রোহিঙ্গা সংস্কৃতি (Rohinga Culture)

২৫ আগস্টের পর সেনাবাহিনী সহিংসতা তীব্র করলে রোহিঙ্গা গ্রামগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। নৃশংস ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের’ মুখে ৬ লাখ ৮৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয়।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মূলত সুন্নি ইসলামে অনুসারী যদিও কেউ কেউ সুফিবাদেও বিশ্বাস করে। যেহেতু মিয়ানমার সরকার তাদের শিক্ষা গ্রহণের অধিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তাই অনেকেই মৌলিক ইসলামী শিক্ষাকেই একমাত্র পড়াশুনার বিষয় হিসেবে গ্রহণ করেছে। অধিকাংশ গ্রামেই মসজিদ এবং মাদ্রাসা (ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) রয়েছে।
মুছে ফেলা হয়েছে রোহিঙ্গাদের সংস্কৃতি
মিয়ানমার সরকার দাবি করছে, তারা এলাকাটিতে বড়ধরনের পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেছে। কিন্তু মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ অভিযানে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই মিয়ানমার সরকার ঘটনাস্থলে অপরাধের প্রমাণ নিশ্চিহ্ন করছে। বুলডোজার দিয়ে নিশ্চিহ্ন করার ঘটনায় আতঙ্কিত রোহিঙ্গারাও। তারা মনে করছেন, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবেই রোহিঙ্গা সংস্কৃতির অবশিষ্ট ধ্বংস করছে। যাতে করে রাখাইনে নিজেদের গ্রামের তাদের ফেরা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
স্থানীয় বৌদ্ধদের সহযোগিতায় রোহিঙ্গাদের গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়াই শুধু নয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ ও গণহারে লুটতরাজ চালানোর অভিযোগ রয়েছে।আকাশ থেকে তোলা রাখাইনের প্রথম ছবি প্রকাশিত ৯ ফেব্রুয়ারি। ওই সময় মিয়ানমারে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) দূত ক্রিস্টিয়ান উড়োজাহাজ থেকে তোলা ছবি প্রকাশ করেন। তিনি মংডুর দক্ষিণাঞ্চলের ওই এলাকাকে ‘বুলডোজারে গুড়িয়ে দেওয়া বিস্তৃত’ এলাকা বলে বর্ণনা করেন।
ডিজিটাল গ্লোবের স্যাটেলাইট ছবিতে অন্তত ২৮টি গ্রাম বুলডোজার ও অন্যান্য যন্ত্র দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। ৩০ মাইল এলাকাজুড়ে মংডুতে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারিতে এ কর্মকাণ্ড চালায় মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। গুড়িয়ে দেওয়া কিছু এলাকায় নির্মাণ শ্রমিকরা নতুন ভবন ও ঘরের কাঠামো এবং হেলিপ্যাড নির্মাণ করছে। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পক্ষ থেকেও শুক্রবার ৫৫টি গ্রাম বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।বহির্বিশ্বের মানুষের প্রবেশাধিকার না থাকা মিয়ানমারের ওই অঞ্চলের পরিস্থিতি অনুধাবনের জন্য এসব ছবি গুরুত্বপূর্ণ। রাখাইনে স্বতন্ত্র সংবাদমাধ্যমের প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
রোহিঙ্গা শিবিরে সংস্কৃতি চর্চা
'যখন আমার ক্যালিগ্রাফির বইটি নিয়ে বসি, মনে হয় যেন মাতৃভূমিতে ফিরে গেছি। শিবিরের এতসব সমস্যার ভিড়েও প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে আমি লিখি,' বলেন ১০৮ বছর বয়সী এরশাদক্যালিগ্রাফিতে তার অসাধারণ দক্ষতার জন্য বালুখালি শিবিরে তিনি 'জীবন্ত কিংবদন্তি' হিসেবে পরিচিত। রোহিঙ্গাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধরে রাখতে এত প্রতিকূলতার মাঝেও ক্যালিগ্রাফি করে যাচ্ছেন। 'যখন আমার ক্যালিগ্রাফির বইটি নিয়ে বসি, মনে হয় যেন মাতৃভূমিতে ফিরে গেছি। শিবিরের এতসব সমস্যার ভিড়েও প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে আমি লিখি,' বলেন এরশাদ। তার বেশিরভাগ লেখাই ইসলামি গল্প ও হাদিস নিয়ে।
