ভিটামিন সি (Vitamin C)

2q2ভিটামিন সি, যা অ্যাসকরবিক অ্যাসিড নামেও পরিচিত, এটি একটি জল-দ্রবণীয় ভিটামিন যা মানবদেহে কোলাজেন উত্পাদন, প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রতিরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন সি এর ঘাটতি প্রায়ই অপর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণের কারণে দেখা দেয়, বিশেষ করে যারা সীমিত ফল ও সবজি খায় তাদের মধ্যে।
রসায়নের ভাষায় ভিটামিন-সি এর নাম হলো অ্যাসকরবিক অ্যাসিড। এটি একটি অম্লধর্মী জৈব যৌগ ও সাদা দানাদার পদার্থ। যা শাকসবজি ও টক ফলমূলে বেশি পাওয়া যায়। মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণী ও উদ্ভিদের জন্য এটি একটি প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান।‘ভিটামিন-সি’ দ্বারা মূলত এর একাধিক ভিটামারকে বোঝানো হয়। যেগুলো প্রাণী ও উদ্ভিদের দেহে ভিটামিন-সি এর মতোই কাজ করে। এসব ভিটামারের মধ্যে অ্যাসকরবিক অ্যাসিডসহ এর বিভিন্ন লবণ এবং ডিহাইড্রোঅ্যাসকরবিক অ্যাসিডের মতো কিছু জারিত যৌগও বিদ্যমান।
১৯১২ সালে ভিটামিন সি আবিষ্কৃত হয়। এটিই প্রথম ভিটামিন যেটি রাসায়নিকভাবে প্রস্তুত করা হয়েছিলো। ভিটামিনটির আবিষ্কারের পেছনে আছে এক দীর্ঘ ইতিহাস।এই আবিষ্কারে একজন ব্যক্তির নাম ওতোপ্রোতভাবে জড়িত- তিনি হলেন অ্যালবার্ট জেন্ট গিয়র্গি। ১৯৩৭ সালে এ আবিষ্কারের জন্য তিনি চিকিৎসাবিদ্যায় এবং ওয়াল্টার নরম্যান হাওরথ রসায়নে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন।
ভিটামিন সি কেন খাবেন?
আমাদের দেশে কাঁচা সবজি খাওয়ার অভ্যাস নেই বলে ভিটামিন সি-এর অভাব হতে দেখা যায়। এই ভিটামিন পানি ও তাপে নষ্ট হয়। সে জন্য সতর্কতার সঙ্গে এ ভিটামিন গ্রহণ করা উচিত। এর অভাবে স্কার্ভি নামক রোগ হয়। যাতে ত্বক ফেটে যায় এবং দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়তে থাকে। ভিটামিন সি খাবারের লৌহ শোষণে সাহায্য করে রক্তস্বল্পতা দূর করে। বিভিন্নভাবে ভিটামিন সি নষ্ট হয়
ভিটামিন সি ঘরেই আছে
প্রতিদিনই নির্দিষ্ট পরিমাণে ভিটামিন সি খেতে হয়। যেমন শিশুদের ৩০ থেকে ৩৫ মিলিগ্রাম, প্রাপ্তবয়স্কদের ৪৫ মিলিগ্রাম, গর্ভবতী মায়েদের ৫৫ মিলিগ্রাম ও প্রসূতি মায়েদের ৭০ মিলিগ্রাম।
শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি-এর গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে করোনাভাইরাসের এই মহামারির সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি জরুরি। তাই বলে ভিটামিন সি-এর চাহিদা মেটাতে দোকান থেকে কিনে খেতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ ফল ও শাকসবজি রাখলেই দৈনিক চাহিদা পূরণ হয়ে যায়।
ভিটামিন সি পানিতে দ্রবণীয়। তাই শরীরে সঞ্চিত থাকে না। এই ভিটামিন প্রয়োজনের অতিরিক্ত গ্রহণ করলে তা প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। তাই প্রতিদিনই নির্দিষ্ট পরিমাণে ভিটামিন সি খেতে হয়। যেমন শিশুদের ৩০ থেকে ৩৫ মিলিগ্রাম, প্রাপ্তবয়স্কদের ৪৫ মিলিগ্রাম, গর্ভবতী মায়েদের ৫৫ মিলিগ্রাম ও প্রসূতি মায়েদের ৭০ মিলিগ্রাম।
ভিটামিন সি-র অভাবে কী কী রোগ হয়
স্কার্ভি (Scurvy): স্কার্ভি হল ভিটামিন সি -র অভাবের সঙ্গে যুক্ত সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রোগ। খাদ্যে ভিটামিন সি-র অভাব হলে দাঁতের মাড়িতে ক্ষত সৃষ্টি হয়, মাড়ি থেকে রক্তপাত হয়। এছাড়াও দুর্বলতা, ক্লান্তি, ফুসকুড়ি এবং আরও অনেক কিছু হয়। প্রাথমিক উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে ক্লান্তি, খিদে কম হওয়া, বিরক্তি এবং জয়েন্টে ব্যথাও হতে পারে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করা হলে রক্তাল্পতা, মাড়ির প্রদাহ, ত্বকের রক্তক্ষরণ ইত্যাদি হতে পারে।
