বাংলাদেশের শীতকালীন ফুল | Winter flowers of Bangladesh

বাংলাদেশের শীতকালীন ফুল | Winter flowers of Bangladesh

শীতকালে ফোটে যেসব ফুল

শীতের দিনগুলোতে ফুল ফোটে খুব ভালো। এ দিনের ফুলের সংখ্যাও প্রচুর। যদিও এসব ফুলের প্রায় সবই বিদেশি। শুধু সংখ্যায় যে এরা প্রচুর তা নয়, রূপ-বৈচিত্র্যে আর কোনো মৌসুমেই এরা এতটা মুগ্ধ করতে পারে না। বড় বড় ইনকা গাঁদা, ছোট ছোট চায়না গাঁদা, দেশি গাঁদা, রক্ত গাঁদা, হলুদে লাল মিশানো জাম্বো গাঁদা, লম্বা গাছে দেশের জাত রাজ গাঁদা ইত্যাদি নানা জাতের গাঁদা ফুলের চারা এখন পাওয়া যাচ্ছে আশপাশের প্রায় সব নার্সারিতেই।

এরপর রয়েছে চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, অ্যাস্টার, ডেইজি, কসমস, সিলভিয়া, এন্টিরিনাম, ন্যাস্টারশিয়াম, প্যানজি, ডায়ান্থাস, ফ্লক্স, ভারবেনা, কারনেশান, পপি, সূর্যমুখী, পর্টুলেকা, ক্যালেন্ডুলা, হলিহক, মর্নিং গ্লোরি, সুইট পি, অ্যাজালিয়া, জারবেরা, গ্ল্যাডিওলাস প্রভৃতি। এমনকি গোলাপকেও সঙ্গী হিসেবে পেতে পারেন। টবে গাঁদা, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, জারবেরা, কারনেশান, ক্যালেন্ডুলা, অ্যাস্টার ইত্যাদি জন্মে। তবে জমিনের বাগানে সব ফুলই লাগানো যেতে পারে।

Taken From Barcik News.

খুঁজে নিন শীতের ফুল

ফুল সৌন্দর্য ও পবিত্রতার প্রতীক। ফুলকে ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে ফুলের বাগান ও নার্সারি। এছাড়া স্থান স্বল্পতার কারণে অনেক ফুলপ্রেমী টবেও ফুল চাষ করেন। শহরের বাসার বারান্দা, ছাদ বা প্রাঙ্গণের অল্প জায়গাটুকুতেও অনায়াসে ফুল চাষ সম্ভব।

যে ধরনের ফুল

শীতকালীন ফুলগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে গাঁদা, ডালিয়া, গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা, সূর্যমূখী, কসমস, পপি, গাজানিয়া, স্যালভিয়া, ডায়ান্থাস, ক্যালেন্ডুলা, পিটুনিয়া, ডেইজি, ভারবেনা, হেলিক্রিসাম, অ্যান্টিরিনাম, ন্যাস্টারশিয়াম, লুপিন, কারনেশন, প্যানজি এবং অ্যাস্টার ইত্যাদি। কিছু ফুলের আবার বিভিন্ন ধরনের জাতও দেখা যায়।

Taken From Masterybd.

শীতকালীন ফুলের চাষ ও পরিচর্যা

শীতকালীন ফুলের বীজ বপনের উপযুক্ত সময় অক্টোবর-নভেম্বর মাস। টবসহ চারাও কিনতে পাওয়া যায়। সাধারণত ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি মাপের টবই যথেষ্ট। টবের মাটির সঙ্গে জৈব সার বা কম্পোস্ট সার পর্যাপ্ত পরিমাণে মেশাতে হয়। সাবধানতার সঙ্গে চারা রোপণ করে ঝাঁঝর দিয়ে উপর থেকে বৃষ্টির মতো পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। যাতে গাছ এবং পাতা উভয়ই ভেজে। প্রয়োজনে হেলে পড়া গাছকে লাঠি পুঁতে তার সঙ্গে বেঁধে দাঁড় করিয়ে দিতে হবে। পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রয়োজনে কৃষিবিদের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।

Taken From Masterybd.

