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীর রাখাইন আদিবাসি বাংলাদেশে বসবাসের আগে আরাকান রাজ্যে বসবাস করতেন। খৃষ্টপূর্ব ৩৩২৫ থেকে ১৭৮৪খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত আরাকান স্বাধীন রাজ্য ছিল। আঠারশ শতকে আরাকান রাজা মহাথামাদা বর্মী রাজ বোঁধপায়ার কাছে পরাজিত হলে বর্মীরা আরাকান দখল করে। বর্মী অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য ১৫০টি রাখাইন পরিবার ৫০টি নৌকা যোগে আরাকান ত্যাগ করে পশ্চিমে যাত্রা শুরু করে।

এভাবেই তারা গলাচিপা উপজেলার রাঙ্গাবালী দ্বীপে পৌঁছায় এবং প্রায় ৪৮ বছর পর কুয়াকাটা উপকূল আবিষ্কার করে এবং এখানে বসবাস শুরু করে। তখন এর নাম হয় ক্যাংছাই। যার অর্থ দাঁড়ায় ভাগ্যকূল। তাছাড়া প্রচলিত আছে যে, এখানে সমুদ্র উপকূলে মিষ্টি পানির সন্ধান পাওয়া গেলেও দূর্ভোগ ছিল ভীষণ। এখানে কুয়া কাটা হত ঠিকই, কিন্তু বালি দিয়ে তৈরি বাঁধ ভেঙ্গে যেত। তাই রাখাইনরা নিজেদের দূষতো ভাগ্য বঞ্চিত হিসাবে। রাখাইন ভাষায় যার অর্থ দাঁড়ায় ক্যাওয়েছাই। এভাবেই কুয়া কাটতে কাটতে এই উপকূল অঞ্চলের নাম হয়ে ওঠে ক্যাছাইও, যার বাংলা অর্থ কুয়াকাটা। শেষে এক সময় এলাকার নাম কুয়াকাটা হিসাবে প্রতিষ্ঠা পায়।কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে মিশ্রীপাড়ার দূরত্ব ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার। মিশ্রীপাড়া রাখাইন পল্লী হিসেবেই পরিচিত। সীমাবৌদ্ধ বিহারের অবস্থান এখানেই। বিশাল বৌদ্ধ মন্দিরটি দেখে মুগ্ধ হতেই হবে। অনেকের মতে এটি দেশের সবচাইতে বড় বৌদ্ধ মন্দির। বৌদ্ধ মন্দিরটির পাশেই রয়েছে একটি কুয়া।

Taken From Grathor.

সাগরকন্যা ‘কুয়াকাটা’ যেন কন্যা হয়েই থাকুক!

সমুদ্র সৈকতের কথা মনে হলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে কক্সবাজার সৈকতের ছবি। পাশাপাশি চট্টগ্রামের পতেঙ্গার ছবিও উঠে আসে। কিন্তু বাংলাদেশের আরো একটি সমুদ্র সৈকত রয়েছে যা অবহেলায় নিমজ্জিত, তা হচ্ছে দক্ষিণ বঙ্গের কুয়াকাটা। বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমও সেইভাবে কুয়াকাটাকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরেনি, যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে কক্সবাজার কিংবা চট্টগ্রামকে।কিছুদিন আগেও কুয়াকাটার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য পর্যটকদের প্রধান সমস্যা ছিলো যোগাযোগ ব্যবস্থা। সেই যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সাথে সাথে কুয়াকাটায় দর্শনার্থীদের ব্যাপক সমাগম দেখা যাচ্ছে। ঢাকা থেকে মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে, ভাঙ্গা-বরিশাল এক্সপ্রেসওয়ে সহ নান্দনিক সৌন্দর্যে ভরপুর দেশের সর্ববৃহৎ পদ্মা সেতু যোগাযোগের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব পরিবর্তন এনে দিয়েছে।

ঢাকা কিংবা সারাদেশ থেকে দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় আসার জন্য সড়কপথ, নদীপথ কিংবা আকাশপথের সুযোগ রয়েছে। ভবিষ্যতে রেলপথে কুয়াকাটা ভ্রমণের সুযোগ তৈরী হচ্ছে। নিজেকে আবিষ্কার করার জন্য কোলাহল মুক্ত পরিবেশের খোঁজে পর্যটকরা কুয়াকাটায় ভ্রমণ করছে। কুয়াকাটার প্রধান সৈকত থেকে পূর্ব ও পশ্চিম দু’দিকে বেশ কিছু পর্যটন গন্তব্য রয়েছে, যা পর্যটকদের কুয়াকাটা ভ্রমণকে উপভোগ্য করে তুলে।পূর্ব ও পশ্চিমের ঝাউবন এক মায়াবী পরশের ছোঁয়া দিতে ঠায় দাড়িয়ে আছে পর্যটকদের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। তিন নদীর মোহনা, লেম্বুর চর, কাউয়ার চর, বৌদ্ধ মন্দির, সবুজ অরণ্য, পশ্চিমের সৈকতের পাশে ঝাউবনের সৌন্দর্য উপভোগের সাথে সাথে সুন্দরবনের একাংশ দেখার সুযোগ। কাকডাকা ভোরে সূর্য উদয়ের সৌন্দর্য দর্শনে কাউয়ার চড়ে ভ্রমণ মনে রাখবার মতো বাস্তব চিত্র স্মৃতি হয়ে থাকবে।

ফাতরার বন কিংবা কুয়াকাটার মিষ্টি পানির কুয়া, গঙ্গামতির জঙ্গল, মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ মন্দির কিংবা সীমা বৌদ্ধ মন্দির দর্শন করা যেতে পারে কুয়াকাটা ভ্রমণে।রাখাইনদের হাতে তৈরী নানারকম উপকরণ পাওয়া যায় রাখাইন মার্কেটগুলোতে। আতিথেয়তা যেন কুয়াকাটাবাসীদের ঐতিহ্যের অংশ। যা পর্যটন গন্তব্যগুলোর প্রধান উপজীব্য। নানা শ্রেনী পেশার পর্যটকদের আবাসন ব্যবস্থায় পর্যাপ্ততার জন্য ইতিমধ্যে বেশ কিছু আধুনিক হোটেল মোটেল, রিসোর্ট নির্মাণের কাজ চলছে। অধিক পর্যটকদের ধারণ করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে অবকাঠামো গঠনে আরো বেশী প্রো-একটিভ হয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে যা হতে হবে পর্যটক বান্ধব।

Taken From Banglar Somoy.

অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত

সমুদ্র দেখতে আমরা কে না ভালোবাসি। সমুদ্রের বিশালতা মানুষকে সব সময় তার কাছে টানে। পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ এই সমুদ্রের পাশে সময় কাটাতে বেশ পছন্দ করে। যুগে যুগে কবি সাহিত্যিকগণ সমুদ্রকে নিয়ে অনেক সুন্দর সুন্দর উক্তি এবং বাণী করে গেছেন।প্রায় ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে একই সাথে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখা যায়। এই বৈশিষ্ট কুয়াকাটাকে সকল সমুদ্র সৈকত থেকে অনন্য করেছে। সূর্যোদয় সবচেয়ে ভাল দেখা যায় সৈকতের পূর্ব প্রান্তের গঙ্গামতির বাঁক থেকে। আর সূর্যাস্ত দেখার ভাল জায়গা হচ্ছে কুয়াকাটার পশ্চিম দিকে।

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে "সাগর-কন্যা" খ্যাত মনোরম একটি ভ্রমণ স্বর্গ কুয়াকাটা। ভ্রমণ বিলাসী ও পর্যটকদের আনন্দ ভ্রমণ ও অবকাশ সময় কাটানোর অন্যতম মনোরম ও মন-মুগ্ধ কর জায়গা হল সাগর কন্যা কুয়াকাটা। শুধু দেশে নয়, কুয়াকাটার পরিচিতি এখন বিশ্বজুড়ে। বেলাভূমির একই স্থানে দাড়িয়ে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের বিড়ল মনোরম দৃশ্য দেখার সমুদ্র সৈকত। নজরকাড়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে কুয়াকাটার রয়েছে আলাদা সুখ্যাতি। দেশের সর্বদক্ষিণে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের শেষ প্রান্তে সাগরপারের এ জনপদ কুয়াকাটা। প্রায় ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং এক কিলোমিটার প্রস্থ সৈকতের সর্বত্র রয়েছে সুন্দরের সমাহার। চোখ ধাঁধানো সবকিছু। রয়েছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল, যার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে অসংখ্য লেক। সৈকত লাগোয়া নারিকেল বীথি। রয়েছে জাতীয় উদ্যান অধীন ইকোপার্ক ও আন্ধার মানিক মোহনার উল্টোদিকের ফাতরার বিশাল ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। রয়েছে শুটকি পল্লী,লাল কাঁকড়ার চর। অদূরেই রয়েছে পর্যটন-পল্লী গঙ্গামতি সৈকত। পরিচ্ছন্নতার জন্য কুয়াকাটার রয়েছে আলাদা পরিচিতি। সুন্দরের স্বকীয়তায় কুয়াকাটাকে বলা হয় সাগর-কন্যা।

Taken From Kss-Club Epizy.

মুগ্ধতায় সাগর কন্যা কুয়াকাটা..

চর গঙ্গামতি। ঝাউ পাতায় ভোরের শিশির বিন্দু । সে বিন্দু ছড়িয়েছে ছোট্ট খেজুর গাছের পাতায়। আমাদের অবশ্য বিন্দুমাত্র ভ্রূক্ষেপ নেই। আমরা তাকিয়ে আছি পূর্ব দিগন্তের অসীম সৌন্দর্য ভরা সমুদ্র জলরাশির দিকে। সে জল ভেদ করে এক সময় ধীরে ধীরে লাল থালার মত সূর্য আমাদের দিকে তাকিয়ে চোখ টিপে হাসল। আমরা খুশিতে লাফিয়ে উঠলাম! আগের দিনই কুয়াকাটা এসেছি কেবল সমুদ্র সৈকত থেকে এমন সূর্যোদয় দেখবো বলে। আমাদের স্বপ্নপূরণহলো! আমাদের ডেরা থেকে প্রায় একঘন্টার দূরত্বের  চর গঙ্গামতি এসেছি ফজরের আযানের সঙ্গে সঙ্গে। আগের দিন মোটর সাইকেলের শামিমকে বলে রেখেছিলাম। শামিম আমাদের ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে এসেছে। না হলে এই শীতে আমাদের এখানে আসাই হতো না, দেখা হতো না সূর্যোদয়!

কুয়াকাটা এই উপমহাদেশের একমাত্র সমুদ্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়। এক সময় পথের দুর্বোদ্ধতার জন্য যাই যাই করে অনেকেই যেতে পারছিলেন না, একটা আফসোস তো রয়ে গেছিলো অনেকেরই। কিন্তু এখন সে অসুবিধা নেই। রাস্তা ভালো, আগের মতো ফেরির ঝামেলা নেই।

Taken From BD Bulletin.

সাগর কন্যা কুয়াকাটা এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন দেখতে পর্যটকদের ভীড় বাড়ছে

কুয়াকাটা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি সমুদ্র সৈকত ও পর্যটনকেন্দ্র। পর্যটকদের কাছে কুয়াকাটা “সাগর কন্যা” হিসেবে পরিচিত। ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সৈকত বিশিষ্ট কুয়াকাটা বাংলাদেশের অন্যতম নৈসর্গিক সমুদ্র সৈকত। এটি বাংলাদেশের একমাত্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়।

সাগরকন্যার কলাপাড়া দখিনের নির্মল বাতাসে সৈকতে পর্যটকদের ছুটোছুটি ও উম্মাদনা। কেউ সমুদ্রের পনিতে গোসল করছেন, কেউ হেঁটে বেড়াচ্ছেন। আবার কেউবা ব্যস্ত সেলফি তোলায়।করোনা মহামারির দীর্ঘ সময় পেরিয়ে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার আকর্ষণ পর্যটকদের কাছে আবারো ফিরে এসেছে। করোনাভাইরাসের ভয়কে জয় করে শারদীয় দুর্গাপুজার ছুটিতে সৈকতে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। তবে একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের মনোলোভা দৃশ্য অবলোকন করা নতুন এক অনুভূতি এমনটাই জানিয়েছেন আগত পর্যটকরা। এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।সরেজমিনে সৈকতে গিয়ে দেখা গেছে, হৈ হুল্লোড়, খেলাধুলা আনন্দের সীমা নেই আগত পর্যটকদের মাঝে। সৈকতের জিরো পয়েন্ট, ইকোপার্ক, লেম্বুরচর, শুঁটকিপল্লী, মিশ্রীপাড়া বৌদ্ধমন্দির, রাখাইন মহিলা মার্কেটসহ আকর্ষণীয় সব স্পটগুলোতে পর্যটকদের আনাগোনা দেখা গেছে।

