টেলিভিশন (Television)

টেলিভিশন (Television)


বলুন তো, বিশ্বটাকে মানুষের ঘরের মধ্যে প্রথম কে নিয়ে এসেছিল? ভাবনায় পড়ে গেলেন? উত্তরটা কিন্তু খুব সোজা। সেটা হলো ‘টেলিভিশন’। টেলিভিশন তথ্য ও বিনোদনের এক বিস্ময়জাগানিয়া অগ্রগতি। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এই টেলিভিশন মানুষের অবসর ও চিত্তবিনোদনের সঙ্গী হিসেবে রয়েছে।প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে টেলিভিশন প্রযুক্তিও। কিন্তু এর যাত্রা শুরু কবে থেকে, কার হাত ধরে—এমন প্রশ্ন হয়তো অনেকের মনে জাগতেই পারে। তাহলে জানা যাক, সেই প্রশ্নের উত্তর, অর্থাৎ টেলিভিশন আবিষ্কারের কাহিনিটি।

টেলিভিশন এমন একটি যন্ত্র, যা থেকে একই সঙ্গে ছবি দেখা ও শব্দ শোনা যায়। টেলিভিশন শব্দটি ইংরেজি থেকে এসেছে; মূলত প্রাচীন গ্রিক শব্দ ‘টেলি’, অর্থাৎ ‘দূর’ ও লাতিন শব্দ ‘ভিশিওন’, অর্থাৎ ‘দর্শন’—মিলিয়ে টেলিভিশন শব্দটি তৈরি হয়। তাই টেলিভিশনকে বাংলায় কখনো কখনো ‘দূরদর্শন যন্ত্র’ বলা হয়ে থাকে।

টেলিভিশনে আমরা কিভাবে ছবি দেখতে পাই?

এ ছবিকে টেলিভিশন ক্যামেরা তড়িৎ সংকেতে রূপান্তরিত করে। এ তরঙ্গ বা সংকেতকে মডুলেশন প্রক্রিয়ায় উচ্চ কম্পাঙ্কের বাহক তরঙ্গের সঙ্গে মিশ্রিত করা হয়। এন্টেনার সাহায্যে টিভি সেট ছবির জন্য প্রেরিত তাড়িতচৌম্বক বাহক তরঙ্গ গ্রহণ করে। এভাবেই আমরা টিভিতে ছবি দেখতে পাই।

টেলিভিশন কীভাবে কাজ করে?

টেলিভিশন শব্দের বাংলা অর্থ দূরদর্শন। অর্থাৎ দূর থেকে দেখা। টেলিভিশনে দেখা ও শোনা দুটোই ঘটে। শব্দ ও ছবি প্রেরণের জন্য প্রয়োজন একটি প্রেরক স্টেশন। শব্দ ও ছবি প্রেরণের জন্য টেলিভিশন প্রেরক স্টেশনে পৃথক পৃথক প্রেরক যন্ত্র থাকে। একটি প্রেরক যন্ত্রের সাহায্যে ছবিকে তড়িৎ সংকেতে রূপান্তরিত করে প্রেরণ করা হয়। অন্য একটি প্রেরক যন্ত্রের সাহায্যে ছবিকে তড়িৎ সংকেতে রূপান্তরিত করে তা তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ হিসেবে প্রেরণ করা হয়। যে দৃশ্য প্রেরণ বা সম্প্রচার করতে হবে তার প্রতিবিম্ব বা ছবি লেন্সের মধ্য দিয়ে টেলিভিশন ক্যামেরার পর্দায় ফেলা হয়।

১৮৬২ সালে তারের মাধ্যমে প্রথম স্থিরছবি পাঠানো সম্ভব হয়। এরপর ১৮৭৩ সালে বিজ্ঞানী মে ও স্মিথ ইলেকট্রনিক সিগন্যালের মাধ্যমে ছবি পাঠানোর পদ্ধতি আবিষ্কার করেন।১৯২৬ সালে প্রথম টেলিভিশন আবিষ্কার করেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী জন লগি বেয়ার্ড এবং সাদা–কালো ছবি দূরে বৈদ্যুতিক সম্প্রচারে পাঠাতে সক্ষম হন। এরপর রুশ বংশোদ্ভূত প্রকৌশলী আইজাক শোয়ানবারগের কৃতিত্বে ১৯৩৬ সালে প্রথম টিভি সম্প্রচার শুরু করে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন (বিবিসি)।তবে টেলিভিশনের বাণিজ্যিক ভিত্তিতে যাত্রা শুরু হয় ১৯৪০ সালে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর টেলিভিশনে দেখা যায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে টেলিভিশন গণমাধ্যমের ভূমিকায় উঠে আসে।

