হুমায়ুন আহমেদের স্মৃতি বিজড়িত ‘নুহাশ পল্লী’('Nuhash Palli')

হুমায়ুন আহমেদের স্মৃতি বিজড়িত ‘নুহাশ পল্লী’('Nuhash Palli')


প্রয়াত কথাসাহিত্যিক ও গল্পের জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ ঢাকার অদূরে গাজীপুরে প্রতিষ্ঠা করেছেন প্রাকৃতিক নৈসর্গ নুহাশ পল্লী। পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র ও শুটিংস্পট হিসেবে এটি বেশ পরিচিত। নুহাশ পল্লী গাজীপুর জেলা সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্বে পিরুজালী গ্রামে অবস্থিত। নুহাশ পল্লীর বর্তমান আয়তন প্রায় ৪০ বিঘা। ১৯৮৭ সালে ২২ বিঘা জমিতে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়ন শুরু করেন। হুমায়ূন পুত্র নুহাশের নামানুসারে নুহাশ পল্লী নামকরণ করা হয়।

মনের মাধুরী মিশিয়ে গড়ে তুলেছিলেন এক প্রাকৃতিক নৈসর্গ `নুহাশ পল্লী`

নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে গড়ে তুলেছিলেন এক প্রাকৃতিক নৈসর্গ `নুহাশ পল্লী`। শাল বনের মাঝে চারিদিকে সবুজে মোরা এই বিনোদন কেন্দ্রটি বর্তমানে পিকনিক ও শুটিংস্পট হিসেবে বেশ পরিচিত।হুমায়ূন আহমেদ ১৯৯৭ সালে গাজীপুর সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরের পিরুজালী গ্রামে ৪০ বিঘা জমির ওপর তার ছেলে নুহাশের নামে এই ‘নুহাশ পল্লী’ তৈরি করেন।

নুহাশ পল্লীতে প্রবেশ করতে হলে আপনাকে দুইশ টাকা গুনতে হবে। টাকার অংকটা একটু বেশি মনে হতে পারে আপনার কাছে। তবে যখন জানবেন যে টিকিটের এই দুইশ টাকা ব্যয় করা হবে, লেখকের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ স্কুলের বাচ্চাদের লেখা পড়ার জন্য, তখন অবশ্যই শান্তি লাগবে মনেনুহাশ পল্লীর প্রতিটি স্থাপনায় মিশে আছে হুমায়ূন আহমেদের স্পর্শ এবং ভালোবাসা। বিভিন্ন নাটক, সিনেমার শুটিং এর পাশাপাশি নুহাশ পল্লীতেই হুমায়ূন আহমেদ তার জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন। ঢাকার খুব কাছে হওয়ায় পরিবার বা প্রিয়জন নিয়ে একদিনেই ঘুরে দেখে আসতে পারবেন নুহাশ পল্লী।

পুরো জায়গাজুড়ে সুনশান নীরবতা

উপরে লিচু, জাম আর শান্তির প্রতীক জলপাই গাছ। নিচে সবুজ ঘাসের গালিচা। যেন এক টুকরো শান্তি নিকেতন। এইখানে চির নিদ্রায় উত্তরাধুনিক বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তী লেখক হুমায়ূন আহমেদ।যেখানে ঘন বন আর বিশাল গাছের কোমল ছায়া। নুহাশ পল্লীর পশ্চিম পাশের দেয়াল ঘেঁষেই কিংবদন্তীর সমাধি। চারদিকে কাঁচের দেয়াল। ভেতরে অনেকটা জায়গা নিয়ে শ্বেত পাথরের সমাধি। শিথানের পাশে কাঁচের উপর হুমায়ূন আহমেদের স্বাক্ষর করা ফলক। পুরো জায়গাজুড়ে সুনশান নীরবতা।

Taken From DMP News.