হাইপারথাইরয়েডিজম (Hyperthyroidism): হাইপারথাইরয়েডিজম হল যখন থাইরয়েড গ্রন্থি অতিরিক্ত হরমোন নিঃসরণ করে। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির সঙ্গে ভিটামিন সি থাইরয়েড ঠিক রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘস্থায়ী ভিটামিন সি-র অভাবে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে হরমোনের অতিরিক্ত নিঃসরণ হতে পারে, যা হাইপারথাইরয়েডিজমের দিকে নিয়ে যায়। যার ফলে ওজন কমে যায়, হৃদস্পন্দন বাড়ে, খিদে বাড়ে। এছাড়াও মহিলাদের রজঃস্রাবের সময় ও ধরনে পরিবর্তন-সহ আরও অনেক কিছু হতে পারে।
রক্তাল্পতা (Anaemia): খাদ্য় তালিকায় ভিটামিন সি অন্তর্ভুক্ত করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য উপকারিতা ছাড়াও ভিটামিন সি আয়রন শোষণে সাহায্য করে, যা রক্তাল্পতার মতো রোগ প্রতিরোধের জন্য অত্যাবশ্যক। যা শরীরের লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা কমে যাওয়ার একটি ফল। এই রোগের উপসর্গগুলি হল ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা, ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি।
মাড়ি থেকে রক্তপাত (Bleeding Gums): যখন আমাদের দাঁতের স্বাস্থ্যের কথা আসে, ভিটামিন সি সেক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি শুধু দাঁতকেই মজবুত করে না, মাড়িকেও রক্ষা করে। অতএব, ভিটামিন সি-র অভাবে মাড়ি থেকে রক্ত পড়া এবং মাড়ির রোগ হতে পারে।
ত্বকের রোগ (Skin Diseases): ভিটামিন সি ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এটি কোলাজেন উৎপাদনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। কোলাজেন একটি প্রোটিন, যা ত্বক, চুল, জয়েন্ট ইত্যাদির মতো সংযোজক টিস্যুতে প্রচুর পরিমাণে থাকে, যা স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ভিটামিন সি আপনার শরীরের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
ভিটামিন সি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে পরিচিত। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে ভিটামিন সি-এর ভূমিকা আরও বোঝার চেষ্টা করা যাক:
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে ফ্রি র্যাডিকেল দ্বারা সৃষ্ট রাসায়নিক বিক্রিয়া প্রতিরোধ করে। ভিটামিন সি এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমূহের চোখের, রক্ত প্রবাহের চারপাশে সঞ্চালিত অণু এবং আমাদের কোষের ডিএনএর ক্ষতি প্রতিরোধ করে।অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে ভিটামিন সি-এর অন্য মূল কাজ হল আয়রনকে এমন অবস্থায় রূপান্তর করার ক্ষমতা যা অন্ত্রে আরও ভালভাবে শোষিত হয়।
ভিটামিন সি কোলাজেন তৈরির জন্য অপরিহার্য - একটি প্রোটিন যা শরীরের গঠনকে একত্রে রাখে। কোলাজেনের ঘাটতি দেখা দেয় দাঁতের ক্ষতি, মাড়িতে রক্তক্ষরণ এবং দুর্বল হাড়।ভিটামিন সি এর অবদান অপরিসীম মস্তিষ্ক স্বাস্থ্য কিছু নিউরোট্রান্সমিটার যা মস্তিষ্কের চারপাশে এবং আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং আদেশ বহন করে তাদের মসৃণ কার্যকারিতার জন্য ভিটামিন সি এর উপর অনেক বেশি নির্ভর করে।
ভিটামিন সি আপনার শরীর ও মনের মসৃণ কার্যকারিতার জন্য অপরিহার্য এবং ফল ও সবজির আকারে প্রকৃতিতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এগুলিকে আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করুন এবং একটি সুখী জীবনযাপন করুন স্বাস্থ্যকর জীবন.