Taken from Jugantar

কীভাবে সম্প্রচারিত হয় টেলিভিশন

টেলিভিশনের মূল ধারণা হচ্ছে, শব্দ ও ছবিকে প্যাটার্নে বেতারতরঙ্গের মাধ্যমে স্থানান্তর করা। মূলত তিনটি প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরি হয় টেলিভিশনের কার্যকারিতা। প্রথমত, টিভি ক্যামেরা, যার কাজ হচ্ছে শব্দ ও ছবিকে তড়িৎ-চৌম্বকীয় সংকেতে রূপান্তর করা; দ্বিতীয়ত, টিভি ট্রান্সমিটার, যার কাজ হচ্ছে এই সংকেতকে বেতারতরঙ্গের মাধ্যমে প্রেরণ করা এবং তৃতীয়ত, টিভি সেট (রিসিভার), যার কাজ হচ্ছে এই সংকেত গ্রহণ করে তাকে আগের ছবি ও শব্দে রূপান্তর করা। সাধারণত ক্যামেরা দিয়ে তোলা ছবিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়—স্থিরচিত্র (স্টিল পিকচার) ও চলচ্চিত্র (মুভিং পিকচার)।

স্থিরচিত্রের জন্য সাধারণ ক্যামেরা ও চলচ্চিত্রের জন্য মুভি বা ভিডিও ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে অনেকগুলো স্থিরচিত্রের সমন্বয়ে সৃষ্টি হয় চলচ্চিত্র। ভিডিও ক্যামেরা দ্রুতগতিতে পরপর অনেকগুলো স্থিরচিত্র (২৪ ফ্রেম/সেকেণ্ড অথবা বেশি) গ্রহণ করে।

এই ছবিগুলোকে যখন একই গতিতে পরপর প্রদর্শন করা হয়, তখন আমাদের চোখে এগুলো চলচ্চিত্র বলে মনে হয়। ফ্রেমে এই দ্রুতগতিতে ছবি পরিবর্তনের কারিগরি কৌশলটি আমাদের চোখে ধরা পড়ে না। চলচ্চিত্রকে খুবই ধীরগতিতে দেখলে এসব স্থিরচিত্রকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যায়। অ্যানালগ টিভি ক্যামেরা এসব ছবির পিক্সেলকে সাধারণত ৫২৫টি লাইনে ভাগ করে ‘লাইন বাই লাইন’ বেতারতরঙ্গের মাধ্যমে প্রেরণ করে। একই সঙ্গে শব্দতরঙ্গকে আলাদা সিগন্যালের মাধ্যমে প্রেরণ করে। ছবি ও শব্দের সিগন্যাল অ্যান্টেনা বা কেব্‌ল বা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে টিভি গ্রহণ করে বিশেষ পদ্ধতিতে আবার ছবি ও শব্দে পরিণত করে।

বিভিন্ন ধরনের টেলিভিশন

ডিসপ্লে, অর্থাৎ প্রদর্শনীর প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে টেলিভিশনকে বিভিন্নভাবে ভাগ করা যায়। যেমন সিআরটি, প্লাজমা, এলসিডি, এলইডি ইত্যাদি। সম্প্রচার থেকে প্রদর্শন পর্যন্ত টেলিভিশনের সম্পূর্ণ পদ্ধতিকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন অ্যানালগ টেলিভিশন (সনাতন পদ্ধতি), ডিজিটাল টেলিভিশন (ডিটিভি) ও এইচডিটিভি (হাই ডেফিনেশন টেলিভিশন)।

রঙিন টেলিভিশন

(মার্কিন ইংরেজি: Color Television, কমনওয়েলথ ইংরেজি: Colour Television) হল একটি টেলিভিশন ট্রান্সমিশন প্রযুক্তি যাতে ছবির রঙের তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকে, তাই টেলিভিশন সেটে ভিডিও চিত্রটি রঙে প্রদর্শিত হতে পারে। এটি একরঙা বা সাদা-কালো টেলিভিশন প্রযুক্তিকে উন্নত করে করা হয়েছে, যা চিত্রটিকে ধূসর (গ্রেস্কেল) শেডে প্রদর্শন করে৷ ১৯৬০ এবং ১৯৮০-এর দশকের মধ্যে বিশ্বের বেশিরভাগ অংশে টেলিভিশন সম্প্রচার স্টেশন এবং নেটওয়ার্কগুলি সাদা-কালো থেকে রঙিনে আপগ্রেড হয়েছিল। রঙিন টেলিভিশন মান উদ্ভাবন টেলিভিশনের ইতিহাস এবং প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল।