ঐতিহ্যবাহী তারানা সংগীতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পী বশিরুল্লাহ। একটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে অবিচ্ছিন্ন গীত তৈরি করা যে সংগীতের রেওয়াজ। শিবিরের শরণার্থীদের কাছে এই ঘরানার সংগীত এখনো জনপ্রিয়।'গানের বিষয়গুলো হরদমই আমাদের প্রতিদিনের জীবনের আনন্দের মুহূর্তগুলো নিয়ে হয়ে থাকে। যেমন, বিবাহ, সন্তানের জন্ম ইত্যাদি।'
রোহিঙ্গা সাংস্কৃতিক স্মৃতি কেন্দ্র তৈরি
রোহিঙ্গাদের ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তৈরি একটি ওয়েবসাইট।রোহিঙ্গা কালচারাল মেমরি সেন্টার নামে ওই ওয়েবসাইটটি তৈরি করেছে আইওএম। রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওই অভিযানের বছরখানেক পরে আইওএম রোহিঙ্গাদের মানসিক পরিস্থিতি বোঝার জন্য একটি জরিপ চালায়, যা মূলত রোহিঙ্গা সংস্কৃতি কেন্দ্র মূল অনুপ্রেরণা তৈরি করে।
ওই জরিপ অনুযায়ী, নির্যাতন থেকে বেঁচে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের শতকরা ৪৫জনই অযথা ভীতি, আত্মহত্যা প্রবণতাসহ বিভিন্ন ধরনের মনোবৈকল্যে ভুগছেন।“অতীতে তাঁদের ওপর ঘটে যাওয়া অমানবিক ঘটনা ও তাঁরা ভয়াবহ সহিংসতার শিকার হবার কারণে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানসিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকি রয়েছে,” মন্তব্য করে ওই জরিপ।
ওই জরিপমতে, জরিপকৃত রোহিঙ্গাদের অর্ধেকই নিজেদের ‘পরিচয় সংকটে’ ভুগছেন। ২০১৭ সালে ভিটেবাড়ি ছেড়ে আসা রোহিঙ্গাদের চারভাগের তিনভাগই জানিয়েছেন, দেশ ছাড়ার কারণে তাঁদের সংস্কৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।ওই জরিপের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই রোহিঙ্গা সাংস্কৃতিক স্মৃতি কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে বলে জানায় আইওএম।
মিয়ানমারের একটি জাতিগোষ্ঠী হিসাবে রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক জ্ঞান বিনিময়, তাঁদের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ করাই কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে এই কেন্দ্র তৈরির অন্যতম উদ্দেশ্য বলে জানায় আইওএম।সংস্কৃতি কেন্দ্রের ওয়েবসাইটে রোহিঙ্গাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার, শিল্পকর্ম, বাদ্যযন্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক উপাদান উপস্থাপন করা হয়েছে।
মিয়ানমার সরকারের বিবৃতি অনুযায়ী, গত ১০ ডিসেম্বর হেগ শহরে ‘শিল্প, জীবন, রোহিঙ্গা’ নামে আইওএম ও বাংলাদেশ দূতাবাস যৌথভাবে একটি অনলাইন প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে, যেখানে গিয়ে দর্শনার্থীরা থ্রি-ডি ছবিতে ক্লিক করে ভার্চুয়ালি কেন্দ্রের বিভিন্ন কক্ষ পরিদর্শন করতে পারেন।বিশ্বের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে কেন্দ্রের ফ্যাক্ট শিটে আইওএম জানায়, একটি জনগোষ্ঠী নিজেদের যেভাবে বিশ্বের কাছে পরিচিত করাতে চায় সেটিই সেই গোষ্ঠটির সাংস্কৃতিক ও জাতিগত পরিচয়।
রোহিঙ্গাদের নিজস্ব শিক্ষা-সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত রাখতে রিসোর্স সেন্টার
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর নিজস্ব শিক্ষা ও সংস্কৃতি হারাতে বসেছে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। রোহিঙ্গা শিশুদের মাঝে তাদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির প্রসারকে গুরুত্ব দিতে রিসোর্স সেন্টার নির্মাণ করছে ফ্রেন্ডশিপ।কক্সবাজার উখিয়া উপজেলা অধীন রোহিঙ্গা শরণার্থী ৯ নম্বর ক্যাম্প এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে এ সেন্টার।