ভিটামিন সি-এর উপকারিতা
বলুন তো, কোন ভিটামিন শরীরের সবচেয়ে উপকারী বন্ধু? জানি উত্তরটা রয়েছে আপনাদের কাছে! সবচেয়ে উপকারী ভিটামিনের প্রসঙ্গ উঠলে 'সি'-এর সঙ্গে টেক্কা দেওয়া কঠিন! অ্যান্টিঅক্সিডান্টে ভরপুর ভিটামিন সি শুধু শরীরের পক্ষেই উপকারী নয়, আপনার ত্বকেরও সবচেয়ে কাছের বন্ধু! সিরাম, ময়শ্চারাইজার আর ক্রিম আকারে ভিটামিন সি মাখলে তা অসমান ত্বকের রং, ত্বকের নিষ্প্রাণভাব, সূক্ষ্মরেখা, অমসৃণ খসখসেভাব, ব্রণর দাগ, এ সব কিছু থেকেই মুক্তি দিতে পারে।
কাজেই আপনার দৈনন্দিন ত্বক পরিচর্যার রুটিনে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ প্রডাক্ট যোগ করা অত্যন্ত জরুরি। তবে তার জন্য বাড়তি খাটনি হবে না আপনার। সত্যি বলতে ভিটামিন সি আপনার ত্বকের এতরকম সমস্যার খেয়াল রাখবে যে আলাদা করে বিস্তারিত স্কিনকেয়ার রুটিন মেনে চলার দরকারই পড়বে না! দেখে নিন কী কী কারণে নিজের রূপচর্চার উপাদানের তালিকায় একদম প্রথমে রাখবেন ভিটামিন সি।
৫ লক্ষণ: বলে দিতে পারে শরীরে ভিটামিন সি-এর অভাব রয়েছে কি না
ক্লান্তি: কায়িক পরিশ্রম না করেও হঠাৎ যদি খুব ক্লান্ত লাগে, তা হলে রক্তে ভিটামিন সি-এর মাত্রা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াই ভাল। কারণ, ভিটামিন সি শরীরে কার্নিটিন নামক একটি অণু উৎপাদনে সহায়তা করে। সেটিই দেহের ফ্যাটকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে।
থাইরয়েডের সমস্যা: ভিটামিন সি-র অভাব হলে শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যেতে পারে। হঠাৎ হাইপারথাইরয়েডিজমের সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত ওজন কমে যাওয়া, খিদে চলে যাওয়া, বুক ধড়ফড় করার মতো লক্ষণ দেখা যায়।
ত্বকের রোগ: ভিটামিন সি–র অভাবে ত্বকের নানা রোগ হতে পারে। ত্বক জ্বালা করে, চুলকায়। ভিটামিন সি-তে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে, যা কোলাজেন উৎপাদনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। কোলাজেন প্রোটিনটি স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
মাড়ি থেকে রক্ত পড়া: শরীরে এই ভিটামিনের অভাবে মাড়ি থেকে রক্ত পড়া এবং মাড়ির রোগ হতে পারে। হতে পারে স্কার্ভি রোগও।
রক্তাল্পতা: শরীরে আয়রন শোষণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় ভিটামিন সি। শরীরে এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে আয়রন শোষণের হার কমে যায় ফলে রক্তাল্পতার মতো রোগ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার অভাবও হয়।
ভিটামিন সি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি এর গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে করোনাভাইরাসের এই মহামারির সময় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ভিটামিন সি এর জুড়ি মেলা ভার। পাশাপাশি এটি ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের বিরুদ্ধেও লড়াই করে।