যান্ত্রিক স্ক্যানার ব্যবহার করে রঙিন চিত্রে রুপান্তর ১৮৮০-এর দশকের প্রথম দিকে ধারণা করা হয়েছিল। ১৯২৮ সালে জন লগি বেয়ার্ড দ্বারা যান্ত্রিকভাবে স্ক্যান করা রঙিন টেলিভিশনের একটি প্রদর্শন দেওয়া হয়েছিল, তবে এর সীমাবদ্ধতা তখনও স্পষ্ট ছিল। ইলেকট্রনিক স্ক্যানিং এবং ডিসপ্লের বিকাশ একটি বাস্তব ব্যবস্থাকে সম্ভব করে। একরঙা ট্রান্সমিশন মান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু যুদ্ধের বেশিরভাগ সময় বেসামরিক ইলেকট্রনিক্স উন্নয়ন হিমায়িত ছিল। ১৯৪৪ সালের আগস্টে, বেয়ার্ড একটি ব্যবহারিক সম্পূর্ণ ইলেকট্রনিক রঙিন টেলিভিশন প্রদর্শনের বিশ্বের প্রথম প্রদর্শনী দেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, প্রতিযোগী রঙের মান তৈরি করেছিল, অবশেষে এনটিএসসি রঙের মান তৈরি হয়েছিল যা পূর্বের একরঙা সিস্টেমের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। যদিও এনটিএসসি রঙের মান ১৯৫৩ সালে ঘোষণা করা হয়েছিল এবং শীঘ্রই সীমিত প্রোগ্রামিং পাওয়া যায়, এটি ১৯৭০-এর দশকের গোড়ার দিকে উত্তর আমেরিকার রঙিন টেলিভিশন কালো-সাদা/একরঙা ইউনিটের চেয়ে বেশি বিক্রি হয়নি। ইউরোপে রঙিন সম্প্রচার ১৯৬০ সাল পর্যন্ত পিএএল বা এসইসিএএম ফর্ম্যাটে মানসম্মত হয়নি।

সম্প্রচারকারীরা অ্যানালগ রঙিন টেলিভিশন প্রযুক্তি থেকে উচ্চতর রেজুলিউশন ডিজিটাল টেলিভিশনে আনু. ২০০৬ সালে করতে শুরু করে ; সঠিক বছর দেশ অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। যদিও অনেক দেশে পরিবর্তন সম্পূর্ণ হয়েছে, কিছু দেশে এনালগ টেলিভিশন ব্যবহার করা হচ্ছে।


টেলিভিশন থেকে ক্ষতিকর রশ্মি

রঙ্গিন টেলিভিশন থেকে যে ক্ষতিকারক রশ্মি নির্গত হয় তার নাম মৃদু রঞ্জন রশ্মি । ব্যাখ্যা : বাজারে প্রচলিত অনেক গাইড বইয়ে এটার উত্তর 'গামা' দেওয়া আছে যা ভুল । আমরা জানি 'গামা' একটা তেজস্ক্রিয় রশ্মি যেটা উচ্চ পারমাণবিকসংখ্যা ও উচ্চ পারমাণবিক ভরসংখ্যা বিশিষ্ট মৌলিক পদার্থ থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্গত হয় ।

টেলিভিশন আমাদের জন্য কতটা উপকারী


একটি ভাল প্রোগ্রাম তৈরি করা যেতে পারে যদি আমরা গেম এবং ক্রীড়া ইভেন্টের সময়সূচী ছাড়াও সিরিয়াল, নাটক এবং চলচ্চিত্র বাছাই করি। টেলিভিশন বিভিন্ন ধরনের বিনোদনের বিকল্প অফার করে, যার মধ্যে রয়েছে সঙ্গীত, শো এবং চলচ্চিত্র এবং আরও অনেক কিছু। টেলিভিশন দেখা শরীর ও মনকে শান্ত করতে সাহায্য করে ।

১. টিভি ভাল জ্ঞান অর্জন এর মাধ্যম

TV আমাদের সহায়তা করে,Information একত্রিত করার জন্য। পৃথিবীর অতি আধুনিক খবরাখবর,TV মাধ্যম আমরা পেয়ে থাকি।আজকের যুগে,TV অতি বৃহৎ একটি দূরত্বের সঙ্গে আমাদের বেঁধে রেখেছে,নানা রূপ তত্ত্ব ও মূল্যবান মতামত এর মাধ্যমে।আমরা TVএর মাধ্যমে,অনেক উপকারী বিষয় এর সমন্ধে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে থাকি।আমাদের নিজস্ব দুনিয়ার বাইরে, সমগ্র পৃথিবীর সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে থাকে অবিরত।

২. ব্যাবহার এর সহজতা

যে কেউ ঘরে বসে, পরিবারের সাথে, একই সাথে খবর,সিনেমা,খেলা,গান, পারিবারিক অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ পায় TVএর মাধ্যমেই।সমস্ত কাজ সেরে সবই মিলে টিভি দেখার আনন্দ আলাদা।

৩. মানসিক তৃপ্তি আর আনন্দ উপভোগ

বাচ্চাদের কাছে TV খুব পছন্দের ও প্রশংসার বিষয়।এর মাধ্যমে এরা অনেক কিছুই জানতে পারে।Discovery channel,ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এর মতো চ্যানেল বাচ্চাদের প্রচুর তথ্য দিয়ে থাকে। একটা ছোট বাচ্চার কাছে, TV যথার্থ শিক্ষক। নানারকমের অনুষ্ঠান বাচ্চাদের ঘরে বসেই TV র মাধ্যমেই দেখার সুযোগ হয়।বিভিন্ন ভাষার ও অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ TV র মাধ্যমে বাচ্চাদের হয়ে থাকে।Carton, movie,music এই সব আজকের যুগে ঘরে বসে মন ভাল রাখার শ্রেষ্ঠ মাধ্যম।

