রবার্ট ডেভিলা (Robert Davila)

তিনি একজন খ্রিস্ট্রান যুবক। তার হাত পা ছিল অচল এমনকি ঘাড়ে ও কোন নিয়ন্ত্রণ ছির না। শুধুমাত্র চোখ আর জিহবা নড়াচড়া করত। স্বপ্নের মাঝে নবী রবার্ট ডেভিলাকে বললেন, নবীগণকে উপাসনা করার জন্যে দুনিয়াতে পাঠাননি বরং আল্লাহর বার্তাবাহক হিসেবে পাঠিয়েছেন।


এটি একটি বর্তমান সময়ের আধুনিক সত্য কাহিনী। যার বর্ননাকারী জীবিত রবার্ট ডেভিলা। বিশ্বের বৃহত্রর খ্রিস্টান দেশ আমেরিকায় ১০ বছরের ও বেশি সময় ধরে একটি হাসপাতালে রবার্ট ডেভিলা বসবাস করছেন। টেক্রাস শহরটি ছিল সম্পুর্নরুপে খ্রিষ্টান রাজ্য। ফোর্টওয়ার্থ নামে বড় গির্জাটি ছিল ঐ শহরে।

রবার্ট ডেভিলা ইসলাম সম্পর্ক কিছুই জানেন না। এমনকি এর আগে কোন মুসলমানের সাথে দেখা ও হয়নি। এমনকি হাসপাতালের রক্ষণাবেক্ষণের জন্যে যে মিশরীয় মুসলিম যুবক ছিলেন সে ও গির্জায় যেথে শুরু করেছিলেন এবং খ্রিস্টান ধর্মে রূপান্তরিত হওয়ার কথা ভাবছিলেন।

রবার্ট ডেভিলা তার স্বপ্নের বর্ননা করতি গিয়ে বলেছেন ” আমি স্বপ্নে আমার পায়ে দাড়িয়ে ছিলাম এবং এটি অদ্ভুত এক অনুভূতি ছিল।যদিও আগে এমন স্বপ্ন দেখলে আমি পায়ে ব্যাথা অনুভব করতাম কিন্তু এই স্বপ্নটি ছিল ভিন্ন। আমাকে নবী আরও বললেন যীশু ছিলেন একজন নবী, আল্লাহর বার্তাবাহক হিসেবে ইবাদত করার জন্যে দুনিয়াতে পাঠিয়েছিলেন। তিনি আমাদের মতো খায়,আমাদের মতো পান করেন,অন্য কারো মতো টয়লেটে প্রবেশ করেন। তিনি কখনোই সৃষ্টিকর্তা ছিলেন না সৃষ্টিকর্তার বার্তাবাহক ছিলেন।

যখন আমি জেগে উঠি তখন ‍বুঝতে পারি যে স্বপ্নের মাঝে আমার সাথে যে লোকটি কথা বলেছেন তিনি হলেন শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)। পরে রবার্ট ডেভিলা গুগলে সার্চ করে মোহাম্মদ (সাঃ) কে সে বিষয়ে অবগত হলেন।এরপরে তিনি নিজে নিজে ইসলাম ধর্ম সম্পর্ক জানলেন এবং একা একা ইসলাম ধর্ম গ্রহন করলেন।ঐ হাসপাতালের বিছানায় থাকা অবস্তায় নিজে একা কারো সাহায্য ছাড়া ১০টি সুরা মুখস্ত করেছিলেন। তখন ও রবার্ট ডেভিলার সাথে কোন মুসলমানের  দেখা হয়নি। পরে রবার্ট ডেভিলা মিশরীয় যুবকের সাথে  যোগাযোগ করলেন আরবি শিখে কোরআন পড়ার জন্যে।রবার্ট ডেভিলা ইউটিউবে একদিন আমেরিকান ধর্ম প্রচারক নোমান আলী খানের ইসলামিক ভিড়িও দেখলেন।


রবার্ট ডেভিলা হাসপাতালের ভিতরে মিশরীয় যুবকদের উপস্তিতিতে কোরআন থেকে যা মুখস্ত করেছিলেন তা পাঠ করতে শুরু করলেন। হাসপাতালের রক্ষণাবেক্ষণের কর্মকর্তা একটি কোরআন আয়াত শুনতে পেলেন সুরা আল আসর এর। তখন মিশরীয় যুবক জানতে চাইলেন তুমি কি শুনছ?তখন রবার্ট ডেভিলা বললেন ’’আমি শুনছি না , আমি পড়ছি’’।

তিনি তাকে বললেন তুমি: কি মুসলমান?

