আমরা সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ চাই (Terrorism-Free Society)
সন্ত্রাসের শুরুটাই হল অসহিষ্ণুতা, হীনমন্যতা, ভারসাম্যহীন প্রেরণা তথা Disorganized thinking process এবং নষ্ট ইল্যুশনের মধ্য দিয়ে। এই নষ্ট মাইন্ডসেট উদ্ভুত চিন্তা-চেতনা সন্ত্রাসীর মনোজগতে এমন ক্রোধ ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ ইচ্ছা সৃষ্টি করে যা তাকে টেনে নেয় হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে। এই নষ্ট কর্মের মধ্য দিয়ে নিজেদের ক্ষমতা বিস্তার করার পরিবেশ তৈরি হয় বলে মনে করে সন্ত্রাসীচক্র এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকগণ। সন্ত্রাসীকর্ম প্রতিটি সন্ত্রাসীকে উচ্চমাপে নিয়ে যায় বলে তারা বিশ্বাস করে। একে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর চিন্তা ও পরিচয় অধিকতর পরিচিত করবার পথ বলে মনে করে সন্ত্রাসের পথে পা-দেওয়া মানুষগুলো।
সকল যুদ্ধই আরও যুদ্ধ, সংঘাত ও সন্ত্রাস টেনে আনে
আপাতদৃষ্টিতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বিচ্ছিন্নভাবে সংগঠিত (Organized) বা অসংগঠিত (Disorganized)– দুধরনেরই হতে পারে। জটিল, দীর্ঘস্থায়ী ও বড় সন্ত্রাসগুলো অপেক্ষাকৃত সংগঠিত অপরাধ চিন্তার ফসল। ব্যক্তি ও গোষ্ঠী নিজেদের ইচ্ছা ও কল্পনাপ্রসূত চিন্তা সত্য জেনে পরিকল্পিতভাবে এমন ধ্বংসাত্মক কাজ করে যা রাষ্ট্র বা সমাজে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে।সন্ত্রাসের সর্বোচ্চ রূপই হল জাতিগত যুদ্ধ এবং পররাজ্যে আগ্রাসন– যা কিনা একটি সম্পূর্ণ সংগঠিত অপরাধ (Organized Crime)। সকল যুদ্ধই আরও যুদ্ধ, সংঘাত ও সন্ত্রাস টেনে আনে।
‘মাদক থেকে দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সৃষ্টি হয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিতে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ার দিকে বিশেষ নজর দিতে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মাদক থেকে দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সৃষ্টি হয়। আমাদের সমাজ এর থেকে মুক্তি লাভ করুক। আমরা চাই যে, জনপ্রতিনিধিরা জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ যত্নবান হবেন।’ গত রবিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আয়োজিত স্থানীয় সরকার দিবস-২০২৪ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
আজকে বাংলাদেশের একটি ধাপ উত্তরণ ঘটেছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের সবাইকে বলব- ২০০৯ সাল থেকে আমরা সরকারে আছি। আজকে বাংলাদেশের একটি ধাপ উত্তরণ ঘটেছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এটা যেন পিছিয়ে না যায়। সেদিকে লক্ষ রেখেই আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব এবং জনসেবা আপনারা করে যাবেন। আমরা যেন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বড় কথা- সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত করে সমাজকে গড়ে তুলতে হবে। সেদিকে আপনাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ এ মাদকের একটি বিরূপ প্রভাব রয়েছে। এ থেকেই আবার দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সৃষ্টি হয়। এগুলো থেকে যেন আমাদের সমাজ রক্ষা পায়, সেদিকে বিশেষ যত্নবান হয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করে আপনারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন, সেটাই আমরা চাই।
বস্তুত সন্ত্রাসের অর্থায়ন করছে যারা তারা বাংলাদেশকেই চাইনি