ব্যস্ততার মাঝে মন চায় একটু স্বস্তির নিশ্বাস নিতে। তাই তো নগরীর আশপাশে  যাওয়া যেতে পারে, যা  আপনার একঘেয়েমি ব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি দূর করে দেবে। ঠিক এমনই একটি জায়গা ঢাকার সবচেয়ে কাছে  'নুহাশ পল্লী'। অতি সহজেই পৌঁছে যেতে পারবেন আপনি। প্রিয়জন, পরিবার, বন্ধুবান্ধব নিয়ে ছুটির দিনে ঘুরে আসতে পারেন নুহাশ পল্লী  থেকে।

একটি পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

প্রায় ৪০ বিঘা জমির উপর স্থাপিত এই নুহাশ পল্লী রাজধানী ঢাকার অদুরে গাজীপুর জেলায় অবস্থিত যা মূলত নুহাশ চলচিত্রের শুটিংস্পট ও একটি পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এটি গাজীপুর জেলার চান্দিনা চৌরাস্তা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে হোতাপাড়া এলাকার পিরুজালী নামক গ্রামে নানা স্থাপনা, অসংখ্য ফলজ, বনজ এবং ঔষধি গাছের বাগানসমৃদ্ধ একটি বিনোদন কেন্দ্র। যা হুমায়ূন আহমেদ তার ছেলে নুহাশের নামে নামকরণ করে মনের মাধুরি মিশিয়ে একটি স্বপ্নজগত হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন।

Taken From DMP.

১৯ জুলাই, নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১২ সালের এই দিনে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইয়ে হার মানেন জনপ্রিয় এ কথাশিল্পী। মৃত্যুর পর গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী গ্রামে তার নিজ হাতে গড়া স্বপ্নের নুহাশপল্লীতে সমাহিত করা হয়। তবে হিমু, মিসির আলির মতো অসংখ্য জনপ্রিয় চরিত্র তৈরি করে এখনও পাঠকের মনে বেঁচে আছেন হুমায়ুন আহমেদ।

হুমায়ূন আহমেদের শরীরে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মরণব্যাধী ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যান। সেখানে ২০১২ সালের ১৬ জুলাই তিনি চলে যান লাইফ সাপোর্টে। ১৯ জুলাই বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ২৩ জুলাই দেশে ফিরিয়ে আনা হয় হুমায়ূন আহমেদের লাশ। ২৪ জুলাই তাকে দাফন করা হয় তার গড়ে তোলা গাজীপুরের নুহাশপল্লীর লিচুতলায়।

হুমায়ূন আহমেদের খুব যত্নে গড়া নুহাশ পল্লী

জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের খুব যত্নে গড়া নুহাশ পল্লী। ঢাকার অদূরে প্রকৃতির একেবারে কাছাকাছি হুমায়ূন আহমেদ গড়ে তুলেছিলেন নিজের স্বপ্নের ঘর। এখানে তিনি পদ্ম দিঘি থেকে শুরু করে বানিয়েছিলেন লীলাবতী দিঘিও। সে দিঘির পাড় ঘেঁষে আপন হাতে বানিয়েছেন মসলার বাগান, সেখানে দারুচিনি-তেজপাতাসহ হরেক রকমের মসলাগাছ যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে নানা ধরনের ঔষধি গাছ। চমকে দেওয়ার জন্য আছে সিমেন্টের তৈরি বিশাল বিশাল কুমির, ডাইনোসর আর গাছের ওপর বানানো বাড়ি।

এমন অনিন্দ্যসুন্দর জায়গা আর দৃশ্য নিয়েই তৈরি হয়েছে নুহাশ পল্লী, যার এক কোনায় আজীবনের জন্য শুয়ে আছেন স্বয়ং হুমায়ূন আহমেদ, বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তি। এক দিনে ঘুরে বেড়ানোর জন্য এটিও একটি সুন্দর জায়গা। বন্ধুদের নিয়ে হুটহাট করেই ঢাকা থেকে গাজীপুরের বাসে উঠে বসা যায়, সেখান থেকে গাজীপুরের হোতাপাতায় নেমে শালবনের ভেতর নিয়ে রিকশা বা অটো নিয়ে চলে যাওয়া যায় হুমায়ূন স্মৃতিবিজড়িত নুহাশ পল্লীতে।

Taken From Bd News24.

