বিশ্ব ছাত্র দিবস (World Students Day)

১৫ অক্টোবর, বিশ্ব ছাত্র দিবস  ২০১০ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।২০১০ সালে, জাতিসংঘ ভারতের একাদশ রাষ্ট্রপতি ও পরমাণু বিজ্ঞানী এপিজে আব্দুল কালামের সম্মানে ১৫ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। কারণ আব্দুল কালাম নিজেকে শিক্ষক ভাবতেই বেশি পছন্দ করতেন।

অনেকে মনে করেন ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক ছাত্র দিবস। আবার অনেকের মতে, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এবং বিজ্ঞানী এপিজে আব্দুল কালামের জন্মদিন অর্থাৎ ১৫ অক্টোবর হল বিশ্ব ছাত্র দিবস। দু'টি তারিখ ঘিরেই সংশয় রয়েছে। সম্প্রতি সংসদে আব্দুল কালামের জন্মদিনটিকে জাতীয় ছাত্র দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দিয়েছেন এক সাংসদ।

এপিজে আবদুল কালাম শুধু একজন বিজ্ঞানী বা রাজনীতিবিদ ছিলেন না, ছাত্র জীবনের উপর বরাবর গুরুত্ব দিয়ে এসেছেন। মনে করতেন, বিশ্বে ভাল ভবিষ্যত গড়তে পারে ছাত্ররাই। ছাত্রদের অবদানে তৈরি হয় সুঠাম, সুষ্ঠু সমাজ। ছাত্রদের প্রতি তার ভালবাসাকে সম্মান জানাতে ২০১০ সাল থেকে জাতিসংঘ কালামের জন্মদিনকে বিশ্ব ছাত্র দিবস হিসেবে পালন করে থাকে।

২০০২ সালের ১৮ জুলাই ভারতের ১১ তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনীত হন তিনি। ২০১০ সালে ১৫ অক্টোবর, জাতিসংঘের সংস্থা (UNO) শিক্ষার প্রসারে ড. এ.পি.জে. আব্দুল কালামের প্রচেষ্টার জন্য তাঁর ৭৯তম জন্মদিনকে বিশ্ব ছাত্র দিবস বা বিশ্ব বিদ্যার্থী দিবস হিসেবে পালন করার ঘোষণা করে। এরপর থেকে প্রতি বছর তাঁর জন্মবার্ষিকীতে পালন করা হয় 'বিশ্ব ছাত্র দিবস'। ডক্টর এপিজে আব্দুল কালামের জীবন কাহিনী থেকে শেখা যায় যে জীবনে যতই সমস্যা আসুক না কেন, শিক্ষার মাধ্যমে সমস্ত বাধা অতিক্রম করা সম্ভব।

ডক্টর এপিজে আব্দুল কালামের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং তাঁর কৃতিত্ব স্মরণ করা হয় বিশ্ব ছাত্র দিবসে। শিক্ষার্থীরা দেশের ভবিষ্যৎ, তাই তাদের প্রতি উৎসর্গীকৃত এই দিনটি পালন করা এবং শিক্ষার্থীদের প্রশংসা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনে, পড়ুয়ারা ড. এপিজে আব্দুল কালাম এবং তাঁর তার জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত অনুপ্রেরণামূলক গল্পগুলির সম্বন্ধে জেনে জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত হয় পড়ুয়ারা। 'বিশ্ব ছাত্র দিবস' উদযাপনের উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের গুরুত্ব দেওয়া এবং সমাজে তাদের গুরুত্ব বোঝা।

এপিজে আবদুল কালাম বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। আরও বড় কথা যে ভূমিকাতেই তাকে দেখা যাক না কেন, তিনি ছিলেন বিতর্কের ঊর্ধ্বে। শিক্ষক হিসেবে তিনি ছিলেন এক অনুপ্রেরণামূলক চরিত্র। ছাত্র সমাজের প্রতি তার অগাধ আস্থা ছিল। কালাম মনে করতেন, ছাত্র সমাজের প্রগাঢ় জ্ঞান দেশ গঠনে সাহায্য করে। ছাত্র সমাজকে তিনি এতটাই মূল্য দিতেন যে, রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন বহুবার ছাত্রদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছেন। সম্মান করতেন শিক্ষকদের। তিনি বিশ্বাস করতেন সুষ্ঠু সমাজ গঠনের মূল কারিগর শিক্ষক সম্প্রদায়। এমনকী নবীন প্রজন্মের সঙ্গে কথোপকথনের ভিত্তিতে তিনি একাধিক বই লিখেছিলেন। তার মধ্যে পাঠকমহলে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে, ইগনাইটেড মাইন্ডস।

শিক্ষা গবেষণায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষার গুণগত মান কিভাবে বজায় রাখা যায়, কিভাবে কম ও অধিক মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদেরকে সমস্তরে নিয়ে আসা যায়, কিভাবে শিক্ষার্থীদের শিক্ষামূলক অর্জনে উন্নতি ঘটানো যায়, কিভাবে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্র বৃদ্ধি এবং সুযোগ সৃষ্টি করা যায় এসব বিষয়ে গবেষণার মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা। গবেষণার মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম, এর চর্চা ও পরিকল্পনাকে কিভাবে সময়ের সঙ্গে গতিশীল করা যায়, প্রযুক্তির ব্যবহার ও মূল্যায়ন পদ্ধতিকে কিভাবে গ্রহণযোগ্য করা যায়- এ বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ, পরিকল্পনা ও কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। আমাদের নতুন প্রজন্ম যদি আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আয়ত্ত করে গবেষণালব্ধ শিক্ষার মাধ্যমে নিজেদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে পারে, তাহলেই দেশে দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা, দুর্নীতি সকল সমস্যার অবসান ঘটবে এবং একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ তৈরি হবে। এরই লক্ষ্যে গবেষণালব্ধ শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা আবশ্যক।


তথ্যসুত্র

বিশ্ব ছাত্র দিবস, Bangla.latestly.

শিক্ষা গবেষণা, Somoynews.

বিশ্ব ছাত্র দিবস, Jagonews24.