বস্তুত সন্ত্রাসের অর্থায়ন করছে যারা তারা বাংলাদেশকেই চাইনি। এরা একাত্তরে হানাদার পাকিস্তানিদের পাশে থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লড়েছে। বাংলাদেশ হৃদয়কে খাবলে খাবলে রক্তাক্ত করেছে। অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও মানবিক চেতনার বিপক্ষের এই মানুষগুলো একাত্তরে পরাজিত হলেও পঁচাত্তরের পর ফের বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় রূপান্তরের চেষ্টা করে।
অপশক্তি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সম্প্রসারণে অঢেল অর্থ কড়ির জোগান দিয়ে যাচ্ছে
সেই হীন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে তীব্র রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগ্রাম করে বাঙালি তার কাক্সিক্ষত বাংলাদেশকে ফিরে পেলেও ওই অপশক্তি নিঃশেষ কিন্তু হয়ে যায়নি। তারা বরং এই সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সাম্প্রদায়িক ও মধ্যযুগীয় অমানবিক ধ্যান ধারণা বুনে দিতে অনেকটাই সক্ষম হয়েছে।ব্যবসা-বাণিজ্য ও প্রশাসনে তারা তাদের সমর্থক গোষ্ঠী তৈরি করতে পেরেছে। তাদের হাতে যে প্রচুর অর্থ জমেছে সে কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। বর্তমানে ঘাপটি মেরে বসে থাকা এই অপশক্তি দশের ভেতরে অশান্তি করার অভিপ্রায় নিয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সম্প্রসারণে অঢেল অর্থ কড়ির জোগান দিয়ে যাচ্ছে। এদের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীদের যোগাযোগ থাকাটা মোটেও অস্বাভাবিক নয়।
এদের টার্গেট হচ্ছে ‘অ্যাডভেঞ্চার’ প্রিয় তরুণ প্রজন্ম
বিশেষ করে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী বিদেশি একটি বিশেষ দেশের গোয়েন্দা সংস্থা এই অপকর্মের অর্থায়নে সক্রিয় রয়েছে বলে অভিজ্ঞ মহলের ধারণা। এদের টার্গেট হচ্ছে ‘অ্যাডভেঞ্চার’ প্রিয় তরুণ প্রজন্ম। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় উপযুক্ত দেশপ্রেম ও সাংস্কৃতিক শুভশক্তি বিকাশের সুযোগ কম থাকায় তারা সহজেই তরুণদের একাংশের মনে ধর্মীয় অপব্যাখ্যার মাধ্যমে সন্ত্রাস ও জঙ্গিপনার বীজ ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হচ্ছে।
শিক্ষার প্রতিটি স্তরে এই শুভশক্তির উত্থান ঘটানো জরুরি হয়ে পড়েছে
আমাদের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের বাংলাদেশ সৃষ্টির পেছনে যে আধুনিক আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চেতনা কাজ করছিল তা ঠিক মতো জানাতে পারছি না। আর সন্ত্রাসের মদদদাতা অপশক্তি এই শূন্যতার পূর্ণ সুযোগ গ্রহণ করছে। তারা এই অপকর্মে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢালছে।এখনও সময় আছে আমাদের সন্তানদের গুণমানের লেখাপড়ার পাশাপাশি স্বদেশের মুক্তিযুদ্ধ সমৃদ্ধ সঠিক ইতিহাস, অর্জন এবং মহৎ মানবিক গুণাবলীর সঙ্গে পরিচিত করে তোলার। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে চলমান সামাজিক আন্দোলনকে আরও শক্ত পাটাতনের ওপর দাঁড় করানোর স্বার্থেই শিক্ষার প্রতিটি স্তরে এই শুভশক্তির উত্থান ঘটানো জরুরি হয়ে পড়েছে।
সামাজিক আন্দোলনের ফসল হিসেবে দৃশ্যমান হবে মাদকমুক্ত নির্মল সমাজ
নির্দয়তা ও দুঃশাসন শিশুদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি করে এবং সেই ক্ষোভ আর হতাশা থেকেই তারা একসময় মাদকসহ নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ফলে জীবন ও সমাজ হয়ে ওঠে আরো অস্থির। তাই মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রথম স্থানটি হওয়া উচিত প্রতিটি পরিবার। নেতৃত্ব দিতে হবে পরিবারের প্রধানকে। অভিভাবকদের নেতৃত্বে পরিবার থেকে শুরু হওয়া সেই আন্দোলনই একসময় সামাজিক আন্দোলনে রূপ নেবে। আর সেই সফল সামাজিক আন্দোলনের ফসল হিসেবে দৃশ্যমান হবে মাদকমুক্ত নির্মল সমাজ।
মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠন হোক আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার
মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে নিজের ঘর নিজেকেই সামলাতে হবে। নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্যের কথা ভুলে গিয়ে নিজেকে সামাজিক দায়বদ্ধতার আড়ালে রেখে অন্যকে দায়ী করা মোটেও যুক্তিযুক্ত নয় বলে আমি মনে করি। সমাজ ও দেশকে মাদকমুক্ত করা বা রাখা সমাজের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমরা প্রত্যেকে যদি আমাদের নিজ নিজ পরিবারকে মাদকমুক্ত রাখতে পারি, তাহলেই আমরা মাদকমুক্ত নির্মল সমাজ তথা একটি সুন্দর দেশ আশা করতে পারি। তাই মুজিববর্ষের এই বিজয়ের মাসে মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠন হোক আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার।
আমরা মাস্তান ও সন্ত্রাসমুক্ত পৃথিবী চাই
আমরা মাস্তান ও সন্ত্রাসমুক্ত পৃথিবী চাই। যদিও প্রাচীনকাল হইতেই চলিয়া আসিতেছে যুদ্ধ-বিগ্রহ। ইহাতে মাস্তানি মাস্তানির জায়গায় রহিয়াছে, সন্ত্রাস রহিয়াছে সন্ত্রাসের জায়গায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর লিগ অব ন্যাশনস যেমন, তেমনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীতে শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ হইয়াছে জাতিসংঘ। এই ক্ষেত্রে জাতিসংঘকে আমরা আখ্যায়িত করি ঠুঁটো জগন্নাথ হিসাবে। গ্রামে-গঞ্জে যেভাবে মাস্তানরা অপরাধ করিয়াও সকলের চোখের সম্মুখে ঘোরাফেরা করে, তেমনি বিশ্বে শক্তিধররা সকলের নাকের ডগায় মানবতা লঙ্ঘন করিয়াও পার পাইয়া যাইতেছে। এই শক্তিধরদের উল্লম্ফনের শেষ কোথায়, ইহাই বড় প্রশ্ন।
সন্ত্রাসীরা কখনো সৃষ্টিকর্তার উপাসনা করে না, তারা মৃত্যুর উপাসনা কর
সন্ত্রাসীরা কখনো সৃষ্টিকর্তার উপাসনা করে না, তারা মৃত্যুর উপাসনা করে। আমরা যদি এ সংগঠিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কাজ না করি, আমরা জানি তারপর কি ঘটবে। সন্ত্রাসবাদের জীবন ধ্বংস আরো বিস্তার লাভ করবে। শান্তিপূর্ণ সমাজ সহিংসতায় নিমজ্জিত হবে। এবং বহু প্রজন্মের ভবিষ্যত দুঃখজনকভাবে ধ্বংস হবে। আমরা যদি এ ধরনের হত্যাকান্ডের নিন্দায় ঐক্যবদ্ধ না হই তাহলে আমরা শুধু আমাদের নিজেদের লোকেরই বিচারের সম্মুখীন হব না, ইতিহাসের কাঠগড়ায়ই শুধু দাঁড়াব না, আমরা সৃষ্টিকর্তার বিচারেরও সম্মুখীন হব। এটা শুধু বিভিন্ন ধর্ম, বিভিন্ন গোষ্ঠি অথবা বিভিন্ন সভ্যতার মধ্যকার লড়াই নয়। এটা হচ্ছে বর্বর অপরাধীদের মধ্যকার লড়াই যারা মানব জীবন এবং সকল ধর্মের যেসব সুন্দর লোক তাদের রক্ষা করতে চায় তাদের ধ্বংস করতে চায়।
একটি উন্নত ভবিষ্যত তখনি সম্ভব যদি আপনার দেশ সন্ত্রাসী ও উগ্রবাদীদের বিতাড়িত করে
এটি হচ্ছে দু’ ভবিষ্যতের মধ্যে একটিকে বেছে নেয়া- এ পছন্দ আমেরিকা আপনাদের বেছে দিতে পারে না। একটি উন্নত ভবিষ্যত তখনি সম্ভব যদি আপনার দেশ সন্ত্রাসী ও উগ্রবাদীদের বিতাড়িত করে। অতএব তাদের বিতাড়িত করুন।আপনাদের মসজিদ থেকে তাদের বিতাড়িত করুন। আপনাদের সমাজ থেকে তাদের বিতাড়িত করুন। আপনাদের পবিত্র ভূমি থেকে তাদের বিতাড়িত করুন এবং এ বিশ^ থেকে তাদের বিতাড়িত করুন। আমাদের পক্ষ থেকে আমেরিকা উদ্ভূত হুমকি ও নতুন ঘটনা মোকাবেলায় তার কৌশল সমন্বয় করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা সে সব কৌশল বাতিল করব যা কাজ করেনি এবং অভিজ্ঞতা ও বিচার দ্বারা তথ্যায়িত নতুন পথ অবলম্বন করব। আমরা অভিন্ন মূল্যবোধ ও স্বার্থের ভিত্তিতে নীতিগত বাস্তবতা অবলম্বন করব। আমাদের বন্ধুরা আমাদের সমর্থন নিয়ে কখনো প্রশ্ন তুলবে না, আমাদের শত্রুরা আমাদের আমাদের দৃঢ়তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করবে না। আমাদের অংশীদারিত্ব স্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে নিরাপত্তা এগিয়ে নেবে, চরম বিচ্ছিন্নতার মধ্য দিয়ে নয়।