৪ জুলাই সোমবার বেলা ১১টায় রিসোর্স সেন্টার নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রাজকীয় থাই দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমর। বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত কমিশনার মো. শামসুদ্দোজা এবং ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট।
নির্মিতব্য রিসোর্স সেন্টার সম্পর্কে ফ্রেন্ডশিপের শিক্ষা বিভাগ প্রধান ব্রি. জে. ইলিয়াস ইফতেখার রসুল জানান, বর্তমানে ৩৯৬ ফ্রেন্ডশিপ লার্নিং সেন্টার থেকে নিজেদের বার্মিজ ভাষা এবং দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় শিক্ষা নিচ্ছে ২৮ হাজার ১৪৫ রোহিঙ্গা শিশু। এসব রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা দিচ্ছে ৭১৭ প্রশিক্ষক। তাদের মাঝে অর্ধেকই নারী এবং অর্ধেক রোহিঙ্গা।
তিনি বলেন, বাংলা ভাষা-সংস্কৃতির বদলে, রোহিঙ্গাদের নিজস্ব সংস্কৃতি এবং মিয়ানমারের বার্মিজ ভাষা শিক্ষা দেয়া হয় ফ্রেন্ডশিপ লার্নিং সেন্টারগুলোতে। এজন্য লার্নিং সেন্টারে কর্মরত প্রশিক্ষকদের দক্ষতা-যোগ্যতা বাড়াতে নির্মাণ করা হচ্ছে এ রিসোর্স সেন্টার।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে মাসে একটি রিফ্রেশার ট্রেনিং, ফাউন্ডেশনে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষকদের। আর তিন মাস অন্তর দেওয়া হয় যৌন নির্যাতন ও হয়রানি প্রতিরোধ এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ট্রেনিং। ফ্রেন্ডশিপ রিসোর্স সেন্টারটি চালু হলে, উপযুক্ত পরিবেশে প্রশিক্ষকদের বিভিন্ন কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ দেয়া সহজ হবে বলে আশা করেন সংস্থাটির শিক্ষা বিভাগ প্রধান ব্রি. জে. ইলিয়াস ইফতেখার রসুল।
উল্লেখ্য, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আসার পর স্থানীয়দের স্বাভাবিক জীবন-জীবিকায় প্রভাব ফেলে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা। বিশেষ করে স্থানীয় সামাজিক পরিবেশে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় রোহিঙ্গাদের অশিক্ষা, কুশিক্ষা ও নৈতিক জ্ঞানের অভাব। ফ্রেন্ডশিপ লার্নিং সেন্টারের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শিশুদের মৌলিক শিক্ষা দেওয়ায় অনেকটা অনুকূলে স্থানীয় সামাজিক পরিবেশ; যা পরোক্ষভাবে শরণার্থী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহযোগিতা করছে।
রোহিঙ্গাদের শিল্প-সংস্কৃতি বিষয়ক প্রদর্শনী
রোহিঙ্গাদের স্মৃতি, অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশার প্রতিনিধিত্বকারী ১০০ সাংস্কৃতিক পণ্য এবং শিল্পকর্ম নিয়ে ঢাকার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়েছে।আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) অব দ্য সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (এসআইপিজি) অব নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) আয়োজনে রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) শুরু হওয়া প্রদর্শনীটি চলবে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
হস্ত ও কারুশিল্পে রোহিঙ্গা জীবন সমাজ সংস্কৃতি
হস্ত ও কারুশিল্পে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতিদিনের জীবন। সমাজ সংস্কৃতি। চিত্রকর্মসহ অন্যান্য মাধ্যমে দুঃসহ অতীত, দোলাচলে থাকা বর্তমান ও ভবিষ্যতের স্বপ্ন। সব মিলিয়ে অন্যরকম এক প্রদর্শনী। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটো গ্যালারিতে আয়োজিত প্রদর্শনীতে রোহিঙ্গাদের নিজস্ব চর্চা, ঐতিহ্যপ্রেম ও সৃজনশীলতার চমৎকার বহির্প্রকাশ ঘটেছে, যা দেখে অভিভূত না হয়ে পারা যায় না। প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) অব দ্য সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি এ্যান্ড গবর্নেন্স (এসআইপিজি) অব নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (এনএসইউ)।