অমৌসুমে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর সাগর কন্যা কুয়াকাটা

বর্ষার মৌসুম শুরু হতে না হতেই সমুদ্রের উম্মাদনাও শুরু হয়েছে। সেই সাথে পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে উত্তাল সমুদ্র। বড় বড় ঢেউ তীরে আছড়ে পড়ছে। কান পাতলেই অবিরত গর্জন শোনা যাচ্ছে দিনে-রাতে সর্বক্ষণ। রুদ্র রূপের সমুদ্র উপভোগে সৈকতে ভীড় করছেন নানা বয়সী হাজারও পর্যটক।প্রকৃতি আর পর্যটকের নীবিড় সেতু বন্ধনে এখন অন্য ভুবনে সাগর কন্যা কুয়াকাটা। যেসকল পর্যটক শীত মৌসুমে বেড়াতে এসেছেন, তাদের কাছে বর্ষার সাজে সুসজ্জিত সমুদ্র নতুন রূপে ধরা দিয়েছে। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগে ব্যস্ত তারা।স্বর্গীয় এক অনন্য বেলাভূমে যান্ত্রিকতার ক্লান্তি ভুলতে সবাই এসেছেন কুয়াকাটায়। এমন হাজারো পর্যটকদের আড্ডায় মুখোরিত হয়ে উঠেছে সৈকত সংলগ্ন ঝাউবাগানসহ বিভিন্ন বন-বনানী।

উত্তাল এই সমুদ্রে পর্যটকদের গোসল ও সাঁতার কাটতে মাইকিং করে সচেতন করছে পর্যটন পুলিশ। পর্যটন পুলিশের এমন সচেতনতায়ও আগত পর্যটকরা বিচলিত নন, পর্যটকদের উম্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মত।শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে হাজার হাজার পর্যটকদের আগমনে উৎসবমুখর এক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। উত্তাল সমুদ্রে গোসল, হই হুল্লোড়, ঢেউয়ের সাথে তাল মিলিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে আনন্দ উল্লাস ও উম্মাদনায় মেতে ওঠে নানা বয়সের পর্যটকরা।বিশাল আকারের ঢেউয়ের ভয়কে জয় করে সমুদ্রে সাঁতার কাটা, ওয়াটার বাইকে ঘুরে বেড়ানো, ঢেউয়ের সাথে গাঁ ভাসিয়ে দিয়ে সৈকতে গড়াগড়ি খাচ্ছেন সমুদ্র প্রিয় পর্যটকরা। এমন ছন্দময় সময়কে স্মরণীয় করে রাখতে অনেকেই সৈকতের ফটোগ্রাফার দিয়ে ছবি তুলছেন, কেউ কেউ ছাতার নিচে বসে সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করছে, আবার কেউ ঘোড়ার পিঠে চড়ে সৈকতের প্রকৃতি দেখছেন।

Taken From Ujjibito BD.

সাগর কন্যা’য় বছরের শেষ সূর্যাস্ত দর্শন

শেষ দিনের স্মৃতি আঁকড়ে রাখতে ‘সাগর কন্যা’ খ্যাত কুয়াকাটায় ভিড় জমান কয়েক হাজার পর্যটক। উপভোগ করেন শেষ দিনের সূর্যাস্ত। থার্টি-ফার্স্ট উদযাপন উপলক্ষে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার এ সমুদ্র সৈকতের দেশের দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা। পরিবার-পরিজন নিয়ে সৈকতে মেতেছেন আনন্দ উল্লাসে।থার্টি ফার্স্ট উপলক্ষে বড় ধরনের কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন কুয়াকাটায় না হলেও প্রথম শ্রেণির হোটেলগুলো তাদের নিজস্ব অতিথিদের জন্য রেখেছেন কিছু অভ্যন্তরীণ আয়োজন। অন্যদিকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য তৎপর রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।থার্টি ফার্স্ট উপলক্ষে কুয়াকাটায় অনেক পর্যটক। এরই মধ্যে বেশীরভাগ হোটেল-মোটেল বুকিং আছে। ডিসেম্বর মাসজুড়ে হাজার হাজার পর্যটকের সমাগম হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে শুরু করছে।গোয়েন্দা সংস্থাও কাজ করছে। যাতে পর্যটকরা কোনো হয়রানির স্বীকার না হয়।

Taken From Wikipedia.

কুয়াকাটা সমুদ্র উপকূল ও নীল অর্থনীতি

পটুয়াখালী জেলা সদর থেকে ৭০ কিলোমিটার এবং ঢাকা থেকে ৩২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কুয়াকাটা, স্থানীয়ভাবে পরিচিত সাগর কন্যা হিসেবে ।  মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বালুকাময় সমুদ্র সৈকত, নীল আকাশ, বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশি এবং চিরহরিৎ বনের চমৎকার সমাহার নিয়ে গড়ে উঠছে নজরকাড়া সব হোটেল মোটেল এ কুয়াকাটায়। দক্ষিণ এশিয়ায় পর্যটনে বাংলাদেশের অবস্থান ৮ম স্থানে ২০২০ সালে, বাংলাদেশ শুধুমাত্র পর্যটন খাতে প্রায় ২১৭.৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে। এটি মোট দেশজ উৎপাদনের ০.০৫২ শতাংশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার সমস্ত আন্তর্জাতিক পর্যটন প্রাপ্তির প্রায় ১ শতাংশের সাথে এর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের পর্যটন খাতের প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক প্রভাবগুলোকে নিবিড়ভাবে পরীক্ষা করার সময় এসেছে।