৪. পৃথিবীর তথ্য সংগ্রহ দুনিয়া আপানার ড্রয়িং রুম এ

TV আমাদের সমগ্র পৃথিবীর নানাধরনের মানুষ জীবন শৈলি,খাবার দাবার,ঐতিহ্য সমন্ধে, নানারূপ তথ্য দিয়ে থাকে।ছবি ও নানা ধরনের মন রঞ্জন এর মাধ্যমে ছোট দের অনেক কিছু শিক্ষিয়ে থাকে,তাছাড়া TV Live telecast এর মাধ্যমে, খবর,খেলা, নানারূপ বিষয় দেখিয়ে থাকে।

৫. নানা স্বাদের :বিভিন্ন তথ্য এর সম্পূর্ণ ভান্ডার সব তাজা খবর একসাথেই

TV একটা খুব ভাল একটা মাধ্যম, যে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সমস্ত পৃথিবীর প্রতিটি খবর, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মানুষ এর কাছে পৌঁছয়।পৃথিবীর সমস্ত দেশের খবর, আমরা এক মিনিট বা এক সেকেন্ডের মধ্যেই TV মাধ্যমে পেয়ে থাকি।

৬. বিনোদন এর সস্তা একটি মনোরঞ্জন এর মাধ্যম

আমাদের এত costly জীবনে TV বলা যায়, সবচেয়ে সস্তা একটি মাধ্যম, সমস্ত কিছু অজানা কে জানার জন্য। সমস্ত ভাষার মাধ্যমেই TV আমাদের সমগ্র পৃথিবীর তথ্য দিয়ে থাকে,প্রতিদিন প্রতিনিয়ত।

৭. নানারূপ তথ্য এর ভান্ডার ইনফোটেনমেন্ট

নিছক বিনোদন নয় টিভি এখন ইনফোটেনমেন্ট এর দারুন মাধ্যম। TV নানা রূপে, নানা মাধ্যমে, রান্না- বান্না,খেলা ও টাকা পয়সা saving নিয়ে আলোচনা করে আমাদের সচেতন করে তোলে।এছাড়া টেলিভিশন এর মাধ্যমে ইংলিশ কথা বলা আর ওই ভাষা সম্পর্কে অনেক সড়গড় হয় যায়। যেহেতু টিভি তে অনেক ইংলিশ ভাষার চ্যানেল আছে তাই তা অনুসরণ করলেও ইংলিশ ভাষা সম্পর্কে জড়তা কেটে যায়। শেয়ার বাজার বা মিউচুয়াল ফান্ড সম্পর্কে যারা আগ্রহী তাদের জন্য রয়েছে NDTV এর মতো চ্যানেল।

টেলিভিশন দেখার অসুবিধা

১. বাচ্চাদের পড়াশোনার পরিবেশ এর ক্ষতিকর প্রভাব

বাচ্চাদের প্রচুর কার্টুন চলে TV তে,ছোট ছোট বাচ্চারা অভিভূত হয়ে এইগুলো দেখে,পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কম হতে শুরু করে।প্রায় দিনের বেশিরভাগ টাই TV এর সামনে বসে তারা দিন কাটায়। তাই টেলিভিশন দেখার সময় তাদের নিয়ন্ত্রণ করা একান্ত জরুরি।

২. অযাচিত বা বাচ্চাদের উপযোগী নয় এমন বিষয়

বাচ্চাদের জন্য নয় এমন চিত্র ও অনুষ্ঠান বাচ্চারা দেখে , কিছু এইরকম TV channels এর মাধ্যম। বাচ্চাদের জন্য উপযুক্ত নয় এমন কিছু কনটেন্ট TV মাধ্যমে মাঝে মাঝে প্রচারিত হয় ,সেই গুলো অতি সহজে, বাচ্চাদের কাছে এসে পৌঁছয়।তাই এই বিষয়ে অভিভাবকদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

৩.সময়ের অপচয় করা

বর্তমানে স্যাটেলাইট চ্যানেল এর কারণে সেখানে সব সময় নানা অনুষ্ঠান চলতেই থাকে তা রিয়ালিটি শো এই হোক বা নানা চলতি সিরিয়াল বা ধারাবাহিক আমারা সকলে TVএর সামনে বসে, সিনেমা,সিরিয়াল,দেখে নিজেদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে থাকি।যে গুলো আমাদের কোন কাজে ই লাগে না।এই অভ্যাস একদমই ভালো নয়।অনেক সময়ই এটা আমাদের কাজের ক্ষতি করে থাকে।

৪. বৈদ্যুতিক খরচ বৃদ্ধি

অতিরিক্ত TV দেখার ফলে,বৈদ্যুতিক খরচ বৃদ্ধির সম্ভবনা থাকে।আমরা আজকের খবর এর সাথে সাথে প্রতি মুহূর্তের, পৃথিবীর চারিদিকে ঘটে চলছে, তার ও খোঁজ নিতে থাকি।প্রায় প্রতিটি ঘরে,TV সারাদিন ই চলে।এটি বৈদ্যুতিক খবর বৃদ্ধির একটা মূল কারণ।