কেউ হস্ত ও কারুশিল্পী। কেউ সুচিশিল্পে নিজের ভাবনাগুলোকে প্রকাশ করছেন। কেউবা চিত্রকর্মে। ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে রোহিঙ্গাদের যাপিত জীবন, সমাজ, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে। কালচারাল মেমোরি সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত রোহিঙ্গা কারিগররা তৈরি করেছেন অধিকাংশ নিদর্শন। তাদের এ কাজে সহায়তা দিয়েছে নেদারল্যান্ডস দূতাবাস। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যকে বৃহৎ পরিসরে সংরক্ষণে আরসিএমসির চলমান উদ্যোগের অংশ এ প্রদর্শনী। প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে রোহিঙ্গাদের ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প নিদর্শন।
কক্সবাজারে ‘রোহিঙ্গা সংস্কৃতির পুনর্জন্ম ও যাত্রা’ প্রদর্শনী
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর, আন্তর্জাতিক সংস্থা আর্টোল্যুশন, তের দেজম ও কক্সবাজার আর্ট ক্লাবের সহযোগিতায় ‘রোহিঙ্গা সংস্কৃতির পুনর্জন্ম ও যাত্রা’ শিরোনামে আজ মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুই দিনব্যাপী চিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে চলমান এই প্রদর্শনীতে দেখা যাচ্ছে ৫টি বড় ও ১৩৫টি ছোট ক্যানভাস। এছাড়াও আছে কয়েক’শ ড্রয়িং, যার মাধ্যমে শরণার্থী শিল্পীরা তুলে ধরেছে তাদের প্রত্যয়। এই ছবিগুলো বলে রোহিঙ্গাদের আত্মপরিচয়, অতীতের কষ্ট, বর্তমানের চ্যালেঞ্জ, এবং ভবিষ্যতের আশা ও স্বপ্নের কথা
নতুন সাংস্কৃতিক স্মৃতি কেন্দ্র রোহিঙ্গা ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করবে’
সংগ্রহশালাটি একটি সংস্কৃতির প্রতিকৃতি যা তার অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের প্রতিফলন করে, ঐতিহ্য এবং উদ্ভাবন, কল্পনা এবং স্মৃতি, স্থানচ্যুতি এবং নিজস্বতা এগুলোর মধ্যে অস্থিরতার সন্ধান করে। এটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য মডেল থেকে সূচিকর্ম, মৃৎশিল্প, ঝুড়ি, কাঠের কাজ, ভিজ্যুয়াল আর্টস, সংগীত, গল্প, কবিতা এবং আরও অনেকগুলো স্পর্শনীয় ও অস্পর্শনীয় ঐতিহ্য সামগ্রীর সম্মিলন করেছে।
আইওএম-এর বাংলাদেশ মিশনের উপ-প্রধান ম্যানুয়েল মার্কেস পেরেইরা বলেনঃ “আরসিএমসির ওয়েবসাইটটি রোহিঙ্গা জনগণকে তাদের গল্পগুলো বিশ্বব্যাপী দর্শকদের সাথে ভাগ করে নিতে এবং রোহিঙ্গা প্রবাসীদের সাথে সংযুক্ত করার জন্য একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে। রোহিঙ্গা ঐতিহ্য এবং জনগণের সৌন্দর্য ও জটিলতা প্রদর্শন করে কেন্দ্রটির লক্ষ্য এই সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন এবং ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্য তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা।“
তথ্যসুত্র
রোহিঙ্গা সাংস্কৃতিক স্মৃতি কেন্দ্র, Channel Online.
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আঁকা বিভিন্ন পেইন্টিং, Dhaka Post.
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতিদিনের জীবন, Daily Janakantha.
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্য, Bangla News24.
শিক্ষা ও সংস্কৃতি হারাতে বসেছে মিয়ানমার , Jugantor.
রোহিঙ্গা কালচারাল মেমরি সেন্টার , Benar News.
এক রোহিঙ্গা শরণার্থী, Tbs News.
মিয়ানমারের সহিসংতা , Bangla Tribune.