শীতের নজরকাড়া যত ফুল 

প্রবাদ আছে, মাঘের শীত নাকি বাঘের গায়েও লাগে। তবে এ বছর মাঘের বেশ কিছুদিন আগ থেকেই দাপটের সঙ্গে বিরাজ করছে শীত। মাঘেও তা রয়েছে বহাল তবিয়তে। রুক্ষ হতে শুরু করেছে প্রকৃতি। তবে রুক্ষ এ পরিবেশেও আড়মোড়া ভেঙে জেগে ওঠে শীতের নজরকাড়া ফুলগুলো। শিশির ভেদে করে সে সব ফুল জানান দেয় তাদের রূপের বাহার।

শীতে ভালো ফুল ফোটানোর টিপস

রোদেলা জায়গায় গাছ লাগান।গাছে পানি দেওয়ার সময় শুধু গাছের গোড়ায় পানি না দিয়ে ঝাঁজরি দিয়ে গাছের ওপর থেকে বৃষ্টির মতো গাছ-পাতা ভিজিয়ে নিয়মিত হালকা পানি দিন। এতে গাছ বেশি সতেজ হবে।গাছের চেহারা দুর্বল দেখা গেলে পরপর তিন-চার দিন এক ঝাঁজরি পানির মধ্যে দুই চা চামচ ইউরিয়া সার গুলে ওপরের নিয়মে সেচ দিন।সরিষার খইল কয়েক দিন একটি পাত্রে ভিজিয়ে রেখে তা গুলে ১৫ দিন পরপর গাছের গোড়ার চারদিকে দিন। অন্তত কুঁড়ি না আসা পর্যন্ত দিন।ফুল ফোটা শুরু হলে তখন থেকে ফুল-পাতা ভিজিয়ে পানি না দেওয়া ভালো।

গাঁদা ফুলের আকার বড় করতে চাইলে প্রথম কুঁড়িগুলো নখ দিয়ে খুঁটে ভেঙে দিন।স্বাভাবিক সময়ের আগে গাছে কুঁড়ি এলে তা ভেঙে দিন।গাছের গোড়া ভেজা থাকলে পানি দেবেন না।প্রতি ১০-১৫ দিন পরপর গাছের গোড়ার মাটি হালকা নিড়িয়ে/খুঁচে দিন।ফুল শুকাতে শুরু করলে দ্রুত তা গাছ থেকে কেটে ফেলুন।প্যানজি গাছের বয়স হলে ফুল ছোট হয়ে আসবে। এ অবস্থায় গোড়া থেকে ছেঁটে দিলে নতুন গজানো ডালে আবার ভালো ফুল ফুটবে।অ্যান্টিরিনামের ভালো ফুল পেতে হলে শুধু মাঝের ডালটি রেখে অন্য সব ডাল কচি অবস্থায় ছেঁটে দেবেন

Taken From Koloroa News.

শীতের প্রকৃতিতে ফুলের উৎসব

শীত মৌসুমের আরেক ফুল কসমস। আদিনিবাস মেক্সিকোতে। তিন-চার ফুট লম্বা সুদৃশ্য চিকন সরু সরু ফালিযুক্ত পাতাবিশিষ্ট এ ফুল গাছটিতে ধরে একক ফুল। প্রজাতিভেদে এদের রঙে রয়েছে ভিন্নতা। কসমস বর্ষজীবী বীরুৎ জাতীয় উদ্ভিদ। বৈজ্ঞানিক নাম : ঈড়ংসড়ং নরঢ়রহহধঃঁং, এটি অংঃবৎধপবধব পরিবারের উদ্ভিদ। কসমস অপূর্ব বাহারি শীতকালীন ফুল। পাতা সবুজ এবং বেশ সরু। সাধারণত গাছ ৯০ থেকে ১২০ সেন্টিমিটার বড় হয়। ফুল সাদা, লাল ও গোলাপি বর্ণের হয়।

