বাংলাদেশের দর্শনীয় স্হান (Beautiful Sights of Bangladesh)

বান্দরবানের বোল্ডিং খিয়াং | Bhandhor Bhon Bholding Khiyang




বান্দরবানের মংপ্রু পাড়ায় ঝরনাটির অবস্থান। দুই বিশাল পাহাড়কে পাহারায় রেখে পাথুরে জলের ধারা বয়ে দিচ্ছে এই ঝরনা।পাহাড়ের চূড়ায় উঠতেই বদলে যাবে দৃশ্যপট। ঝরনাগুলো পুরো এলাকাকে ছড়িয়ে দিচ্ছে সাদাটে কুয়াশার চাদরে।
রঙরাং পাহাড় | Rhong Rhang Pahar

রঙরাং পাহাড়ের চূড়ায় না উঠলে রাঙামাটির সৌন্দর্য অপূর্ণ থেকে যাবে। পাহাড়ের কোলঘেঁষে বয়ে গেছে মোহনীয় কর্ণফুলী।
কর্ণফুলীর পাশে বরকল ও জুরাছড়ি উপজেলায় এর অবস্থান। চারপাশের এমন সব সৌন্দর্য চোখের সামনে চলে আসবে যদি রঙরাং চূড়ায় উঠতে পারেন !
সাজেক ভ্যালি | Sajek Valley





সেখানে রয়েছে প্রকৃতির এক অপরূপ মায়াবী সৌন্দর্য যা আপনি কখনোই মিস করতে চাইবেন না। সাজেক ভ্যালি থেকে এর শেষ গ্রাম কংলাক পাড়ার মাঝে রয়েছে হাজাছড়া ঝর্ণা এবং এটিও পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। ফেরার পথে দীঘিনালা ঝুলন্ত ব্রিজ ও দীঘিনালা বনবিহার পরে। এদের রয়েছে মায়াবী এক ঝর্ণা ও সবুজ গাছগাছালীর মিশ্রণ।
দিন কিংবা রাত সাজেক যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবির মত, সময় গড়ায় তবু সাজেক পুরাতন হয় না। সাজেকে গেলে অবশ্যই সকালে ভোরের সময়টা মিস করবেন না। মেঘের খেলা আর সূর্যোদয়ের আলোর মেলা এই সময়েই বসে। এই জন্যে আপনাকে খুব ভোরে উঠে চলে যেতে হবে হ্যালিপ্যাডে, সেখান থেকেই সবচেয়ে সুন্দর সূর্যোদয় দেখা যায়। বিকেলের কোন উঁচু জায়গা থেকে সূর্যাস্তের রঙিন রূপ আপনাকে বিমোহিত করবেই। আর সন্ধ্যার পর আকাশের কোটি কোটি তারার মেলা, আপনার প্রাণ জুড়িয়ে দিবে নিমিষেই। আকাশ পরিষ্কার থাকলে দেখা পাবেন মিল্কিওয়ে বা ছায়াপথের।ঘুরে দেখতে পারেন চারপাশ ও আদিবাসীদের জীবন যাপন। সহজ সরল এই সব মানুষের সান্নিধ্যে আপনার ভাল লাগবে। আর হাতে সময় থাকলে সাজেক ভ্যালি থেকে ফেরার পথে ঢুঁ মেরে আসতে পারেন হাজাছড়া ঝর্ণা, দীঘিনালা ঝুলন্ত ব্রিজ ও দীঘিনালা বনবিহার থাকে।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত | Kuakata

কুয়াকাটা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পটুয়াখালী জেলার একটি শহর ও পর্যটন কেন্দ্র। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের অন্যতম সমুদ্রসৈকত যা পর্যটকদের কাছে সাগরকন্যা নামে পরিচিত। ঢাকা থেকে সড়কপথে এর দূরত্ব 380 কিলোমিটার এবং বরিশাল থেকে এর দূরত্ব 108 কিলোমিটার। পটুয়াখালী থেকে দক্ষিনে 70 কিলোমিটার দূরে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত অবস্থিত। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এ যেতে হলে আপনাকে লাল অথবা বাসে করে যেতে হবে। কুয়াকাটা বরিশালে সরাসরি রেলের কোন ব্যবস্থা নেই অতএব আপনি রেলওয়ে করে চাইলেও কুয়াকাটা যেতে পারবেন না। বাসে করে যেতে হলে ঢাকা থেকে বরিশাল গামী যেকোনো একটি বাসে উঠে বরিশাল নামবেন এরপর রুপাতলি বাস কাউন্টার হতে কুয়াকাটা গামী বাসে উঠে যাবেন। লঞ্চে করে যেতে চাইলে ছোট-বড় নদী-নালা পার হয়ে আপনি কুয়াকাটা যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে সরাসরি কুয়াকাটাগামী লঞ্চে করে আপনি কুয়াকাটা যেতে পারবেন।
সুন্দরবন | Shondor Bon