৫. স্বাস্থ্য এর ক্ষতি

বেশিক্ষন টিভি দেখলে নানা রকম শারীরিক অসুবিধা হতে পারে। নানা সমীক্ষা থেকে দেখা গেছে যে দিনে ৩ ঘন্টার বেশ একটানা টিভি দেখলে মেদবহুলতা বেড়ে যায়। দেখা গেছে অতিরিক্ত TV দেখার জন্য আমাদের চোখ, শিরদারা, ও রক্ত চাপ বৃদ্ধি পায়। TV দেখা টা নেশায় পরিনত হলে,আমারা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারি।

৬ . সামাজিক মেলামেশা কমে যায়

TV দেখার জন্য আমরা সমাজের অনেক কিছু থেকে নিজেদের দূরে করে নিয়েছি।বন্ধুত্ব ও পরিবার এর অনেক সামাজিক কাজকর্ম থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছি।

৭. অতিরিক্ত বিজ্ঞাপন এর ফলে আমাদের কেনাকাটার অভ্যেস খারাপ হয়ে যায়

সারা বিশ্বজুড়ে টিভি এর জনপ্রিয়তার কারণে এখন টিভি বিজ্ঞাপন এর একটি অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রাইম টাইম বা কোনো জনপ্রিয় সিরিয়াল এর মাঝে মাত্র ১০ সেকেন্ড এর একটি বিজ্ঞাপন প্রতি কোম্পানি রা এখন কোটি টাকা দিতেও প্রস্তুত।তাই আপনি চান বা না চান বিজ্ঞাপন আপনাকে দেখতেই হবে। ডিজিটাল মার্কেটিং অনেক বেড়ে গেলেও টিভি এডভার্টাইসিং কিন্তু এখন ভারতে সিংহভাগ যখন করে রেখেছে।২০২১ এর হিসাব অনুযায়ী টিভি এডভার্টাইসিং এ খরচ ছিল প্রায় ৩০০০০ কোটি টাকা যা সব বিজ্ঞাপন খরচ এর প্রায় ৪২%.তাই এতো বিজ্ঞাপন এর মাঝে ভালো ব্র্যান্ড কোনটি সেই সম্পর্কে অনেক আমরা খেই হারিয়ে ফেলি আর যার ফলে বাজে খরচ অনেক বেড়ে যায়।

সমাজ জীবনে টেলিভিশন :

সমাজ জীবনে টেলিভিশনের প্রভাব অপরিসীম। এমনও গ্রাম আছে, যেখানে বিদ্যুতের আলাে পৌঁছেনি, সেখানে ব্যাটারি কিংবা সৌরচালিত শক্তির সাহায্যে টেলিভিশনের ব্যবহার করছে সেখানকার মানুষ। বিশেষ করে টেলিভিশনে প্রচারিত সিনেমা ও নাটক, সেই সঙ্গে খেলা বিশেষ করে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলা দেখার জন্য বহু মানুষ টেলিভিশনের সামনে ভিড় করে। এখন তাে আবার কেবল লাইনের কল্যাণে পছন্দমতাে যে কোন অনুষ্ঠান সারাদিন ও সারারাত্রি যখন খুশি দেখা যায়। শুধু চ্যানেল পরিবর্তন করলেই হল—যে যার পছন্দমতাে অনুষ্ঠান পেয়ে যেতে পারবেন, কোন অসুবিধা নেই। শিক্ষা, চিকিৎসা, আইন, রাজনীতি, যুক্তিতর্ক, রঙ্গব্যঙ্গ প্রভৃতি বিষয়গুলি টেলিভিশনের দর্শক সংখ্যাকে বৃদ্ধি করছে। বিশেষ করে নারী ও ছাত্রদের উপর টেলিভিশনের প্রভাব সমধিক।

নারী সমাজে টেলিভিশন :

নারীদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে টেলিভিশনের ভূমিকা যথেষ্ট। নিঃসঙ্গ ও অবসরকালীন অবস্থায় টেলিভিশনের মতাে সঙ্গীকে বেছে নিয়েছে আজকের বেশিরভাগ নারী সমাজ। এর যেমন ভালাে দিক আছে তেমনি খারাপ দিকও আছে। ভালাে দিক হল—সময় কাটানাে ও আনন্দ পাওয়ার ক্ষেত্রে টেলিভিশনের তুলনা নেই। কিন্তু অশুভ দিকটিও সমান বিবেচ্য। কারণ আজকের শিশু, কিশােরী থেকে প্রৌঢ়া পর্যন্ত কেউই টেলিভিশনের প্রভাব থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। ফলে পােশাক-পরিচ্ছদ, আহার-বিহার, এমনকি মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি পর্যন্ত টেলিভিশনের অনুষ্ঠানের অনুকরণে রূপায়িত হচ্ছে। ফলে সংস্কৃতির নিজ স্বরূপ হারিয়ে গিয়ে দেখা দিচ্ছে পরানুকরণ। এই ঐতিহ্য বিনাশকারী ও পরানুকরণকারী সংস্কৃতি মানুষের স্বাভাবিক উন্নতির অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুক্ত অর্থনীতির বাজারে সব রকম অনুষ্ঠানই কোন তদারক ব্যবস্থা ছাড়াই দর্শকদের সামনে চলে আসায় অর্ধ-শিক্ষিত ও অশিক্ষিত রমণীদের কাছে এই সব অনুষ্ঠান প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে রুপপালি পর্দার নায়ক-নায়িকা, কিংবা মডেলের অনুকরণে নারীরা নিজেদের সজ্জিত ও প্রকাশ করতে গিয়ে নিজেদের স্বাভাবিকতা জলাঞ্জলি দিচ্ছে। এমনকি নিঃসঙ্গতা কাটানাের জন্য বিভিন্ন টিভি সিরিয়ালগুলিও বিশেষ অশুভ প্রভাব ফেলছে, বইপড়ার প্রতি আকর্ষণ কমে যাচ্ছে। নারীর মনে নিয়ে আসছে বিভিন্ন সংস্কার ও দ্বন্দ্বের দোলা—যা তাদেরকে নেতিবাচক দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তবে টেলিভিশনের ভালাে দিকের প্রভাব যে নেই তা নয়, কিন্তু খারাপ দিকটাই নারীসমাজকে বেশি প্রভাবিত করছে। এমনকি বিভিন্ন দূরদর্শনের প্রচারিত সিরিয়ালগুলি নারীর চাহিদা ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করছে। সিরিয়ালের চরিত্রের আদব কায়দা ও বিভিন্ন বিষয় বিচার না করেই তারা গ্রহণ করছে। ছাত্র সমাজে টেলিভিশন শুভ ও অশুভ দুই দিকই নিয়ে আসছে। অনেক ছাত্রছাত্রী টেলিভিশনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অকালে হারিয়ে যাচ্ছে। অনেক মানুষ এর ফলে হয়ে যাচ্ছেন অলস।

বিনােদনের ক্ষেত্রে টেলিভিশন :

বিনােদনের ক্ষেত্রে টেলিভিশনের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। দূরদর্শনের মতাে দৃশ্য ও শ্রাব্য মাধ্যম মানুষের মনকে বেশি আকৃষ্ট করে। এমনকি মানুষের নিঃসঙ্গতাকে দূর করতে এর জুড়ি মেলা ভার। তাই নিঃসঙ্গ মানুষের ক্ষেত্রে, কর্মক্লান্ত ব্যক্তির কাছে, সময় কাটাবার জন্য দূরদর্শনের গুরুত্ব অপরিসীম। বর্তমানে যেহেতু দূরদর্শনের চ্যানেল অসংখ্য এবং সারা দিনরাত তা চলতে থাকে তাই যে কোন মানুষ ইচ্ছা করলেই তার পছন্দ মতাে অনুষ্ঠান দূরদর্শনে পেয়ে যেতে পারেন—শুধু বােতাম টেপার অপেক্ষায়। অর্থাৎ একজন গৃহবধূ বিকেলের অফুরন্ত অবসর কাটাতে দূরদর্শনের সিরিয়ালকে বেছে নিতে পারে, একজন ছাত্র জ্ঞানলাভের জন্য বেছে নিতে পারে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানকে, একজন কৃষক দেখতে পারেন কৃষি-সম্পর্কিত অনুষ্ঠানকে, যারা নিছক বিনােদন পিয়াসী তারা বেছে নিতে পারেন বিনােদনমূলক যে কোন অনুষ্ঠানকে। আগে যেখানে দূরদর্শনের অনুষ্ঠান নগরকেন্দ্রিক ছিল, এখন সেখানে বিভিন্ন চ্যানেলের সৃষ্টি হওয়ার ফলে গ্রামজীবনের বহু খুঁটিনাটি দিক টেলিভিশনে উপস্থাপিত হচ্ছে।

গণমাধ্যম টেলিভিশনের ভূমিকা:

একটি দেশের উন্নয়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। গণমাধ্যম হিসেবে টেলিভিশন, চলচ্চিত্র, খবরের কাগজ, বেতার, পোস্টার, লিফলেট, বিজ্ঞাপন, ম্যাগাজিন, সোশ্যাল মিডিয়া, ই-মেইল, ইন্টারনেট ইত্যাদিকে বুঝানো হয়। সরকারের নানা কর্মসূচি, প্রকল্প, উন্নয়ন কার্যক্রম, জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে গণমাধ্যম হিসেবে টেলিভিশনের ভূমিকা অন্যতম।২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে অবাধ তথ্যপ্রবাহের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়।