গ্যাজানিয়া সাম্প্রতিক সময়ে শীত মৌসুমের জনপ্রিয় ফুল। ফুলটি বহুবর্ষজীবী বীরুৎ হলেও আমাদের দেশে এটি বর্ষজীবী বীরুৎ হিসেবে জনপ্রিয়। বৈজ্ঞানিক নাম : এধুধহরধ হরাবধ, এটি অংঃবৎধপবধব পরিবারের উদ্ভিদ। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই ফুলের চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গাছ ২০ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। এই ফুল অনেকটা সূর্যমুখীর মতো। সাদা, লাল, কমলা, হলুদ রঙের ফুল হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বংশবিস্তার হয়ে আমাদের দেশে এসেছে বলে জানা গেছে।

কৃষ্ণকলি হলো বাংলাদেশের শীত মৌসুমের নিজস্ব ফুল। হাত দেড়েক উঁচু গাছে ছোট ছোট ফুল ফোটে। কোনোটির রঙ সাদা আবার কোনোটির গোলাপি। বাংলার নিজস্ব প্রজাতির আরেক ফুল হল দশবাইচণ্ডী। নামটা বিদঘুটে হলেও ফুলটি দেখতে খুবই সুন্দর। ছোট ছোট গাছের দেহজুড়ে প্রজাপতির মতো দেখতে এক একটি ফুল ফোটে।

ফুলের রঙ সাধারণত নীল। তবে হলুদ ও গোলাপি রঙেরও দেখা যায়। তবে দিন দিন এই ফুলগাছ দুটির সংখ্যা মানিকগঞ্জে আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। চার দিকে বাহারি রঙের ফুটন্ত ফুলেরা পেখম মেলেছে রঙিন পাপড়িতে। ফুলের স্বর্গীয় সৌন্দর্যে সারা দেশের মতো মানিকগঞ্জের প্রকৃতিও হয়ে উঠেছে নান্দনিক। শুধু সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও শখের বশেই নয়, শীতের ফুল চাষ বাণিজ্যিকভাবেও বেশ লাভজনক।

Taken From Progatir Bangla.

বারান্দায় শীতের ফুল

শীতে এই ফুলের প্রাচুর্য সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে। ইনকা গাঁদা, চায়না গাঁদা, দেশি গাঁদা, রক্তলাল গাঁদা, হলুদ গাঁদা, হলুদ-লাল মেশানো বড় গাঁদা, রাজ গাঁদা ফুলের চারা পাওয়া যাবে আশপাশের নার্সারিতেই।শীতে খানিকটা উষ্ণতা খুঁজতে পারেন রঙিন ফুলের মাঝে। শীতের ভোরে বারান্দায় উঁকি দেবে শিশিরভেজা গাঁদা, কসমস, ডালিয়ারা।

 চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, অ্যাস্টার, ডেইজি, কসমস, সিলভিয়া, অ্যান্টিরিনাম, ন্যাস্টারশিয়াম, প্যানজি, ডায়ান্থাস, ফ্লক্স, ভারবেরা, কারনেশান, পপি, সূর্যমুখী, পর্টুলেকা, ক্যালেন্ডুলা, হলিহক, সুইট পি, অ্যাজালিয়া, জারবেরা, গ্ল্যাডিওলাস এমনকি গোলাপকেও শীতের ফুলের সঙ্গী করতে পারেন।এতে কম সময়ে বেশি ফুলে ভরে উঠবে আপনার বারান্দা বাগান।

Taken From Neotericit.