নুহাশ পল্লীতে আরও আছে ‘পদ্মপুকুর’। যদিও পদ্মপুকুরে আর পদ্ম ফুল নেই। পদ্মপুকুরের মাঝখানে ‘জলপরী’ দাঁড়িয়ে আছে । জলপরীর সামনেই বিশাল এক দানব দুই হাত প্রসারিত করে সদা প্রস্তুত। এখানে আছে জুরাসিক পার্ক, ডাইনোসরও আছে এখানে তবে আসল নয়। নুহাশ পল্লীতে বেশ কিছু দোলনা আছে। এছাড়া রয়েছে গোয়ালঘর, হাঁস-মুরগির ঘর, কবুতরের খাঁচা।

Taken From DMP News.

দৃষ্টিনন্দন সবুজ প্রান্তর চোখে পড়বে

নুহাশ পল্লীতে প্রবেশ পথের পরই হাতের বাম দিকে দৃষ্টিনন্দন সবুজ প্রান্তর চোখে পড়বে। এই প্রান্তরের বাম পাশের লিচু বাগানে শায়িত আছেন গল্পের জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ। নুহাশ পল্লীর প্রবেশ পথ ধরে এগিয়ে গেলেই স্থানীয় স্থপতি আসাদুজ্জামান খানের ‘মা ও শিশু’ নামক ভাস্কর্যটি দেখেতে পাবেন। শিশুদের বিনোদনের জন্য স্থাপন করা হয়েছে ভুত ও ব্যাঙের আকারের ভাস্কর্য। এর পাশেই তৈরী করা হয়েছে আঁকাবাঁকা সুইমিং পুল। ভারতের প্রখ্যাত লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে হুমায়ূন আহমেদ এই সুইমিং পুলেই সাঁতার কেটে ছিলেন।

Taken From Adarbepari.

‘বৃষ্টিবিলাস’ নামের একটি ঘর।

সুইমিং পুল পেরিয়ে সামনে এগিয়ে গেলেই একে একে দেখতে পাওয়া যায় হুমায়ূন আহমেদের কটেজ, দাবা খেলার ঘর এবং নামাজ পড়ার স্থান। এরপরেই রয়েছে বিশাল টিনশেডের বারান্দাসহ ‘বৃষ্টিবিলাস’ কটেজ। এই কটেজের বারান্দাতে বসেই হুমায়ূন আহমেদ বৃষ্টি ও পূর্নিমা দেখতে পছন্দ করতেন। ঠিক উল্টো দিকেই রয়েছে তাঁর বিখ্যাত ট্রি হাউজ। নুহাশ পল্লীতে রয়েছে একটি ঔষধি গাছের বাগান, এছাড়াও রয়েছে প্রায় ৩০০ প্রজাতির বিভিন্ন গাছ।ঘাসের চত্ত্বরেই রয়েছে দাবার বড়সড় একটি ঘর এবং অনেক  বড় বড় দাবার গুটি। শিশুদের খেলার জন্য এই ঘরটি তৈরি করেছিলেন হুমায়ুন আহমেদ। মাঠ ধরে সামনে হাটলেইশেফালি গাছের ছায়ায় নামাজের স্থান।ডান পাশেই দেখতে পাওয়া যায় ‘বৃষ্টিবিলাস’ নামের একটি ঘর। হুমায়ূন আহমেদের ‘আমার আছে জল’ ও ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’ সিনেমার অনেক দৃশ্যে আমরা এই ‘বৃষ্টিবিলাস’ ঘরটাই দেখেছি।

Taken From DMP News.

নুহাশ পল্লীতে কবির অস্তিত্ব অনুভব করবেন।

ঔষধি গাছের বাগানের পেছনে রয়েছে টিন এবং কাদামাটি দিয়ে তৈরি করা শুটিং স্পট। আর বাগানের সামনের দিকে রয়েছে মৎস্য কন্যা ও রাক্ষসের মূর্তি। এর পাশে কনক্রিট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ডাইনোসারের মূর্তি। নুহাশ পল্লীর সর্ব উত্তরে রয়েছে লীলাবতী দিঘি। এই দিঘির মাঝখানে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম দ্বীপ যা একটি কাঠের সেতুর সাথে যুক্ত। লীলাবতি দিঘির পাশেই রয়েছে ‘ভুতবিলাস’ নামক আরো একটি ভবন। এছাড়াও সাজানো গুছানো নুহাশ পল্লীতে একটি দিন কাটানোর ক্ষণে ক্ষণেই আপনি সমস্ত নুহাশ পল্লীতে কবির অস্তিত্ব অনুভব করবেন।