জমজমাট পর্যটন বাণিজ্য সাগর কন্যা কুয়াকাটায়

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ চালু হওয়ায় প্রথম বারের মতো ঈদের ছুটিকে কাজে লাগাতে রাজধানী থেকে মাত্র ৫ ঘণ্টায় প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসছেন পর্যটন কেন্দ্র সাগর কন্যা কুয়াকাটায়। কুয়াকাটার সব হোটেল, মোটেল, রেস্টহাউস, গেস্টহাউসের বুকিং শেষে পর্যটকরা কুয়াকাটার বিভিন্ন আবাসিক বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন।এদিকে পর্যটকদের ভিড় ভাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে ক্রমশ ব্যস্ত হয়ে যাচ্ছে পর্যটন ব্যবসার সাথে জড়িত অন্যান্য পেশার লোকজন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। দুর্যোগপূর্ণ মৌসুম হওয়া সত্ত্বেও পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে কুয়াকাটায় পর্যটকদের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এদিকে ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে পর্যটকরা আসতে শুরু করেন কুয়াকাটায়।

পর্যটকদের ভিড় বাড়ার সাথে সাথে সরগরম হয়ে উঠছে কুয়াকাটার রাখাইনদের পরিচালিতসহ বিভিন্ন মার্কেটগুলো। সাগর পাড়ে পর্যটকদের ছবি তোলার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন পেশাদার ফটোগ্রাফাররা। সাগর পাড়ের ফটোগ্রাফার ইমরান বলেন, কোনো ঈদের ছুটিতে টানা ৪ থেকে ৫ দিন তাদের এত ভালো রোজগার হয়নি। গতকাল তিনি খরচ বাদে ২ হাজার টাকা আয় করেছেন। তার আগের দিনেও দেড় হাজার টাকা আয় হয়েছে। মোটরসাইকেল চালকরা বিভিন্ন ট্যুরিস্ট স্পটগুলোতে পর্যটকদের নিয়ে ছুটছেন। সাগর পাড়ের টিউব, চেয়ার, ছাতা ব্যবসায়ীদের ব্যস্ত সময় কাটছে।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসনাইন পারভেজ জানান, পদ্মা সেতু দিয়ে কম সময়ে এবারে ঈদের ছুটি কাটাতে ঈদের পরদিন থেকে হাজার হাজার পর্যটক এসেছেন কুয়াকাটায়। পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কুয়াকাটার প্রতিটি পর্যটন স্পটে অতিরিক্ত টুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কুয়াকাটার সাগর সৈকতের জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত যানজট মুক্ত রাখতে কুয়াকাটার প্রবেশ মুখ তুলাতলিতে সব পরিবহন থামানো হচ্ছে। জেলা পুলিশের সহায়তায় ট্রাফিক পুলিশের মাধ্যমে প্রাইভেটকারসহ মোটরসাইকেলের নির্দিষ্ট স্থানে পার্কিং নিশ্চিত করা হচ্ছে। পর্যটকদের খাবার হোটেলের অতিরিক্ত দাম রাখার ভোগান্তি থেকে পরিত্রাণ পেতে গতকাল থেকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করা হচ্ছে। মোবাইল কোর্টের অভিযানসহ ভোক্তা অধিকারের অভিযান চলছে।

Taken From Porjoton.Gov.

সাগর কন্যা কুয়াকাটা যে কারণে আসবেন ঘুরতে

আপনার যদি সূর্য ভালো লাগে আপনার যদি সিবিচ ভালো লাগে তাহলে আপনি অবশ্যই কুয়াকাটা ঘুরে আসতে পারেন। কুয়াকাটা নৈসর্গিক আবহাওয়া অবশ্যই আপনাকে মুগ্ধ করবে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় সমুদ্র সৈকত হচ্ছে কুয়াকাটা। কক্সবাজার এরপরই হচ্ছে এর অবস্থান।কুয়াকাটাকে আপনারা দেখতে পারবেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী দের। তাদের ভিতর রাখাইনরা অন্যতম। তাদের রয়েছে নিজস্ব বাচনভঙ্গি ও সংস্কৃতি। কুয়াকাটা তে ঘুরতে যাওয়ার জন্য বছরের এপ্রিল থেকে আগস্ট মাস হচ্ছে সবচেয়ে ভালো সময়।একটি সার্ভেতে দেখা গেছে কুয়াকাটাতে প্রতি বছর বিদেশ থেকে হাজার হাজার লোক মুহূর্তে আসে, চাইলে আপনিও এখানে আসতে পারেন।আপনি ঢাকা থেকে সরাসরি কুয়াকাটা আসতে পারেন। এছাড়া আপনি যদি বরিশাল অথবা খুলনার হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই পটুয়াখালী পর্যন্ত এসে এখান থেকে মাইক্রোবাস অথবা বাস থেকে আপনি যেতে পারেন একদম কুয়াকাটা পর্যন্ত।

Taken From Barisal Barta.

কুয়াকাটায় কখন যাবেন

অধিকাংশ মানুষ কুয়াকাটা বেড়ানোর সঠিক সময় শীতকাল (অক্টোবর - মার্চ) বলে মনে করেন। তবে শীত, গ্রীষ¥, বর্ষা সব ঋতুতেই এখানে যাওয়া যায়। শীতকালেঘুরে বেড়ানোটা অনেকটা আরামদায়ক হলেও এ সময় সমুদ্র থাকে শান্ত। ঢেউ তেমন একটা দেখতে পাবেন না। তাছাড়া ঘন কুয়াশা পড়লে সূর্যোদয়ও দেখতে না পাবার সম্ভাবনা। সমুদ্রের রুদ্র রূপ দেখতে হলে যেতে হবে গ্রীষ¥ বা বর্ষাকালে। সৈকতে শত সহস্র ঊর্মিমালার নিরন্তর আঁছড়ে পড়া দেখার মধ্যে এক ধরণের নেশা আছে। তা উপভোগের সঠিক সময় এটাই। তবে বর্ষাকালে আবার আকাশে ঘন মেঘ থাকায় সূর্যোদয়/ সূর্যাস্ত মিস করার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। তাই যখনই যাননা কেন ২/১ দিন সময় নিয়ে এবং আবহাওয়ার অগ্রিম খোঁজ খবর নিয়ে রওনা হওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। আর যদি সুযোগ থাকে এবং আপনি যথেষ্ট রোমান্টিক মুডের মানুষ হন তবে এ সময়ের ১টি পূর্ণিমা রাত সৈকতে কাটিয়ে যেতে পারেন। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি সৈকতে ইজিচেয়ারে আলস্যে-আরামে শুয়ে বসে পূর্ণ চন্দ্র দর্শন আপনার জীবনের অন্যতম স্বরণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে।