আপনার বারান্দার গ্রিলের জন্য

বারান্দা সাধারণত ছোটই হয়  তাই একটু বেশি ফুলের সান্নিধ্য পেতে চাইলে গ্রিলে বা ওয়ালে কিছু গাছ ঝুলিয়ে দিতে পারেন। পিটুনিয়া, ন্যাস্টারশিয়াস, অ্যাস্টার, ভারবেনা ফুল ঝোলানোর জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক। বারান্দার গ্রিলে এ সময় কিছু গাছ লতিয়ে দিতে পারেন। এ জন্য নীলমণি লতা, মর্নিং গ্লোরি, রেল লতা, সুইট পি বেছে নিতে পারেন।

আপনার বারান্দার টবের জন্য

টবের জন্য বেশি সুবিধাজনক ফুলগাছের মধ্যে রয়েছে গাদা, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, জারবেরা, কারনেশান, ক্যালেন্ডুলা, অ্যাস্টার ইত্যাদি।গাছ তো চেনা হলো, এবার ইচ্ছামতো এসব গাছ টব, গ্রিল বা ঝুলন্ত টবে লাগিয়ে বারান্দায় সাজিয়ে নিন। টবে গাছ লাগানোর সুবিধাও আছে। এতে ইচ্ছামতো অদলবদল ঘটিয়ে বাগানটা সাজিয়ে নেওয়া যায়। গাছের জন্য মাটির পাত্রের টব সবচেয়ে ভালো।

Taken From Neotericit.

যত্ন নেবেন যেভাবে

বারান্দায় রোদ কম পড়লে সপ্তাহে দুদিন গাছগুলোকে ছাদে বা বাইরে রোদে দিন। রোদ পেলে দ্রুত গাছে ফুল আসে। পুষ্টির জন্য সরিষার খৈল কয়েক দিন একটি পাত্রে ভিজিয়ে রেখে তা গুলে মাসে দুবার গাছের গোড়ায় দিন।গাছের গোড়া ভেজা থাকলে পানি দেওয়ার দরকার নেই। দুই সপ্তাহ পর পর গাছের গোড়ার মাটি হালকা নিড়িয়ে দিন। নিয়মিত গাছে ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানি স্প্রে করুন। এতে গাছে পিঁপড়া, মিলিবাগ ও অন্যান্য পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হবে।

Taken From Jago News

শখের শীতকালীন রঙিন ফুল, রপ্তানিতে হাতছানি

ফুল চাষ করে অনেকেই স্বচ্ছলতার মুখ দেখছে। বর্তমানে বিদেশেও ফুল রপ্তানি হচ্ছে- যা থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে। তাই এখনই উপযুক্ত সময় ফুলচাষি বা ফুলপ্রেমীদের তৎপর হয়ে ওঠার। আধুনিক যুগে নগরায়ণ ও সভ্যতা বিকাশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশ-বিদেশে ফুলের প্রয়োজনীয়তা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফুল এখন আর শুধু সৌন্দর্য ও সৌখিনতার সামগ্রীই নয়, বরং এটি এখন দেশের জাতীয় অর্থনীতি এবং বৈদেশিক বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ।

বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ফুল চাষ, বিপণন ও ব্যবহার করছে। থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, হল্যান্ড প্রভৃতি দেশ অর্কিড রপ্তানি করে এবং পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ফুল রপ্তানিকারক দেশ নেদারল্যান্ডস টিউলিপ ফুল বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশেও বাণিজ্যিকভাবে অর্থকরী ফসল হিসেবে ফুল বিশেষ করে রজনীগন্ধা ও গোলাপ উৎপাদন ও বিদেশে রপ্তানি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের যশোর জেলার ঝিকরগাছা, শার্শা, চৌগাছা ও সদর উপজেলা এবং কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে রজনীগন্ধার চাষ হচ্ছে।

Taken From Neotericit.

এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী ডক্টর মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ফুল খুবই সম্ভাবনাময় ফসল। এখন দেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ফুলের চাষ বাড়ছে। দেশে ও আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদাও বাড়ছে। সারা বিশ্বে ৩৬ বিলিয়ন ডলারের ফুলের বাজার আছে উলেস্নখ করে তিনি আরও বলেন, এর মধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের বাজার ধরার মতো আমাদের সুযোগ আছে। সে সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে।জারবেরা অ্যাসটারোস পরিবারভুক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ফুল। জার্মান পরিবেশবিদ ট্রগোট জার্বারের নামানুসারে এ ফুলটির নামকরণ করা হয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক ফুল বাণিজ্যে কাট ফ্লাওয়ার হিসেবে উলেস্নখযোগ্য ১০টি ফুলের মধ্যে অন্যতম কাট ফ্লাওয়ারের জন্য ও বেশি দিন ফুলদানিতে সতেজ রাখতে জারবেরার জুড়ি নেই।

রজনীগন্ধা ফুলদানিতে এ ফুল ৭-১০ দিন সজীব থাকে এবং প্রতি রাতেই সুগন্ধ ছড়িয়ে ঘরের পরিবেশকে বিমোহিত করে। বাংলাদেশে এ ফুলের উত্তরোত্তর চাহিদা বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে এর যথেষ্ট চাহিদা। যে কোনো ধরনের উবর্র মাটিতেই গস্ন্যাডিওলাস চাষ করা যায় তবে সুনিষ্কাশিত দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি চাষের জন্য উত্তম। মাটির পিএইচ মান ৬-৭ এর মধ্যে থাকা উচিত। মাটির ঠান্ডা আবহাওয়ায় এ ফুল ভাল জন্মে। সাধাণত ১৫ থেকে ২০ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রা এ ফুল উৎপাদনের জন্য উপযোগী। গস্ন্যাডিওলাস প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা আলো পছন্দ করে।

শীতে সৌন্দযর্বধর্নকারী গাছের পরিচযার্

বিভিন্ন ধরনের শোষক পোকা যেমনÑ জাবপোকা, জ্যাসিড, থ্রিপস বা চোষী পোকা ও ছাতরা পোকা বা মিলিবাগ ফুল ও সৌন্দযর্বধর্নকারী গাছের পাতা, কচি ডগা বা কাÐ, কুঁড়ি, পুষ্পমঞ্জুরি ও ফুল আক্রান্ত হলে নিম বা তামাক পাতার ১০০ মিলিলিটার রস ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা যায়। আক্রমণ বেশি হলে ০.১% হারে ম্যালাথিয়ন জাতীয় কীটনাশক স্প্রে করতে হয়।

শক্ত ডানা ও চোয়ালের পূণার্ঙ্গ বা অপূণার্ঙ্গ বিটল পোকা ফুল ও সৌন্দযর্বধর্নকারী গাছের পাতা ও অন্যান্য অংশ খেয়ে ফুটো করে বা কুরে কুরে খেয়ে ঝঁাঝরা করে বা জাতের মতো করে ফেলে। এ পোকা দমনে অ্যাসিফেট বা ক্লোরপাইরিফস বা প্রোফেনোফসজাতীয় কীটনাশক ০.০৭৫% হারে স্প্রে করতে হয়। মাকড় পাতার নিচের দিকে জাল না বুনে বাস করে এবং পাতার রস চুষে খায়। মাকড় নিয়ন্ত্রণে সালফারযুক্ত বালাইনাশক প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হয়।এ ছাড়া ফুল ও সৌন্দযর্বধর্নকারী গাছের মূল বা মাটি সংলগ্ন অংশ খেয়ে গাছের ক্ষতি করে। গাছের গোড়ায় কেরোসিন মিশ্রিত ছাই ছিটিয়ে পিঁপড়া ও উইপোকা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। নিয়মিত সেচ দিলে বা গাছের গোড়া ভেজা ভেজা থাকলে এদের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

Taken From Masterybd.