নুহাশ পল্লীতে যার মধ্যে হুমায়ুনের স্পর্শ খুঁজে ভক্তরা

হুমায়ুন আহমেদের স্বপ্নের নুহাশপল্লী মূল ফটক পেরিয়েই সবুজ ঘাসে আবৃত বিরাট মাঠ, পাশেই পাকা বসত ঘর/বাংলো (যেখানে হুমায়ূন আহমেদ বাস করতেন)। তার পাশেই হুমায়ুন আহমেদের ম্যুরাল ও অর্গানিক ফর্মে ডিজাইন করা ডিম্বাকৃতির একটি সুইমিংপুল। এরপর একটু সামনে এগোলেই হাতের ডান পাশে রয়েছে বিভিন্ন গাছের বড় উদ্যান।

নুহাশ পল্লীর অন্যতম আকর্ষণ প্রাচীন আদলে নির্মিত আধুনিক দুটি ঘাট বাঁধানো বৃহৎ আকারের ‘লীলাবতী দীঘি’। এ দীঘির চারপাশের পাড়জুড়ে বিভিন্ন ধরনের গাছ রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে দাবা খেলা ও নামাজ পড়ার কক্ষ। বৃষ্টি বিলাসের সামনের দিকে সবুজ মাঠের মাঝ বরাবর একটি বড় গাছের উপর কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ছোট ছোট দুটি কুটির ঘর, যেগুলোতে উঠার জন্য রয়েছে বিভিন্ন রঙে রাঙ্গা সিঁড়ি। পানির সরোবরে পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে রূপবতী মৎস্যকন্যা। এর পাশে বিরাট রাক্ষসের মূর্তি। এ ছাড়া, কনক্রিট দিয়ে তৈরি ডাইনোসরের মতো প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীদের অনুকীর্তি, দাবার গুটির প্রতিকৃতি, হরেকরকম কবুতর ও ঘর, মাটির তৈরি ঘর। এসব দেখে দেখে স্মৃতির অতল গহ্বরে হারিয়ে যায় ভক্তরা।

Taken From DMP.

জীবনকে সবুজের ছোঁয়া দিতে যেতে পারেন নুহাশ পল্লী

মায়ুন আহমেদের সিনেমা বা নাটক দেখার পর একজন অনুরাগী হিসেবে নুহাশ পল্লী যাওয়ার ইচ্ছা হয়নি এমন মানুষ কম পাওয়া যাবে। তার ভাবনার প্রতিফলন যেন এই পল্লী। ৪০ একর জমিতে মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরি করেছেন এই পল্লী। নানা প্রজাতির গাছ দেখা যায় সেখানে। আছে দীঘি, বৃষ্টিবিলাস, ভূতবিলাস, হোয়াইট হাউজ।কর্মব্যস্তময় জীবনকে একটু সবুজের ছোঁয়া দিতে ঢাকার অদূরে নুহাশ পল্লীতে যেতে পারেন। হুমায়ন আহমেদের ভাবনাগুলোর একটা জলন্ত চিত্র দেখার সুযোগও হবে। গ্রামীণ পরিবেশ, গাছগাছালি আর দিঘীর পাড়ে বসে মন ভোলাতে ঘুরে আসুন নুহাশ পল্লী থেকে।

Taken From Ahsan Monjil.

মূল রাস্তা থেকে নেমে শালবনের ভিতর দিয়ে একটু এগুলেই সামনে পড়বে কয়েকটি হরেক রকমের কুটির শিল্পের তৈজসপত্র ও শিশুদের খেলনা জাতীয় জিনিসপত্রের দোকান এবং খাবারের দোকান।

Taken From Somoyer Kota.

এরপর মূল ফটক পেরিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে সবুজ ঘাসে আবৃত বিরাট মাঠ এবং একটি বড় শেফালী গাছ। এর পাশেই রয়েছে হুমায়ূন আহমেদ এর প্রিয় বাস ভবন হোয়াইট হাউজ, যার সামনে দেখা মিলবে চিন্তিত হুমায়ুন আহমেদের ম্যূরাল।

Taken From Vromonchari.