পাশাপাশি হাড় ও দাঁতের জন্যও ভিটামিন সি অনেক উপকারী। এটি ত্বকের টিস্যুর গঠনেও সরাসরি অংশ নেয়। যেকোনো ক্ষত খুব তাড়াতাড়ি সাড়িয়ে তুলতেও এই ভিটামিনের বিকল্প নেই। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসাবে ক্ষতিকর ফ্রি-রেডিক্যাল থেকেও রক্ষা করে এটি। ভিটামিন-সি দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে।প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি’সমৃদ্ধ ফল ও শাকসবজি রাখলে সহজেই এর দৈনিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। ভিটামিন সি পানিতে দ্রবণীয় বিধায় এটি শরীরে সঞ্চিত থাকে না। এই ভিটামিন প্রয়োজনের অতিরিক্ত গ্রহণ করলে তা প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়।
ভিটামিন সি কোন খাবারে আছে?
ভিটামিন সি সবচেয়ে শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এটি দেহের ক্ষতিকর পদার্থ থেকে রক্ষা করে। বিশেষ করে চোখের লেন্স, কোষের ভেতরকার নিউক্লিয়াস, ত্বক ও হাড়ের কোলাজেনকে সুরক্ষা দেয় ভিটামিন সি। মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য রক্ষা বা রক্তের লৌহ শোষণেও ভিটামিন সির ভূমিকা রয়েছে। মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটারের চলাচল ও তথ্য আদান-প্রদানে এটি ভূমিকা রাখে।
এই গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন মূলত শাকসবজিতেই পাওয়া যায়। লেবু ও লেবুজাতীয় সব টক ফল ভিটামিন সির চমৎকার উৎস। কমলা, মালটা, আঙুর, পেঁপে, আনারস, জাম ইত্যাদি ফলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। সবুজ পাতা গোত্রের সব সবজি ও শাকেও পাওয়া যাবে এই ভিটামিন। এ ছাড়া কিছু মসলাজাতীয় উদ্ভিদ যেমন: কাঁচা মরিচ, পুদিনাপাতা বা পার্সলেপাতা ভিটামিন সির ভালো উৎস।কাটা-ছেঁড়া বা অস্ত্রোপচারের পর ভিটামিন সি বেশি করে খাওয়া উচিত, এতে ঘা দ্রুত শুকায়। ঠান্ডা-সর্দি বা জ্বরেও এটি দ্রুত সারাতে সাহায্য করে। নিউট্রিশন ফ্যাক্ট।
ভিটামিন সি-এর সঙ্গে কোন উপাদানগুলি মেশানো চলবে না কোনওমতেই
আমাদের ত্বক পরিচর্যার রুটিনে যদি কোনও ম্যাজিক উপাদান থাকে, সেটি হল ভিটামিন সি। অত্যন্ত শক্তিশালী এই উপাদানটি ফ্রি র্যাডিক্যালের দৌরাত্ম্য কমায়, ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলোকে সুস্থ করে তুলে ত্বক তরুণ রাখে, কালো দাগছোপ কমায়, কোলাজেন তৈরির পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে এবং দূষিত ক্ষতিকর পদার্থ থেকে ত্বককে রক্ষা করে। কিন্তু ভিটামিন সি-এর সঙ্গে অন্য কোনও প্রডাক্ট যোগ করা বা মাখার সময় বিশেষ খেয়াল রাখা দরকার। হয়তো এই দুটি উপাদানই আলাদাভাবে আপনার ত্বকের পক্ষে খুবই উপকারী, কিন্তু তারা যদি একসঙ্গে মেশে, তা হলে ত্বকের পক্ষে তা হিতে বিপরীত হয়ে যেতে পারে। তাই জেনে নিন ভিটামিন সি-এর সঙ্গে কোন কোন উপাদান মেশানো চলবে না একেবারেই!
