ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন (Rehabilitation of Rohingyas in Bhasan char)

জেগে ওঠার ২০ বছর পর মানবশূন্য দ্বীপচর ‘ভাসানচর’ পেল মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রথম দলকে। নিরাপদ জীবন এবং নির্মল প্রাকৃতিক পরিবেশে এই দ্বীপে এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য অস্থায়ীভাবে বসবাসের আধুনিক ব্যবস্থা করা হয়েছে। নতুন জনবসতিকে বরণ করেছে এই চর। অনেক দিন ঘিঞ্জি ঘরে গাদাগাদি করে থাকতে থাকতে যেসব রোহিঙ্গা শিশু বাইরের নির্মল আলো-বাতাসের কথা ভুলেই গেছে তারা মুক্ত আকাশ পেয়ে আনন্দে ভাসছে। গতকাল শুক্রবার দেড় হাজারের বেশি মানুষ পেয়ে ভাসানচরের প্রকৃতিও যেন চঞ্চল হয়ে উঠেছে। সব হারানো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও মানবশূন্য ভাসানচরে নতুন আলোর সঞ্চারণ ঘটেছে।
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে রাখা যাবে না
রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরকে স্বাগত জানালেও কূটনৈতিক বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে রাখা যাবে না। বাংলাদেশ সরকার মানবিকভাবে বিষয়টি দেখেছে বলেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। সেই সময় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে এবং রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে তারা মিয়ামারের ওপর চাপ প্রয়োগ করবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
ভাসানচরে স্থানান্তর ব্যয়বহুল বিষয়
পর্যটন নগরী কক্সবাজার থেকে চাপ কমাতে রোহিঙ্গাদের একাংশ ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয় সরকার। এ জন্য নোয়াখালীর ভাসানচরে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে।‘সরকার ভাসানচরে এক লাখ লোকের বসবাসের জন্য আবাসন তৈরি করেছে। ইতিমধ্যে সেখানে ৩০ হাজার জনকে নেওয়া হয়েছে। আরও ৭০ হাজার লোক সেখানে নিতে চাই। এই স্থানান্তর ব্যয়বহুল বিষয়।
নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা আসেন। তারপর মোট ২৩ ধাপে ৩৫ হাজার রোহিঙ্গা এসেছেন।নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ জন, ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় ১ হাজার ৮০৪ জন, ২০২১ সালের ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় দফায় ৩ হাজার ২৪২ জন, ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ দফায় ৩ হাজার ১৮ জন, পঞ্চম দফায় ৩ ও ৪ মার্চ ৪ হাজার ২১ জন, ষষ্ঠ দফায় ১ ও ২ এপ্রিল ৪ হাজার ৩৭২ জন, সপ্তম দফায় ২৫ নভেম্বর ৩৭৯ জন, অষ্টম দফায় ১৮ ডিসেম্বর ৫৫২ জন, নবম দফায় ৬ জানুয়ারি ৭০৫ জন, দশম দফায় ৩১ জানুয়ারি ১২৮৭ জন, একাদশ দফায় ১ হাজার ৬৫৫ জন ও দ্বাদশ দফায় ২৯৮২ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচর হস্তান্তর করা হয়।
ভাসানচরে পর্যবেক্ষণের জন্য প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে জাতিসংঘ
এ ছাড়া গত বছর মে মাসে সাগর পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করা ৩০৬ রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে ভাসানচরে নিয়ে রাখা হয়।এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকার সেখানে ৩৫ কোটি ডলার ব্যয়ে মাটি থেকে চার ফুট উঁচু করে এক হাজার ৪০০টি ক্লাস্টার হাউস ও ১২০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করেছে।প্রথম থেকেই বেশ কয়েকটি এনজিও, মানবাধিকার সংগঠন এবং মানবাধিকার সংস্থা রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পুনর্বাসনের বিরোধিতা করে আসছিল। এ কারণে সচক্ষে তাদের অবস্থান পর্যবেক্ষণের জন্য প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে জাতিসংঘ।
রোহিঙ্গাদের ক্লাস্টারে বসবাসের জন্য হস্তান্তর করা হয়
নৌবাহিনী সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় ও জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তত্ত্বাবধানে কক্সবাজার থেকে বানৌজা পেঙ্গুইন, ডলফিন, টুনা ও বানৌজা তিমি যোগে ২ হাজার ১৬৭ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে আনা হয়। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রোহিঙ্গাদের জাহাজ থেকে নামানোর পর নৌবাহিনীর পন্টুন সংলগ্ন হ্যালিপ্যাডে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে গাড়ির মাধ্যমে বিভিন্ন ক্লাস্টারে বসবাসের জন্য হস্তান্তর করা হয়।ভাসানচর ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. রফিকুল হক জানান, নতুন রোহিঙ্গাদের জাহাজ থেকে নামানোর পর নৌ-বাহিনীর পন্টুন সংলগ্ন হ্যালিপ্যাডে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে গাড়ির মাধ্যমে ৯২, ৯৩ ও ৯৪ নম্বর ক্লাস্টারে বসবাসের জন্য হস্তান্তর করা হয়।
৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়
নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছ গ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে নৌবাহিনী।
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য একটি স্বতন্ত্র থানার উদ্বোধন করে
নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচর থেকে রোহিঙ্গাদের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন স্থানে পাচার করতে দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। দালালের মাধ্যমে গত মে মাসে ১৫ দিনে ১৬ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ভাসানচর থেকে পালিয়েছে। তার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে ১৪ জন। দালাল চক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নোয়াখালীতে একজন এবং চট্টগ্রামের মিরসরাই থেকে দালাল চক্রের তিন জনকে আটক করা হয়েছে।ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভাসান চরে একটি স্বতন্ত্র থানার উদ্বোধন করে। ওই থানায় একজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে ৪১ জন পুলিশ সদস্য ও ২৪৭ জন এপিবিএন সদস্য কর্মরত আছেন। পাশাপাশি নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছে।
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এতো সব সদস্যের চোখ ফাঁকি দিয়ে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ভাসানচর থেকে পালিয়ে যায়
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এতো সব সদস্যের চোখ ফাঁকি দিয়ে গত মাসে ১৬ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ভাসানচর থেকে পালিয়ে যায়। গত ১৯ মে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালানো দুই কিশোরীকে স্থানীয় লোকজন আটক করে স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে চর জব্বার থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। পালিয়ে যাওয়া বাকি দুই নারীকে অবশ্য আটক করা যায়নি।এর আগে গত ২৩ মে ভাসান চর থেকে দুই বোন দালালের মাধ্যমে পালিয়ে গেলেও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের আটক করে ভাসানচরে ফিরিয়ে আনেন।
পালিয়ে যাওয়া রোধে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রোহিঙ্গাদের প্রতি নজরদারী বাড়িয়েছে
এ ব্যাপারে নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির আধুনিক বাসস্থান ও সুযোগ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও তারা দালালের মাধ্যমে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। যেসব দালাল এ কাজে নিয়োজিত তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ কাজ করছে।রোহিঙ্গারা বাজার করতে যাওয়াসহ বিভিন্নভাবে পালিয়ে যাচ্ছে। পালিয়ে যাওয়া রোধে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রোহিঙ্গাদের প্রতি নজরদারী বাড়িয়েছে - এমনটি জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা মো. আলমগীর।
ভাসানচর থেকে পালিয়ে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলে আসা প্রত্যেক রোহিঙ্গাকে চিহ্নিত করে কুতুপালং অস্হায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হয়েছে
কক্সবাজারস্থ অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিশনার (এডিশনাল আরআরআরসি) সামসুদ্দৌজা নয়ন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ভাসানচর থেকে পালিয়ে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলে আসা প্রত্যেক রোহিঙ্গাকে চিহ্নিত করে কুতুপালং অস্হায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। তাদের ভাসানচরে ফেরত পাঠানো হবে।
রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পুনর্বাসনের খবরে হাতিয়ার স্থানীয়দের মধ্যে নানা শঙ্কা দেখা দিয়েছে
মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পুনর্বাসনের সরকারি সিদ্ধান্তের খবরে হাতিয়ার স্থানীয়দের মধ্যে নানা শঙ্কা দেখা দিয়েছে। হাতিয়াবাসীর কেউ কেউ একে মানবতার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হিসেবে বিবেচনা করলেও অনেকেই মনে করছেন ভাসানচরে পুনর্বাসিত হয়ে রোহিঙ্গারা জলদস্যুতাসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়বে। চর ছেড়ে তারা আশপাশের চরাঞ্চল ও মূল ভূখণ্ডেও ছড়িয়ে যেতে পারে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে এইডসসহ ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি শনাক্তের খবরও উদ্বিগ্ন করে তুলেছে হাতিয়াবাসীকে। পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
ভাসানচরে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন করা হলে সাগরকেন্দ্রিক দস্যুতায়ও তারা জড়িয়ে যেতে পারে