মূল ফটকের ডান পাশেই দাড়িয়ে আছে মা ও ছেলের ভাস্কর্য। এখানেই আছে বিশ্রাম নেয়ার মতো একটি ছাউনি এবং অর্গানিক ফর্মে ডিজাইন করা ডিম্বাকৃতির একটি সুইমিংপুল।এরপর একটু সামনে গেলে হাতের ডান পাশে রয়েছে বিভিন্ন গাছের বড় উদ্যান। উদ্যানের পূর্বদিকের খেজুর বাগানের পাশে ‘বৃষ্টিবিলাস’ নামে একটি অত্যাধুনিক ঘর রয়েছে। এর ছাদ টিনের তৈরি। এখানে বসে থেকে বৃষ্টির শব্দ শুনতেই এ আয়োজন। এছাড়া নিরিবিলি সময় কাটানোর জন্য বৃষ্টি বিলাস থেকে একটু দূরেই দিঘির পাড়ে রয়েছে ‘ভূতবিলাস’ নামে আরেকটি দুই কক্ষবিশিষ্ট আধুনিক বাংলো।

Taken From Bdsearcer

নুহাশ পল্লীতে আরও আছে ‘পদ্মপুকুর’। যদিও পদ্মপুকুরে আর পদ্ম ফুল নেই। পদ্মপুকুরের মাঝখানে ‘জলপরী’ দাঁড়িয়ে আছে । জলপরীর সামনেই বিশাল এক দানব দুই হাত প্রসারিত করে সদা প্রস্তুত। এখানে আছে জুরাসিক পার্ক, ডাইনোসরও আছে এখানে তবে আসল নয়। নুহাশ পল্লীতে বেশ কিছু দোলনা আছে। এছাড়া রয়েছে গোয়ালঘর, হাঁস-মুরগির ঘর, কবুতরের খাঁচা।হুমায়ূন-শাওন দম্পতির প্রথম সন্তান লীলাবতী। আট মাস বয়সে মায়ের গর্ভেই মারা যায় লীলাবতী। লীলাবতীকে মনে রাখতেই নুহাশ পল্লীর উত্তরে হুমায়ূন আহমেদ খনন করেন একটি দিঘি নাম রাখেন ‘লীলাবতী’। এই দিঘির মাঝখান দিয়ে আছে কাঠের একটি সেতু। সেতু দিয়ে কৃত্রিম দ্বীপ ‘দ্বীপ বিলাস’ এ যাওয়ার পথ। লীলাবতীর দিঘির পাড়েই ভূত দেখার জন্য হুমায়ুন আহমেদ তৈরী করেছিলেন ‘ভূতবিলাস’ নামের ছোট একটি ঘর।

Taken From Vromon Guide.

নুহাশ পল্লীর অন্যতম মূল আকর্ষণ হল প্রাচীন আদলে নির্মিত আধুনিক দুটি ঘাট বাঁধানো বৃহৎ আকারের ‘লীলাবতী দীঘি’। এ দীঘির চারপাশের পাড়জুড়ে বিভিন্ন ধরনের গাছ রয়েছে। দিঘির মাঝখানে একটি দ্বীপ আছে, যেখানে কয়েকটি নারিকেল গাছ থাকায় দ্বীপের সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি করে তুলেছে।এখানে রয়েছে প্রায় আড়াইশ প্রজাতির গাছ, ঔষধি গাছের বাগান, হুমায়ুন আহমেদের কটেজ, ট্রিহাউজ, কাদামাটি ও টিন দিয়ে তৈরি করা শুটিং স্টুডিও এবং দাবা খেলা ও নামাজ পড়ার কক্ষ।

Taken From Provot Feri.

হুমায়ূন আহমেদের আবক্ষ মূর্তি ও সমাধিস্থলসহ শীতল পানির সরোবরে পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে রূপবতী মৎসকন্যা। এর পাশে একটি বিরাট রাক্ষসের মূর্তিও রয়েছে।কনক্রিট দিয়ে তৈরি ডাইনোসরের মতো প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীদের অনুকীর্তি, দাবার গুটির প্রতিকৃতি, হরেকরকম কবুতর ও ঘর, মাটির তৈরি ঘর ও পানির কূয়া, পদ্ম পুকুর, বসার জন্য ছাউনি, কংক্রিটের তৈরি বিশাল ব্যাঙের ছাতা, দোলনা, মাটির প্রাচীর এবং ট্রি হাউজসহ নানা রকম দৃষ্টিনন্দন সব স্থাপত্য। শালবন, অর্কিড বাগানসহ মোট তিনটি বাংলো রয়েছে এখানে।