ধর্মীয় উগ্রবাদী মদদপুষ্ট ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিতর্কমূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচারের কারণে চারদলীয় জোট সরকারের চ্যানেল ওয়ান (২০০৬), সিএসবি নিউজ (২০০৭), ইসলামিক টিভি (২০০৭), দীগন্ত টিভির (২০০৮) সম্প্রচার সরকার বন্ধ করে দেয়। বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের নির্মাণের ধারণায় ৪৭টি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলের লাইসেন্স দিয়েছে। ২০০৯ সালে দেশ টিভি, ২০১০ সালে মাই টিভি, মোহনা টিভি, ইনডিপেন্ডেন্ট টিভি, ২০১১ সালে মাছরাঙা টিভি, চ্যানেল নাইন, বিজয় টিভি, ২০১২ সালে জিটিভি, একাত্তুর টিভি, ২০১৩ সালে এশিয়ান টিভি, এস এ টিভি, গান বাংলা, দূরন্ত, টি-স্পোর্টস টেলিভিশন, ২০১৪ সালে যমুনা টিভি, ২০১৫ সালে দীপ্ত টিভি, ২০১৬ সালে নিউজ টুয়েন্টি ফোর, ডিবিসি নিউজ, ২০১৭ সালে বাংলা টিভি, ২০১৮ সালে আনন্দ টিভি, ২০২১ সালে নেক্সাস, ২০২২ সালে গ্লোবাল ও এখন টেলিভিশন নামে প্রায় ৪০টি স্যাটেলাইট টিভি চালু রয়েছে।

এসব টেলিভিশন সরকারের সততা ও স্বচ্ছতা তুলে ধরে জনগণের কাছে সত্য সংবাদ পরিবেশন করছে। শক্তিশালী গণমাধ্যম হিসেবে বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন সরকারের কোনো ধরনের চাপ বা নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই তথ্যপ্রচার করতে পারছে। একটি গণতান্ত্রিক সরকারের এটি একটি স্বচ্ছতার ও পরমত সহিষ্ণুতার দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশের উন্নয়ন সমৃদ্ধি জনগণের কাছে যত সহজে পৌঁছতে পারবে, সরকারের কর্মসূচি বাস্তবায়ন ততো সহজ হবে, বর্তমান সরকার সে নীতিমালা সামনে রেখেই আগামীর উন্নত বাংলাদেশ নির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ গঠনে টেলিভিশনগুলো সত্য ও ন্যায়ের পথে থেকে সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

টেলিভিশনের মাধ্যমে শিক্ষা - একটি চিত্তাকর্ষক শিক্ষণ সহায়তা

টিভি শিক্ষার একটি কার্যকর শিক্ষণ সহায়ক। টেলিভিশন বিজ্ঞানের এক অপূর্ব উপহার। বাড়ির মতো, এটি স্কুলেও খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। দেশের কিছু স্কুলে, শিক্ষার্থীরা টিভির মাধ্যমেও শিক্ষা লাভ করে। নিঃসন্দেহে, শ্রেণীকক্ষে একটি প্রচলিত পাঠ পড়া

টেলিভিশনের মাধ্যমে শিক্ষা
Taken from Exam.com

প্রায়ই বিরক্তিকর। এটা ছাত্রদের অধিকাংশ আবেদন করে না. ফলে তারা এতে মানসিকভাবে উপস্থিত থাকে না। এর মানে তারা শারীরিকভাবে ক্লাস-রুমে, মানসিকভাবে নয়। আর পাঠের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির জন্য টিভি একটি ভালো উৎস। এই তরুণ-তরুণীদের মনের ওপর এর প্রভাব কেউই বলতে পারবে না।শিক্ষার্থীরা টেলিভিশন পিরিয়ডে উপস্থিত হতে আগ্রহী। এটি তাদের শিক্ষা এবং বিনোদন উভয়ই প্রদান করে। সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হলো টিভি শিক্ষক কর্ম চলাকালীন তাদের কাছে কোনো প্রশ্ন রাখেন না বা করতে পারেন না। এ কারণে শিক্ষার্থীদের কোনো চিন্তা নেই, ভয় নেই।তাই ক্লাস-রুম ফোবিয়া অদৃশ্য হয়ে যায়। এই শিক্ষণ সহায়তা তাদের পাঠে মনোযোগ দিতে সাহায্য করে। এমনকি নিচের গড়পড়তা ছেলেটির মুখেও হাসি আছে। সেও ক্লাস-রুমের পড়াশোনায় আগ্রহ নিতে শুরু করে।

শিক্ষায় টেলিভিশনের ভূমিকা - একটি কার্যকর টিচিং এইড টিভি

টিভির মাধ্যমে শিক্ষাদানের প্রক্রিয়াটি বেশ আরামদায়ক। পাঠ শেষ হওয়ার সাথে সাথে কিছু সময়ের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা কিছুটা বিশ্রাম পায়। এরপরই শুরু হয় শিক্ষক ও শিক্ষকের মধ্যে আলোচনা।শিক্ষক এমনকি নিস্তেজ ছাত্রদেরও এই ধরনের আলোচনায় আগ্রহী দেখতে পান। এখন পিছনের বেঞ্চাররা সামনের বেঞ্চ নিতে এগিয়ে আসে। এটা তাদের বর্ধিত আত্মবিশ্বাস দেখায়।কিছু ভালো স্কুলে টেলিভিশন ক্লাব আছে। শিক্ষক ও সমাজের কয়েকজন বুদ্ধিজীবী তাদের সদস্য। তাদের নির্দিষ্ট বৈঠকের সময়সূচি রয়েছে। এমনকি তারা অল ইন্ডিয়া রেডিওতে তাদের পাঠ পাঠায়।