সুন্দরবন পৃথিবীর একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। এ বনের ৬২ শতাংশ বাংলাদেশের খুলনা জেলায় এবং বাকি ৩৮ শতাংশ পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশপরগনা জেbলায় অবস্থিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সুন্দরবন অতুলনীয় এবং জীববৈচিত্র্যে অসাধারণ। সুন্দরবন একটি একক ইকো সিস্টেম। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বের প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছেও একটি আকর্ষণীয় স্থান। আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর পূবে সুন্দরবন ১৬,৭০০ বর্গকিলােমিটার এলাকাব্যাপী বিস্তৃত ছিল। কিন্তু বর্তমানে এর আয়তন সংকুচিত হয়ে গেছে। বর্তমানে এ বনভূমির আয়তন ৬০১৭ বর্গকিলােমিটার। সমস্ত সুন্দরবন দুটি বন বিভাগের অন্তর্ভুক্ত। সুন্দরবনের ভূভাগ হিমালয় পর্বতের ভূমিক্ষয়জনিত জমা পলি থেকে সৃষ্টি। ভূ-বিজ্ঞানীরা এখানকার ভূমির গঠনবিন্যাসে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে সামান্য ঢালের সন্ধান পেয়েছেন। কূপ খনন গবেষণা থেকে দেখা যায়, সুন্দরবনের পশ্চিম এলাকা তুলনামূলক স্থির। তবে দক্ষিণ-পূর্ব দিকের একটি অংশ ক্রমেই নিম্নমুখী হচ্ছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরের তুলনায় সুন্দরবনের মাটি একটু আলাদা ধরনের। জোয়ার-ভাটার কারণে এখানকার পানিতে জলাবদ্ধতা ও লবণাক্ততা বেশি। এখানকার মাটি পলিযুক্ত দোঁ-আশ ।
সুন্দরবনের উদ্ভিদকুল বৈচিত্র্যময়। এখানকার অধিকাংশ গাছপালা ম্যানগ্রোভ ধরনের। এখানে রয়েছে বৃক্ষ, লতাগুল্ম, ঘাস, পরগাছা ইত্যাদি উদ্ভিদ। উদ্ভিদবিজ্ঞানী ডি.প্রেইন সুন্দরবনে ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ আছে বলে উল্লেখ করেছেন। পৃথিবীতে এ পর্যন্ত সন্ধানপ্রাপ্ত ৫০টি ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের মধ্যে সুন্দরবনেই আছে ৩৫টি। সুন্দরবনের উদ্ভিদের মধ্যে রয়েছে সুন্দরী, গরান, গেওয়া, কেওড়া, পশুর, ধুন্দল, বাইন প্রভৃতি। এ ছাড়া সুন্দরবনের প্রায় সবখানেই জন্মে গােলপাত বিচিত্র সব প্রাণীর বাস সুন্দরবনে। এখানে রয়েছে বহু প্রজাতির স্তন্যপায়ী, সরীসৃপ, উভচর প্রাণী এবং শত শত প্রজাতির পাখি ও মাছ। সুন্দরবনের স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগার পৃথিবী বিখ্যাত। এ ছাড়া রয়েছে চিত্রা ও মায়া হরিণ, বানর, বনবিড়াল, লিওপার্ড, শজারু, উদ এবং বন্য শূকর। এখানে রয়েছে বিচিত্র সব পাখি। বক, সারস, হাড়গিলা, কাদাখোঁচা, লেনজা ও হউিটি এখানকার নদী-নালা ও গাছপালার মাঝে বসবাস করে। সমুদ্র উপকূলে দেখা যায় গাঙচিল, জল কবুতর, টার্ন ইত্যাদি। এ ছাড়া চিল, ঈগল, শকুন, মাছরাঙা, কাঠঠোকরা, ভগীরথ, পেঁচা, মধুপায়ী, বুলবুলি, শালিক, ফিঙে, ঘুঘু, বেনে বৌ, হাঁড়িচাচা, ফুলঝরি, মুনিয়া, টুনটুনি, দোয়েল, বাবুই প্রভৃতি পাখি সুন্দরবনে বাস করে। সুন্দরবনের সরীসৃপদের মধ্যে রয়েছে কুমির, সাপ, টিকটিকি-জাতীয় সরীসৃপ ইত্যাদি।
সীতাকুণ্ড | Shita Khundo

