বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস (World Handwashing Day)
দিবসটির সূচনা ২০০৮ সাল থেকে।সেই বছর সুইডেনের স্টোকহোমে ১৫ অক্টোবর বিশ্ব পানি সপ্তাহে জিএইচপি বিশ্বব্যাপী আঞ্চলিক ও স্থানীয় পর্যায়ে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সর্বপ্রথম এ দিবসটি উদযাপন করে। পরে জাতিসংঘের সাধারওই বছর ১৫ অক্টোবর সুইডেনের স্টোকহোমে বিশ্ব পানি সপ্তাহে জিএইণ অধিবেশনে দিবসটি প্রতি বছর পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২০০৮ সালটি স্বাস্থ্যব্যবস্থার আন্তর্জাতিক বর্ষও ছিল
১৯৮০ সাল: প্রথম প্রস্তাব করা হয় এরকম একটি দিন পালন করার। হাত ধোয়া যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, সে সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার কথা বলেন বিজ্ঞানীরা।২০০৮ সালটি স্বাস্থ্যব্যবস্থার আন্তর্জাতিক বর্ষও ছিল। দিবসটি যেদিন প্রথমবারের মতো পালিত হয়, সেদিন বিশ্বের ৭০ টি দেশের ১২ কোটিরও বেশি শিশু ‘সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে’ অংশগ্রহণ করেছিল। তার পর থেকেই বিশ্বব্যাপী সরকার, স্কুল, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান, নাগরিক সমাজ সংস্থা, এনজিও, বেসরকারী সংস্থা, ব্যক্তি উদ্দ্যেগে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
বিশ্ব হাতধোয়া দিবসের মূল লক্ষ্য হাত ধোয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা
বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা তৈরি ও উদ্বুদ্ধকরণের জন্য চালানো এটি একটি প্রচারণামূলক দিবস। বিশ্ব হাতধোয়া দিবসের মূল লক্ষ্য সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার একটি সাধারণ সংস্কৃতির সমর্থন ও প্রচলন করা, প্রতিটি দেশে হাত ধোয়ার বিষয়ের নজর দেয়া ও সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
২৫.২ শতাংশ মানুষের হাত ধোয়ার অভ্যাস নেই
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ‘শুধু হাত ধোয়ার অভ্যাস না থাকায় বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও অন্যান্য জীবাণু হাতের মাধ্যমে খাদ্যের সঙ্গে আমাদের দেহে প্রবেশ করে নানা রোগ বাধায়।বিশ্ব হাতধোয়া দিবসের মূল লক্ষ্য সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার একটি সাধারণ সংস্কৃতির সমর্থন ও প্রচলন করা, সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।ওয়াটারএইড ও ইউনিসেফের সহায়তায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত দেশব্যাপী জাতীয় সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২৫.২ শতাংশ মানুষের হাত ধোয়ার অভ্যাস নেই। দেশে মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশের হাত ধোয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। ৩৩ শতাংশের সীমিত ব্যবস্থা রয়েছে। অন্যদের হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকলেও তা প্রতিপালনে অনীহা রয়েছে।
বিশ্বে প্রায় ২০ কোটি মানুষ হাত দোয়া দিবস পালন করে
প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ২০ কোটি মানুষ হাত দোয়া দিবস পালন করে। ২০১৪ সালের কথা। সে বছর বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসে ভারতের মধ্যপ্রদেশে ১২ লাখ ৭৬ হাজার ৪২৫ শিশু একসঙ্গে হাত ধুয়ে একটা বিশ্ব রেকর্ড গড়ে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের স্বীকৃতি দেয়।ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় ২০১৩ সালে ১ নভেম্বর পালন করা হয় বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস। সেবার তারা ভুলেই গিয়েছিল দিনটির কথা। তবে ভুল শোধরাতে ভোলেনি। এ ছাড়া বিশেষ কিছু গোষ্ঠী অন্যান্য দিনেও দিবসটি নিজেদের মতো করে পালন করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দৈনন্দিন জীবনে আমরা আমাদের হাত দিয়ে অসংখ্য কাজ করে থাকি। কাজ করতে গিয়ে আমাদের হাত অসংখ্য জীবাণুর সংস্পর্শে আসে, যার ফলে নানা রোগ হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের মল হচ্ছে ডায়রিয়ার জীবাণুর প্রধান উৎস। এ দিকে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহারে শিশুদের ডায়রিয়া প্রতিরোধ হয় শতকরা ৩২ ভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষায় ৩২ ভাগ, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে ২৫ ভাগ আর সঠিক নিয়মে হাত ধুলে ৪৪ ভাগ। অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক নিয়মে হাত ধোয়ার অভ্যাস একটি ভালো ভ্যাকসিনের চেয়েও বেশি কাজ করে। শুধু খাবার আগে ও টয়লেট ব্যবহারের পর সঠিক নিয়মে হাত ধোয়ার অভ্যাস সহজেই এ সব রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।
তথ্যসুত্র
হাত ধোয়া দিবস, Dailyinqilab.
বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস, Dainikazadi.
বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসে , Prothomalo.
ধোয়া দিবস পালন করা, Hindustantimes.
হাত ধোয়া দিবস, Risingbd.
বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস, Jagonews24.