কুয়াকাটায় কি করবেন

প্রথম কথা প্রাণ ভরে উপভোগ করবেন বঙ্গোপসাগরের অপরূপ রূপ। সৈকতে সারিসারি ছাতা এবং ইজি চেয়ার ভাড়া পাওয়া যায়। দিনে এখানে বসে সমুদ্রের তীরে আছড়ে পড়া ঢেউ দেখতে খুবই ভাল লাগে। তাছাড়া সমুদ্রের একটি নিজস্ব ভাষা আছে তা উপভোগ করতে চাইলে আপনাকে বসতে হবে রাতে। সমুদ্র থেকে বয়ে আসা øিগ্ধ বাতাস আর বিরামহীন ঢেউয়ের গর্জন নেশা জাগাবে মনে। ঢেউয়ের ফেনায় আলো পড়ে জ্বলে ওঠা ফসফরাস দেখে মুগ্ধ হবেন নিশ্চিত। সৈকতে হাঁটাহাটি করতে পারেন। ঘোড়ায় চড়ে কিছুটা সময় মজা করে কাটাতে পারেন। ফুটবল বা ভলিবল খেলতে পারেন। ওয়াটার বাইক বা স্পিড বোটেও কিছু সময়ের জন্যে এ্যাডভেঞ্চার করে নিতে পারেন।কুয়াকাটায় সমুদ্রের সাহচর্যে কাটবে অধিকাংশ সময়। ১টা বেলা তাই রাখতে পারেন সমুদ্র øানের জন্যে। জোয়ার ভাটার হিসাব রেখে জোয়ারের সময় নামতে পারেন পানিতে। আর সে জন্যে আট-সাট সাঁতার উপযোগী পোষাক নিতে ভুলবেন না যেন। নিরাপত্তার স্বার্থে নিরিবিলি জায়গায় না নেমে ঝাপা-ঝাপি, আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠুন জণাকীর্ণ জায়গায়। আর দক্ষ সাঁতারু না হলে উরু পানির বেশী নামার সাহস না করাই ভাল।

কুয়াকাটায় কি দেখবেন

সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দর্শন।    অতি প্রত্যুষে বঙ্গোপসাগরের পেট চীরে ধীরে ধীরে বের হয়ে আসা অপূর্ব সূর্যোদয়ের দৃশ্যটি সবচেয়ে ভাল দেখা যাবে গঙ্গামতির বাঁক থেকে। আবার শেষ বিকালে সমুদ্রের বুকে টুপ করে ডুব দেওয়া সূর্যাস্তের কমলা আভায় যদি রাঙাতে চান মন তবে যেতে হবে কুয়াকাটার পশ্চিম সৈকতের সানসেট পয়েন্টে।শুটকি পল্লী।    সৈকতের পশ্চিম প্রান্তে লেম্বুপাড়ায় প্রতিবছর নভেম্বর-মার্চ মাস পর্যন্ত চলে শুটকি তৈরীর মৌসুম। এসময় এখানে জেলেরা অস্থায়ী ভাবে গড়ে তোলে শুটকী পল্লী। সম্পুর্ন প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে এখানে সাগরের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রোদে শুকিয়ে জেলেরা শুটকি তৈরী করে। বিশাল এলাকা জুড়ে বাঁশের মাচায় শুকিয়ে শুটকি তৈরীর পদ্ধতিটি এখানে দেখে আসতে পারবেন স্বচক্ষে। তাছাড়া একেবারে কম দামে ভাল মানের ইলিশ, রূপচাঁদা, লইট্টা, শাপলাপাতা, হাঙর, চিংড়ী প্রভৃতি শুটকিও কিনে আনতে পারবেন।

কুয়াকাটায়  কীভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে নদী ও সড়ক পথে কুয়াকাটা যাওয়া যায়। সবচেয়ে সহজ যাতায়াত ব্যবস্থা হল ঢাকার সদরঘাট থেকে লঞ্চে পটুয়াখালী, সেখান থেকে বাসে কুয়াকাটা। ঢাকার সদরঘাট থেকে পটুয়াখালী যায় এমভি পারাবত, এমভি সৈকত, এম ভি সুন্দরবন বিভিন্ন লঞ্চ।কুয়াকাটা আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে কুয়াকাটার বাস সার্ভিস আছে। এছাড়া ঢাকার গাবতলী বাস স্টেশন থেকে সাকুরা পরিবহন, দ্রুতি পরিবহন, সুরভী পরিবহনের বাস যায় কুয়াকাটা। এছাড়া কমলাপুর বিআরটিসি ডিপো থেকেও প্রতিদিন সকাল ও রাতে কুয়াকাটার বাস ছাড়ে।

কোথায় থাকবেন

কুয়াকাটায় পর্যটকদের থাকার জন্য বিভিন্ন মানের হোটেল আছে। সবচেয়ে ভালো আবাসন ব্যবস্থা পর্যটন করপোরেশনের ইয়ুথ ইন কুয়াকাটা (০৪৪২৮-৫৬২০৭)। এ হোটেলে বিভিন্ন মানের কক্ষ আছে।এছাড়া এখানে পর্যটন করপোরেশনের অন্য একটি হোটেল হল পর্যটন হলিডে হোম (০৪৪২৮-৫৬০০৪)। দুটি হোটেলেরই বুকিং দেওয়া যাবে ঢাকায় পর্যটনের প্রধান কার্যালয় থেকে। যোগাযোগ ০২-৮৮১১১০৯, ০২-৯৮৯৯২৮৮।এছাড়া কুয়াকাটায় অন্যান্য ভালো মানের হোটেল হলো হোটেল বনানী প্যালেস (০৪৪২৮-৫৬০৪২), হোটেল কুয়াকাট ইন (০৪৪২৮-৫৬০৩১), হোটেল নীলাঞ্জনা (০৪৪২৮-৫৬০১৭), হোটেল গোল্ডেন প্যালেস (০৪৪২৮-৫৬০০৫) ইত্যাদি।