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি শহর ও পৌর এলাকা। প্রশাসনিকভাবে এটি চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার প্রশাসনিক সদরদপ্তর এবং প্রধান শহর। ভৌগলিকভাবে এটি চট্টগ্রাম শহর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত। সীতাকুণ্ড শহর চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার অন্তর্ভুক্ত। এর আয়তন ২৭.৯৭ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় ৪৫,১৪৭ জন।জাহাজ ভাঙ্গন শিল্পসহ এখানে অনেক ছোট-বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার কারণে এটি চট্টগ্রামের শিল্পাঞ্চল নামে পরিচিতি লাভ করেছে। বাংলাদেশের প্রথম ইকোপার্ক-সীতাকুণ্ড বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকো-পার্ক, চন্দ্রনাথ পাহাড় ও চন্দ্রনাথ মন্দির, গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতসহ এখানে অনেক পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে।
টাংগুয়ার হাওর | Tanguar Haor

ভারতের মেঘালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই হাওর। মূলত মেঘালয় পর্বত থেকে প্রায় ৩০টি ঝর্ণা এসে মিশেছে এই হাওরের পানিতে। টাংগুয়ার হাওর এটি দেশের ২য় বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি হিসেবে পরিচিত। অথৈ পানির গভীর জলাভূমি, ঘাঢ় নীল আকাশ, পাহাড়ের শুভ্রতা ও চোখ জুড়ানো সবুজে ঘেরা এই হাওরটি অপরূপ রূপে সজ্জিত।
নাফাখুম | Nafa Khum

জলপ্রপাত বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রেমাক্রি ইউনিয়নে অবস্থিত। একে বাংলার নায়াগ্রাও বলা হয় কারণ পানি প্রবাহের পরিমানের দিক থেকে এটিকে বাংলাদেশের অন্যতম বড় জলপ্রপাত। নাফাখুম দেখতে থানচি বাজার থেকে সাঙ্গু নদী পথে নৌকা দিয়ে রেমাক্রি যেতে হয়।
নিঝুম দ্বীপ | Nijhum Dwip

এই আইল্যান্ডে নাম না জানা অনেক পাখির দেখা মিলে। এই দ্বীপে যেতে ভাড়া ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা ট্রলার ভাড়া লাগবে। চোয়াখালিতে নিঝুম রিসোর্ট এর বারান্দা থেকেও মাঝে মাঝে হরিণের দেখা পাওয়া যায়। এছাড়া যদি হাতে সময় থাকে তবে ট্রলার রিজার্ভ নিয়ে ভোলার ঢালচর, চর কুকরি – মুকরিতে একটি দিন কাটিয়ে আসতে পারেন।
জাফলং | Jaflong

আঁকাবাঁকা পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে এই পথ। এই পথে পাবেন সিলেট আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট, শাহ পরান রহঃ এর মাজার, সবুজ পাহাড়, সারি সারি চা বাগান, লালা খাল, জাফলং-ডাউকি ল্যান্ড বর্ডার, বিশাল হাওড় ইত্যাদি। জাফলং এ আছে সুন্দর পাথরে নদী যার পানি খুবই স্বচ্ছ, জিরো পয়েন্ট, ডাওকি জুলন্ত ব্রিজ।
কুয়াকাটা | KuaKata

নির্ধারিত সময়ে সূর্যোদয় হওয়ার আগে থেকেই দুই পয়েন্টে ভিড় করছিলেন দর্শনার্থীরা। সাড়ে ৫টার পর পূর্ব দিগন্ত হতে থাকলো শুভ্র। একটু পর হালকা লাল, লাল আলোর রশ্মি ছড়িয়ে গেল ঊর্ধ্বাকাশে। অপেক্ষা সূর্যোদয় দেখার। ক্ষণে-ক্ষণে রঙ বদল হতে থাকলো পূর্বাকাশ। এরই মধ্যে আকাশে উড়তে থাকলো গাঙচিল।নির্ধারিত সময়ে সূর্যোদয় হলেও কুয়াশার কারণে পূর্ণাঙ্গ সূর্য আরও পরে। সাতটার দিকে সাগরের বুকে দেখা গেল এক লাল বিন্দু, বলা যায় অর্ধেক। ধীরে তা রূপ নিলো থালার আকৃতি। আর তখন হাত তালি দিয়ে উঠলেন অভ্যাগত দর্শনার্থীরা।সূর্যোদয়ের এই অপরূপ দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করতে ভুললেন না কেউই। ভিডিও করলেন কেউ কেউ। সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে তিনদিন ব্যাপী ‘মেগা বিচ কার্নিভাল’ উপলক্ষ শত-শত দর্শনার্থীর উপস্থিতি আর সূর্যোদয়ের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য সত্যিই অপরূপ।
তথ্যসুত্র:
অপার সৌন্দর্যে ঘেরা সাজেক ভ্যালি, যেখানে প্রকৃতি থাকে সূর্যাস্তের রঙে রঙিন.
বাংলাদেশের সেরা ১০ দর্শনীয় স্থান এক নজরে
সীতাকুণ্ড, Wikipedia.