শীতকালীন ফুল চাষ সহজ ও লাভজনক

চাহিদা ও উৎপাদন বর্তমানে দেশের ১৯ জেলায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ হচ্ছে। ১৯৯৫ সালের দিকে চাষ হতো মাত্র ৩০০ হেক্টর জমিতে। চাহিদা ও লাভ বেশি বলে ফুল চাষের জমি বাড়ছে। বছরে আনুমানিক ৩০ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হচ্ছে। নব্বইয়ের দশকের আগে ফুল আমদানি করে দেশের চাহিদা পূরণ হতো। এখন দেশের উৎপাদিত ফুল দিয়ে ৭০ শতাংশ চাহিদা পূরণ হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি চাষ হয় যশোরের ঝিকরগাছা ও শার্শা উপজেলায়। এখানে ২ লাখ লোক ফুল চাষে জড়িত।

প্রতি বছর দেশে ফুল চাষের এলাকা বেড়েই চলেছে। ঢাকার সাভারে ১৭০ হেক্টর জমিতে গোলাপ, গ্ল্যাডিওলাস, রজনীগন্ধা, গাঁদা, অর্কিডের চাষ হচ্ছে। ময়মনসিংহে ১১০ একর জমিতে অর্কিড চাষ হচ্ছে। নতুন এলাকা কক্সবাজারে ১২০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পে ৭৩টি হর্টিকালচার সেন্টারে ফুলের চারা, কলম ও চাষাবাদ কলাকৌশল সম্পর্কে চাষিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

১ বিঘা জমিতে গাঁদা ফুল চাষে আয়-ব্যয়ের হিসাব এখানে দেয়া হলো : জমি চাষ ১০০০, সেচ ৩০০০, চারা কেনা ৩০০০, সার ও বালাইনাশক ৭০০০, শ্রমিক খরচ ৩০০০, পরিবহন ২০০০, অন্যান্য ৩০০০= মোট ২২ হাজার টাকা। সম্ভাব্য আয় সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে ১ বিঘা জমি থেকে ফুল আসবে কমপক্ষে ১ হাজার ৫০০ ঝোঁপা। প্রতি ঝোঁপা ফুল যদি গড়ে ৪০ টাকা দরে বিক্রি করা হয় তাহলে মোট আয় হবে ১৫০০x৪০=৬০ হাজার টাকা। সুতরাং সম্ভাব্য নিট লাভ হবে ৬০,০০০-২৭,০০০= ৩৮ হাজার টাকা।

অন্যদিকে, ধান চাষ করলে ১ বিঘায় খরচ হয় প্রায় ১৩ হাজার টাকা, ধান বিক্রি করা যায় ২০ মন ৭০০ টাকা হিসেবে ১৪ হাজার টাকা। লাভ হয় মাত্র ১ হাজার টাকা।গ্ল্যাডিওলাসের আয়-ব্যয়ের হিসাব : একটি স্টিক উৎপাদনে খরচ হয় ৫-৬ টাকা। বিক্রি হয় ৭-৮ টাকা। প্রতি স্টিকে লাভ হয় ২ টাকা। ১ বিঘা জমিতে ৩৫ হাজার স্টিক উৎপাদন হয়। লাভ হয় ৭০ হাজার টাকা।রজনীগন্ধার আয়-ব্যয় হিসাব : একটি স্টিক উৎপাদনে খরচ হয় ২-৩ টাকা। বিক্রি হয় ৪-৫ টাকা। প্রতি স্টিকে লাভ হয় ১ থেকে ২ টাকা। ১ বিঘা জমিতে ৩০ হাজার স্টিক উৎপাদন হয়। লাভ হয় ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।


তথ্যসুত্র

শীতকালীন ফুল চাষ সহজ, mna.

 নানান জাতের হরেক রঙের ফুলে ফলে, Jaijaidin.

শখের শীতকালীন রঙিন ফুল, Jaijaidinbd.

শীতে ফোটে বাহারি সব ফুল।, Kalerkantha.

শীতের প্রকৃতিতে ফুলের উৎসব, Daily Naya Diganta.

ভোরের সূর্য তোমাদের ডাকছে, Prothom Alo.

শীতের চাঁদরে ফুলের বাহার, BD Journal.

শীতের নজরকাড়া যত ফুল, Bangla News.

খুঁজে নিন শীতের ফুল, Jagonews.

শীতকালে ফোটে যেসব ফুল, Jugantor.

Subscribe for Daily Newsletter