সৌন্দর্য হারাচ্ছে সাগর কন্যা কুয়াকাটা

পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটায় সাগর সৈকত দখল করে গড়ে উঠছে একের পর এক অবৈধ স্থাপনা। একটি প্রভাবশালী মহল সৈকত লাগোয়া জায়গা দখল করে আধাপাকা টিনশেড ঘর নির্মাণ করে সাইনবোর্ড-বিলবোর্ড লাগিয়ে দখল প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। আদালতের আদেশ অমান্য করে এবং ÿমতাসীন দলের শেল্টার নিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় স্থানীয় প্রভাবশালীরা নির্মাণ করছেন এসব স্থাপনা। এমনকি দখলদাররা নিজেদের সম্পত্তি দাবি করে সৈকত এলাকার জমিতে মার্কেট বানিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন বিপুল অঙ্কের টাকা। আর এসব কিছু দেখেও অনেকটা অসহায় স্থানীয় প্রশাসন। ফলে দিন দিন সৌন্দর্য হারিয়ে পর্যটকদের আকর্ষণ হারাচ্ছে সাগর কন্যা কুয়াকাটা।

সৈকত এলাকার জমি সরকারি মালিকানাধীন থাকার কথা থাকলেও কুয়াকাটার চিত্র ভিন্নœ। সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে রা¯Íার দুই পাশ নিজেদের মতো করে দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করছে স্থানীয় একাধিক প্রভাবশালী গ্রæপ। এমনকি সৈকতে প্রতি হাত জমি ২০০ টাকা করে ভাড়া দেয়া হয়েছে ÿুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছে। কোনো ধরনের বিধিনিষেধ না থাকায় এখন সৈকতের বড় একটি এলাকা অবৈধ দখলদারদের কবলে। শুধু অস্থায়ী স্থাপনাই নয়, নিয়মনীতির তোয়ক্কা না করে মূল বেড়িবাঁধের বাইরেও পাকা স্থাপনা নির্মাণের কাজও চলছে জোরেশোরে।

এ দিকে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের তীরে থাকা সব স্থায়ী-অস্থায়ী অবৈধ স্থাপনা অপসারণে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে দুই আইনজীবী রিট আবেদন করলে ২ জুন ২০১১ হাইকোর্ট জনস্বার্থে করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রুল জারি করেন। এছাড়া আদালত বিশেষ কমিটির মাধ্যমে সমুদ্রসৈকত এলাকার সীমানা নির্ধারণ, একই সাথে সেখানে যাতে নতুন করে দখল ও স্থাপনা নির্মাণ না হয় সেই নির্দেশনাও দেয়া হয়। এই নির্দেশনার পর জেলা প্রশাসন সৈকতজুড়ে বেড়িবাঁধের বাইরে ২২৮টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে এর ৯০ শতাংশ ভেঙে দেয়। বাকিগুলো মালিক পÿের মামলা জটিলতার কারণে ভেঙে ফেলা সম্ভব হয়নি বলে উপজেলা ভ‚মি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।এ দিকে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকার পরও সৈকত এলাকায় নতুন করে দখল ও স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে। সরেজমিন দেখা যায়, কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট বেড়িবাঁধ থেকে সৈকতে পৌঁছলেই দুই পাশে অসংখ্য দোকানপাট চোখে পড়ে। আবার দেখা যায় কেউ কেউ কাঠ-টিন দিয়ে দোকানঘর নির্মাণ করছেন। ব্যবায়ীরা বড় অঙ্কের টাকা দিয়ে দোকান নিয়ে ব্যবসা করছেন।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের সাবেক ডিন আব্দুল আহাদ বিশ্বাস বলেন, আসলে কোনো অবস্থাতেই সৈকতে লাগোয়া দোকানপাট থাকা উচিত নয়। এসব দোকানপাটের বর্জ্য সৈকতের পরিবেশ নষ্ট করছে। সৈকতে যেভাবে দখল হয়ে দোকানপাট উঠছে তাতে করে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা সৌন্দর্য হারাচ্ছে। কুয়াকাটা সৈকত রÿায় প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে হবে।

কুয়াকাটা সৈকত গিলে খাচ্ছে উন্মত্ত সমুদ্র

‘কুয়াকাটায় এখন যেখানে সমুদ্র, সেটি ছিল আরও দুই থেকে তিন কিলোমিটার দূরে। বেড়িবাঁধ থেকে হেঁটে সৈকতে পৌঁছাতে সময় লাগত ১৫ থেকে ২০ মিনিট। মাঝের জায়গাটিতে মাটির রাস্তার দুধারে ছিল নারিকেল বাগান আর জঙ্গল। অথচ আজ উত্তাল ঢেউ আছড়ে পড়ছে বাঁধে। চলছে বেড়িবাঁধ রক্ষার চেষ্টা। মাত্র ২০-২২ বছরে সাগর এতটা পথ এগিয়ে এসেছে। বর্তমানে যে পরিস্থিতি তাতে আসছে বর্ষায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে সাগর ঢুকে পড়লেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।’সমুদ্রের উন্মত্ত ঢেউ ভয় জাগাচ্ছে কুয়াকাটার সবার মনে। বিশেষ করে পর্যটনকেন্দ্রিক বাণিজ্যে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা ব্যবসায়ীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। আবাসিক হোটেলের মালিক সোহেল আহম্মেদ বলেন, ‘এখানে কিন্তু সাগর ভাঙে না, ঢেউ এসে ধুয়ে নিয়ে যায় তীর। এভাবে ধুয়ে নিতে নিতে এগিয়ে আসে সমুদ্র। ১০-১২ বছর আগে যখন এখানে এসে ব্যবসা শুরু করি তখন সমুদ্র ছিল অনেক দূরে। মাত্র ক’টা বছরের ব্যবধানে সেই সমুদ্র এখন ঘরের দরজায়।’