লিচু তলাতেই হুমায়ূনের আহমেদের শেষ শয্যা

নুহাশ পল্লীতে আছে অনেক প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছ-পালা। পাশাপাশি রয়েছে অনেক বিরল ঔষধি গাছ। হুমায়ুন আহমেদ যখন যেখানে দেশে-বিদেশে ঘুরতে গেছেন, সঙ্গে করে এনেছেন অনেক গাছ। আর সেই গাছের ঠিকানা হয়েছে তাঁর প্রিয় নুহাশ পল্লীতে।শেফালি তলার পাশেই তিনটি পুরনো লিচুগাছ নিয়ে লিচুবাগান। লিচু তলাতেই হুমায়ূনের আহমেদের শেষ শয্যা এখন। নুহাশ পল্লীর সবুজের মাঝে সাদা শ্বেত পাথরের সমাধি। হুমায়ূনের আহমেদের সমাধি সবার জন্য সবসময় উন্মুক্ত। কেউ নুহাশ পল্লীতে না ঢুকেও বাইরে দিয়ে প্রিয় লেখকের সমাধি যেন দেখতে পান সেই জন্যেই এই ব্যাবস্থা। তবে সমাধির ওই গেটটি এখন বন্ধ থাকে সবসময়।

Taken From Jago News.


নুহাশ পল্লীতে হবে হুমায়ূন স্মৃতি জাদুঘর

নন্দিত কথাসাহিত্যিক হ‌ুমায়ূন আহমেদের চলে যাওয়ার ১০ বছর পূর্ণ হয়েছে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) । এ দিনে তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন জানিয়েছেন খুব শিগগিরই হুমায়ূন স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করা হবে।মঙ্গলবার হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গাজীপুরে তার নিজ হাতে সাজানো নুহাশ পল্লীতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন শাওন।তিনি বলেন, হুমায়ূন আহমেদের স্বপ্ন ছিলো ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ করা, তবে সেটা একার পক্ষে সম্ভব না হলেও হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব। খুব শিগগিরই তা নূহাশ পল্লীতেই নির্মাণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, হুমায়ূন আহমেদের ব্যবহৃত জিনিসপত্রগুলো খুব সুন্দরভাবে সংগৃহীত আছে। তার হাতে আঁকা ছবিগুলো অনেকদিন ধরে নিউইয়র্কের এক ব্যক্তির কাছে আটকে ছিল। অতি সম্প্রতি সেই ছবিগুলো আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। আমরা ছবিগুলো হাতে পেয়েছি। এর মধ্যে হুমায়ূন আহমেদের সন্তানদের কাছে, আমার কাছে যা কিছু ছবি আছে এগুলো হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতি জাদুঘরে থাকবে। হুমায়ূন আহমেদের হাতের লেখা স্ক্রিপ্টগুলো যেগুলো বিভিন্ন প্রকাশকদের কাছে ছিল সেগুলো তারা জাদুঘরে দান করবে বলে আমাদের জানিয়েছেন। আশা করছি শিগগিরই এর নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারবো।

তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন বললেন, ‘নুহাশ পল্লী হ‌ুমায়ূন আহমেদের সবচেয়ে প্রিয় স্থান। তিনি সবুজকে যেভাবে ভালবাসতেন, সেভাবেই নুহাশ সাজানো গোছানো রয়েছে আজও। সবুজ বৃক্ষের ছায়ায় তিনি শুয়ে আছেন। এখানেই গড়ে তোলা হবে হুমায়ূন জাদুঘর।’মেহের আফরোজ শাওন বলেন, ‘নুহাশ পল্লীতে হুমায়ূন আহমেদের ক্যানসার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করার যে স্বপ্ন ছিল, তা আমার একার পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এ দেশের গুণীজন, নীতিনির্ধারক যারা রয়েছেন, হুমায়ূন আহমেদের পাঠক, ভক্ত শুভাকাঙ্ক্ষী, দর্শক যারা রয়েছেন, এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। তার এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য আমি সবাইকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি।’