আমরা ধীরে ধীরে সংস্কার চাইব, হঠাৎ হস্তক্ষেপ নয়
আমরা বাস্তব-বিশ^ ফলাফলের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেব, অনমনীয় মতবাদের ভিত্তিতে নয়। আমরা অভিজ্ঞতার শিক্ষা দ্বারা চালিত হব , নিরাপস চিন্তার সীমাবদ্ধতা দিয়ে নয়। এবং যেখানে সম্ভব আমরা ধীরে ধীরে সংস্কার চাইব, হঠাৎ হস্তক্ষেপ নয়। আমরা অবশ্যই অংশীদার চাইব, উৎকর্ষ নয় এবং যারা আমাদের সাথে অভিন্ন লক্ষ্য, তাদের সবাই মিত্র হবে। সর্বোপরি আমেরিকা শান্তি চায়, যুদ্ধ নয়। আমরা যদি সন্ত্রাসবাদকে পরাজিত করতে চাই এবং তাদের দুষ্ট মতবাদকে বিস্মৃতির অতলে পাঠাতে চাই তাহলে মুসলিম দেশগুলোকে ব্যয়ভার বহন করতে রাজি হতে হবে। এ যৌথ প্রচেষ্টায় আপনাদের দেশের প্রথম কাজ হবে অশুভ শক্তির যোদ্ধাদের জন্য সকল ভূখন্ড নিষিদ্ধ করা। এ অঞ্চলের প্রত্যেকটি দেশকে এটা নিশ্চিত করা বিশেষ দায়িত্ব যাতে সন্ত্রাসীরা তাদের মাটিতে কোনো আশ্রয় না পায়।
নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না যে, এক সময়ের সন্ত্রাস কবলিত জনপদে চরমপন্থি নামধারী অবৈধ অস্ত্রধারীদের অস্ত্রের ঝনঝনানি এখন নেই। আছে চাঁদাবাজ, ডাকাত, ছিনতাইকারী, অপহরকচক্রসহ চোর। একের পর এক ডাকাতির খবর পত্রিকার পাতায় উঠে আসছে। অনেক খবর আড়ালেও রয়ে যাচ্ছে। অপহরণেরও সব খবর পত্রিকার পাতায় ঠাঁই পাচ্ছে না। নানা শঙ্কায় অপহৃতকে উদ্ধার তৎপরতা গোপনেই চালানো হয়।
চাঁদাবাজির শিকার ব্যক্তি গোপনে আপস করে নিজেকে নিরাপদ ভাবতে থাকে
চাঁদাবাজদের উৎপাতের সকল খবরও সব সময় সাংবাদিকেরা টের পান না। কারণ চাঁদাবাজির শিকার ব্যক্তি গোপনে আপস করে নিজেকে নিরাপদ ভাবতে থাকে। থানায় নালিশ দুরস্ত প্রতিবেশীদের কাছেও গোপন রাখে চাঁদাবাজির শিকারের বিষয়টি। অপহরণের বিষয়টিও অনেক ক্ষেত্রে গোপন করা হয় অপহৃতকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত পাওয়ার আশায়। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন, গোপন করে বা চাঁদাবাজ অপহরকচক্রের সাথে আপস কী অপরাধীদের অপতৎপরতাকে উসকে দেয়া নয়? কেউ কেউ পাল্টা প্রশ্ন তুলে বলতেই পারেন, পুলিশে নালিশ করে কতোটা প্রতিকার মিলেছে? মেলে, মেলে না। এরপরও পুলিশই তো ভরসা। পুলিশের সকল অফিসার তো আর এক নন। গোপনে সন্ত্রাসীদের সাথে আপস মানে তাদেরকে আরো ভয়ঙ্কর করে তুলতে উৎসাহিত করা। যার কুফল থেকে গোপনকারীও পরবর্তীতে মুক্ত থাকতে পারেন না।
অবশ্যই পুলিশি তৎপরতা জোরদার করা দরকার। পুলিশের আন্তরিকতা এলাকাবাসীকে শুধু সাহসী করে না, অপরাধীদের সম্পর্কে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করারও মানসিকতা গড়ে তোলে। অবশ্য কখনো কখনো পুলিশকে সহযোগিতা দূরের কথা, চাঁদাবাজির শিকার হওয়ার পরও পুলিশে নালিশ করতেও তেমন আগ্রহ দেখান না। আড়ালে তদন্ত এবং অপরাধী ধরতে গড়িমসি। পুলিশকে জনগণের সহযোগিতার মতো তৎপর হওয়া যেমন দরকার, তেমনই জনগণকেও এলাকার অপরাধী সম্পর্কে গোপনে তথ্য দিয়ে সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনে দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন।
তথ্যসুত্র
সময়ের সন্ত্রাস কবলিত, Mathabhanga.
সন্ত্রাসবাদের জীবন ধ্বংস, Dailyinqilqb.
জাতীয় রাজনীতির অধীন।, Bonikbarta.
সন্ত্রাসমুক্ত পৃথিবী চাই, Ittefaq.
সন্ত্রাসী কার্যক্রম বিচ্ছিন্নভাবে , BD News24.
দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ার, Protidinersangbad.
মাদকমুক্ত পরিবেশে , Ittefaq.
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এক সুদৃঢ় , Jugantor.