সৈকতের পশ্চিমপ্রান্তে নতুন বেঁড়িবাধ ‘রিং বাঁধ’ করেও সামাল দেওয়া যায়নি কিছুই। সবই গিলে খেয়েছে সমুদ্র। পশ্চিমের কিছু অংশে বেড়িবাঁধের বাইরে বসানো হয়েছিল কংক্রিটের ব্লক। সেগুলোতেও আঘাত হানছে ঢেউ। আগে জোয়ারের সময়ও হেঁটে ঘুরে দেখা যেত ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকত। এখন ভাটিতেও অনেক জায়গা ডুবে থাকে পানির নিচে।’একটা সময় বরিশাল থেকে কুয়াকাটা আসতে পথে ছিল ছয়টি ফেরি। সেসব জায়গায় ব্রিজ হয়ে গেছে। ভালো হয়েছে রাস্তা-ঘাট। ফলে প্রতিদিনই বাড়ছে পর্যটক। জুনের শেষ নাগাদ পদ্মা সেতু চালু হলে আরও কয়েকগুণ বাড়বে এই ভিড়। কেননা তখন রাজধানী ঢাকা থেকে সবচেয়ে কাছের সমুদ্র সৈকত হবে কুয়াকাটা। দিন দিন যেখানে সম্ভাবনা বাড়াচ্ছে এ সৈকত সেখানে আমরা সন্দিহান এর অস্তিত্ব টিকে থাকা নিয়ে।’

বছরের পর বছর ধরে এভাবে সমুদ্র এগোলেও তা প্রতিরোধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ কুয়াকাটার মানুষ। কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্টের সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব বলেন, ‘বহু বছর ধরেই একটু একটু করে মাটি ধুয়ে জনপদের দিকে এগোচ্ছে সাগর। ১৯৯৯-২০০০ সালের দিকে বেড়ে যায় এর তীব্রতা। গেল ২০-২২ বছরে সাগর এগিয়েছে কম করে হলেও তিন কিলোমিটার। ব্যক্তিমালিকানাধীন অগণিত স্থাপনার পাশাপাশি বিলীন হয়েছে কুয়াকাটা ইকো পার্কের বিশাল একটি অংশ, ঝাউবন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একটি সাইক্লোন সেন্টার, ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান্ট, সরকারি জমি লিজ নিয়ে গড়ে ওঠা ফয়েজ মিয়ার বিশাল নারিকেল বাগানসহ আরও অনেক কিছু।’

'সাগর কন্যা' কুয়াকাটা হারাচ্ছে সৌন্দর্য

সাগর কন্যা খ্যাত কুয়াকাটা হারাতে বসেছে তার সৌন্দর্য। পর্যটকদের আকর্ষণ করার অন্যতম অনুষঙ্গ ইকোপার্কটি এখনো লণ্ডভণ্ড অবস্থায় পড়ে আছে সমুদ্র সৈকত ঘেঁষে। সিডর ও আইলার আঘাতে বিধ্বস্ত ইকোপার্কটি দ্রুত উন্নয়ন ও সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীসহ পর্যটকরা। অবশ্য পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে ইকোপার্কটি উন্নয়নে দু'টি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা।পর্যটকরা জানান, 'উদ্যানে গাছপালা তেমন নেই, আছে কিছু ঝাউ গাছ। এখানকার পরিবেশ পরিচ্ছন্ন নয়। বসার জন্য আরো কিছু বেঞ্চ দরকার।'এলাকাবাসীরা জানান, 'এখানে একটা লেক আছে কিন্তু সেটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নেই। কেউ বসতে পারেনা, তাই এখানে পর্যটক কম। সিডরে ভাঙ্গার পর এই পার্কে কোনো পরিচ্ছন্নতা নেই। এখানে কর্মকর্তাদের কোনো খেয়াল নেই।'

অবশ্য ইকোপার্কটি উন্নয়নে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বন বিভাগ আলাদা দু'টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা।পটুয়াখালীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা অজিত কুমার রুদ্র বলেন, 'যেসব স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে সেগুলোর মধ্যে যেগুলো মেরামত যোগ্য তা মেরামতের জন্য ও নতুন স্থাপনা ঠিক করার জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। প্রকল্প প্রণয়ন প্রায় শেষ পর্যায়ে।'

নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত সাগরকন্যা ভালো নেই।

নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত সাগরকন্যা ভালো নেই। পর্যটক সমাগম বাড়াতে এগুলোর নিরসন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয়রা মনে করেন, উন্নত নগরীতে গড়ে তুললে কুয়াকাটায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাড়বে, একইসঙ্গে সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানের।নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে এখানে বছরে তিন থেকে পাঁচ লাখের বেশী পর্যটক সাগরকন্যা কুয়াকাটা দেখতে আসে। বর্তমান সরকার কুয়াকাটাকে পর্যটন বান্ধব করার লক্ষ্যে যেসকল পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে তার বাস্তবায়ন সম্ভব হলে পর্যটকদের সংখ্যা তিনগুন বেড়ে যাবে। বাংলাদেশ সরকার, টুরিস্ট পুলিশ, টোয়াকসহ আরো স্থানীয় পর্যটন সংস্থাগুলো পর্যটন বিষয়ে সচেতনা বৃদ্ধি,পর্যটকদের নিরাপত্তা, মানসম্মত হোটেল ও রেঁস্তোরা, পর্যটকদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ, ট্যুরিস্ট গাইড সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করছে।

এতে পর্যটকসহ স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা উভয়ে উপকৃত হবে। এসব বিষয় বাস্তবায়ন সম্ভব হলে কুয়াকাটা হবে মডেল পর্যটন কেন্দ্র। সারগকন্যা কুয়াকাটাকে সম্ভাবনা থেকে সমৃদ্ধ করতে প্রয়োজন দক্ষ নেতৃত্ব, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, স্থানীয়দের পর্যটন বান্ধব আচরণ, হোটেল ও রেঁস্তোরা পরিচালনার প্রয়োজনীয় নীতিমালা, ট্যুরিস্ট পুুলিশের সহযোগিতা, ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা, দক্ষ গাইড, ট্যাভেল এজেন্সী, ট্যুর অপারেটর, স্থানীয় পরিবহন সংস্থাগুলোর পর্যটন বান্ধব আচরণ ও সহযোগিতা। পর্যটনের মাধ্যমে মানুষ সাবলম্বী হবে, স্থানীয় লোকজন উপকৃত হবে, বেকার সংখ্যা কমে যাবে।

