বিশ্ব তথ্য অধিকার দিবস (World Tight to Information Day)
২৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস। তথ্য জানার অধিকারের গুরুত্বকে অগ্রাধিকার দিয়ে নাগরিকের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করতে প্রতিবছর সারা বিশ্বে পালিত হয় দিবসটি। স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয়ে থাকে।তথ্য জানার অধিকারের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছর দিবসটি পালন করা হয়। ২০১৫ সালে ইউনেস্কোর নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৬ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর প্রথম তথ্য অধিকার দিবস পালন করা হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সেবা বিস্তৃত হওয়ায় ডিজিটাল বৈষম্যের কারণে কেউ যেন পিছিয়ে না থাকে ।
২০০৮ সালের ২০ অক্টোবর ‘তথ্য অধিকার অধ্যাদেশ, ২০০৮’ জারি করা হয়
২০০৮ সালের ২০ অক্টোবর ‘তথ্য অধিকার অধ্যাদেশ, ২০০৮’ জারি করা হয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নির্বাচিত সরকার ‘তথ্য অধিকার অধ্যাদেশ, ২০০৮’-কে আইনে পরিণত করার উদ্যোগ নেয় এবং নবম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে যে কয়টি অধ্যাদেশ আইনে পরিণত হয় তার মধ্যে ‘তথ্য অধিকার আইন-২০০৯’ অন্যতম। ওই অধিবেশনে (২৯ মার্চ, ২০০৯) তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ পাস হয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ৫ এপ্রিল, ২০০৯ তারিখে এ আইনটিতে সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেন এবং ৬ এপ্রিল, ২০০৯ তারিখে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত হয়।
তথ্য অধিকার আইন একটি জনকল্যাণকর আইন
তথ্য অধিকার আইন একটি জনকল্যাণকর আইন। দেশের সব পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং সব স্তরে দুর্নীতি দূরীকরণের একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে তথ্য অধিকার আইনের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকার এবং রাষ্ট্রের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার অধিকার বিশ্বব্যাপী একটি মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ নং অনুচ্ছেদে জনগণের চিন্তা, বিবেক ও বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। জনগণের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে তথ্য জানার অধিকারকে প্রাধান্য দিয়েই প্রণয়ন করা হয়েছে ‘তথ্য অধিকার আইন ২০০৯’ এবং এর যথাযথ বাস্তবায়নে 'তথ্য কমিশন' গঠন করা হয়েছে। তথ্য অধিকার আইনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করার পাশাপাশি এ আইনের যথাযথ প্রয়োগে তথ্য কমিশনকে আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
তথ্য অধিকার জনগণের ক্ষমতায়নের একটি কার্যকর মাধ্যম
যত বেশি তথ্যপ্রবাহ জনগণের দৌড়-গোড়ায় পৌঁছাবে, ততই সচেতনতা বাড়বে, বাড়বে কাজের গতিও।অবাধ তথ্যপ্রবাহ না থাকলে জনগণের মৌলিক মানবাধিকার আদায় সম্ভব নয়। ব্যক্তির অধিকার আদায়ে তথ্য অধিকার দিবসের গুরুত্ব অনেক।আমি ক্ষুদ্র কলাম লেখক কবির নেওয়াজ রাজ মনে করি,তথ্য অধিকার জনগণের ক্ষমতায়নের একটি কার্যকর মাধ্যম।
তথ্যের অবাধ প্রকাশ জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে
তথ্য অধিকারের মাধ্যমে এর সুফল নিশ্চিত করা গেলে সমাজে দুর্নীতির প্রবণতা কমবে।তথ্যের অবাধ, সঠিক ও সময়োচিত প্রকাশ একদিকে যেমন জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে, অন্যদিকে কর্তৃপক্ষের সুশাসন নিশ্চিত হবে, জনগণ ও রাষ্ট্রের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক সমুন্নত থাকবে।তথ্য অধিকারচর্চা গতিশীল করা ও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে তথ্য কমিশন কাজ করবে, এটাই কাম্য।তথ্য কমিশন এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে জনগণকে অধিকতর ক্ষমতায়ন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তথ্যভিত্তিক সমাজ গড়ে আমরা গুণগতভাবে আরও সমৃদ্ধ হব—এটাই তথ্য অধিকার দিবসের প্রত্যাশা।
তথ্য অধিকার আইনের যুগোপযোগী সংশোধনসহ ১৩ দফা সুপারিশ উত্থাপন করেছে
আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি বাক স্বাধীনতা ও তথ্যের অবাধ অভিগম্যতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্বপ্নের ‘নতুন বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে অপরিহার্য হিসেবে গণ্য করে তথ্য কমিশনকে দলীয়করণের সংস্কৃতি থেকে রক্ষা করে এর আমূল সংস্কার এবং সার্বজনীন তথ্য অধিকার, প্রবেশগম্যতা ও জন-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তথ্য অধিকার আইনের যুগোপযোগী সংশোধনসহ ১৩ দফা সুপারিশ উত্থাপন করেছে।
তথ্য কমিশন তথ্য বঞ্চিত জনগণের অভিযোগ আমলে নিয়ে নিয়মিত শুনানির মাধ্যমে তাদের তথ্য প্রাপ্তিকে নিশ্চিত করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিভিন্ন মাধ্যমে স্ব-প্রণোদিত তথ্য প্রকাশের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। জনগণ যত তথ্য পাবে, তাদের জীবনমানের তত উন্নয়ন ঘটবে।
তথ্যসুত্র
তথ্য অধিকারভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র, Deshrupantor.
তথ্য অধিকার দিবস, Bhorerkagoj.
আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস, banglatribune.
স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র , Dhakaprotidin.
তথ্য অধিকার অধ্যাদেশ, Protidinersangbad.
তথ্য কমিশন দেশীয় প্রেক্ষাপটে, Somoynews.