ভাসানচরে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের ঘোষণা আসার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে নানা শঙ্কা ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। তারা মনে করছেন, রোহিঙ্গারা ঝুঁকিপূর্ণ ও অপরাধপ্রবণ জাতি। ইয়াবা ব্যবসাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তারা জড়িত। নদীবেষ্টিত হাতিয়ার নির্জন ভাসানচরে তাদের পুনর্বাসন করা হলে সাগরকেন্দ্রিক দস্যুতায়ও তারা জড়িয়ে যেতে পারে। এসব কাজে একবার জড়িয়ে গেলে তাদের ফেরানো অসম্ভব হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাছাড়া সাগরকেন্দ্রিক ভূ-রাজনীতির জন্যও তারা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।
যদি দ্বীপের ওই চরে রোহিঙ্গাকে রাখা হয় তাহলে দ্বীপের ভারসাম্য বিনষ্ট হবে
বর্তমানে ছোট আয়তনের হাতিয়া দ্বীপে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ মানুষ বসবাস করছে। এর মধ্যে যদি দ্বীপের ওই চরে আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে রাখা হয় তাহলে দ্বীপের ভারসাম্য বিনষ্ট হবে। স্থানীয়রা মনে করছেন যেভাবে বলা হচ্ছে, বাস্তবে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে আটকে রাখা সম্ভব হবে না। তারা যেকোনও কায়দায় আশপাশের চরাঞ্চল ও মূল ভূখণ্ডে ছড়িয়ে পড়বে।
হাতিয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধ্বংস করতে এটাই (ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন) যথেষ্ট
হাতিয়ার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হাতিয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধ্বংস করতে এটাই (ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন) যথেষ্ট। যদি ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের আবদ্ধ করে রাখা না যায়, তাহলে তারা আমাদের আশপাশের চরাঞ্চল ও মূল ভূখণ্ডে মিশে গিয়ে অর্থনীতি, সংস্কৃতিসহ সব ধরনের কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। তাছাড়া, রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে এক শ্রেণির লোক অপরাধপ্রবণতা বাড়াবে।’হাতিয়া উপজেলার প্রবীণ শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিক অধ্যক্ষ এনামুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের কিছু কিছু সদস্যের মধ্যে অপরাধ প্রবণতার খবর আমরা বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে শুনে আসছি। তবে মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দেওয়া প্রয়োজন।কিন্তু, তাদের আশ্রয় দেওয়ার পর তারা যাতে কোনও অপরাধকাজে জড়িত হতে না পারে, সেদিকে সরকার বা আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর কঠোর নজরদারি রাখতে হবে।’
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে উপস্থিতির মধ্য দিয়ে সরকারের দীর্ঘদিনের একটি উদ্যোগ ও প্রত্যাশার বাস্তবায়ন হয়েছে
ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্প পুনর্বাসন প্রকল্পের পরিচালক কমোডর আবদুল্লাহ আল মামুন গণমাধ্যমকে বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে উপস্থিতির মধ্য দিয়ে সরকারের দীর্ঘদিনের একটি উদ্যোগ ও প্রত্যাশার বাস্তবায়ন হয়েছে। এখানে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ আবাসস্থল তৈরি করতে নৌবাহিনীর দীর্ঘ পরিশ্রম আজ সার্থক হয়েছে বলে আমি মনে করি। তিনি বলেন, কক্সবাজারের কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের তুলনায় এখানে অনেক বেশি উন্নত পরিবেশে রোহিঙ্গারা থাকবে। আশা করছি, একই ধারাবাহিকতায় আরও রোহিঙ্গা নিজেদের উন্নত পরিবেশে জীবন যাপন, সন্তানদের ভবিষ্যৎ ইত্যাদি বিবেচনায় এখানে আসতে আগ্রহী হবে।
আমাদের উখিয়া প্রতিনিধির দেওয়া তথ্যমতে, কয়েক দিনের মধ্যে আরও কিছু রোহিঙ্গা ভাসানচর যাবে। গতকাল শুক্রবার প্রথম দলটি ভাসানচরে পৌঁছেই কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসকারী তাদের স্বজনদের ফোন করে সন্তোষ প্রকাশ করে। উখিয়া ও টেকনাফ ক্যাম্পের ছোট ছোট ঘিঞ্জি ঘর থেকে ভাসানচরের পরিবেশ অনেক ভালো এবং পরিচ্ছন্ন বলে তারা জানায়। তারা স্বজনদের বলেছে, ভাসানচরে যারা গিয়েছে তাদের এক মাস রান্না করা খাবার দেওয়া হবে। শুক্রবার দুপুরে তাদের জন্য বরাদ্দকৃত ঘরে তাদের তুলে দেওয়া হয়েছে।
তথ্যসুত্র
পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের, Deshrupantor.
এরইমধ্যে নোয়াখালীর হাতিয়া,, Banglatribune.
রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে, Thedailystar.
অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা , Thedailystar.
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন , Banglanews24.
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার, Somoynews.
নোয়াখালীর ভাসানচরে পুনর্বাসন , Jugantor.
রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে, Prothomalo.