১. ভিটামিন সি+বেনজল পারঅক্সাইড, ২. ভিটামিন সি+রেটিনল, ৩. ভিটামিন সি + এএইচএ/বিএইচএ, ৪. ভিটামিন সি+নিয়াসিনামাইড
অতিরিক্ত ভিটামিন সি গ্রহণ করছেন? জেনে নিন ক্ষতিকর দিক
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পাশাপাশি আমরা ভিটামিন সি এর সাপ্লিমেন্ট খাচ্ছি। তবে আমরা যখন ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পাশপাশি ভিটামন সি সাপ্লিমেন্ট খাচ্ছি তখন তৈরি হবে আরো অনেক সমস্যা।
তবে অন্যান্য কোন খাবারের মত বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি খাওয়া শরীরের অনেক সমস্যা তৈরি করতে পারে।মানুষ যখন বেশি খায় বেশি খাওয়ার যে একটা খারাপ দিক আছে সে বিষয়টা ভুলে যায়।শরীরের জন্য ভিটামিন সি কতটা প্রয়োজন সে সম্পর্কে না জানা অতিরিক্ত ওষুধের কারণ হতে পারে।গবেষণা অনুসারে, প্রতিদিনি ৬৫ থেকে ৯০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খাওয়া উচিত উপরে ২ হাজার মিলিগ্রাম। একটি কমলাতে প্রায় ৫০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে, সুতরাং দিনে দুইটি কমলা খেলে শরীরে চাহিদা পূরণ হয়েও আরো বেশি হয়।
ভিটামিন সি খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
বেশি পরিমাণে শরীরে যে ধরণের সমস্যা দেখা দেয়।
ডায়রিয়া, পেটে ব্যাথা, বমি বমি ভাব, অনিদ্রা, ভিটামিন সি গ্রহণ যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট করাও আপনার জন্য জরুরী যেখানে সব পুষ্টি উপাদান থাকে। ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, পরিপূরকগুলি কেবলমাত্র পুষ্টির জন্যই তৈরি যা আপনি খাবার থেকে পান না।
দিনে কতটুকু ভিটামিন সি খাবেন?
অনেকেরই জানা নেই, দৈনিক কতটুকু ভিটামিন সি গ্রহণ করা জরুরি! বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) তথ্য অনুযায়ী, একজন ব্যক্তিকে প্রতিদিন গড়ে ৪৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খাওয়া উচিতঅনেকেই ভেবে থাকেন, অতিরিক্ত ভিটামিন সি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এ ধারণাটি ভুল। কারণ আপনি যদি দিনে ৪৫ মিলিগ্রামের বেশি ভিটামিন সি খান, সেটিও শরীরে থাকবে না। তাই অতিরিক্ত কোনো কিছু না খাওয়াই ভালো।
তথ্যসুত্র
ভিটামিন সি গ্রহণ করার বিকল্প নেই, Jago News.
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন , Kalerkantho.
সেটি হল ভিটামিন সি, Bebeautiful.
ভিটামিন সি সবচেয়ে শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, Prothomalo.
ভিটামিন-সি এর নাম হলো অ্যাসকরবিক অ্যাসিড, Jago News24.
ভিটামিন সি-এর অ্যান্টিঅক্সিডান্ট সংক্রান্ত উপকারিতা, Bebeautiful.
নিরাময়ে সাহায্য করে ভিটামিন সি, Anandabazar.
স্বাস্থ্য রক্ষায় ভিটামিন সি এর ভূমিকা, Narayanahealth.
সি -র অভাবে অনেক রোগ হতে পারে, Bengali.News18.
ভিটামিন সি পানিতে দ্রবণীয়।, Prothomalo.
ভিটামিন সি রক্ষা করার উপায়, Jugantor.