AIR শিক্ষক/বুদ্ধিজীবীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত পরামর্শের ভিত্তিতে প্রোগ্রাম (পাঠ এবং শিক্ষণ সহায়ক) প্রস্তুত করে। এমনকি সরকার টিভি ক্লাসের জন্য দেশের সেরা শিক্ষকদের কাছ থেকে পাঠ এবং শিক্ষণ সহায়তা প্রদান করে।কোনো সন্দেহ নেই, টিভির মাধ্যমে শিক্ষা শীঘ্রই ছড়িয়ে পড়বে। সরকার সব স্কুলে টেলিভিশন দেওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। কিন্তু টাকা একটা বড় সমস্যা। কিছু স্কুলে টিভি কেনার জন্য পর্যাপ্ত তহবিল নেই।একটা অপূর্ণতাও আছে। খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের কিছু পাঠ এখনও পাওয়া যায় না বা শিক্ষণ সহায়কের অভাবে প্রস্তুতি চলছে।

টেলিভিশন একটি শিক্ষণ বিষয়ের একটি সম্পূর্ণ চিত্র প্রদান করে। শিক্ষার্থীরা বিমূর্ত ধারণা বা বস্তুর পাঠগুলি সহজেই বুঝতে পারে। আমরা ক্লাস-রুমে আরামে বসে পাঠ শিখতে পারি। খুব বেশি শাসনের দরকার নেই, তিরস্কারের, টেনশনের দরকার নেই।শিক্ষার্থীরা এমন বিষয়গুলিতে ফোকাস করতে শেখে যা স্ব-অধ্যয়নের একটি ভাল অভ্যাসের দিকে পরিচালিত করে। শিক্ষার্থীরা আত্মবিশ্বাস পায়। একভাবে, এটি শেখার একটি ব্যবহারিক উপায়, তাত্ত্বিক নয়।

এবং বাংলাদেশের মতো একটি বড় দেশের জন্য, টিভির মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান একটি বড় বর হতে পারে। এটি একটি সস্তা, আকর্ষণীয়, নির্ভীক, স্ব-প্রণোদিত, ব্যবহারিক উপায়-শিক্ষণ পদ্ধতি।দেশে যখন ভালো শিক্ষকের অভাব থাকে তখন মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের জন্যও এটি ভালো। এ কারণেই টেলিভিশনের মাধ্যমে শিক্ষা এই পদ্ধতিটি সব বয়সের ছাত্র ও শিক্ষকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।


শুধু কি তাই, আজকের অভিভাবকরা নিজেদের ছেলের সামনে কোন অপরাধমূলক কাজ করতে দ্বিধা করেন না, তাই তারা কোনমুখে তার ছেলেমেয়েদের সাবধান করবেন, সজাগ করবেন? নিজের ছেলেকে তারা ‘হি-ম্যান’ বানাতে চান, বড় আহ্লাদে কিনে দেন খেলনা বন্দুক, কিনে দেন জঙ্গী পােশাক, যােগাড় করে দেন ‘কম্যান্ডাে স্টিকার। তাই আজকের ছাত্রসমাজের আদর্শ তার বাবা নয়, কোন মহাপুরুষ নয়-র্যাম্বো অথবা এই। জাতীয় কোন নব্য সংস্করণ। কোন এক সাংবাদিক তাই লিখেছেন—“বলটা তাই আপাতত অভিভাবকের কোর্টে। টিভির বন্ধনমুক্তিতে আপনি উল্লসিত? ঘরে। বসে দেখতে চান দারুণ সব অ্যাকশন, প্রাণভরে দেখুন, সপরিবারে। দেখুন। শুধু মনে রাখবেন ঐ অ্যাকশানের মুখােমুখি হতে পারেন আপনিও। আজ হােক কাল, কাল না হােল্ক পরশু। মুখােমুখি হতে পারেন আপনার শহরে, আপনার পাড়ায়, হয়তাে আপনার নিজের ঘরে। তখন টিভিকে দোষ দেবেন না। যা খুশি দেখা আর দেখানাের স্বাধীনতা পেতে চাইলে তার জন্য কিছু মূল্য তাে গুণে দিতেই হবে।”


তথ্যসুত্র:

টেলিভিশন কীভাবে কাজ করে, Jugantor.

প্রযুক্তির অগ্রযাত্রা, Prothomalo.

রঙিন টেলিভিশন, Wikipedia.

টেলিভিশন এর সুবিধা, Gorbitobangla.

টেলিভিশনের প্রভাব, Wbanswer.

টেলিভিশনের মাধ্যমে শিক্ষা, Examweb.

গণমাধ্যম টেলিভিশনের ভূমিকা, Alokitobangla.

Subscribe for Daily Newsletter