এক্ষেত্রে আমাদের একটি বিষয় মাথায় রাখা দরকার তা হলো, পর্যটন শুধু আকর্ষণীয় স্থানের ওপর নির্ভর করে না। সঙ্গে ওই পর্যটন স্পটকে কেন্দ্র করে যে ভৌত কাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা সেটিও বেশ জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনুন্নত অবকাঠামো, পর্যটন স্পটগুলোকে বিশ্বমানে রূপান্তর না করা, স্পটসংলগ্ন এলাকায় অপরিকল্পিত উন্নয়ন, বাড়তি আকর্ষণ তৈরি না করা, সাংস্কৃতিক আয়োজন না থাকা, পরিচালনে রাজনৈতিক প্রভাব, পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাব ও সর্বোপরি সরকারের সুনজর না থাকায় পর্যটনের কাঙ্খিত বিকাশ ঘটছে না।একইসঙ্গে পটুয়াখালীর লেবুখালী সেতুর কাজ চলছে। সেখানে ফেরিতে প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনায় পড়ছেন ভ্রমণপিপাসুরা। সেতুটি চালু হলে তাদের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত চিত্তবিনোদনের একটি পার্ক নির্মাণ, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে বিভিন্ন স্পট পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সৈকতে সিসি ক্যামেরা যুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন স্থানীয়রা। সরকারের উদ্যোগে কুয়াকাটার উন্নয়নে মাস্টারপ্ল্যানের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এটি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ দৃষ্টিনন্দন পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে উঠবে কুয়াকাটা। পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার উন্নয়নে মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন হলে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। পাশাপাশি এখানে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার সঙ্গে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।তবে আশার বিষয় হলো, অতি সম্প্রতি বেশ কিছু উদ্যোগ সরকারিভাবে গ্রহণ করা হয়েছে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতসহ আশপাশ এলাকাগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য। আমরা চাই, সরকার দ্রুত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করুক। পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করলে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে পর্যটন শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সে আশা আপনার, আমার সকলের।

কুয়াকাটা সৈকতের ভাঙন রোধে হাজার ৯৭ কোটি টাকার প্রকল্প

কুয়াকাটা সৈকতের ভাঙন রোধে ৯৭৫ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। একনেকে পাশ হলে আগামী বছর স্থায়ী কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় পৃথিবীর অনেক উন্নয়নমূলক কাজ থমকে আছে। বাংলাদেশেও এর বিচ্যুতি ঘটেনি। তারপরও প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমাদের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে।তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর কোনো না কোনো দুর্যোগ হানা দেয় উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে। পাশাপাশি প্রতি আমাবশ্যা পূর্ণিমার জোতে সাগর কন্যা কুয়াকাটা সৈকত ভাঙতে ভাঙতে জিরো পয়েন্টে এসে পড়েছে। কুয়াকাটাকে রক্ষায় প্রতিবছর পানি উন্নয়ন বোর্ড জিওব্যাগ দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা করলেও তাতে কোন উপকারে আসে না। তাই সরকার কুয়াকাটাকে স্থায়ী ভাবে রক্ষা করতে ৯৭৫ কোটি টাকার স্থায়ী প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

অপরূপ সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি - সাগর কন্যা কুয়াকাটা। আর একবার যে গিয়েছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে সে নিশ্চিত বাঁধা পড়ে যাবে এর অনিন্দ্য সুন্দর রূপ মাধূর্য্য।ে সমুদ্র চিরদিনই মানুষকে ডাকে আর কুয়াকাটা সে’ত ভ্রমণ পিপাসুদের স্বর্গভূমি। এখানের বিস্তৃত বালুকাময় সমুদ্র সৈকত, সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত একসঙ্গে উপভোগ করার দারুণ সুযোগ আর আশেপাশের নির্মল প্রকৃতি উদ্বাহু বসে আছে আকর্ষণের পসরা সাজিয়ে। দু'দন্ড ফুরসৎ মিললে নগর সভ্যতার যাতাকলে পিষ্ট নগরবাসী, চট করে ঘুরে আসতে পারেন কুয়াকাটা থেকে।

কুয়াকাটাকে বলা হয় ‘সাগরকন্যা’। এখানে একই স্থান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখা যায়। লাল কাঁকড়ার দ্বীপ নামে এখানে আলাদা একটা জায়গাই রয়েছে, সেখানে খুব ভোরে পৌঁছাতে পারলে দেখা যায় পুরো সমুদ্রসৈকতে লাল কাঁকড়ার দল নিজেদের কার্পেটের মতো বিছিয়ে রেখেছে! সৈকতজুড়ে তাদের শিল্পকর্ম! এখানে আছে ফাতরার চর আর আছে গঙ্গামতির চর। ফাতরার চর মূলত সুন্দরবনের বর্ধিত একটি অংশ, ফলে এখানে গেলে সুন্দরবনের একটা আবহ পাওয়া যাবে। অন্যদিকে গঙ্গামতির চর শান্তশিষ্ট ফল-ফুলে ভরা একটি দ্বীপ, এখানে জংলি ফল আর খাবারের কোনো কমতি নেই। এখান থেকে খুব ভোরে টকটকে লাল সূর্যটা দেখা যায়।


তথ্যসুত্র


কুয়াকাটা সৈকতের ভাঙন, Ebarta24.

কুয়াকাটা সৈকত, Jugantor.

সাগর কন্যা’য় বছরের শেষ সূর্যাস্ত দর্শন, Jago News24.

সাগর কন্যা কুয়াকাটায়, Daily Inqilab.

সাগর কন্যা কুয়াকাটা, Daily Naya Diganta.

সাগর কন্যা কুয়াকাটা, Grathor.

সাগর কন্যা কুয়াকাটা, Ekushey-Tv.

'সাগর কন্যা' কুয়াকাটা, Somoy News.

সাগর কন্যা কুয়াকাটা, Chhanel Online.

সাগরকন্যা কুয়াকাটা, Protidiner Chitro Bd.

সাগর কন্যা কুয়াকাটা, Daily Prottoy.

কুয়াকাটা, Kishor Alo.

সাগর কন্যা - কুয়াকাটা, Shariatpur Barta.

মুগ্ধতায় সাগর কন্যা, Bangla Tribune.

কুয়াকাটা’ যেন কন্যা হয়েই থাকুক Barta24.

সাগরকন্যা কুয়াকাটা, Daily- Bangladesh.

Subscribe for Daily Newsletter