হুমায়ূন আহমেদের নুহাশপল্লী যেন মায়াপুরী

নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ ব্যক্তিজীবনে একজন সফল ও রুচিশীল মানুষ।  লেখালেখির ভুবনে অন্যান্য লেখকদের চেয়ে হুমায়ূন আহমেদ এর আর্থিক অবস্থা ছিল অনেক ভালো। তাঁর শৈল্পিক চিন্তার ফসল হল গাজীপুরের পিরুজ আলী গ্রামের নুহাশপল্লী। হুমায়ূন আহমেদের বড় ছেলে নুহাশ হুমায়ূনের নামানুসারে পল্লীটির নাম রাখা হয় ‘নুহাশপল্লী’।চল্লিশ একর জমিতে তিনি গড়ে তুলেছিলেন বিশাল এই পল্লী। গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে এক দুর্গম এলাকায় তিনি নুহাশপল্লীর গড়ে তোলেন। যেখানে তিনি গড়ে তুলেছিলেন শ্যুটিংস্পট, দীঘি আর তিনটি সুদৃশ্য বাংলো বাড়ি। একটিতে  নিজে থাকতেন আর বাকি দুটি ছিল তার শৈল্পিক চিন্তাধারার প্রতিফলন।

Taken From Ekusehey Tv.

নুহাশ পল্লী হতে পারে বাংলাদেশের শান্তি নিকেতন

হুমায়ূন আহমেদের নিজের হাতে গড়া নুহাশ পল্লী আছে। আমরা কি পারি না, নুহাশ পল্লীকে শান্তি নিকেতনের মত করে গড়ে তুলতে। আমরা কি পারি না, সেখানে হুমায়ূন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে, যেখানে সাহিত্যের চর্চা হবে, যেখানে হুমায়ূন চর্চা হবে, যেখানে এদেশের বাংলার কৃষ্ট-কালচারের চর্চা হবে, সাহিত্যের ক্ষেত্রে হুমায়ূন কে স্বরণ রাখা হবে। হুমায়ূন আহমেদ বাংলা সাহিত্য যা দিয়ে গেছেন  তা তো চিরস্মরণীয় সাহিত্য । সর্বোপরি আমরাও একদিন গর্ব করে বলতে পারবো, আমাদের নুহাশ বা হুমায়ূন পল্লী (নিকেতন) আছে। আমাদের আগামীর প্রজন্ম নিশ্চয়ই সেই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে বলতে পারবে, আমার জীবনটি স্বার্থক, আমি হুমায়ূন পল্লীতে এসেছি।

বছরের পর বছর একটু একটু করে হুমায়ূন আহমেদ সন্তানের মতো তিল তিল করে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এই নুহাশ পল্লী। এখানকার প্রতিটা গাছ-পালা, পুকুর, ইট, কাঠের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতি। এখানে বেড়াতে এলে মনে হবে প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ আশেপাশে আপনার সঙ্গেই আছে।নুহাশপল্লী যেন সবুজের সমারোহে একখণ্ড নিটোল চিত্র।  প্রাকৃতির এমন সৌন্দর্যের মাঝেও তিনি কৃত্রিম সৌন্দর্য দিয়ে আরো মোহনীয় করে তুলেছেন। যা ঘুরে দেখতে পারলে ভালোই লাগবে। যে কারো মনে আনন্দ দিতে পারবে এই নুহাশ পল্লী


তথ্যসুত্র

নুহাশপল্লী যেন মায়াপুরী, Ekushey-Tv.

স্মৃতিবিজড়িত ‘নুহাশ পল্লী’, Bangla Insider.

বাংলাদেশের শান্তি নিকেতন, Shuddhoshor.

হুমায়ূন আহমেদ স্মৃতি জাদুঘর’, Chhanel Online.

হুমায়ূন স্মৃতি জাদুঘর, Sara Bangla.

যেতে পারেন নুহাশ পল্লী, Naya Shabtabdi24.

স্মৃতি বিজড়িত ‘নুহাশ পল্লী’, DMP News.

হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী, Rising BD.

নুহাশ পল্লীতে, Jago News24.

নুহাশ পল্লী, Kishor Alo.

স্বপ্নের নুহাশ পল্লী, Ntv BD.

Subscribe for Daily Newsletter