রবার্ট বললেন: হ্যা আমি মুসলমান হয়েছি।

যে মিশরীয় যুবকটি মসজিদ গির্জার পাশাপাশি হওয়ার কারনে ঘনঘন গির্জায় যাওয়ার জন্যে দূর থেকে মসজিদ ছেড়েছিল। সে ভাবছিল কিভাবে একজন কুজো মানুষ ইসলামের দিকে ধাবিত হতে পারে যেখানে তার হাত পা এমনকি ঘাড়ে ও কোন নিয়ন্ত্রণ ছিল না কেবল তার চোখ আর জিহবা সচল ছিল। তিনি কিভাবে একটি গির্জা শহরের অভ্যন্তরে একটি খ্রিষ্টান হাসপাতালের ভিতরে থেকে ইসলামের দিকে ধাবিত হতে পারলেন অথচ তার বিছনার পাশেই ঝুলে থাকত ক্রশ।তখনই মিশরীয় যুবকটিও ইসলাম ধর্ম এ ফিরে আসে। মিশরীয় যুবকটি প্রথম মুসলিম যার সাথে রবার্ট ডেভিলার প্রথম দেখা হয় । রবার্ট তাকে বলেছিলেন তিনি আমেরিকান ধর্ম প্রচারক নোমান আলী খান কে দেখেছেন ইউটিউবে এবং রবার্ট যুবককে জানালেন তিনি নোমান আলী খানের সাথে সাক্ষাত করতে ইচ্ছুক।


নোমান আলী খান একজন আমেরিকান মুসলিম ধর্ম প্রচারক,আরবি ভাষার শিক্ষক এবং মাকিন যুক্তরাষ্ট্রে বাইনাহ ইনস্টিটিউটে ফর ফোরানিক স্টাডিজ অ্যান্ড আরবি ভাষায় পরিচালনা করেন এবং প্রভাবশালী মুসলিমদের মধ্যে স্হান পেযেছেন ইংরেজিতে সত্যিকারের ইসলাম প্রচারে কাজ করেন।

আমেরিকান ধর্ম প্রচারক নোমান আলী খান বলেছেন, মিশরীয় যুবকটি একই মসজিদে নামায পড়তে এসেছিলেন যেখানে আমি চার বছর যাবত আসিনি। জুমার খুতবা শেষে যুবক আমাকে বললেন আমি মনে করি আল্লাহ আমার এবং আমার বন্ধু রবার্ট ডেভিলার দোআ কবুল করেছেন। মিশরীয় যুবকটি রবার্ট ডেভিলার সমস্ত গল্প বললেন এরপরে আমি রবার্ট ডেভিলার সাথে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিলাম।

ধর্ম প্রচারক নোমান আলী খান আল বাইনাহ ফাউন্ডেশনের কয়েকজন কর্মচারীদের নিয়ে রবার্ট ডেভিলা যে কেয়ার হোমে ছিলেন সেখানে গিয়েছিলেন। রবার্ট ডেভিলা বিস্মিত হয়ে গেলেন নোমান আলী খান কে দেখে। নোমান আলী খা্ন রবার্ট ডেভিলা কে বললেন আমি শুনেছি আপনি কয়েকটি সুরা মুখস্ত করেছেন, আপনি কি আমাকে একটি সুরা তিলাওয়াত শুনাতে পারবেন? তখন রবার্ট ডেভিলা সুরা আসর তিলাওয়াত করে শুনালেন ,আমরা সবাই হতবাক হয়ে গেলাম,আমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যে কাদেনি।

রবার্ট ডেভিলা প্রথম বারের মতো নোমান আলী খানের সাথে মসজিদে জুমা পড়তে যাওয়ার জন্যে ইচ্ছে প্রকাশ করলেন তখন মসজিদে নামায পড়তে গেলেন ওরা্ মসজিদে যাওয়ার সময় রাস্তার বাম্প পার হওয়ার সময় রবার্ট ডেভিলা মেরূদন্ডে ব্যথা পেলেন। মেরূদন্ডে ব্যথা পাওয়ার কারনে হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাটাতে হবে ছয়মাস পর্যন্ত ডাক্তার বলেছেন।

রবার্র্ট ডেভিলা বললেন মসজিদের ভিতরে আমি যে প্রশান্তি অনুভব করেছি এই প্রশান্তি আগে কখনোই অনুভব করিনি আমার জীবনে।আমি হুইলচেয়ারে আবার ও বসতে পারলে আমি আবারও মসজিদে জুমা পড়তে যাব।

ধর্ম প্রচারক নোমান আলী খান আরও বলেন আমি রবার্ট ডেভিলার মতো কখনও  এমন আলোর মুখ দেখিনি,এই আশ্বাসের মুখ আমি কখনই দেখিনি। রবার্ট ডেভিলা তার জীবন নিয়ে খুবই সন্তুস্ট, তিনি খুব খুশি। রবার্ট ডেভিলার সাথে দেখা হওয়ার পর যে সাতআটটি লেকচার আমি দিয়েছি প্রতিটা লেকচারে আমি রবার্ট ডেভিলার কাছ থেকে যা শিখতে পেরেছি তা্ই বলতে লাগলাম। রবার্ট ডেভিলাকে আমি আমার শিক্ষক মনে করি ,কেউ যদি আমার কাছে জানতে চাই আমার শিক্ষক কে?আমি বলব রবার্ট ডেভিলা।


Sources:

Paralyzed dreamed the Prophet Muhammad, peace be upon him, spoke to him in the region and reverted to Islam (Youtube)

রবার্ট ডেভিলার গল্প - Story of Robert Davila - Nouman Ali Khan - Bangla Dubbed (Youtube)